Vuter Golpo

amr ghotonati 2010 er and ata amr shathei ghotch... amr dadu and dada amader basai betate ashche gram theke... pray 1month thakar por chole jai .... unara thakte ami unader shathe ghumatam... protidin thik 2 tai amr ghum vangto tader karone...dada khub sick chilo.. take dadui shamlate hoto... to tara chole jaoar por ami shedin aka ghumacchilam... hotath 2 tai amr ghum venge gelo amon akta shobte jate mone hocchilo kew jeno amr lekhar khata page gulu niea ultacche... ghumta vengei amr chokh porlo porar table e .... mone holo kono akta meye amr moto boshe ache.. pasher ghorer dim light chilo a ghore temn beshi alo porchilona... ami khub voi peye khatha muri diea thaklam kichukhon.. maa k just akbar dakte parlam.r akbaro dakar shahosh pelamna .... kichukn por odike takatei jei meyeta dekhechilam o r chilona okhane... pore onk koste ghumieachi...shokale ammu k bolate ammu bollo r a kichuna bole tmn kheyal korlona... pore hotath onk jor ashlo ... ak dadur kache pani pora keye thik holam .. ar por theke r aka ghumaini..

নিশীথ তৃষ্ণা

সেপ্টেম্বরের বিশ্রী এক সন্ধা।ঝিরঝির বৃষ্টি ঝরছে থামার কোন নাম নেই।একা বাসায় বসে থাকতে ভাল লাগছিল না।তাই বেরিয়ে পড়লাম।হাটতে হাটতে চলে এলাম হারবার রোডে কিছুটা এগোবার পরই চোখে পড়লো লারমা এনটিকস।দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলাম আধো আলো আধো অন্ধকারে গাদা করা বাকস মূর্তি চোখে পড়লো। শুভ সন্ধ্যা সিনর কিছু কিনবেন ছবি আংটি ফুলদানী? আমি বেটে মোটা লোকটার দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে বললাম না কিছু কিনতে আসিনি একটু ঘুরে দেখব। লোকটার মুখে কোন অভিব্যক্তি ফুটল না এমন জবাব শুনতে সে অবভসত।সে একটি শেলফের দিকে এগিয়ে গিয়ে একটি সুদৃশ্য পানপাত্র বের করে দেখিয়ে বলল এটা ষোড়শ শতাব্দীর মাল সিনর কেনার মত জিনিস বটে। বললাম কোন এনটিকস নয় বই থাকলে দেখাও। বলল যে আমার কাছে বইপত্র আছে এমন কিছু বইপত্র যা আর অন্য কারো কাছে পাবেন না। লারলা আমাকে তার দোকান ঘরের পিছন দিকে নিয়ে যেতেই একটা বই বোঝাই শেলফ আমার নজর কেড়ে নিল। প্রথম বইটি শেলফ থেকে নিয়ে নজর বেলাতেই বুঝলাম এটা একটা পিশাচ কাহিনী। যদি ঘুণাক্ষরে টের পেতাম বইটা আমার জন্য অচিরেই নিয়ে আসছে দুঃস্বপ্নের চেয়েও ভয়ংকর অভিজ্ঞতা ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলছি সঙ্গে সঙ্গে ওটাকে বর্জন করতাম আমি।কিন্তু হরর গল্পের প্রতি তীব্র আকর্ষণ আর বইটির কালো মখমলে মোড়া প্রচ্ছদ ও আমাকে আকৃষ্ট করল দারুণ ভাবে।

ভয় পাইবেন কিন্তু

লিখা: অজয় রহমান রাজশাহী। .....................। ঘটনাটি ঘটে আমার এক মামাতো বোনের সাথে এবং ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্যি। ঘটনাটি ২০০৭ সালের। আমার মামাতো বোনের নাম জাহানারা।বয়স ১৪ বছর। তখন ছিল গ্রীষ্মকাল।ঘটনা টি গ্রীষ্মকালের অন্যতম ফল আম কুড়ানোকে কেন্দ্র করে। আমাদের এখানে অনেক আম বাগান আছে।অনেক ছেলেমেয়ে প্রতিদিন দল বেঁধে খুব ভোরে আম কুড়াতো।তার ও আম কুড়ানোর প্রবল নেশা ছিল। তো সেইদিন রাত্রে জাহানারা তার ছোট বোনকে বললো আজ আমরা দুইজন সবার আগে খুব ভোরে আম কুড়াতে যাব। আমি যদি টের না পাই,তুই টের পেলে আমাকে ডাক দিস। তো রাত ৪ টার দিক তার ছোট বোন তাকে ডেকে বললো রাত তো প্রায় শেষের দিকে আম কুড়াতে যাবে না? তারা আর দেরি না করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। আম বাগানটি ছিল বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে ও বাগানটী ছিল অনেক বড় ও পুরনো। বাগানের একটা গাছ ছিল অনেক পুড়নো আর সেই গাছের আম গুলো অনেক ছোটছোট ছিল।কিন্তু সেই গাছের আম ই সবচেয়ে বেশি পড়তো।আম কুড়াতে কুড়াতে সেই বড় গাছের নিচে গিয়ে জাহানারা খুবই অবাক হয়ে গেল কেননা গাছের নিচে কেবল একটা আম ই পড়ে আছে তবে আমটি এ গাছের আমের তুলনায় অনেক বড়। তবুও সেটাকে পাত্তা না দিয়ে আমটি ধরতে গেল কিন্তু এরপর সে যা দেখলো তা অন্য কেউ দেখতে চাইবে না। সে যখন আমটি ধরতে গেল অমনি আমটি কিছুটা দুরে সরে গেল।এটা দেখে সে ভয় পেল কিন্তু ভাবলো হয়তোবা সে ভুল দেখেছে।আবার সে আমটি ধরতে গেল কিন্তূ এবারও ঐ একই ঘটনা।এবার ভয় তার মনে জেঁকে বসলো..কি হচ্ছে এসব।আবার যখন সে আমটি ধরতে গেল তখনি আমটি এমন একটা ভয়ঙ্কর আকরিতি ধারণ করলো যা দেখা মাত্র সে বেঁহুশ হয়ে গেল। ঘটনাটি এখানে শেষ হলেই ভাল হতো কিন্তু এরপর যা ঘটলো যা এক কথায় অবিশ্বাস্য। যখন আযানের সুর শুনে তার হুঁশ ফিরলো তখন সে গাছটির নিচে পড়ে আছে।আশেপাশে কেউ নেই এমনকি তার ছোট বোনকে খুঁজে না পেয়ে আরো ভীত হয়ে পড়লো এবং খুব দ্রুত পরিমরি করে বাড়ি ফিরে এসে দেখে তার বোন এখনো ঘুমুচ্ছে। সে তার বোনকে ডেকে তুললো আর বললো, কেন তাকে একা ফেলে চলে এসেছে সে? কিন্তু তার বোন কিছুই বুঝলো না।উপরন্তু জাহানারার হাতে আমের ব্যাগ দেখে সে বললো,আপু,তুমি একাই আম কুড়াতে গেলে,আমাকে ডাকও দিলে না। একথা শুনার পর আবারো সে বেঁশুস হয়ে পরে। সকাল থেকেই প্রচন্ড জ্বর আসে। এর কিছুদিন পরই সে মারা যায় কোনো কারণ ছাড়াই। ঘটনাটি আমি নিজে জাহানারার কাছ থেকে শুনেছি।

টুকরো টুকরো কিছু সত্যি ঘটনা

টুকরো টুকরো কিছু সত্যি ঘটনা যা ছোটবেলা থেকে আমার জীবনে ঘটে গিয়েছে আজ সেইগুলোয় আমি আপনাদের সাথে শেয়ায় করবো! আমার দাদুরা তিন ভাই! বড় দাদুর ছোট ছেলে যখন বিষ খেয়ে মারা যাই তখন আমি ক্লাস ফোরে পড়ি! দিনটা ছিল দূর্গাষ্টমীর দিন! বড় মামীর সাথে মতানৈক্যর ফলেই ছোট মামা বিষ খান! মামা মারা যাওয়ার পর ছোটমামি কর্মসূত্রে কোলকাতা চলে আসেন! তার পর থেকেই ছোট মামার বাড়িটি ফাকাই পড়ে থাকে! আমি ছোটথেকেই দাদুর বাড়ি থেকেই মানুষ! পড়াশুনা ওখানকার স্কুলেই করি! রোজ সন্ধ্যা বেলাই বাড়ি ফিরতে গেলে ছোট মামার বাড়ির সামনে দিয়েই আসতে হতো! আসার সময় শরীরটা কেমন ভারী ভারী লাগতো যাই হোক বাড়ির দিকে তাকাতাম না ! এর মধ্যে কেটে গেছে আরও পাঁচটা বছর তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি আমার তখন হিন্দী সেকেন্ড পেপার এর পরীক্ষা আগামী দিন! তাই প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে ! পড়তে পড়তে রাত্রি প্রায় তিনট বেজে গেছে এমন সময় বই থেকে মুখ তুলে জানালার দিকে তাকাতেই দেখি ছোটমামা জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে আছে! আমার তখন এমন অবস্থা যে আমি হাত পা নড়নোর ক্ষমতা টুকুও হরিয়ে ফেলেছি! দুই মিনিট এই ভাবে কাটার পর আম চোখ নিচে নামিয়ে নিই! পাশের রুমে দিদা শুয়ে রয়েছেন তবুও ডাকতে পারছিনা ! গলা দিয়ে আওয়াজ বেরুচ্ছেনা! কোনমতে গায়ত্রী জপ করতে করতে জানালাটা বন্ধ করে শুয়ে পড়ি চাদর মুড়ি দিয়ে রাম নাম জপতে জপতে শোবার খানিকটা পরে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ি ! খানিক ক্ষণ পরে কারোর পায়ের আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় চাদর টা একটু ফাক করে দেখি ছোটমামা একটা ফাঁসির দড়ি আমার মুখের সামনে ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ! জীবনে যত মন্ত্র জানতাম সব একে একে জপতে শুরু করি! ভয়ে সংগা হারিয়ে ফেলি! সকাল বেলায় চেতনা ফিরলে দিদা দাদুকে সব খুলে বলি ! দাদু আমাদের কুল গুরুকে ব্যাপার টা জানালে তিনি গয়ায় পিন্ড দানের কথা বলেন! ,,,,, আমাকে মন্ত্র দিয়ে শুদ্ধিকরন করেদেন.... এর পর মামাকে আমি আর দেখিনি! এটা আমার প্রথম লেখা এই গ্রুপে ,,,, কোন বাজে কমেন্টস্ করবেন না ভালোলাগলে জানাবেন ! তাহলে অন্য ঘটনা গুলো শেয়ার করবো!

কাল্পনিক ভুতের গল্প

এক লোক রাতের অন্ধকারে একা জঙ্গলের পথধরে বাড়ি ফিরছিল। হাতে টিমটিম করে জ্বলা হারিকেন। চলতে চলতে হঠাৎ সে লক্ষ্য করলো - হারিকেনের আলো পড়ে রাস্তার পাশে কি যেন ঝিলিক দিয়ে উঠলো। কৌতুহলী হয়ে লোকটা এগিয়ে গেল সেই দিকে। গিয়ে দেখল এক তরুনী মেয়ের লাশ পড়ে আছে। সে ভয় পেলেও ঠিকই দেখলো মেয়েটির ডান হাতের মধ্যম আঙুলে একটি হীরার আংটি জ্বল জ্বল করছে। একটু ইতস্তত করে সে হারিকেনটা পাশে নামিয়ে রেখে লাশেরআঙুল থেকে আংটিটা খোলার চেষ্টা করলো। কিন্তু আঙুল ফুলে ওঠায় কিছুতেই ওটা খুললো না। লোকটা তখন তার পকেট থেকে একটি ছুরি বের করলো। তারপর সেই ছুরি দিয়ে পুচিয়ে পুচিয়ে লাশের আঙুলটা কেটে ফেলল। ঠিক তখনই রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে কাছাকছি কোথাও একটা শেয়াল ডেকে উঠলো। লোকটা প্রচন্ড ভয় পেয়ে ঐ আঙুল সহ আংটি পকেটে পুরে ছোটা শুরু করলো। এক ছুটে বাড়িতে এসে কাউকে কিছুনা বলে সে ঐ রাতেই চুপে চুপে আঙুল থেকে আংটি ছাড়ালো। তারপর আংটিটা লুকিয়ে রেখে আঙুলটা পুঁতে ফেলল মাটিতে। এরপর অনেক দিন প্রায় দশ ববছর কেটে গেছে। ঐ আংটিটা বেচে ব্যাবসা করে লোকটা এখন অনেক টাকার মালিক। লোকটা সেই মেয়েটির কথা প্রায় ভুলে গেছে। এক অমাবস্যা রাতে সে তখন বাড়িতে একা। চারিদিকে শুনশান নিরবতা। হঠাত্ বাইরে দরজার কড়া নড়ে উঠলো - খট্ খট্ খট্ খট্। সে একটু বিরক্তি নিয়ে গিয়ে দরজা খুললো। দেখলো দরজার সামনে শাদা শাড়ি পড়ে এক তরুনী দাঁড়িয়ে আছে। মাথায় ঘোমটা দেয়া থাকলেও তাতে তার রূপ ঢাকা পড়ছে না এতটুকু। লোকটা গদ গদ হয়ে প্রশ্ন করলো - কি ব্যাপার ? কাকে চান? তরুনী কেমন খসখসে গলায় বলল - ভাই আমি অনেক দূর থেকে এসেছি। যাবো আপনাদের পাশের গ্রামে। কিন্তু এতরাতে অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলেছি। এদিকে প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে। আমাকে যদি আজরাতে একটু আশ্রয় দিতেন, একটু খাবার দিতেন! লোকটা যেন এমন সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। বাড়িতে সে একা তায় আবার এমন সুন্দরী মেয়ে। সে বলল - আসুন আসুন, কোন চিন্তা নেই। সব ব্যবস্থা হবে। সে মেয়েটিকে বসতে দিয়ে খাবার নিয়ে এল। মেয়েটি খাবারের থালা টেনে নিয়ে খাবার মাখাতে লাগলো। লোকটা তখন লোভাতুর চোখে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ সে চমকে উঠলো। দেখলো মেয়েটি যে হাত দিয়ে খাবার মাখাচ্ছে সে হাতে চারটি আঙুল। মধ্যমা আঙুলটা যেখানে থাকার কথা সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। লোকটির আত্মা কেঁপে উঠলো। সে ভয় পাওয়া গলায় জানতে চাইলো - আ..আপনার হাতের আঙুলের কি হয়েছে!? তখনই মেয়েটা সরাসরি লোকটার দিকে তাকিয়ে একটা বিকট হাসি দিল। যা দেখে লোকটা প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল। এবং ভয়ের একটা অদ্ভুত শিরশিরানি তার মেরুদন্ড বেয়ে নেমে গেল। মনে হল মেয়েটাকে সে কোথাও দেখেছে। তখনই মেয়েটা কথা বলে উঠলো, আপনিই তো জানেন আমার আঙুলের খবর। লোকটা ভয়ে ভয়ে বলল মানে? মেয়েটা ভয়ংকর একটা হাসি দিয়ে বলল মনে পড়ে আজ থেকে দশ বছর আগে রাস্তার পাশে একটা মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছিলেন? আপনি লাশের মূল্যবান অলংকার গুলো নিয়ে সরে পড়েছেন সাথে লাশটার মধ্যমা আংটির জন্য আঙুলটাও। মনে পড়ে আপনার? আপনি যদি লোকজনকে লাশটার কথা অন্তত বলতেন তাহলে অন্তত শিয়াল কুকুর একটা মুসলিম, অসহায় এবং পরিস্থিতির শিকার মেয়ের লাশ চিড়ে চিড়ে খেতোনা। আপনিইতো আংটির লোভে লাশটার একটা আঙুল পর্যন্ত কেটে ফেলেছেন। এখন আমায় ঐ আঙুলটা দিন। মধ্যমার আঙুল না থাকলে কত যে অশুবিধা সেটা বলে বোঝানো যাবেনা। তখনই লোকটার দশ বছর আগে দেখা লাশের চেহারাটার কথা মনে পড়ে গেল। এই মেয়েটার লাশ থেকেইতো সে ঐ আংটিটা পেয়েছে। তাহলে এ এখানে এলো কোথ্যেকে? আর কিছু ভাবতেই পারলোনা তার আগেই জ্ঞান হারালো। সকালে বাড়ির লোকজন ফিরে এসে অনেক ডাকাডাকি করেও দেখলো যখন কেউ দরজা খুলছেনা তখন দরজা ভেঙে বাসায় ডুকে দেখে লোকটার নিস্তেজ দেহ। যেনো প্রবল আতঙ্কে হা হয়ে আছে। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে বলে অতিরিক্ত মানষিক চাপের ফলে স্ট্রোক করে মারা গেছে। আর লোকটা যেখানে ঐ আঙুলটি পুঁতে রেখেছিলো সেখানে কেউ যেনো মাটি খুড়ে রেখে গেছে। আসল ঘটনাটা কেউ বুঝতেই পারলোনা এটা যে লোকটার পাপের শাস্তি। সম্পাদিত কেমন লাগলো গল্পটা অবশ্যই জানাবেন। সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

আদমখোর

ঘটনাটি এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা।একদিন তাদের এলাকার এক জেলে শেকেরচর নামক স্থানে এক কবরস্থানের পাশের খালে মাছ ধরতে যায়।সেদিন তার স্ত্রীর সাথে একটু ঝগড়া হয় তাই ছোটা ছেলেটাকে সাথে নিয়ে যায়।সেদিন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো চারপাশে পৈচাশিক নিরবতা।এক সময় তারা দেখলো খালের ঐ পাশে দুজন আলেম টাইপের লোক তাদের ডাকছে খাল পাড় করে দিতে।তো জেলে তাদের জিঞ্জাসা করে তারা কোথায় যাবে।তারা বলে কবরস্থানে তাদের কাজ আছে এবং কবরস্থানের পাশে মাছ ধরতে নিষেধ করে।কিন্তু জেলে তাদের কথা উপেক্ষা করেই মাছ ধরছিলো।এক পর্যায়ে তাদের চোখ যায় কবরস্থানে এবং তারে দেখে ঐ দুজন লোক কবরের এক লাশ ভিবত্‍স ভাবে খাচ্ছে আর লাশের পচা গন্ধে চারপাশ ভরে আছে।তাদের দেখে ঐ দুজন একটি মরা মানুষের অঙ্গ তদের নৌকায় ছুড়ে মারে এবং তাদের খেতে বলে।এ দৃশ্য দেখে ছোট ছেলেটি ঞ্জান হারায়।জেলেও অনেক ভয় পায় এবং বাড়িতে ফিরে আসে।তো রাতে আর কারো সাথে তারা এ ঘটনা শেয়ার করেনি।সকালে তাদেরকে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

[[বারান্দায় কিছু একটা হাটছে (দ্বিতীয় পর্ব )]]

অরুনের লাশ কবর দিয়ে আসছিলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে । অরুন আমার অনেক কাল আগের বন্ধু । সে আর আমি কত জায়গায় ঘুরেছি তার আমার বহু স্মৃতি মনে পরে কষ্ট হতে লাগল । রাত দশটায় আমি বাড়ী ফিরে সিড়ি বেয়ে উঠার সময় খেয়াল করলাম পাশের বাড়ীর একটি বিড়াল আমার পিছন পিছন উঠতে লাগল । আমার ফ্ল্যাট তিনতলায় । ফ্ল্যাট এর দরজা খুলে ভেতরে তাকাতেই এক তীব্র ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল। আমার রুম পুরো অন্ধকারে ডুবে আছে । পাশের বাড়ী থেকে কিছু আলো এসে পরেছে আমার রুমে
আর এই অস্পস্ট অদ্ভুদ আলোতে স্পস্ট দেখলাম আমার শোয়ার ঘরের সিলিং ফ্যানটায় ঝুলে আছে অরুনের লাশ । আচমকা ভয়ে কাপতে কাপতে ভয়ে দৌড়ে নিচে নেমে ,গেটের কাছে এসে হাপাতে লাগলাম দাড়োয়ান দৌড়ে এসে বলল
-আরে ভাইজান কি হইছে
-লাশ!
-লাশ?কোথায়?
-আমার রুমে ।
দাড়োয়ান পানি দিয়ে বললো
-লন পানি খান । আর কি হইছে খুইলা কন।
-রুমের দরজা খুলে দেখি ,সামনের রুমে যে ফ্যানটা তাতে রশি পেচিয়ে কেউ একজন ঝুলে আছে।
-কন কি ?চলেন তো আমার সাথে । ফ্ল্যাটে এসে দেখি কিছুই নেই। দাড়োয়ান হাসি দিয়ে বলল বেহুদায় ভয় পাইছেন । দাড়োয়ান চলে গেলেও আমি ভেতরে ঢেকতে সাহস পেলাম না। আধ ঘন্টা পর যখন ঢুকলাম তখন আগের ঘটনাটা নিজের কাছে হাস্যকর মনে হল। রাতে আরেকবার গোসল করে না খেয়েই ঘুমিয়ে পরলাম ।
গভীর রাতে ঘুম ভেংগে গেল । আমার ঘুম এত সহজে ভাংগে না। তার মানে কিছু একটা হয়েছে । ভাল করে কান পেতে কিছু একটা শুনতে চেষ্টা করলাম । হঠাত মনে হল কিছু একটা নিশব্দে হাটছে আমার বিছানের চারপাশ দিয়ে । মশারির জন্য ভালো করে কিছুই দেখতে পারছি না । তবুও মনে হল ঘন অন্ধকারে কিছু একটা নড়াচড়া করছে । তীব্র ভয় আমাকে গ্রাস করলো। এত তীব্র ভয় আগে কখনো পাইনি । ঘরে বাতাস নেই ,ফ্যান বন্ধ তবুও আমি স্পস্ট দেখলাম আমার মশারি নড়ে উঠল । হঠাত পায়ের কাছে মশারির দিকে আমার নজর গেল আর আতংক নিয়ে দেখলাম সেখানে মানুষের মুখ দেখা যাচ্ছে । অনেক খানি জিভ বের হয়ে আছে। পুরো মুখে কালো রক্ত । জ্ঞান হারানোর পুর্বে টের পেলাম মানুষ পচা দূর্গন্ধ আমার রুম জুড়ে ছড়িয়ে আছে।
গভীর রাতে এখনো ঘুম ভেংগে যায় । তাকিয়ে থাকি অন্ধকারে কিছুই দেখিনা তবুও মনে হয় আমার দিকে । ভয়ানক কিছু হওয়ার দিন গুনছি । বারান্দায় কিছু একটা হাটছে । বার বার পদশব্দ শোনা যাচ্ছে ,আর কিছু ফিসফিস শব্দ । এভাবে দিন দিন চলতে থাকে আমার। মাস খানেক পর যা ঘটে মনে হয় পাঠক বিশ্বাস করবেন না । যে ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না ।সে ঘটনায় অরুনের মৃত্যুর রহস্য বেড়িয়ে আসে। তবে এখন আর লিখব না। যা আপনাদের কমেন্ট এর উপর নির্ভর করে তৃতীয় পর্বে লিখব । সবাই ভালো থাকবেন।।

(বারান্দায় কিছু একটা হাটছে (প্রথম পর্ব)

সেদিন বিকেলের ট্রেনেই আমরা ঢাকা রওনা দিলাম । অরুন সকাল থেকেই মন গম্ভীর করে রেখেছে আমার সাথে কোন কথা বলছে না। অরুন এমনিতে হাসি খুশি থাকে। এমন গম্ভীর মুখ তাকে কখনো দেখিনি। আমি অনেক বার তাকে জিজ্ঞাস করেছি সে একবারো উত্তর দেইনি।
রাত তখন আট্টা কি নয়টা । আমি আর অরুন ট্রেনের করিডোরের সামনে বসেছি। ট্রেনের কামড়াটা অপেক্ষাকৃত নির্জন। ট্রেনের সকল বাতি আগে থেকেই নিভানো । পাশের জানালা খোলা । জানালা দিয়ে শীথল হাওয়া ঢুকছে। চাদের আলো খানিক টা এসে পরেছে অরুনের মুখে। আর এতেই আমি তাকে আবছা ভাবে দেখছি । এ অদ্ভুদ পরিবেশে অরুন আমার দিকে ফিরে আচমকা বলল । আচ্ছা শহিদ তুই আত্মায় বিশ্বাস করিস । আলো ছায়াময় সেই নির্জন ট্রেনের কামরায় এমন প্রশ্ন শুনে শিউরে উঠে বলি । না আমি বিশ্বাস করি না । হঠাত এ প্রশ্ন করলি যে । অরুন কিছুক্ষন চুপ করে থেকে কি যেন ভাবতে লাগল ।
তাহলে শোন ,
তোকে একটা ঘটনা বলি । অনেক দিন আগে মধুপুর গ্রামে দুজন মানুষ মারা যায় । একজন কে মসজিদের পাশে আমগাছে ফাসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় । এর মাস খানিক পরে একি গাছে ফাসি দিয়ে আত্মহত্যা করে । গ্রামঞ্চলে এ নিয়ে খুব তোলপাড় হয় । তখন থেকে গ্রামের মানুষ এই গাছ টি এড়িয়ে চলে। পারতপক্ষে কেউ রাতে ভুলেও আমগাছটির তলা দিয়ে যাইনা । আমি গতকাল রাতে নামাজ পড়ে গাছটির নিচ দিয়ে যাচ্ছিলাম । তখনো অন্ধকার কাটেনি । চাদের আলো হয়ত ছিল কিন্তু আমি যখন যাচ্ছি তখন ঘোর অন্ধকার । এমনিতে আমি খুব সাহসী কিন্তু আমগাছের তলা দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম ,তখন খেয়াল করলাম আমি আসলে ভয় পাচ্ছি । সম্পূর্ন বিনা কারনে ভয় । নির্জন একটা রাস্তা দিয়ে গেলে যে কেও ভয় পেতে পারে। কিন্তু আমার ভয় টা সম্পূর্ন অন্যরকম । আমার মনে হল আমগাছ টির গোড়ায় কিছু একটা দাড়িয়ে আছে । আমি কিছুই দেখিনি । তবুও মনে হল কিছু একটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে । তার অস্তিত্ব নেই শরীর নেই ,কিছুই নেই তবুও মনে হল কিছু একটা আমার পাশে আছে। ঠিক তখনি অন্ধকারে দেখলাম ঠিক মানুষ বলা যায় না । তবুও অনেক টা মানুষের অবয়ব আম গাছে গোড়ায় দাড়িয়ে আছে। তখন এক জান্তব ভয় আমাকে গ্রাস করল। এমন তীব্রভয় আমি আগে কখনো পাইনি। আমি খেয়াল করলাম আমার পা কাপছে। আমি এক চিতকার দিয়ে মসজিদের বারান্দায় এসে অজ্ঞান হয়ে যায় । তারপর কি হয় জানিনা । জ্ঞান ফিরলে দেখি মসজিদের বারান্দায় শুয়ে আছি আর অনেক মানুষ ভিড় হয়ে আছে ।
এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে অরুন হাপাতে লাগলো । আমি প্রচন্ড ভয়ে হারিয়ে ফেলেছি । সেদিন ট্রেনে অরুনের সাথে আর কথা হয়নি । অরুন সাড়া পথেই কি ভাবছিল।
রাত তিনটায় যখন ট্রেন ঢাকাই পৌছায় তখন ট্রেন থেকে নেমে শুধু বলল যাই। পরে দেখা হবে অরুন থাকে মগবাজারে ,তার বাবা মাকে নিয়ে । আর আমি থাকি মালিবাগে । একা একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে । বাসায় ফিরে সেদিন আর ঘুমোতে পারিনি। বই পড়ে ,আলো জ্বালিয়ে কোন রকম রাত পার করলাম ।
কিছুদিন পর প্রচন্ড কাজের চাপে অরুনের গল্প ভুলেই গিয়েছিলাম । মধুপুর যাওয়ার এক সপ্তাহ পরে হঠাত অরুন আমাকে ফোন করে উদভ্রান্তের মত বলে দোস্ত তুই আমাকে বাচা
কেন কি হয়েছে ?
-আমি বোধ হয় পাগল হয়ে যাচ্ছি ।
-কি হয়েছে খুলে বল । সেদিন গভীর রাতে মধুপুর থেকে ফিরে ,ট্রেন স্টেশন থেকে একটা রিক্সা নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম রিক্সাটা চলতে চলতে যখন অন্ধকার গলিতে ঢুকলো ,ঠিক তখনি আমার মনে হল কিছু একটা আমার পাশের খালি জায়গায় বসে আছে। অনুভূতি টি এতই তীব্র যে আমার পাশে একঝলক তাকিয়ে দেখলাম । সেখানে কিছুই নেই । আমি বুঝতে পারলাম এটা আমার মনের ভুল । আম্র মনে এক অদ্ভুদ চিন্তা আসল ,মধুপুরের ভয়ানক কোনকিছু আমার সাথে করে নিয়ে আসেনি তো । মন থেকে যত ই চিন্তাটা ফেলে দিতে চাইলাম ততই তা ঝাকিয়ে বসলো । রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে যখনি আমাদের বাড়ির গলিতে ঢুকলাম তখনি ওই টাকে দেখলাম সামনেই অন্ধকারে দাড়িয়ে আছে । তার চোখ মুখ হাত পা কিছুই নেই। মনে হল আমার দিকে চেয়ে আছে। তার মুখে ত্রুটির হাসি । আমি দৌড়ে বাড়ির গেটে যেয়ে দাড়োয়ান কে ডাকতে থাকি । দাড়োয়ান আমাকে ধরে নিয়ে রুমে দিয়ে আসে। এতকথা অরুন একনাগাড়ে বলে হাপাতে লাগল।
আমি বললাম এসব তোর কল্পনা । চিকিতসা নিলে মনে হয় ঠিক হয়ে যাবে ।
-প্রথমে আমিও তাই ভেবেছিলাম । তিনজন সাইক্লোজিস্টের সাথে দেখা করে ছিলাম সব বলেছি কিন্তু তারা কিছুই করতে পারেনি । এখন আমি তাকে আমার রুমে দেখি .কিছু একটা হাটছে আমার রুমে । ঘর অন্ধকার হলেই প্রায় দেখি মশারির ওপাশে কিছু একটা দাড়িয়ে আছে । তাই এখন বাতি জ্বালিয়ে ঘুমাই।
আমি বললাম -ঠিক আছে তোকে আর কিছু সাইকিয়াট্রিস্টে
র ঠিকানা দিচ্ছি তুই গিয়ে দেখা করে আয়।
ঠিকানা নিয়ে অরুন ফোন রেখে দেয়।
আমার দেয়া ঠিকানাতে গিয়েছিল কিনা ঠিক জানি না। কিন্তু মাসখানেক পর অরুন যখন তার রুমের ফ্যানে ফাস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে তখন খুবই অবাক হলাম । বহু কাজের মধ্যেও তার জানাযায় গেলাম । সেদিন তার বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাদলেন অনেকক্ষন । কেন অরুন আত্মহত্যা করেছে তা কেও বলতে পারেনি। তবে শেষের দিকে অরুন গভীর রাতে কে কে বলে চেচিয়ে উঠত আর একা একা কথা বলত । (ঘটনাটি এখানে শেষ হতে পারতো কিন্তু আমিও নিজেও এ ঘটনায় জড়িয়ে গেলাম । আপনাদের দ্বিতীয় পর্বে বলব । কারা শুনতে চান দয়া করে জানাবেন । কেন না এই ঘটানা আসলেই সত্যি আপনারা পড়লেই লিখা সার্থক হবে।

করুণ মৃত্যু (একটি ভৌতিক গল্প)

থার্টি ফার্স্ট নাইট।। রোহান ও তার কয়েক
ফ্রেন্ড মিলে রাত ২ টা পর্যন্ত মজা করলো।।
এখন হলে ফেরার পালা।। তারা মানুষ ৭ জন
কিন্তু রিকশা পেলো দুটো।। ২ রিকশায় না হয়
৬ জন হল, কিন্তু রোহান??
ফ্রেন্ডরা তাকে বলল, “চল রোহান, এক
রিকশায় ৪ জন উঠে পড়ি।।”
“নাহ রে।। তোরা যা।। আমি আসতে পারব।।”
রোহানের উত্তর।।
চারিদিকে নিস্তব্ধতা।। খুব দূরে একটা কুকুর
মতন কিছু দাঁড়িয়ে আছে।। খোলা আস্কাহের
নিচে অন্ধকারকে সাথি করে হাঁটছিল
রোহান।। হটাৎ একটা রিকশা দেখতে পেলো।।
“ভাই, হলে যাবেন??”
“জী যামু।।”
“কত??”
“১০ টাকা দিয়েন।।”
রোহান আকাশ থেকে পড়লো।। এতো রাত,
কোন রিকশা নেই, তবুও ২০ টাকার জায়গায়
১০ টাকা রিকশা ভাড়া চাইলো!!
যাই হোক, রিকশায় চড়ে বসলো রোহান।। এই
শুনশান নিরবতার মাঝে শুধু রোহান আর
রিকশাওয়ালা।।
গোরস্থানের সামনে দিয়ে যাবার সময়ই
রোহান কেমন যেনও আঁতকে উঠলো।। সে যা
দেখল টা অবিশ্বাস্য।। দেখল, রিকশাওয়ালা
উল্টো পায়ে প্যাডেল চাপছে।।
রিকশাওয়ালার মুখের দিকে এই পর্যন্ত
একবারও তাকায়নি সে।। চেহারা দেখার
চেষ্টা করতেই আবারো আঁতকে উঠলো
রোহান।।
“একি!! এ কি দেখছে সে?? এ কিভাবে
সম্ভব??”
এর মাঝে হলে পৌঁছে গেছে রোহান।।
টাকাটা দিয়ে দ্রুত কেটে পড়লো।।
রিকশাওয়ালার দিকে আরেকবার তাকানোর
সাহস হল নাহ।। তাকালে হয়তো দেখতে পেত
তাকে কেমন লোভী চোখে দেখছে
রিচকশাওয়ালাটা!
!
রুমে গিয়ে সাকিবকে সব ঘটনা খুলে বলল
রোহান।।
সান্তনার সুরে সাকিব বলল, “তুই বরঞ্চ আজ
রাতটা আমার রুমে থেকে যা।।”
কথাটা মনে ধরল রোহানের।। রাজি হল সে।।
মধ্যরাত।।
রোহান, সাকিব দুজনই ঘুমুচ্ছে।। এর মাঝে কে
যেনও রোহানের গায়ে আঁচড় কাটল।। চমকে
উঠে জেগে গেলো রোহান।। ভীত স্বরে বলল,
“সাকিব, মাঝরাতে দুষ্টমি করিস নাহ তো।।”
সকালে সূর্যের আলো চোখের উপর পড়তেই ঘুম
ভাঙ্গে সাকিবের।। কিন্তু ঘুম থেকে উঠার
সাথে সাথেই আবার মূর্ছা গেলো সে।।
বেলা ১০ টা।। সাকিবের রুমের সামনে
অগনিত ছাত্রের ভিড়।। সাকিবের রুমে
রোহানের ছিন্ন বিচ্ছিন লাশ ঝুলছে।। আর
রোহানের কাঁটা মুণ্ডুটা সাকিবের টেবিলের
উপরেই রাখা।। কেউ জানে না রোহানের
মৃত্যুটা কিভাবে হল।।
কাঁটা মুণ্ডুটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে
তাকিয়ে আছে সাকিব।। অনেক দিনের বন্ধু
ওরা।। অনেক দিনের।।

মিরপুরে ভৌতিক ঘটনা

আমার নাম প্রিন্স।মিরপুরে
থাকি। আমি
এই প্রথম
কোন ঘটনা লিখে পাঠাচ্ছি।আমার ভূতের
কাহিনি
ভাল লাগে।তাই আমিও একটা পাঠালাম।
আশা করি
ভাল লাগবে।তাই ঘটনাটা অনুগ্রহ পূর্বক
পোস্ট
করবেন।
আমাদের গ্রামেরই অনেক দিন আগের
একটা ঘটনা।
প্রায় ১৮/২০ বছর। গ্রামে অনেক বেশি
জিন
সম্পর্কিত ঘটনা শোনা যায়।আমিও এটা
শুনেছি আমার
বড় ফুফুর কাছ থেকে।এবার ঘটনাটা বলি।
আমাদের বাড়ি থেকে ৬/৭ বাড়ি পরেই
ছিল আমাদের
পরিচিত আব্দুল লতিফ সাহেবের বাড়ি।
তখন উনি
জোয়ান ছেলে।উনি প্রায়ই অনেক রাত
করে বাড়ি
ফিরতেন। তো এমন একদিন উনি রাতে
(প্রায় ১২টা)
বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। গ্রামে
তো একেক
দিন একেক জায়গায় হাট বসে। ঐদিনের
হাট টা
কিছুটা দূরে ছিল। আর সেদিন প্রায় শেষ
পর্যন্ত
হাটে ছিলেন,তারপর আবার বন্ধুদের সাথে
আড্ডা
দিয়ে একা ফিরছিলেন।দেরী হওয়ায়
ভাবলেন,শর্টকাট রাস্তা দিয়ে যাবেন।
সে পথে
একটা বড় বাঁশঝাড় পড়ে।রাতের বেলা
ওখানে অদ্ভুত
অনেক কিছু হয় বলে সাধারণত কেউ ও পথে
যেতনা।
উনিও তা জান্তেন,তাও ঐদিন
যাচ্ছিলেন। সেদিন
কিছুটা পূর্নিমা ছিল।তো উনি যখন
বাঁশঝাড়ে প্রবেশ
করেন,হঠাৎ ঝাড়ের দক্ষিণ দিক থেকে
একটা ঠাণ্ডা
হাওয়া এসে গায়ে লাগে।তখন আবার
শীতকাল ছিল।
তাও উনার কাছে কেন জানি কিসের
একটা খটকা
লাগে।কি মনে করে চারিদিকে একবার
তাকান,আশেপাশে কেউ ছিলনা।উনি
হাঁটতে থাকেন।
কয়েক মিনিট পর হঠাৎ তার বাম পাশের
ঝাড়ের একটু
ভেতরের দিকে কয়েকটা বাঁশ খুব জোরে
২,৩টা
ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যায়।উনি একটু চমকে
যান।কিন্তু
না থেমে হাঁটতে থাকেন।একটু পর আবার
তার পাশে
ঝাঁকুনি।এবার একটু বেশিই।তো উনি সাহস
করে
জিজ্ঞেস করেন,কে? কোন উত্তর নেই।
এবার একটু ভয়
পেয়েই হাঁটতে থাকেন,তখনি সামনে একটু
দূরে একজন
সাদা দাড়ি,হাতে তাজবিহ,সাদা টুপি
জোব্বা পরা
একজন লোক উনার দিকে আসতে থাকেন।
কিন্তু একজন
মানুষ হেঁটে আসলে তার গায়ে যেমন
একটা অসম
উঠানামা বা নড়াচড়া বোঝা
জায়,উনাকে দেখে তা
বোঝা যাচ্ছিলনা।মনে হচ্ছিল,সমানভাবে
ভেসে
আসছেন।পা কি মাটিতে ছিল কিনা তাও
বোঝা
যাচ্ছিলনা।কাছে আসতে
দেখলেন,আসলেই ভাসমান!
এমনটা দেখেই উনি ভয়ে ওখানেই থমকে
দাঁড়িয়ে
যান।লোকটি কাছে এসে বললেন,“তুই এ
পথে আর
কোনদিন যাবি না।এখানে অনেক খারাপ
জিন থাকে।
এরপর আর কোনদিন গেলে তোর অনেক
ক্ষতি হয়ে যেতে
পারে।” উনি তো ভয়েই কাঁপছিলেন।
লোকটি
বলল,“যা,সোজা বাড়ির দিকে হাঁটতে
থাকবি।
সাবধান!পেছনে তাকাবিনা।” বলেই উনি
আবার
আগের মত ভাসতে ভাসতে চলে গেলেন।
একটু সামনে
গিয়েই মনে হল অদৃশ্য হয়ে গেলেন!আর
দেখা গেলনা।
উনি তাও ভয়ে কিছুক্ষণ অভাবেই দাঁড়িয়ে
ছিলেন,হঠাৎ হুশ হতেই উনি খুব তাড়াতাড়ি
হাঁটতে
লাগলেন।ঝাড়ের প্রায় শেষের দিকে
আসতেই উনার
চাদরে পেছন থেকে টান লাগলো আর মনে
হল অনেক
দূর থেকে মেয়েলি কণ্ঠে কে যেন
বলছে,এই লতিফ...তুই
যাবিনা...তোর দাদা আমার অনেক ক্ষতি
করেছে...আজ
তোকে পেয়েছি...দাঁড়া...(উনার দাদা
জিনদের
বেপারে অনেক কিছু করতেন,উনার জিন
ছাত্রও ছিল)।
উনি এরকমটা শুনে তখন জোরে দৌড়াতে
লাগলেন।
বাড়ির উঠানে আসতেই নিহাজ...(তার
ভাই)বলে ডাক
দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন।এরপর
টানা প্রায় ১
সপ্তাহ উনার খুব জ্বর ছিল।আর বাড়ি
আসার পর উনার
গায়ের চাদরটা ছিলনা।পরদিন ঐ ঝাড়ে
গিয়ে
খুঁজতেই দেখা গেল,চাদরটা ১টা অনেক উঁচু
বাঁশের
আগায় ঝুলছে!এত উঁচুতে ঐ বাঁশের আগায়
ওভাবে
চাদরটা ঝুলানো কোন মানুশের পক্ষে
অসম্ভব!আর পরে
জানা গিয়েছিল যে,ঐ লোকটি(জিন)
ছিল উনার
দাদারই ছাত্র।ঐ রাতেই দাদাকে এসে
বলে
গিয়েছিল।এরপর থেকে ঐ পথে রাতে তো
দূরে
থাক,দিনেও অনেকদিন পর্যন্ত কোন মানুষ
চলাচল
করেনি।
পাটিয়েছেনঃ Prince [প্রিন্স]

পেত্নীর প্রেম

-তোমার ভয় করছে না ?
নীলির কথা শুনে আমি খানিকটা হেসে
দিলাম । বললাম
-আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে আমার ভয়
করছে ?
নীলি কিছু না বলে কেবল আমার দিকে
তাকিয়ে রইলো । জানালার ওপাশটা
বেশ অন্ধকার । আমি নীলির চেহারা
পরিস্কার বুঝতে পারছি না তবে কেন
জানি মনে হল ও গভীর চোখে আমার
দিকে তাকিয়ে আছে । ওর চোখ একটা
বিশ্ময় কাজ করছে ।
কে বলে যে কেবল মানুষেরাই বিশ্মিত
হতে পারে !! অশরীরীরাও যে বিশ্মিত
হতে পারে তা নীলির চেহারা না
দেখলে আমি ঠিক মত বুঝতে পারতাম
না !
নীলি জানালা ভেদ করে আমার ঘরে
চলে এল । যেমন করে আমরা দরজার পর্দা
সরিয়ে ঘরে ঢুকি ঠিক সেভাবে ।
ব্যাপার টা এমন যেন খুব স্বাভাবিক
একটা ঘটনা । অন্য কেউ হলে এতোক্ষনে
মনে হয় চিৎকার চেঁচামিচি করে কানের
পর্দা ফাটিয়ে ফেলতো আমি নিজেকে
সামলে নিলাম । তবে এই সামলে
নেওয়াটা এমনি এমনি হয় নি !
এখানে ভাড়ায় এসেছি খুব বেশি দিন হয়
নাই । প্রথমেই যখন এখানে ভাড়ায় আসি
ঘর ভাড়া শুনে একটু অবাকই হয়েছিলাম ।
তার উপর আমি ব্যাচেলর জেনেও
আমাকে যখন ভাড়া দিতে রাজি হয়ে
গেল তখন আসলেই একটু অবাক না হয়ে
পারলাম না !
এমন ফ্যামিলি বাসায় সহজে বাড়ির
মালিকেরা ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া
দিতে চায় না ! অন্য সব ফ্লোর গুলো
ভাড়া দেওয়া কেবল এই ফ্লোরে কেউ
নেই । তখন অবশ্য কোন প্রকার সন্দেহ হয়
নাই ।
আমি নিশ্চিন্তে উঠে গেলাম । সব থেকে
বড় সুবিধা হল আমার অফিস থেকে বাসা
টা থেকে একদম কাছে । হেটে যাওয়ার
দুরুত্বে । কদিন ভালই কাটছিল । কেবল
সমস্যা ছিল যে রাত হলেই আমার ঘর টা
একটু বেশি ঠান্ডা হয়ে যেত । ভালই হত
যে প্রচন্ড গরম ছিল বাইরে কিন্তু আমি
এসি চালু না করেও ঠান্ডার আরাম
পেতাম ।
আরেক টা ব্যাপার যে বাড়ির মালিক
প্রতিদিন সকালে এসে আমার খোজ খবর
নিয়ে যেত । আমার কোন সমস্যা হচ্ছে
কি না কিংবা আমি ভাল আছি কি না !
কথা বলার সময় বাড়িওয়ালার চেহারায়
একটা অন্য রকম দুষ্চিন্তার ছাপ দেখতে
পেতাম । তবে আমি যখন বলতাম কোন
সমস্যা নেই তখন ভদ্রলোকের চেহারা
দেখে মনে হত যেন বুকের ওপর থেকে ১০
মণের একটা পাথর সরে গেল ।
আমার তারপর থেকেই খানিকটা সন্দেহ
তৈরি হল । এখন সন্দেহ তৈরি হলেই তো
বাড়ির মালিকের কাছে গিয়ে বলা যায়
যে আঙ্কেল আপনার বাড়িতে কি কোন
ভুত আছে ! আর জানতে চাইলেই উনি
কেনই বা বলবেন ? তার উপরে বাড়ি
থেকে চলে যেতে বলতে পারেন । আমি
কেন এতো চমৎকার জায়গা ছাড়বো !!
তবে একদিন পাড়ার দোকানের কাছে
জানতে চাইলাম । প্রথমে তো ব্যাটা
বলতেই চায় না । তবে আমি ঐ ফ্ল্যাটে
দুই সপ্তাহের উপরে আছি এবং
নিশ্চিন্তে আছি দেখে দোকানদার বেশ
অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো ।
তারপর গলা নীচ করে যা বলল তার
সারমর্ম হল আমি যেই ফ্ল্যাটে থাকি
সেই ফ্ল্যাটে নাকি একটা ভুত থাকে ।
ঠিক ভুত না মহিলা ভুত । সোজা ভাষায়
পেত্নী ! মেয়েটার নাকি ওখানে মারা
গিয়েছিল । মেয়েটার নাম ছিল নীলি !
এর আগে ঐ ফ্ল্যাটে কেউ নাকি এক
সপ্তাহের বেশি থাকতেই পারে নাই ।
আমি সপ্তাহ দুয়েক কিভাবে আছি এই
নিয়ে তার বিশ্ময়ের শেষ নাই ।
আমি হেসে উড়িয়ে দিল । সদাইপাতি
কিনে নিয়ে হাজির হলাম বাসায় !
বাসায় আসার পরেই আমি ব্যাপার গুলো
একটু চিন্তা করতে শুরু করলাম ! যতই হেসে
উড়িয়ে দেই নিজের মনে মনে একটু কিছু
ভয় কিংবা সন্দেহ ততক্ষনে তৈরি হয়ে
গেছে ! আসলেই কিছু একটা আছে এই
বাসা ! বিশেষ করে ঠান্ডার বিষয় ।
তাছাড়া আরেকটা ব্যাপার আমি আগে
লক্ষ্য করি নি তবে লক্ষ্য করা দরকার
ছিল মনে হচ্ছে ।
আমি এমনিতেও বাইরেই খাওয়া দাওয়া
করি । তবে মাঝে মাঝে চরম ক্ষুদার
মুহুর্তে যখন বাইরে যেতে ইচ্ছে করে না
তখন ঘরেই কিছু বানিয়ে নেই । এই দুই
সপ্তাহে দুবারের মত এমন হয়েছে ।
রাতের বেলা যখন ক্ষুদা লেগেছিল তখন
একবার বোম্বাই টোস্ট আর খিচুরী
রেঁধেছিলাম । সেগুলোর বাসন আমি
আধোয়া অবস্থায়ই রেখেছিলাম সকালে
পরিস্কার করবো বলে । সকালে অফিসে
চলে যাওয়ার ফলে আর করা হয় নাই ।
কিন্তু বাসায় এসে দেখি সেগুলো
পরিস্কার করা । পরে আমার মনে
হয়েছিল আমিই হয়তো সেগুলো পরিস্কার
করে রেখেছি ! আমার মনে নেই !
যাক আমি আর বেশি চিন্তা করলাম না ।
যেই থাকুক যদি সত্যিই থেকে থাকে
তাহলে সে যে আমার কোন ক্ষতি করবে
না সেটা আমি পরিস্কার বুঝতে পারছি !
যদি ভয় দেখতো তাহলে এতো দিন
সমানে চলে আসতো !
নীলিকে দেখি আরও সপ্তাহ খানেক
পরে । আমি অফিস থেকে ফিরে এসেছি
সবে মাত্র । সেদিন কাজের খুব চাপ ছিল
। বাসায় আসতে আসতেই রাত প্রায় ১০ টা
। ঘরে ঢুকে আমার শরীর যেন আর চলছিল
না । দরজা থেকে জামা কাপড় খুলতে শুরু
করলাম । লক্ষ্য কেবল বিছানা ! আগে
ঘন্টা খানেক ঘুমানোর ইচ্ছে তারপর অন্য
কিছু চিন্তা করা যাবে ! খেয়েই এসেছি
সুতরাং কোন চিন্তা নেই ।
আমি জুতা মোজা খুলে খুলে এদিক ওদিক
ফেলতে ফেলতে শোবার ঘরের দিকে
এগুচ্ছি তখনই পেছন থেকে ঠান্ডা মিহি
কন্ঠে একজন বলে উঠলো
-এতো অগোছালো কেন আপনি ?
আমি কিছুক্ষন কোন কথা বলতে পারলাম
না । একেবারে যেন চুপ হয়ে দাড়িয়ে
গেলাম ! লক্ষ্য করলাম আমার পা টা
খানিকটা যেন কাঁপছে । আমার হয়তো
প্রথমে ভাবা দরকার ছিল যে অন্য কেউ
আমার ঘরে ঢুকেছে । কিন্তু কন্ঠটিতে
এমন কিছু ছিল যে আমার পুরো শরীর
কেঁপে উঠলো ! ঘরের তাপমাত্রা ততক্ষনে
অনেক নেমে এসেছে । আমার খানিকটা
শীত শীত করতে লাগলো !
আমি নিজেকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম
যে এইটা আমার কোন ক্ষতি করবে না ।
কোন ক্ষতি করবে না ! এইটা একটা ভাল
ভুত ! ভাল পেত্নী ! সুইট পেত্নী !! খুব
বেশি কাজ হচ্ছিল না । প্রবল ইচ্ছে
করছিল সামনের ঘরের দিকে দরজা বন্ধ
করে দেই কিন্তু ইচ্ছে টা দমন করলাম !
অনেক সাহস সঞ্চয় করে পেছনে
তাকানোর প্রস্তুতি নিলাম !
আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি সেখানে কেউ
নেই । তবে আমার ছোড়া জামা কাপড়
আর জুতা মোজা গুলোও গোছানো
রয়েছে । আমার মনে হল মেয়েটা চলে
গেছে । কারন তাপমাত্রা আবারও
বাড়তে শুরু করেছে ।
এরপর মেয়েটার অদৃশ্য কন্ঠ শুনলাম বেশ
কয়েকবার । প্রত্যেকবার আমার
অগোছালোতার জন্য মৃদু শাসন ! আমি
আবিস্কার করলাম যে মেয়েটাকে আমার
আর ভয় লাগছে না মোটেই !
গত কালকে আমি অফিস যাওয়ার আগে
একটা ছোট্ট নোট লিখে রেখে গেলাম
আমার অগোছালো শার্টের উপর !
"আমি তোমাকে দেখতে চাই"
নিজের কাছেই কিছুটা হাস্যকর
শোনালো যে আমি একটা পেত্নীর সাথে
দেখা করতে চাচ্ছি ! মানুষ জন শুনলে কি
ভাববে কে জানে !
অফিস থেকে ফিরে এসেও তার কোন
খোজ পেলাম না । তবে আমার শার্ট
খানা ঠিকই গোছানো ছিল !
রাতের ঘুমাতে যাবার আগে জানলার
দিকে তাকিয়েছি তখনই একটা ছায়া
মূর্তি দেখতে পেলাম । প্রথমে বুকের
ভেতরে ধক করে উঠলেও সামলে নিলাম
পরক্ষনেই ! নিজেই এগিয়ে গেলাম
সামনে । ছায়াটা তখনও জালনার
ওপাশেই রয়েছে চুপচাপ ! আমি আগে
গিয়েই জানতে চাইলাম
-তুমি কি এসেছো ?
তখনই নীলি জানতে চাইলো কথাটা !
ঘরের আলোতে মেয়েটা যখন এলো আমি
খানিকটা অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম
বহুদিন আমি এতো সুন্দর মুখ দেখি নি !
আমি কিছুটা সময় কোন কথা বলতে
পারলাম না ! কেবল চেয়ে রইলাম !
নীলি বলল
-কি পেত্নীর চেহারা দেখে খুব পছন্দ
হয়েছে ?
বলেই খুব জোরে হাসতে লাগলো ! আমি
বললাম
-বিশ্বাস হচ্ছে না ! আমাদের ছোট বেলা
থেকে যা শেখানো হয় শাক চুন্নী আর
পেত্নী বিষয়ে তা দেখি পুরাই উল্টা !
নীলি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি বেশ সাহসী দেখছি ! এর আগে
মানুষ গুলো বেশ ভীতু ছিল ! যাক ভাল
তোমার সাথে টুকটাক কথা বলা যাবে !
-চাইলে প্রেমও করতে পারো !
-আচ্ছা ! তাই ?
-জানি সুন্দরী পেত্নী প্রেম করা সুবিধা
কি ?
-কি শুনি ?
-পেত্নীর বাবা তাকে বিয়ে দেওয়ার
জন্য চাপ দিতে পারবে না ! বিয়ে হয়ে
যাওয়ার সম্ভবনাও নেই !
এই কথাটা বলার পরই দেখলাম নীলির
মুখটা কেবল মলিন হয়ে গেল ! আমার
দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা আমি যাই !
-সেকি ! কোথায় ? আমার কথায় কষ্ট
পেলে নাকি !
-না ঠিক আছে !
-না ঠিক নেই । আমাকে বলবা তারপরপ
যাবা !
নিজের কন্ঠ শুনে নিজেই অবাক হয়ে
গেলাম । আমি একটা অশরীরীর সাথে
আর্গুমেন্ট করতেছি । আমার বলার ধরনই
কি না জানি না নীলি আবারও হেসে
ফেলল ! তারপর আমার দিকে তাকিয়ে
বলল
-তোমরা যা মনে কর আমরা কিন্তু আসলে
এতোটা ফ্রী না ! তোমাদের যেমন
নিজেরদের জগৎ আছে ঠিক আমাদেরও
নিজেদের জগৎ আছে । আমাদের
সেখানেও থাকতে হয় !
-তাহলে আমাদের জগতে !!
-আসলে যাদের মৃত্যু স্বাভাবিক হয়
তাদের সাথে এই জগতের একটা সংযোগ
স্থাপন হয়ে যায় ! চাইলেও আমরা এখান
থেকে নিজেদের কে সরিয়ে রাখতে
পারি না ! বুঝছো ! ইচ্ছে করে থাকি না !
-হুম । বুঝলাম ! তা কখন আসবা আবার ?
-আসলেই টের পাবা ! এখন যাই !
নীলির অনেক কিছুই জানা হল না তবে
মেয়েটা আবার আসবে ! তখন ওর সাথে
চুটিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে ! নীলি
যেভাবে জানালা ভেদ করে এসেছিল
ঠিক সেভাবেই চলে গেল । আমি নিজের
বিছানার দিকেক রওনা দিলাম ঘুমানোর
জন্য !
##
-আচ্ছা তোমরা আমাদের কি মনে কর
বলতো ?
-কি আবার মনে করবো ? এতো দিন যা
শুনে এসেছি তাই তো মনে করবো !
-কি শুনেছো ? কোথায় শুনেছো ?
-না মানে ভুত এফএম !
ভুত এফএমের নাম শুনতেই নীলির মুখটা
বিরক্তিতে ভরে গেল । আমার দিকে
তাকিয়ে বলল
-তোমার ঐ আরজে না ফারজে কে যদি
আমি সামনে পেতাম না তাইলে তারে
গাল থাপড়াইরা লাল করে দিতাম ! বেটা
ফাজিলের এক শেষ ।
-তার মানে কিচ্ছু সত্যি না !
-অবশ্যই না !
-তাহলে ? এই যে এতো মানুষ মরে
কিভাবে ?
-আশ্চর্য আমরা কিভাবে কিভাবে মরে !
আমরা জানি নাকি ! নিজেরা নিজেরা
ভয় পেয়ে মরলে আমাদের কি করার আছে
। আমাদের তো খেয়ে দেয়ে কাজ নেই
তোমাদের ভয় দেখাবো ! হুহ !!
আমি বললাম
-আচ্ছা তোমাদের পৃথিবীটা কেমন ?
নীলি কি যেন ভাবলো ! তারপর বলল
-কি ভাবে বলব ! আচ্ছা শুনো তোমাকে
একটা কথা বলি । ভাল করে বললে
আমাদের পৃথবীটা কিন্তু অনেক টা
তোমাদের মতই । বলতে পারো একটা
পৃথিবীর প্যারালাল ওয়ার্ড থাকে না
ঠিক তেমন ।
-বুঝলাম না !
ইদানিং বাসায় এসে আমার এক মাত্র
কাজ হচ্ছে নীলির সাথে কথা বলা ।
মেয়েটিও ঠিক যেন আমার জন্য
অপেক্ষা করে । আমি বাসায় আসলে
দেখতে পাই আমার জন্য বাধরুমে গরম
পানি অপেক্ষা করছে । আমি গোসল
করেই টের পাই আমার ঘরের তাপমাত্রা
কেমন ঠান্ডা হয়ে গেছে । আমার বুঝতে
কষ্ট হয় না নীলি চলে এসেছে । আগে
তো আমরা কেবল আমার শোবার ঘরেই
কথা বলতাম এখন বাসার সব জায়গায়
আমাদের দুজনের এক সাথে চলাচল ।
টিভি দেখতে দেখতে কিংবা কারন্ট
করে চলে গেলে বারান্দায় বসে
আমাদের কথা চলে । মাঝে মাঝে আমি
অবাক হয়ে যায় একটা অশরীরির সাথে
আমি কিভাবে এতো কথা বলি ! কেমনে
করে বলি !!
আরেকটা জিনিস যেটা হয়েছে নীলি
এখন থেকে আসার সময়ে সাথে করে কি
যেন একটা নিয়ে আসে । আমরা যেমন
ম্যাঙগো জুস খাই ঠিক তেমনি প্যাক
করা থাকে । তার গায়ে অদ্ভুদ ভাষা কি
যেন লেখা ! ওর কাছে জানতে
চাইছিলাম যে এই জিনিস টা কি ও বলল
যে ওদের ওখানকার একটা খাবার ।
লুকিয়ে আমার জন্য নিয়ে এসেছে ।
আমরা যেমন পাইপ ঢুকিয়ে জুস খাই এই
তেও ঠিক ওমন পাইপ ঢুকিয়ে খাতে শুরু
করলাম । সত্যি বলতে কি এমন অদ্ভুদ
স্বাধের জিনিস আমি এর আগে কোন
দিন খাই নাই । এরপর থেকে নীলি
প্রতিদিন নিয়ে আসতো বলতে গেলে
আমিই ওকে নিয়ে আসতে বলতাম । আর
সাথে সাথে আমাদের আড্ডা তো
চলতোই !
নীলি আমাকে বোঝানোর জন্য হাত টা
তুলল । তারপর মাথায় কি যেন একটু
চুলকালো । তারপর বলতে শুরু করলো
-দেখো আমাদের আর তোমাদের
পৃথিবীটা কিন্তু অনেক টা একই রকম ! যখন
কেউ একজন তার দেহ থেকে মুক্ত হয়ে
যায় তখনই সে আমার দের পৃথিবীতে
প্রবেশ করে কিংবা প্রবেশ করার পথ
খুজে পায় ! বলা চলে তার ভিতর সেই
প্রবেশের পাওয়ার টা চলে আসে । এবং
সত্যি কথা কি যদি একবার সেই এই
পৃথিবীতে প্রবেশ করে ফেলে তাহলে
তাদের আর অন্য কিছু মনে থাকে না !
আমি বললাম
-তাহলে তোমরা আবার এই পৃথিবীতে
কেন ?
-আগে একদিন বলেছিলাম মনে নেই ।
আসলে যারা একটু অপঘাতে পরে তারা
সহজে এই পৃথিবীর মায়া ঠিক মত ছাড়তে
পারে না । তাদের পরিত্রানটা ঠিক মত
হয় না তাই দুই পৃঠিবীর মধ্যে তাদের
বিচরন চলে ! বুঝেছো !
-হুম ! বুঝলাম !
##
-বাবা তোমার শরীর ঠিক আছে তো ?
আমি বাড়িওয়ালার দিকে আরও ভাল
করে তাকাই । ভেবেছিলাম দিন কে উনি
হয়তো আমার খোজ নেওয়া বন্ধ করে
দিবেন বিশেষ করে যখন দেখবেন যে
আমি ঠিক ভয় টয় পাচ্ছি না । তার উপরে
উনার বাড়ি ছাড়ার কোন নামও নিচ্ছি
না । কিন্তু আমার ধারনা খানিকটা ভুল
প্রমানিত করে দিয়েই বাড়িওয়ালা
আমার খোজ খবর নিয়মিত করতে লাগলো
। একদিন তো আমাকে সরাসরি জিজ্ঞেস
করলেন যে
-তোমার শরীর ভাল তো ?
-জি আঙ্কেল ভাল !
-রাতে ঘুম হয় ভাল ?
-জি !
-ও ! না মানে তোমার শরীর কেমন দিন
দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে তো, তাই জানতে
চাইলাম !
-না । আসলে অফিসে খুব চাপ যাচ্ছে
ইদানিং !
-ও আচ্ছা !
আমার কথা শুনে বাড়িওয়ালার মনে হল
ঠিক পছন্দ হল না । তিনি ঠিক বিশ্বাসও
করলেন না মনে হয় । অন্তত তার চোখ
দেখে তো তাই মনে হল ! তিনি আর কিছু
জাতে চাইলেন না ! তবে একটা ব্যাপার
আমার নিজের কাছেও কেমন যেন
লাগলো । ইদানিং সবাই বলছে আমার
শরীর নাকি খারাপ হয়ে যাচ্ছে । কারন
টা আমি নিজেও ঠিক ধরতে পারছি না ।
চোখের নিচে কালি আর গালের হাড়
কেমন যেন বসে যাচ্ছে । কেন যাচ্ছে
আমি ঠিক বলতে পারছি না !
যাই হোক এদিকে নীলির সাথে আমার
সম্পর্কের যেন আরও একটু ধাপ এগিয়ে
গিয়েছে । ও বলতে গেলে আমার বাসার
সব কাজ কর্ম করে ! আমাকে কিছু করতে
হয় না ! সব কিছু সঠিক জায়গায় রেখে
দেয় ! আর প্রতিদিনের সেই অদ্ভুদ জুস
তো আসেই ! আমি বেশ ভাল আছি ! মাঝে
মাঝে মনে হয় এমন একটা লক্ষ্যি বউ যদি
আমার থাকতো তাহলে কতই না ভাল হত !
আমি কেবল এই কথাটা চিন্তা করেছি
ঠিক সেদিনই ও কথাটা আমাকে বলল !
সাথে অনেক টাই দুঃখ করলো । যদি সে
বেঁচে থাকতো তাহলে নিশ্চই আমার বউ
হত ! এমন সময় ও আমাকে অদ্ভুদ একটা
প্রস্তাব দিল । যা শুনে আমি খুব বেশি
অবাক হয়ে গেলাম ! কেবল অবাকই না
বিশ্মিত হয়ে বললাম
-এটা কি সম্ভব ?
-হুম ! যদি তুমি চাও ? আসলেই চাও কি না
সেটাই হল ব্যাপার !
আমি কেবল বললাম
-চাই ! অবশ্যই চাই !
আমার কেন জানি মনে হল নীলি আমার
কথা শুনে খুব বেশি খুশি হল । একটু যেন
বেশিই খুশি !
প্রস্তাব টা এরকম যে ওর পক্ষে তো
আমার পৃথিবীতে আগের মত আসা সম্ভব
নয় কিন্তু আমার পক্ষে নাকি ওর
পৃথিবীতে যাওয়া সম্ভব এবং ওর মত করে
তবে সাময়িক সময়ের জন্য ! আমি
কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না কিভাবে
কাজ টা করবো ! ও কেবল আমাকে
বুঝিলে দিল ওর আর আমার ভিতরে
পার্থক্য হচ্ছে আমার শরীরটা ! এখন
কাজটা হবে আমার আত্মাটাকে আমার
শরীর থেকে আলাদা করার ! যদি
আলাদা করতে পারি তাহলেই নাকি
সম্ভব !
নীলি আমাকে যা বলল তার অর্থ হচ্ছে
মানুষের আত্মাটা শরীরের সাথে আটকে
থাকে কেবল মাত্র মনের জোরের
কারনে ! মন নাকি অবচেতন ভাবেই জোর
খাটিয়ে নিজেক শরীরের ভেতরে আটকে
থাকে । এখন আমার মনের উপর জোর
সৃষ্টি করতে হবে যাতে করে আমি যেন
আমার আত্মাকে বের করতে হবে । শরীর
থেকে আত্মা আলাদা হয়ে যাবে !
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে খুব করে চেষ্টা
করতে লাগলাম !
কিন্তু কোথায় কি !
এভাবে সপ্তাহ খানেক চেষ্টা করেও যখন
কোন লাভ হচ্ছিল না তখন এদিন নীলিকে
চোখের পানি আটকে আমার তাকিয়ে
থাকতে দেখলাম ! অনেক কষ্টে সে
আমাকে কেবল বলল
-বেঁচে থাকতে তার কোন ইচ্ছে পূরন হয় নি
মরে গিয়েও হবে না !
কেন জানি ওর কান্না মিশ্রিত চেহারা
সহ্য হল না ! নিজের উপর খুব রাগ হল !
ঠিক ঐ দিনই কিছু একটা হল ! ঠিক রাত
তিন টার দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল !
আমি ঘুম থেকে উঠেই দেখি চারিপাশে
কেমন আবছায়া আলোর মত কিছু একটা
খেলা করছে । কিন্তু আমি যতদুর খেয়াল
ছিল আমার ঘরটাতে কোন সময়ে
পুরোপরি অন্ধকার হয় না !
আসেপাশের ঘরের আলো এসে ঘরে একটা
আলো থাকে সারা রাত ।
আলোটা কেমন অপরিচিত মনে হল ! অন্তত
আমার জীবদ্দশায় এমন আলো আমি কোন
দিন দেখি নি ! এই আলোর ব্যাখ্যা কোন
ভাবেই দেওয়া সম্ভব নয় ! তবে আস্তে
আস্তে আমি টের পেলাম জায়গা টা
আসলেই আমার শোবার ঘরই । এই অদ্ভুদ
আলোর কারনে অন্য রকম লাগছে ।
নিজের ঘরের আসবার পত্র জানালা
দরজা সবই চিন্তে পারলাম একটু পরে !
আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে একটু নড়তেই
কেমন যেন নিজেকে খুব বেশি হালকা
মনে হল ! নিচে তাকিয়ে আমার চোখ
আকাশে উঠলো ! ঠিক নীচে কেউ শুয়ে
আছে । দেখতে হুবাহু আমার মত । এমন কি
আমি রাতের বেলা যেটা পড়ে ঘুমিয়ে
ছিলাম সে সেই পোষাকটাই পরে আছে ।
আমি কিছুটা অবিশ্বাস চোখ নিয়ে
তাকিয়ে রইলাম সেদিকে ।
তাহলে ?
তাহলে সত্যি ! কাজ হয়েছে ?
এবার নীলির কাছে যাওয়া যাবে ?
নীলির দেশে আমি প্রবেশ করতে
পারবো ?
সত্যি কি পারবো !
আমি যেই না আরেকটু নড়তে যাবো তখনই
দেখলাম একটা কিছু দড়ি জাতীয় জিনিস
দিয়ে আমার ঠিক পায়ের কাছ থেকে
আটকানো । এবং সেটা আমার ঘুমন্ত
শরীরের পায়ের কাছে আটকানো ! অনেক
টা শেকলের মত । ওটা দিয়ে আমি আমার
দেহের সাথে আটকে আছি !
আমি কিছু সময় টানাটানি করলাম কিন্তু
কোন লাভ হল না । সেটা খুলল না কিংবা
খোলার কোন লক্ষণও দেখলাম না ! ঠিক
সেই সময়ে নীলিকে দেখতে পেলাম । ওর
হাতে সাদা ফলাওয়ালা একটা কুঠার
জাতীয় কিছু ! আমার দিকে তাকিয়ে
হাসলো ! তবে ওর হাসির ভিতরে কেন
জানি কোন প্রাণ দেখতে পেলাম না ।
বরং সেখানে কেমন যেন একটা
তাড়াহুড়া ভাব ! নীলি বলল
-এটা কেটে ফেলতে হবে !
-কোন ক্ষতি হবে না তো !
-আরে না ! কোন সমস্যা নেই ! আমার
কথার উপর ভরশা নেই !
আমার অবশ্য আরও একটু চিন্তা ভাবনা
করার ইচ্ছে ছিল ! এভবে কেটে ফেলা
কি ঠিক হবে ? আমার কেন জানি মনে
হচ্ছে এটা আমার শরীরের সাথে আমার
আত্মার বন্ধন । কেবল মন না এটাই হচ্ছে
প্রধান যেটা আমাকে আমার শরীরের
সাথে আটকে রেখেছে । এখন এটা যদি
ছিড়ে ফেলি তখন ?
আমি আবার ফিরে যেতে পারবো তো
আমার শরীরে ?
নীলি যখনই আমার ঘুমন্ত শরীরের দিকে
এগিয়ে গেল তখনই একটা কাজ হল ! আমার
শোবার ঘরের দরজা হাট করে খুলে গেল ।
দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি সেখানে
বাড়িওয়ালা দাড়িয়ে আছে সাথে
আরেক জন ! তাকে চিনতেও আমার খুব
বেশি কষ্ট হল না । আমাদের এলাকার
মসজিদের ইমাম ! দরজা খুলে কেউ আমার
দিকে তাকালো না । এমন একটা ভাব
যেন আমাকে তারা দেখতেই পাচ্ছে না !
তাদের চোখ আমার ঘুমন্ত শরীরের
দিকে !
বাড়িওয়ালা খুব উত্তেজিত হয়ে কিছু
একটা বলল । কিন্তু আমি আবছা ভাবে
শুনতে পেলাম । মনে হল যেন অনেক দুর
থেকে শুনতে পাচ্ছি !
কেবল একটা কথাই কানে গেল !
বাড়িওয়ালা বলছে
দেরি হয়ে গেল নাকি ?
হুজুর বলল
-না মনে হয় ! এখনও শরীর গরম !
তারপর হুজুর আমার শরীরের দিকে
এগিয়ে এসে হাত স্পর্শ করলো । সঙ্গে
সঙ্গে আমার পুরো শরীর কেঁপে উঠলো !
নীলির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর মুখ টা
কেমব বিষন্ন হয়ে গেছে । তারপর হুজুর
পানি জাতীয় ছিটালো আমার উপর ।
আমার আর কিছু মনে নেই !
সকালে বেশ বেলা করে ঘুম থেকে
উঠলাম । তাকিয়ে দেখি বাড়িওয়ালা
আমার দিকে তাকিয়ে আছে । আমার
চোখ খোলাতে তার মুখে একটা
দুঃচিন্তার একটা রেখা একটু কমে গেল !
আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না কি হল ।
আর বাড়িওয়ালা আমার ঘরে কি করছে ।
রাতের ঘটনা গুলো কেমন আবছা আবছা
মনে আছে ।
একটু পরে পাড়ার মসজিদের ইমাম এসে
আমাকে দেখলেন । আমাকে গত রাতের
ঘটনা বললেন ! আমি নাকি রাতে বেশ
চিৎকার চেঁচামিচি করেছিলাম । সেই
শুনেই বাড়িওয়ালার আমার দরজার
সামনে এসেছিলেন । তিনি আগে থেকে
আঁচ করেছিলেন যে কিছু একটা হয়েছে
আমার । সোজা গিয়ে ইমাম সাহেব কে
ডেকে আনেন !
ইমাম সাহেব জানতে চাইলো
-ঐ মেয়েটার সাথে কত দিন কথা বল ?
-এই মাস খানেকের উপরে !
-ও কি তোমাকে কিছু খেতে দিতো ?
মানে সাথে করে নিয়ে আসতো !
-হুম !
-ওটা দিয়েই তোমাকে বস করেছে ।
তোমার চিন্তা ভাবনা টাকে বসে
এনেছে । যাই হোক এখন অনেক টা ভাল
আছে । সময় মত না এলে অনেক ক্ষতি হয়ে
যেত । তুমি হয়তো আর বেঁচে থাকতে না !
এখানে আর থেকো না ।
ঐ দিনই বাসা ছেলে দিলাম । জিনিস
পত্র আপাতত থাকুক আমি কেবল একটা
ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম এক বন্ধুর
বাসায় গিয়ে থাকি অন্য বাসা না খুজে
পাওয়ার আগ পর্যন্ত !
সিএনজিতে হঠাৎ কি মনে হতে ব্যাগ টা
খুলতেই দেখলাম আমার জামা কাপড়ের
ভিতরে এক টুকরো কাগজ ! সেখানে
কেবল একটা লাইণ লেখা "তোমাকে
কাছে পেতে চেয়েছিলাম, হয়তো একটু
অন্যায় পথে, এইটাই কেবল আমার অপরাধ
ছিল"
আর কিছু লেখা নেই ! আমি কাজটা দুমড়ে
ছুড়ে দিলাম বাইরে ! পেত্নীর ভালবাসা
পাওয়া থেকে বেঁচে থাকাটা আমার
কাছে বেশি আনন্দের মনে হল !

ভয়ানক নরক

কালু আর আমি ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো বন্ধু,বিপদে আপদে একে অপরের পাশে ছিলাম।এমন কোন দুষ্টুমি ছিলো না যা আমরা করি নি।তবে হ্যা,আমরা কারো ক্ষতি করতাম না।যে দুষ্টুমিটা আমরা সবচেয়ে বেশি করতাম তা হল ভুত সেজে লোকজনকে ভয় দেখানো।গ্রামে রটেই গিয়েছিল এলাকায় ভুতে বাসা বেঁধেছে। আমরা এসব শুনে চুপিচুপি হাসতাম।এভাবে খুব মজাতেই ছিলাম আমরা।।
একদিন আমার নানার বাড়িতে একটা বিয়ের দাওয়াত ঠিক হল।কালু আমার সবসময়কার দোস্ত,তাই কালুকেও বললাম আমার সাথে যেতে।প্রথমে অবশ্য কিছটা ইতস্তত করলেও পরে রাজি হয়ে গেল।নির্দিষ্টদি
নে বাসার সবাই রওনা দিল।পথে যেতে যেতে তেমন কিছু দুষ্টুমি করতে পারি নি।কারন আম্মু পাশেই ছিল।বিয়ে বাড়িতে অনেক লোকজন,খুব ভালোই লাগছিল।দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হল।বেশ খেলাম আমরা দুজনই।আম্মুরা নাকি কয়দিন নানু বাড়িতে বেড়াবে,তাই আমি আর কালু একাই গ্রামে ফিরে আসবো বলে ঠিক করলাম।কারন নানু বাড়িতে দুষ্টুমি করে সুবিধা করা যাবে না।আম্মুকে বলার সাথে সাথে আম্মু রাজি হয়ে গেলেন,বললেন,"তবে বাড়িতেই ফিরে যা,যে বদমাইশি তোরা করস এখানে তা করতে পারবি না"
আম্মু যে কিভাবে আমাদের মনের কথা এতো সুন্দরভাবে বুঝেন জানি না।আবার সাথে যাতায়াত ভাড়াও দিয়ে দিলেন।বিকালবেলাই বের হলাম নানু বাড়ি থেকে। পথে যেতে যেতে ঠিক করলাম বাসে অথবা সি এন জি তে গেলে আম্মু যে টাকা দিয়েছে সেটা প্রায় শেষ হয়ে যাবে।আর এগুলোতে না গিয়ে যদি টাকা বাঁচানো যায় তবে আমরা দুজন মিলে আরো মজা করতে পারব।ঠিক করলাম ট্রেনে করেই যাবো,টিকেট না কেটে যদি টাকা বাঁচানো যায় তবেই তো খেলা শেষ।স্টেশনে যেতে না যেতেই একটা ট্রেন ছেড়ে দিলো,দৌড়ে গিয়েও ধরতে পারলাম না।অফিসে গিয়ে পরের ট্রেন কয়টায় জানতে চাইলাম।লোকটি কিছুক্ষণ আমাদের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থেকে বলল,"টিকিট ছাড়া যাইবা তাই না?সমস্যা নাই তোমাদের মতো থাকতে আমিও টিকিট ছাড়া অনেকবার আসা যাওয়া করেছি।একটু অপেক্ষা করো,সন্ধ্যার পর আরেকটা ট্রেন আসবো,অইটাতে কইরা যাইতে পারবা।আমি আর কালু লোকটার ব্যবহারে অবাক হয়ে গেলাম,ভাবলাম টিকিট ছাড়া যাব এই কথা শুনে তিনি হয়তো ঝামেলা করবেন।কিন্তু ঘটলো তার বিপরীত।মাগরিবের আযান যেই দিল অমনি একটা ট্রেন আসল।কাউন্টারের সেই লোকটা কাছে এসে বলল"এইযে ট্রেন আইসা গেছে উইটা পড়ো,এইটা এইখানে বেশিক্ষণ দাঁড়াইবে না।"
কিছুটা অবাক হলেও আমরা দ্রুত ট্রেনে উঠে পড়লাম।অমনি সাথে সাথে ট্রেন ছেড়ে দিল।বগিটা বেশ খালি,যে কয়জন লোক আছে তার বেশিভাগই ঝিমাচ্ছিলো।সন্ধ্যাবেলাতেই তাদেরকে এইভাবে ঝিমাতে দেখে বেশ অবাক হলাম দুজনই।পাত্তা না দিয়ে আমি আর কালু খালি একটা সিটে গিয়ে বসলাম।পাশেই যে লোকটা ছিল সে আমাদের দেখেই চমকে উঠলো,কিন্তু কিছুই বললো না।আবার ঝিমাতে শুরু করলো।ট্রেন বেশ জোড়েই চলছিল,জানালাগুলো খোলা ছিলো তাই বাতাস লাগছিল খুব।এমন সময় হঠাৎ করে পুরো ট্রেনটা ভীষন জোড়ে একটা ঝাকুনি খেলো।কি হচ্ছে বুঝে উঠার আগেই আমাদের বগিটাসহ আরো কয়েকটা বগি ব্রিজ ভেংগে পানিতে পরে গেল।আমি কালু দুজনই বাচার আশা ছেড়ে দিলাম।ট্রেনের বগিটা পানির নিচে পুরোপুরিভাবে ডুবে গেছে।বের হওয়ার কোন রাস্তা খুজে পাচ্ছিলাম না,কালু কোথায় আছে তাও জানি না।নাকে মুখে পানি ঢুকে বেশ কষ্ট হচ্ছিলো,নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না।মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখলাম।এমন সময় আমার চারপাশে অপরিচিত অনেকগুলো মানুষ এসে আমাকে ঘিরে ধরলো।কারো গাল ফুলে চোখ দুটো যেন বেড়িয়ে আসতে চাইছে,কারো গলা ফুলে গেছে।এককথায় সবার চেহারা এতো ভয়াবহ যে বলে বুঝানো যাবেনা।সবাই যেন একসাথে আমার কানে কানে বলছে,"আমরা পানিতে ডুবে ঠিক এইভাবেই মরেছিলাম,তারপর থেকেই আমাদের এই অবস্থা।তোমারও একই পরিনতি হবে,মরার জন্য তৈরি হও।"
আমার চারপাশে অন্ধকার হয়ে এল।জ্ঞান ফিরে দেখি আমি আর কালু একটা বাসের সিটে পাশাপাশি বসে আছি।পুরো শরীর ভেজা,কালুর দিকে তাকিয়ে দেখি একই অবস্থা।কিভাবে যে কি হল কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না,আমরা ছিলাম ট্রেনে।তারপর ট্রেন পানিতে পড়ে গেলো অথচ আমরা বাসে এলাম কি করে!!
তবুও মরনের হাত থেকে নিশ্চিত বাচতে পেরে দুজনই সস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম।পানির নিচে আমার সাথে যা যা হয়েছে কালুর মুখেও একই ঘটনা শুনলাম।এটা কিভাবে সম্ভব?
"এই দুনিয়ায় সবই সম্ভব।"
পাশে তাকিয়ে দেখি সেই লোকটা যাকে আমরা ট্রেন স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে দেখেছিলাম।লোকটা আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল"সবই সম্ভব,বাবারা।সবই সম্ভব।দেখো আরো অসম্ভব কিছু হয় কিনা?!!"
আমি আর কালু একে অন্যের দিকে তাকালাম।হঠাৎ ধুম করে একটা শব্দ।আমরা যে বাসে করে যাচ্ছিলাম সেটা আরেকটা বাসের সাথে মুখোমুখি ধাক্কা খেলো।আমাদের বাসটা তিন থেকে চারবার উল্টে গিয়ে খাদে পড়ল।আমার মাথা ফেটে প্রচুর রক্ত বেরুতে লাগলো।পাশে তাকাতেই কালুকে দেখতে পেলাম মারাত্মক ভয় পেয়ে দেখলাম কালুর একটা হাত পুরো কেটে গেছে,তাছাড়া তার মাথাও খুব মারাত্মকভাবে ফেটে গেছে।কালু শুধু মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতড়াচ্ছিলো।আমার পায়ের দিক থেকে বেশ কয়েক টুকরো মাংস উঠে গিয়েছে।অনবরত রক্ত বেরিয়েই যাচ্ছিল।অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছিলো পুরো শরীরে,মনে হচ্ছিলো এরি থেকে মরে যাওয়াও ভালো।।আবার চারপাশ থেকে কারা যেন গড়িয়ে গড়িয়ে এসে আমাকে ঘিরে ধরলো।কারো মাথা ফেটে মগজ বেড়িয়ে আছে,আবার কারো চোখ বোধহয় বেড়িয়ে গেছে।কারো বা হাত পা নেই।অইরকম অবস্থায় এসব দেখে মাথার মধ্যে আরো ভয়ানক ব্যথা শুরু হল।অসহনীয় কষ্টে চোখ খোলা অবস্থায় চারপাশ অন্ধকার হয়ে এল।আবার আমি শুনতে পেলাম,কারা যেন আমার কানে কানে বলছে,"ভয় কি জিনিস এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছ।........."
আরো কি যেন বলেছিল শুনতে পাই নি।চোখ খুলে দেখি আমি আর কালু পাশাপাশি আমাদের বাসায় খাটে শুয়ে আছি।আমাকে চোখ খুলতে দেখে আম্মু রাগি রাগি মুখ করে বললেন,"এমন ঘুম জীবনে কখনো দেকি নি।কতক্ষণ ধরে দরজা ধাক্কালাম,দুজন এমনভাবে ঘুমাচ্ছিলেন যে শুনতেই পাননি।বাধ্য হয়ে দরজা ভাংতে হলো।তা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোন নরকের ভিতরে হারিয়েছিলেন??"
আমি আর কালু একে অন্যের দিকে তাকিয়ে বললাম," অনেক ভয়ানক নরক,অনেক ভয়ানক।।""
..
কেমন লেগেছে জানাবেন।ধন্যবাদ

কেশবপুর গ্রামের ভূত

আজ থেকে ২০ বছর পূর্বে কেশবপুর নামক এক গ্রামে প্রতিদিন রাতে ২, ৩ টা অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। সবাই একটা আতংকের মাঝে থাকতো। প্রয়োজন ছাড়া বিনা প্রয়োজনে সন্ধ্যার পরে কেউ ঘর থেকে বের হতোনা। কারণ, কারো জীবন নিরাপদ ছিলোনা।
জীবন নিয়ে সবাই সংশয়ে ছিলো।
এভাবে প্রতিদিন চেনা-অচেনা লোকের মৃত্যু ঘটে চলছেই। কারো ঘাড় মটকানো,
কোন লাশের বুক গর্ত করা, আবার
কোন লাশের চোখ উপড়ানো বা চোখ নেই ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক
ঘটনা হলো লাশগুলো প্রায় একই জায়গা বা কাছাকাছি স্থানে পাওয়া যেতো। এইসব ঘটনার ফলে গ্রামের কয়েকজন যুবক মিলে যে স্থানে লাশ পড়তো ঠিক সেই জায়গায় একটি বড় শিমুল গাছে উঠে রাতের বেলায় থাকার সিদ্ধান্ত নিলো। উদ্দেশ্য কে বা কারা এই হত্যাকান্ড ঘটায়
তা সচক্ষে দেখা। বেশ কঠিন অভিযান,
ওরা সংখ্যায় ৫ জন। মুরুব্বী ও অভিভাবকদের অজান্তে তারা ৫ জন এই সিদ্ধান্ত নিলো। কারণ, কোনো মুরুব্বী এই অভিযানে ছেলেদের যেতে দিবে না। এক চাঁদনী রাতে ওরা ৫ জন শিমুল গাছের মগডালে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে, কখন তারা খুনের সেই লোমহর্ষক ঘটনা দেখবে। গভীর রাত পেরিয়ে অনেকক্ষন হয়ে এলো। এবার দেখলো কালো আকৃতির ১ টা জন্তু যার মুখ হায়েনার মত এবং দেহ মানুষের আকৃতির, জন্তুটার পুরো দেহ বড়,বড় লোমে ঢাকা। আর তার উচ্চতা প্রায় ১০-১২ ফুট এর মত। আর জন্তুটার হাতে ১টা সদ্যমৃত লাশ
জন্তুটা শিমুল তলায় এসে হাত থেকে লাশটাকে মাটিতে রাখলো। এবার
দেখা গেলো দানোটি তার ঘাড়ে বড় বড় দাঁত ঢুকিয়ে রক্ত
চুষে খাচ্ছে। এই ঘটনা দেখে ঐ পাঁচ যুবকের একজন ভয়ে চিৎকার করে উঠলো। আর তখনি হায়েনার মত জন্তুটি চোখের পলকে উধাও হয়ে গেলো। এরপর এই ঘটনা ৫ যুবক মিলে গ্রামে বলা শুরু করলো। এই ঘটনার সপ্তাহ খানিক পরে একে একে ঐ পাঁচ যুবক বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও কালাজ্বরে মারা গেলো। এরপর একজন হুজুর ঐ গ্রামের চার কোণায় ৮টা তাবিজ আর শিমুল গাছের গোড়ায় একটি কবচ পুতে দিলেন। সেই থেকে এই গ্রামে আর কোন অ্যাকসিডেন্ট হয়নি।

আমার বন্ধু সজীবের অমীমাংসিত কাহিনী

গল্পটি আজকে আমার এক বন্ধু সজীবের কাছ থেকে শুনলাম ।আমি
যেভাবে বলল সেভাবেই আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম ।
মাঝ রাতে দরজায় কড়া নারার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমি
বিরক্ত ভাব নিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলেই বিস্মিত কণ্ঠে
বললাম- আরে তুই? এতো রাতে?
আকাশ একগাল হেসে বললো- দোস্ত অনেকদিন তোকে দেখি না।
তোকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই চলে আসলাম। আজ রাতটা তোর
সাথেই কাটাবো।
আকাশ আমার ছোট কালের বন্ধু। আমরা একই সাথে বড় হয়েছি।
আমার বাসা থেকে ওর বাসা প্রায় দু-কিলোমিটার দূরে। অনেকদিন
তার সাথে বিভিন্ন ব্যস্ততার জন্য দেখা করতে পারি নাই। প্রায়
এক মাস হতে যাচ্ছে। আমার সাথে শুধু মাত্র দেখা করবার জন্য
এতো রাতে সে চলে আসবে বাসায় তা ভাবতেই পারছি না। এই না
হলে বন্ধুত্ব।
তুই কি বাহিরেই দাড়িয়ে থাকবি? ভিতরে আস? গল্প করি দুই বন্ধু
মিলে সারারাত।
নারে দোস্ত ঘরে বসবো না। চল বাহির থেকে ঘুরে আসি।
আমি অবাক হয়ে বললাম- সে কিরে! এতো রাতে কোথায় যাবি?
আর তুই এতো সাহসী হলী কবে থেকে? কিছুদিন আগেও না সন্ধ্যার
পর তুই ভূতের ভয়ে বাসার বাহির হতি না?
এখন কি আর সেই দিন আছে! চল বাহিরে চল। আকাশ একগাল হেসে
উত্তর দিলো।
আকাশে কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে তাই নারে আকাশ?
হু
আচ্ছা তোর হয়েছি কি বলতো? আসবার পর থেকেই এতো চুপচাপ
কেন?
আকাশ মৃদু হেসে বললো- না এমনিতেই। এখন থেকে ভাবছি একাই
থাকবো। সন্ধ্যার সময় ডিসিশন নিয়েছিলাম। সারারাত ছিলামও
একা। কিন্তু এখন খুব বেশি ভয় করছিলো তাই তোকে ডেকে নিয়ে
আসলাম।
আমি আবারো অবাক হয়ে বললাম- একা ছিলি, ভয় করছিলো
এগুলোর মানে কি? তুই সারারাত কোথায় ছিলি?
বাড়ির বাহিরে।
কেন? বাসা থেকে কি তোকে বের করে দিয়েছে?
নারে বাহির করে নাই। আর বাহির করবে কেন? আমি নিজেই বের
হয়ে এসেছি।
কেন?
আকাশ আমার হাত ধরে বললো- দোস্ত আমার বাসায় একটু যাবি?
আম্মু আমার জন্য খুব কাঁদছে। আম্মুকে একটু বলে দিয়ে আসবি আমি
ভালো আছি। খুব ভালো আছি। আমার জন্য যেন কান্নাকাটি না
করে।
আমি অবাক হয়ে বললাম- আমিতো তোর কথাবার্তা কিছুই বুঝতেছি
না। কি সব বলছিস? বাসা থেকে কেন বের হয়ে এসেছিস। কি
হয়েছে? চল তোকে বাসায় দিয়ে আসি?
নারে দোস্ত আজকে আর বাসায় যাবো না। পরে আরেকদিন বাসায়
যাবো। তুই একটু যাবি দোস্ত। আম্মু খুব কান্নাকাটি করছে। বলেই
আকাশ আমাকে জরিয়ে ধরে কাদা শুরু করলো।
এখন রাত সারে তিনটা। আমি আকাশের বাসার সামনে দাড়িয়ে
আছি। আকাশকে কিছুতেই আনা যায় নি। ওকে বলেছিলাম তুই
গিয়ে আমার রুমে বস আমি খালাম্মাকে বলে দিয়ে আসছি তুই
আমার কাছে আছিস এবং ভালো আছিস। সে তাও করে নাই।
রাস্তায়ই দারিয়ে আছে। আমি খালাম্মার সাথে কথা বলে বাহির
হবার পর নাকি আমার সাথে আমার বাসায় যাবে। কি ঘটেছে
কিছুই বুঝছি না। আকাশের কান্নার জন্য বাধ্য হয়েই এতো রাতে
আকাশের বাসায় আমার আসতে হয়েছে।
আমি নিথর পাথর হয়ে দাড়িয়ে আছি। খালাম্মা আমাকে জরিয়ে
ধরে অজর ধারায় কাঁদছেন। আমি খালাম্মাকে কি ভাবে শান্তনা
দেব বুঝতে পারছি না। আমার কাছে সবকিছু এলোমেলো মনে
হচ্ছে। পুরো বাড়ি জুরেই কান্নার শব্দ ভেসে বেড়াচ্ছে। বাড়িতে
অনেক মানুষ। পুলিস এসে আকাশের লাশ নিয়ে যাচ্ছে। আজ
সন্ধ্যায় আকাশ তার রুমে গলায় ফাঁস আটকিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আমার আস্তে আস্তে বোধশক্তি লোপ পাচ্ছে। এ আমি কি শুনছি।
আমি তাহলে এতক্ষণ কার সাথে ছিলাম? আকাশই তো তার বাসায়
আমাকে আসতে বললো। আকাশের লাশটি পুলিশের গাড়িতে তোলা
হচ্ছে। শেষ বারের মতো আকাশকে দেখলাম আমি। আমার সমস্ত
পৃথিবী দুলো উঠলো। মনে হচ্ছে সবকিছু দুলছে। চোখ এর সামনে
থেকে সবাই আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছে। আমি আসতে আসতে
অন্ধকার একটা জগতে হারিয়ে যাচ্ছি। দূরে কে যেন কান্না করছে।
তার মাঝে কে যেন বলছে- আম্মুকে বলিস, আমি ভালো আছি।
[সমাপ্ত]

শেকলের ঝনঝন শব্দ প্রতি রাতেই এমন একটা শব্দ হয় ঠিক মধ্য রাতে

•• শেকলের ঝনঝন শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। এখানে আসার পর থেকে প্রতি রাতেই এমন একটা শব্দ হয় ঠিক মধ্য রাতে। কেউ যেন অনেক কষ্টে টেনেহিঁচড়ে একটা শিকল নিয়ে বাড়ির এমাথা থেক পুবের কড়ই
গাছটার পাশ কাটিয়ে কলের গোড়া বরাবর আর একটু সামনে মাঝ উঠান বরাবর গিয়ে থামে। তারপর ঝুপ করে একটা শব্দ হয়েই সব কিছু আগের মত নিরব হয়ে যায়। এটা আজকে সহ এই চারদিন দেখলো মিতু। ও এখানে এসেছে একটা নামীদামি কলেজে ভর্তি হবার জন্য কোচিং করতে। কোচিং সেন্টারটা মূল শহরে তাই তার আশেপাশে থাকবার জায়গার ভাড়া অনেক বেশি। এত টাকায় ভাড়া থাকার সামর্থ্য তার নেই তাই সে তার এক বন্ধুর
মামার সাহায্যে কম দামে বাসাটা ভাড়া করে নিলো থাকবার জন্য। বাসাটা শহর থেকে বিশ মিনিটের হাটা পথ তাই সে প্রতিদিন হেটেই যায়। এতে তার কোন অভিযোগ নেই। বাড়িটা যে অল্প দামে ভাড়া পেয়েছে এটাই তার কাছে অনেক কিছু। যা হোক আপাতত সে একাই থাকে আরো দুজন আসবে তার সাথে থাকতে। একজন আসবে আগামীকাল বিকালে,আর একজন শনিবারে। এখন মিতু ভাবছে শেকলের ঝনঝনানিটা হয়তো তার কল্পনা। অনেক রাত জেগে পড়ালেখা করার কুফল তাই সে কেরোসিনের বাতি নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। পরদিন আসলো একজন সেও শুনলো শব্দটা। পরদিন দুজন মিলে ঠিক করলো ঘটনাটা কি আজ দেখার চেষ্টা করবে। রাত একটা, ঝনঝন শব্দটা আস্তে আস্তে বাড়তে লাগলো। ওরা দুজন পা টিপে টিপে শব্দটার পিছু নিলো। আস্তে আস্তে শব্দটার কাছাকাছি আসার পর দেখলো একটা মানুষ যার সারা শরীর শেকল দিয়ে বাধা।
কিভাবে যে এতগুলো শেকল নিয়ে লোকটা হাটছে ওরা বুঝতেই পারলো না। ওরা কিছু বলার আগেই মাঝ উঠান বরাবর এসে শব্দটা থেমে গেল এবং সামনে দাড়ানো মানুষটা মনে হয় একটা গর্তে পড়ে গেল। ওরা দৌড়ে গিয়ে দেখলো ওখানে কিছুই নেই, আছে শুধু একটা বৃত্ত। ওরা ভয়ে ভয়ে ঘরে ফিরে আসল। পরদিন কেয়ারটেকারকে ঘটনাটা খুলে বলার পর সে বললো যুদ্ধের সময় বাড়িটা শত্রু পক্ষের ক্যাম্প ছিলো। তারা এখানে একজন বড় মাপের নেতাকে এনে খুন করে যার লাশটার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এবার ওরা ঠিক করলো জায়গাটায় কি আছে সেটা দেখবে। তাই তারা মাটি খোড়ার জন্য কোদাল নিয়ে আসলো এবং মাটি খুড়তে আরম্ভ
করল। কিছুদূর খোড়ার পরই ঠং করে কোদালটা লোহার মত কিসে যেন বাড়ি খেলো। আর একটু খুঁড়তেই একটা বাক্স বেরিয়ে আসলো। বাক্সের ভিতর পাওয়া গেল সারা শরীর শেকল দিয়ে প্যাঁচানো একটা কঙ্কাল। ওরা তো অবাক হয়ে গেল। গত রাতের দেখা মানুষটার শরীরটাও ঠিক এমনভাবে শেকল দিয়ে লাগানো ছিলো। তারপর লাশটা থানায় দিয়ে দেয়া হয়। কঙ্কালটার সাথে কিছু কাগজ ছিলো সেটা দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এবং তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর আর কখনো ওরা সেই ঝনঝন শব্দটা শুনতে পায়নি। তাহলে কি ওই কঙ্কালটাই রাতে হাটাহাটি করতো ওখান দিয়ে? যদি তাই হয়, একটা মরা মানুষ কিভাবে এমনটা করতে পারে! রাতে কি তাহলে ও জীবিত হতে পারতো?

একটি সত্যি ঘটনা যা বছর চারেক আগে আমার সাথে ঘটেছিলো

এটি একটি সত্যি ঘটনা যা বছর চারেক আগে
আমার
সাথে ঘটেছিলো।। সে রাতে আমি আমার
গ্রামের
বাড়ি চট্রগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে
ফিরছিলাম।।
প্রায় ঘণ্টা তিনেক একটানা গাড়ি
চালিয়ে কিছুটা
ক্লান্ত ছিলাম।। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটার
চিন্তায় এক
মুহূর্তের জন্যও অসতর্ক হই নি।।
রাত তখন প্রায় ২ টার মতো বাজে।। এতো
রাতে
ঢাকায় ফেরার মূল কারন হল, তারপরের দিন
সকাল
১০ টায় আমার অফিসে একটা জরুরী মিটিং
আছে।।
যাই হোক, আসার পথে খাজা বাবার
মাজার নামে
একটা জায়গা পড়ে।। সেই জায়গা নিয়ে
অনেক
কুসংস্কার রয়েছে, যে সেখানে নাকি প্রচুর
পরিমাণ
দুর্ঘটনা ঘটে।। চালক প্রায়ই গাড়ির
ব্যাল্যান্স
হারিয়ে ফেলে, অথবা ব্রেক জ্যাম হয়ে
যায়
ইত্যাদি
ইত্যাদি।। রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা ছিল।।
শুধুমাত্র
রাস্তায় কিছু ট্রাক আর গুটিকয়েক
প্রাইভেট কার।।
আমি আনুমানিক ৭০-৮০ কিমি বেগে গাড়ি
ছুটাচ্ছিলাম।। রাস্তার উপর তীক্ষ্ণ নজর।।
হটাত
একটা মোড় ঘোরার সময় আচমকা দেখলাম
একটা লোক
রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে।। লোকটার
পড়নে
একটা
ছেড়া ফাটা হাফ প্যান্ট।। গায়ে কোনো
কাপড়
নেই।।
মুখে জঙ্গলের মতো দাড়ি।। চোখগুলো
আলো
পড়ে
ঝিকঝিক করছে।। হলদে দাঁতগুলো দেখে
অন্য সময়
হয়তো ঘেন্না লাগতো।। কিছুক্ষণের মধ্যে
আমার
গাড়ি তার গায়ে আঘাত করবে অথচ মুখে
হাসি
নিয়ে
তাকিয়ে আছে আমার গাড়ির দিকে।।
ক্ষণিকের জন্য
স্তব্ধ হয়ে গেলাম।। ব্রেক চেপে ধরবো যে,
সেই
চিন্তাও তখন মাথায় আসছিলো না।। সত্যি
করে
বলতে
গেলে, যেই স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছিলাম,
সেই
স্পীডে
ব্রেক করলেও তা ঐ লোকটাকে সজোরে
ধাক্কা
দিবে।।
নিজেকে ফিরে পেলাম হটাত।। প্রানপ্রনে
ব্রেক
চেপে ধরলাম।। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।।
গাড়িটি
হেঁচড়ে যেতে লাগলো লোকটির দিকে!!
একদম
শেষ
মুহূর্তে চোখটা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে
গেলো।। আশা
করছিলাম, গগন বিদারি কোনো চিৎকার
শুনবো,
কিন্তু
অবাক করে দিয়ে কানে এলো কেউ যেনও
পাগলের
মতো
হেসে উঠলো।।
আমার গাড়ি লোকটাকে ভেদ করে চলে
গেলো।।
বেধ
করে বলছি কারন, আঘাতের কোনো শব্দ
আমি পাই
নি।।
যাই হোক, সজোরে ব্রেক চাপায় গাড়িটি
২০-২৫
মিটার সামনে গিয়ে থেমে গেলো।। দ্রুত
দরজা
খুলে
বের হলাম।। আশ্চর্য, এতক্ষণ রাস্তায় অনেক
গাড়িকেই সাইড কাটিয়েছি।। অনেক
গাড়িই
আমাকে
পাশ করে সামনে এসেছে, কিন্তু এই মুহূর্তে
যতদূর
দৃষ্টি যায় কোনো গাড়ি দেখতে পাচ্ছি
না।। যাই
হোক, এতো কিছু ভাবার মতো শক্তি তখন
ছিল না।।
প্রায় দৌড়ে সেই জায়গায় এলাম যেখানে
লোকটিকে
দেখতে পেয়েছিলাম।। কিন্তু, এসে কাউকে
দেখলাম
না।। ভাবলাম ধাক্কা খেয়ে হয়তো ছিটকে
দূরে
গিয়ে
পড়েছে।। প্রায় মিনিট দশেক আঁতিপাঁতি
করে
খুজলাম।। কিছুই দেখলাম না।। আমাকে
আরো অবাক
করে
দিয়ে রাস্তাটা নির্জনই রইলো।। একটা
গাড়ি
দেখলাম না।।
একরকম অমানুষিক কষ্ট উপলদ্ধি করলাম
মনের
ভেতর।। একটা মানুষকে মেরে ফেলেছি!! সে
রাতে
বহু
কষ্টে গাড়ি চালিয়ে বাসায়
ফিরেছিলাম।।
অফিসের
মিটিংটা জয়েন করে এরপর এক সপ্তাহের
ছুটি
নেই।।
আমার ঢাকার বাসায় আমি এবং আমার
ওয়াইফ
থাকতাম।। তাকে কিছু বলিনি।। পাছে, ভয়
পায় বা
আমাকে খারাপ ভাবে।।
আমার আচার আচরণ দেখে আমার ওয়াইফের
মনে
সন্দেহ দানা বাঁধতে লাগলো।। এদিকে
আমি
মোটামুটি শপথ করেছি যে তাকে কিছু
বলবো না।।
যাই হোক, আমার ওয়াইফের পিড়াপীড়িতে
পড়ে
অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম আবার দেশের
বাড়িতে
যাবো।। সেদিন শকালেই আবারো
চট্রগ্রামের
উদ্দেশে রওনা হই আমরা।। এবার আমার বউ
ছিল
সাথে।।
দেশের বাড়িতে আমরা ২দিন ছিলাম।।
হটাত
একদিন
বিকেলে ফোন এলো অফিস থেকে।। কিছু
বিদেশী
ক্লায়েন্ট এসেছে।। আমার উপস্থিতি খুব
করে
দরকার।। আমার ছুটির তখনো ২দিন বাকি।।
তাই
প্রথমে আমার বউ খুব করে আপত্তি
জানালো।।
কিন্তু,
তাকে বুঝিয়ে বলতে সে মেনে নিলো।।
বুঝতে এবং
বুঝাতে ভালোই সময় ব্যায় হলো।। সেদিন
রাত
১১টার
দিকে পুনরায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হই
আমরা।।
এদিন আমি গাড়ি খুব ধীরে চালাচ্ছিলাম।।
স্পীড
কোনো অবস্থাতেই ৪০-৫০ এর বেশি
উঠাচ্ছিলাম
না।। আমি গাড়ি চালাচ্ছি।। আমার বউ
পাশে বসে
গান শুনছে।। আস্তে আস্তে আবারো সেই
রাস্তায়
চলে
এলাম, যেখানে গতদিন এক্সসিডেন্টটা
করেছিলাম!!
খারাপ লাগা ভাবটা ফিরে এলো আবার।।
রাস্তার
উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছি।। হটাত আমাকে
চমকে
দিয়ে
রাস্তার ঠিক ঐখানটায় আজকেও ঐ
লোকটিকে দেখতে
পেলাম।। সাথে সাথে আমার বউকে ধাক্কা
দিয়ে
বললাম, সে কি কিছু দেখতে পাচ্ছে কিনা!!
গান
শুনতে থাকলেও তার চোখ খোলা ছিল।।
আমি ধাক্কা
দিতেই কান থেকে হেডফোন নামিয়ে বলল,
“আশ্চর্য!!
এই লোক হটাত করে কোত্থেকে উদয় হলো!!”
আমার আর
প্রশ্ন করা লাগলো না।। যা জিজ্ঞেস
করতে
নিয়েছিলাম তার উত্তর এমনিতেই পেয়ে
গেলাম।।
ব্রেক করে গাড়ি থামালাম।।
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, গাড়ি থামানোর
সাথে
সাথে লোকটা যেনো হাওয়ায় মিলিয়ে
গেলো।।
আমার
বউয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও নিজেও
ব্যাপারটা
ধরতে পেরেছে।। ভয় সতন্ত্র গলায় বলল,
“লোকটা
কোনদিকে গেলো??”
আমার কাছে কোনো উত্তর ছিল না।। শুধু
অবাক হয়ে
তাকিয়ে রইলাম খোলা রাস্তার দিকে।।
.

রাতে অনিক ভাইয়ার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা

অতিপ্রাকৃত কোন কিছুই আমাকে প্রত্যক্ষ করতে হয়নি,তাই আমার পক্ষে ভূতের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করা খানিকটা শক্তই বটে। কিন্তু নিজ পরিবারের একাধিক সদস্যের কথা অবিশ্বাস করাও আমার পক্ষে কঠিন। তারা একটি অলৌকিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিল এবং আজও সেই ঘটনার ভুক্তভোগী। আজ আমি আমার পরিবারের সেই ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করতে যাচ্ছি। জানিনা বলাটা ঠিক হবে কিনা,তবুও এই ভয়ংকর সত্যিটা সকলকে অবগত করার একটা অদৃশ্য আগ্রহ অনুভব করছি। যাই হোক,মূল ঘটনায় আসছি।
.
২০১২ সালে বরিশালের বরগুনা জেলায় বসবাসরত আমার খালাতো বোন সান্টির বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমাদের পরিবারের যে কোন বিয়ের অনুষ্ঠান বরগুনার বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত হয়ে থাকে। রেওয়াজ মত সেবারও এটাই করা হল।
আমার খালামনিদের বাসা থেকে মিলনায়তনটির ক্ষুদ্র দূরত্ব ছিল। হেটে যেতে প্রায় ১৫ মিনিটের মত লাগত। বিয়েতে আমি ছাড়া পরিবারের বাকি সকল সদস্য উপস্থিত ছিল। গায়ে হলুদের দিন রাতে বিয়ে বাড়ির সকলে ঠিক করল গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষে সকলে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে গিয়ে বিয়ের আসন এবং অন্যান্য সব ব্যবস্থা কি রকম চলছে তা পরখ করে আসবে। যেই ভাবা সেই কাজ। সকলে মিলে রাত ১২ টার পর মাইক্রোতে রওয়ানা হলো সেখানে। বলে রাখা ভালো, মিলনায়তনে যাওয়ার পথে অনেক বড় একটা খাসপুকুর এবং তার পাশে বড় বড় তালগাছ ছিল,তার আশেপাশে ও সামনে পেছনের জায়গাগুলো ছিল জঙ্গল প্রকৃতির আর ভীষণ নির্জন। মিলনায়তনে যাওয়ার পর সেখান থেকে আসতে আসতে রাত ২ টা বেজে গেল। মাইক্রো ড্রাইভারকে ছোট মামি আগেই বিদায় দিয়ে দিয়েছিল। বাড়ি কাছে হওয়ার কারনে সকলে মিলে হৈচৈ করে হেটে যাওয়ার প্ল্যান করলো।
তো যথারীতি সকলে ধীরগতিতে হাটছিল। হৈচৈ করার কথা থাকলেও কেন জানি সেরকম কিছুই করা হচ্ছিল না। চারদিকে সুনসান নীরবতা। দম আটকে আসার মত নিস্তব্ধতা বিরাজমান ছিল। সবাই নিচু আওয়াজে গল্পগুজবে বিভোর ছিলো। খাসপুকুরের কাছাকাছি আসার পরই হঠাত্‍ আমার এক কাজিন চিত্‍কার করে উঠল। সবাই সামনের দিকে তাকিয়ে যা দেখল তা তারা বিশ্বাস করতে পারছিলো না।
প্রায় ৭ হাত দূরত্বে ১২-১৩ বছর বয়সী সাদা জোব্বা এবং লম্বা টুপি পরিহিত একদম হুবহু একই পোশাকের, একই আকৃতির, এবং একই গড়ণের ১০-১২ টা ছেলে তাদের দিক থেকে পেছন ফিরে উল্টো দিকে উল্টো পায়ে হাটছে। তাদের দেখে মনে হচ্ছিল একে অপরের কার্বন কপি। এত রাতে এই জংলি এলাকা দিয়ে এত ছোট ছেলেদের যাওয়া আসার কোন প্রশ্নই ছিল না। এদের হাটার ধরণ দেখে সবাই বুঝতে পারলো যে এগুলো মানুষ নয়। তারা এটা দেখে ভয়ে জমে গেলো। চিত্‍কার চেচামেচি করতে শুরু করল। তারপর পেছন দিক ফিরে জোরে জোরে হাটা শুরু করলো। একসাথে এতগুলো লোক চোখে ভুল দেখতে পারেনা।
আমার একটা খালাতো ভাই অনিক। ও ছিল অত্যাধিক সাহসী। সুপার ন্যাচারাল ব্যাপারে বরাবরই ওর মাত্রাতিরিক্ত কৌতূহল ছিলো। ও সাহস করে পেছনে তাকালো। কিন্তু আর কিছুই দেখতে পেল না। এতক্ষন যে এখানে কিছু ছিলো তা বোঝার কোন উপায় ছিলো না। ঐগুলো মানুষ হলে কোনদিনও এত তাড়াতাড়ি ঐ স্থান ত্যাগ করতে পারত না। যাই হোক, ও সকলকে আশ্বস্ত করলো যে সামনে আর কিছু নেই। সকলে তাড়াতাড়ি করে বাড়ির দিকে এগোতে শুরু করলো। কিন্তু তত্‍ক্ষণাত সামনের খাসপুকুরের বীপরিত পাড়ে প্রচুর বাতাস বইতে শুরু করলো। তালগাছের পাতাগুলো এমন ভাবে নড়ছিলো যে দেখে মনে হচ্ছিল ঝড় এসেছে। কোনমতে সবাই দোয়া দুরূদ পড়তে পড়তে দৌড়তে লাগলো। সে রাতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে সকলে বাড়ি ফিরল। বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের ঘটনা খুলে বললো। বেশ কিছুক্ষন পর সকলে টের পেল যে অনিক ভাইয়া সেখানে নেই। ভাইয়াকে বাড়ির কোথাও খুঁজে পাওয়া গেলো না। ফোন করা হলো কিন্তু ওপার থেকে কেউ ফোন ধরলো না। বাধ্য হয়ে মামারা ওকে খুঁজতে বের হলো। ওকে ঐ রাস্তার কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। অবশেষে মামারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে এলো। সকলে সিদ্ধান্ত নিলো সকালে কিছু একটা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ওদিকে আমার আরেক কাজিন সিফাত ভাইয়ার ওপর বিয়ের সব কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত ছিলো। ওকে সারারাত মিলনায়তনেই থাকতে হয়েছিল। ভোর রাতে কি একটা দরকারে ওকে বন্দর যেতে বলা হয়েছিল। বন্দর যাওয়ার মেইন রোডে পুলিশের টহল ছিল,আর ভাইয়ার সাথে বাইকের লাইসেন্স ছিলো না। তাই পুলিশি ঝামেলা এড়ানোর উদ্দেশ্যে ভাইয়া বাইক নিয়ে ক্ষেতের রাস্তা দিয়ে বন্দরে যাচ্ছিল। সেখানে যেতে যেতে হঠাত্‍ ছোট একটা খড়ের গাদার পাশে একটা মানুষের দুটো পা দেখতে পেল সে। ভাইয়া ভয়ে ভয়ে কাছে এগুলো। খড়ের গাদার ভেতরে মানুষটার মুখ গোজা ছিল। খড় সরিয়ে ভাইয়া যা দেখলো তার জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিল না। অনিক ভাইয়াকে জ্ঞানশূণ্য অবস্থায় আবিস্কার করল সিফাত ভাইয়া। ওকে পিটিয়ে এভাবে রেখে গেছে কেউ। ভাইয়া বাসায় ফোন করে খবর দিল। অনিক ভাইয়াকে বাসায় নিয়ে আসা হলো। সবাই অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো ওর সমস্ত সমস্ত শরীরে রক্তজমাটের কালো কালো দাগ,আর খামচির দাগ। বুঝতে কষ্ট হলো না যে, কেউ তাকে নির্দয়ভাবে মেরেছে।
কয়েক ঘন্টা পর ওর জ্ঞান আসে।এরপর ওকে সবাই জিজ্ঞেস করে রাতে ওর সাথে কি ঘটেছিলো।কিন্তু ও কিছুই বলতে পারছিলো না। এরপর ওর জ্বর আসে। ৫ দিন পর জ্বর নেমে যায়,কিন্তু হাত পা অবশ হয়ে প্যারালাইসিসের মত হয়ে যায়।
ভাইয়ার সুস্থ হতে বেশ কিছুদিন সময় লেগে যায়। আট মাস পর ভাইয়া পুরোপুরি সুস্থ হয়। এর মধ্যে ভাইয়াকে এত জিজ্ঞেস করার পরও কোনদিন একটিবারের জন্যও সে রাতের ঘটনা আমাদের খুলে বলেনি।
সে রাতের পর থেকে কিছুদিন পর পরই ভাইয়াকে রাতে একা একা কথা বলতে দেখা যায়। আর প্রায়ই ভাইয়া অনেক রকম স্বপ্ন দেখতো আর চিত্‍কার চেচামেচি করে অদ্ভূত আচরন করতো। প্রথমদিকে প্রায়ই এইরকম হত। এখন অনেক কমে গেছে। তবে এখনও ভাইয়া মাঝে মাঝেই রাতে একা একা কথা বলে।
এই ঘটনার পর আমাদের পরিবারের সবাই ঠিক করে আর কোনদিন কারো বিয়ে হলে রাতে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনের পথে পা বাড়াবে না। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বেশিদিন বহাল থাকলো না। বিগত বছরই আমরা সবাই আমার মামাতো বোনের বিয়েতে রাতে মিলনায়তনে গিয়েছি এবং রাত ১.৪৫ এ ঐ রাস্তা দিয়েই হেটে বাড়ি ফিরেছি। এবার আর কোন ভৌতিক ঘটনা ঘটে নি।
.
কিন্তু সে রাতে অনিক ভাইয়ার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা আজও আমাদের পরিবারের কাছে একটা বড় রহস্য।

রাজশাহীতে দাফনের সময় জেগে উঠলেন মৃত নারী

শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর এলাকার মাদারপুর গ্রামের গৃহবধূ পারুল বেগম। পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত গোদাগাড়ী সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শর্মিলা শর্মা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পরে তাকে দাফনের প্রস্তুতি নেয়ার সময় জেগে উঠেন পারুল বেগম।

পারুল বেগমের স্বজনরা জানান, চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পরে পারুল বেগমকে বাড়িতে নেয়া হয়। সে মারা গেছে এমন সংবাদ দেয়া হয় আত্মীয়দের মাঝে। চারদিকে পড়ে যায় কান্নার রোল। এর মধ্যেই চলছিল দফনের প্রস্তুতিও। ঠিক সেই সময় সবাইকে অবাক করে দিয়ে নড়েচড়ে বসেন পারুল বেগম। একপর্যায়ে কথা বলে ওঠেন। স্বামী আব্দুল বারির হাত ধরে ক্ষমাও চান।

ঘটনার পরে স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্সে করে পারুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে এবার পথেই মারা গেলেন পারুল।

আব্দুল বারি অভিযোগ করেন, গোদাগাড়ী হাসপাতালে তার স্ত্রীকে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। ওই সময় চিকিৎসা পেলে পারুল হয়তো বেঁচে যেতেন। এসময় ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তোলেন তিনি।
ডা. শারমিন জাহান মাওলা জানান, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে পারুল বেগমকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ আছে। আর সেখানে স্বাক্ষর করেছেন ওই সময়কার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শর্মিলা শর্মা। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ডা. শর্মিলা শর্মাকে পাওয়া যায়নি।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন আবদুস সোবহান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

ভুতের গল্প ৬১ উত্তর কোরিয়ার ভুত

উত্তর কোরিয়াতে অবস্থিত একটি বাড়িকে ঘিরে একটি রহস্য দানা বেঁধে আছে। অনেকেই তাকে বলে পোড়া ভূতের বাড়ি।। অনেকেই বলে অভিশপ্ত।। এর পিছনের ঘটনা তুলে ধরছি।। এই বাড়িতে ভাড়া থাকতো একজন সরকারি কর্মজীবী।। লোকটা, তার স্ত্রী, এবং এক মেয়েকে নিয়েই তাদের পরিবার ছিল।। একদিন খুব রাতে পার্টি করে বাসায় আসার পর লোকটা এবং তার পরিবারের সবাই ঘুমাতে চলে যায়।। তাদের অসতর্কতায় চুলা থেকে প্রথমে লিভিং রুমে আগুন লাগে।। এবং পড়ে দ্রুত সেই আগুন বেডরুমে ঢুকে পড়ে।। রাতে ঘটার কারণে কেউ তাদের সাহায্য
করতে পারে নি।। ফায়ার বিগ্রেড আগুন নেভানোর পর পুড়ে কঙ্কাল হয়ে যাওয়া তিনটি লাশ উদ্ধার করে।। ঘটনা ঘটা শুরু করে এরপর থেকে।। সেই বাড়িতে প্রায় ১ বছর পর নতুন ভাড়াটে আসে।। কয়েকদিন পর থেকে তারা অভিযোগ
করতে থাকেন যে বাড়িতে নাকি সন্ধ্যার পর থেকেই ছাই উড়তে দেখা যায়।। পোড়া ছাই।। যদিও তারা ছাই তৈরি হবার মতো কোন কাজ করেন না তবুও তারা প্রায়ই এই জিনিস দেখতে পায়।। মাঝে মাঝে স্বচ্ছ সাদা জিনিসপত্র
(যেমন তোয়ালে, সাদা শার্ট, প্যান্ট) এর মধ্যে কালো কালো ছোপ পাওয়া যায়।। ছোপগুলো অনেকটা হাতের আকৃতির।। এবং তার আশে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ছাইয়ের গুঁড়া।। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দানা বাঁধতে লাগলো।। তবে কি ফিরে এলো সেই লোকটা এবং তার পরিবার?? এবার কি তবে অতৃপ্ত আত্মা হয়ে ফিরে এলো নিজেদের ঘরে??

ঘটনা মারাত্মক রূপ নেয় যখন সেই ফ্ল্যাটের এক লোক কিছু একটা প্রত্যক্ষ করে।। ব্যপারটা অনেকটা এরকমঃ রাতে টয়লেট চাপায় সেই ব্যক্তি ঘর থেকে বের হয়ে টয়লেটে যাচ্ছিলেন।। কাজ শেষে নিজ ঘরে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি রান্নাঘরে খসখস শব্দ পান।। ঘরের লাইট নিভানো ছিল।। কারেন্টের অপচয় রোধ করার জন্যই হয়তো।। তিনি ভাবলেন বেড়াল হতে পারে।। রান্না করা কিছু খাবার তখনো বাইরে ছিল।। উনি তাই বিড়ালটাকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য রান্নাঘরে উঁকি দিলেন।। উঁকি দিয়েই ভয়ে জমে গেলেন তিনি।। রান্নাঘরে ঠিক তাকের পাশে তিনটি ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে।। দাঁড়িয়ে না ঠিক, মাটির উপর ভেসে আছে।। অথবা খুব লম্বা।। কারণ উনার চেয়ে সেগুলোর
উচ্চতা অনেক বেশি ছিল।। দেখার সাথে সাথে তিনি চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান।। বাড়ির লোকজনের সেবায়
উনার জ্ঞান ফিরলে উনি সব কথা খুলে বলেন।। সাথে সাথে সবাই মিলে রান্নাঘরে যান এবং দেখতে পান তাকের উপর একসাথে অনেকগুলো ছাই স্তুপ হয়ে পড়ে আছে।।। চিন্তা করেন, একটা পরিষ্কার পরিচ্ছন রান্নাঘর, তার একটি তাকে স্তুপ করা ছাই।। কেমন ব্যপার?? সেই থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো পুরো এলাকায়।। অনেকেই বাড়িটিকে ভূতুড়ে বাড়ি আখ্যায়িত করলেন।। বাড়ির মালিকও ভয় পেয়ে বাড়ি বিক্রির চেষ্টা করতে লাগলেন।।

এর মাঝে একদিন বাড়িতে নাইট ভিসন ক্যামেরা লাগান এলাকার একজন কৌতূহলী ব্যক্তি।। সেই নাইট ভিশন ক্যামেরায় কিছু একটা ধরা পড়ে।। ছবি তোলার কিছুদিনের মধ্যে ঐ ব্যক্তি নিজ ঘরে বিষপান করে মারা যান।। এর মাঝে কোন যোগসাজশ আছে কি?? এই ঘটনা নিয়ে অচিরেই একটি ছবি বানানো হবে কোরিয়াতে।। বাড়িটিকে ব্যবহার করতে চাইছে তারা।। শুটিং সব হবে দিনের বেলা।। কি জানি, সেখান থেকে হয়তো আবার নতুন কোন ঘটনা বেরিয়ে আসবে।।
( সমাপ্ত )

ভুতের গল্প ৬০ মতিঝিলের ভুত

ঢাকার মতিঝিলের বেশ জনপ্রিয় আবাসিক এলাকা (ডঃ মোতালেব নামক একজন ডাক্তারের চেম্বারের ঠিক পিছনে তার বাড়ির সামনের গলিতে) এটা একটা শোনা ঘটনা। আমাদের বাড়ির সামনের গলিতে এমন ঘটনা ঘটার কথা শোনা গেছে, গলিটা এমন যে রাস্তা থেকে দেখলে গলির শেষ মাথায় শিড়ি, গলির দুইদিকে দুইটা বাড়ি।

আজ থেকে প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করে ডান পাশের বাড়ির নিচতলার একটি মেয়ে। একদিন রাতে ঐ মেয়েটা ঘুমাচ্ছিল। রাত্রে প্রায় ৪ টার দিকে মেয়েটা একটা মহিলার পায়ের নূপুরের আওয়াজ পায়। নাচিয়েরা পায়ে যে নূপুর পড়ে সেটা। তো সে তা পাত্তা দেয় নাই,ভেবেছে ঘুমের মধ্যে কি না কি শুনেছে। এসব ভেবে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন রাত্রে একই সময় সে আবারো একই আওয়াজ পায়। এবার সে একটু আগ্রহী হয়। তার রুমের একটা জানালা ঐ গলির দিকে মুখ করে ছিল। জানালা খুলে তাকালে গলির অনেকখানি দেখা যায়। সে জানালা খুলতেই তার রুম আলোতে ভরে যায়। আলো সয়ে এলে সে দেখতে পায় গলিতে একটা মহিলা সাদা নাচের কাপড় পরে নূপুর পায়ে হাটছে। ওই কাপড়ের উজ্জ্বলতায় পুরো গলি আলোতে প্রায় ভরে গেছে। মহিলাটা গলির এ মাথা থেকে একবার ওমাথায় যাচ্ছে আর আসছে। আর তার মুখে ছিল এক অদ্ভূত হাসি। তবে তার চোখ ছিল ভয়ানক,ঠিক গোলাকার,মনি হালকা সাদা এবং লম্বাটে। মেয়েটা হঠাত করে মহিলাটার চোখের দিকে তাকাতেই সম্মোহিত হয়ে যায়। যেন ঐ চোখ তাকে এখনি গিলে খাবে।সএভাবে মহিলা এবং মেয়েটা পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকে। এভাবে কিছু সময় পর ঐ মেয়েটার মা ঘুম থেকে জেগে ওঠে। আর মেয়েকে ওভাবে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকতে দেখে ডাক দেয় কিন্তু মেয়েটা সম্মোহিত হয়ে থাকে। তখন তার মা তাকে একটা ধাক্কা দেয়। এবার মেয়েটা হকচকিয়ে ওঠে। আবার যখন সে জানালার বাইরে তাকায় তখন মহিলাটা নাই। ফজরের আযান শুরু হয়ে গেছে। মেয়েটা পরেরদিন তার মাকে সব কথা বলে। কিন্তু তার মা পাত্তা দেয় না। সেদিন রাতে তার মা একই ঘটনার শিকার হয়। কিন্তু সেদিন তার মেয়ে আগে থেকেই জেগে ছিল বলে তার মা বেচে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর যখন নতুন ভাড়াটিয়া আসে, তারাও একই ঘটনা দেখে।কিন্তু যেভাবে ঘটনাটা শুরু, ঠিক সেভাবেই শেষ হয়ে যায়। ঐ মহিলাকে আর দেখা যায় না তবে প্রায় রাতে সেই নূপুরের আওয়াজ ঠিকই পাওয়া যায়।

ভুতের গল্প ৫৯ ভয়ঙ্কর সেই পাচ অতৃপ্ত আত্মা এখনো ঘুড়ে বেড়ায়

অনেকেই বিশ্বাস করেন আমাদের চারপাশে সবসময়ই অতৃপ্ত আত্মারা ঘুরে ফিরে বেড়ান। আমরা কখনও তাদের অস্তিত্ব টের পাই, আবার কখনও পাই না। জাপানের এমনই পাঁচ অতৃপ্ত আত্মার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের কথা শোনা যায় যা সত্যিই ভয়ংকর। এই পাঁচ অতৃপ্ত আত্মার কথাই এখানে বলা হলো:

ওকিকু পুতুল: ছোট্ট মেয়েটির নাম ওকিকু। ঘটনাটা অনেক বছর আগের। মেয়েটির একটি সুন্দর পুতুল ছিল যার পরনে ছিল ঐতিহ্যবাহী পোশাক আরমাথায় ছোট চুল। ওকিকুর সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল পুতুলটি। একদিন ঠাণ্ডাজনিত অসুখে পড়ে মারা যায় মেয়েটি। কিছুদিন পর ঘটলো আশ্চর্যজনক ঘটনা। পুতুলটির চুল আগের চেয়ে লম্বা হয়ে গেছে। সবাই ধরে নিল ওকিকুর আত্মা ঢুকে গেছে এই পুতুলটির মাঝে। এরপর থেকেই পুতুলটিকে রেখে দেওয়া হলো খাচায়।

কুচিসাকে ওন্না: অপঘাতে মারা গিয়েছিল কুচিসাকে ওন্না। জীবিত অবস্থায় তার মুখে গভীর এক কাটা দাগ ছিল যা নিয়ে তার ভেতর গভীর দুঃখবোধ ছিল। মৃত্যুর পর ওন্নার অতৃপ্ত আত্মা প্রচণ্ড ক্রোধ নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়ায় আর কাউকে দেখলেই প্রশ্ন করে, আমি কি দেখতে সুন্দর ? ট্রেঞ্চ কোট ও সার্জিকাল মাস্কে ঢাকা মুখ দেখে পথিক যদি তাকে সুন্দর বলে তবে ওন্না তার মুখ কেটে দাগ ফেলে দেয়। আর কেউ যদি তাকে অসুন্দর বলে তাহলে তাকে মাথাটাই হারাতে হয়।

হিতোবাশিরা: জাপানে প্রচলিত প্রাচীন কিছু ধারণার একটি হলো, বিভিন্ন স্থাপনায় মানুষ ব্যবহার করলে স্রষ্টা খুশি হন এবং স্থাপনা দীর্ঘস্থায়ী হয় এভাবে বিভিন্ন স্থাপনায় কত শত নারী, পুরুষ ও বাচ্চাকে বলি দেওয়া হয়েছ ইয়াত্তা নেই। বলি দেওয়া এই সকল মানুষের আত্মা আজও পথে পথে ঘুরে বেড়ায়।

গার্ল ফ্রম দ্য গ্যাপ: এই আত্মা ঘরের কোনায় কোনায় লুকিয়ে থাকে। ঘরের লোকজন কারো যদি চোখাচোখি হয় তাকে সম্মোহন করে ফেলে। লুকোচুরি খেলার আমন্ত্রণ জানায়। এতে সায় দিলেই বিপদ। অজানা এক স্থানে নিয়ে যাবে যেখান থেকে ফিরে আসা যায় না।

টিক টিক: এটা সুন্দরী এক নারীর অতৃপ্ত আত্মা। অনেক অনেক আগে ট্রেনে কাটা পড়ে মাঝ বরাবর কাটা পড়ে। এরপর থেকে নিচের অংশ খুঁজে না পেয়ে দুই হাতে ভর দিয়ে হাঁটে। হাঁটার সময় টিক টিক টিক আওয়াজ হয়। গভীর রাতে পথিমধ্যে কাউকে পেল একই হাল করে সে। রাতে টিক টিক আওয়াজ শুনলে সাবধান ।

ভয়ঙ্কর সেই পাচ অতৃপ্ত আত্মা

ভুতের গল্প ৫৮ অন্ধকারের পরিচিত ভুত

আজকে যে ঘটনাটি শেয়ার করা হচ্ছে এটি একটি অসম্ভব সত্য ঘটনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি। যার ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। লেখক নিরব আহমেদ

এটি আমার এক বন্ধুর বাবার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। ঘটনাটি ছিল এইরকম যে, তিনি অর্থাৎ আমার বন্ধুর
বাবা ঢাকা চাকরী করতেন। প্রায়ই সে ছুটিতে রাতে বাসায় ফিরতেন এবং বাসায় ফিরতে তার মোটামুটি বেশ রাত হয়ে যেত। একদিন সে ঢাকা থেকে বাসায় ফিরছিল। সেদিন আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল এবং গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন ছিল রাত প্রায় সারে এগারোটা থেকে বারোটার মত। সে একটি নির্জন রাস্তা দিয়ে হেটে বাড়ি ফিরছিল।

যে রাস্তার পাশে ছিল একটা কবরস্থান। সে ছিল প্রচণ্ড সাহসী টাইপের একজন মানুষ। অনেকদিন যাওয়া-আসার কারনে সে ঐ রাস্তা দিয়ে একা যেতে কোন ভয় বা দ্বিধাবোধ করতেন না। তো সেদিন সে এমনি করে ঐ পথ ধরে একা একা হেটে যাচ্ছিল। কিছু দূর যাওয়ার পর সে দেখতে পেল সামনে তার পরিচিত এক লোক হেটে যাচ্ছে।

লোকটিকে দেখে সে চিন্তা করল, বেশ ভালই হল। দুজন গল্প করতে করতে বাড়ি যাওয়া যাবে। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হল, সে যতই তাকে সামনে গিয়ে ধরার চেষ্টা করছে, ততই লোকটির পেছনে চলে যাচ্ছে। সে এইবার একটু বিব্রত বোধ করল। সে লোকটিকে এবার জোরে ডাক দিতেই লোকটি দাড়িয়ে পড়ল। এরপর সে লোকটির সাথে হাটা শুরু করল। হাঁটতে হাঁটতে সে একসময় বাড়ির খুব কাছে চলে আসল। অনেকদিন পর বাড়ি ফেরার কারনে সে অর্থাৎ আমার বন্ধুর বাবা বাড়ির কাছে আসতেই কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিল। এবং তার সাথে আসা সেই লোকটার কথা রীতিমতো ভুলে গিয়েছিল।

হঠাৎ সেই লোকটার কথা মনে পরতেই সে পেছনে তাকাল। কিন্তু পেছনে তাকিয়ে সে অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেল না। এরপর সে অতশত না ভেবে বাড়িতে চলে গেল এবং সবাইকে সবকিছু খুলে বলল। তার কথা শুনে রীতিমতো সবার মাথায় বাজ পরে গেল। কেননা, সে যে লোকটির সাথে তার বাড়ি পর্যন্ত এসেছে, সেই লোকটি কিছুদিন আগেই মারা গিয়েছিল। এখন আমার প্রশ্ন।।
লোকটি কি কোন খারাপ কিছু ছিল ? আর যদি খারাপ কিছু হত, তাহলে সে তার কোন ক্ষতি করল না কেন ? নাকি পরিচিত হওয়ার কারনে সে তার কোন ক্ষতি করতে চায়নি ? এর ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই............।।

ভুতের গল্প ৫৭ ইহুদী আর রোহিঙ্গাদের মিলে প্রায় ৬০ লক্ষ ভুত (ভয়ঙ্কর)

আমরা ভদ্র লোক বনাম রোহিঙ্গা
লেখকঃ ডন চৌধুরী ( এডমিন )
.
একবিংশ শতাব্দী , আমরা বাস করছি সভ্যতার চরম সীমারেখায় , আমাদের সভ্যতার কানুন আমাদের কে অমরতা বাদে সব দিয়েছে . আমরা ইচ্ছা করলে সহজেই দুনিয়া ধ্বংস করে দিতে পারি বারংবার ।
এত কিছু সত্ত্বেও আমদের আত্মকেন্দ্রিকতা আমাদের শুধু পিছনে নিয়ে যাচ্ছে , বানরের তৈলাক্ত বাশের অঙ্কের মত যতটুকু না উপরে উঠছি আমাদের মানবিকতা তার থেকে নিচে নেমে যাচ্ছে .... এবং শুধু নামছেই ।
সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তি কাল ১৯৪৯ ,
পৃথিবীকে ঘুচিয়ে নেবার সময় । যুদ্ধে বিধ্বস্ত পরাজিত জার্মানি নিজেদের প্রচণ্ড প্রতাপ হারিয়ে স্লান হয়ে গেছে ।
গঠন হল জাতিসঙ্ঘ
উদ্দেশ যুদ্ধে বিধ্বস্ত জাতিগুলকে একত্রিত করে আবার নিজেদের মত করে পথচলা শুরু করা ।
যুদ্ধের সময় বন্দি শিবিরে নাৎসি বাহিনির হাতে ৬০ লক্ষ ইহুদির মৃত্যু নাড়া দিয়ে গেল পাষণ্ড হৃদয় ।
অতপর ইউরোপিয়ানদের জন্য ক্রমেই প্রচণ্ড এক আপদ হয়ে উঠতে লাগলো ইহুদি জাতি ।
ইহুদিদের জন্য আলাদা আবাস ভুমি চাই , চারিদিকে রব উঠতে থাকল !
প্রস্তাব গেল জাতিসঙ্ঘে কিন্তু গোল বাধল ইউরোপের কোন দেশ নিজেদের এক ফোটা ভুমি ছাড়তে নারাজ ।
অবশেষে এগিয়ে এল ইংল্যান্ড তাদের অধিনে তখনো অর্ধ দুনিয়ার কর্তিত ।
তোমরা আরব কাজেই তোমাদের আরবে ফিরে যেতে হবে ধুয়ো তুলে দখল করে নেওয়া হল জেরুজালেম , গঠন হল ইসরায়েল বিতাড়িত হল প্যালেস্টাইন বাসি ।
তার পর অনেক জল গড়িয়েছে ধীরে ধীরে ইসরায়েল একটা ফ্রাঙ্কেনাইস্তাইন হয়ে উঠলো । খুন করল কয়েক লক্ষ নিরীহ প্যালেস্টাইনবাসীকে ।
সারা পৃথিবী চুপ , নিরাপত্তার দোহায় দিয়ে নিজেদের হাত রাঙ্গিয়ে নিল আরও ।
সময় ২০১৫
সাগর পথে মালয়শিয়া , ইন্দোনেশিয়া পাড়ি জমানোর সময় ৭০০ অভিবাসী উদ্ধার তাদের অধিকাংশ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি ।
বাংলাদেশিরা না হয় কাজের খোজে যায় আপনি একবার ভেবে দেখেছেন রোহিঙ্গারা কেন যায় ।
তাদের না আছে দেশ , না আছে ঘর ... আপনি বাস করছেন কিনা সভ্য জগতে যেখানে ২৫ লক্ষ মানুষ কোন দেশের বাসিন্দাই নয় !!! সেলুকাস
তারা চায় ভূখণ্ড , তারা চাই জাতীয়তাবাদ ।
আজ রোহিঙ্গারা বার্মার নাগরিক না বলে তাদের উপর চলছে চরম অত্যাচার আবার তারা বাংলাদেশি নাগরিক নয় বলে সীমান্ত থেকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মিত্ত্যুর মুখে ।
নাহ , রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমাদের কোন স্বার্থ নেয় ।
নেই রোহিঙ্গাদের কোন প্রচার যন্ত্র , তারা মূর্খ মানুষ । তাদের পিছনে দৌড়ে কোন লাভ নেই কাজেই জাতিসঙ্ঘ , ও আই সি মুখে কুলুপ এঁটে বশে আছে ।
কেন এই নীরবতা , কেমন সভ্যতার কথা বলে আমরা মুখে ফেনা তুলি । ভালই তো ছিল হোমোসফিয়ানদের শৈশব ... হে আলিমুল গায়েব আমাদের কে আমাদের অরণ্য ফিরিয়ে দাও ।
আজ আমি শপথ করছি , নিশ্চয় শেষ বিচারের দিন আমাদের এই নিরবতার বিচার হবেই।
সেদিন হাত উচু করে কোন অর্ধ নগ্ন নারী বলবেনা , আমদির এক্তু খাতি দেন আমার বাচা ২দিন না খায়ি রয়েছে ।

ভুতের গল্প ৫৬ মেয়ে লাশের গল্প

★ কোথায় গেল মেয়েটি? ★
লেখা: Shopner Pothik
.
.
কয়েকমাস আগের কথা। সেদিন প্রবল ঠান্ডা হাওয়ায় গায়ে জ্যাকেট পড়ে বিকালে বই কিনতে আন্দরকিল্লায় গিয়েছিলাম। শীতের মধ্যে টুপটাপ টুপটাপ করে অল্প অল্প বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টিতে ঠান্ডা আরও বেশি বেড়ে গেল। কিছুটা হাড়কাপা নিয়ে বই কিনা শেষ করলাম। আন্দরকিল্লা এদিকেই জে.এম.সেন হলে আমার এক পুরনো বন্ধু থাকে। ভাবতেছি ওর সাথে দেখা করেই যায়। ও আবার ঘর থেকে বের হতে চাচ্ছিল না কারণ তখন প্রবাহ প্রবল অনেক শীত। আমার কথায় হার মেনে ওকে আমি ঘর থেকে বের করে নিয়েই আসলাম। ঠান্ডা ভাব দূর করার জন্য চা খেয়ে কিছুক্ষণ চায়ের দোকানে আড্ডা দিলাম। নানান রকম কথা বলতেছি মনটাকে ভাল করার জন্য। তবে চায়ের দোকানে আড্ডা ভাল না জমাই চলে গেলাম ডিসি হিল-এ। বেশ নিরিবিলি জায়গা। দেখতেছি কয়েকটা জুটি বেশ আড্ডাই দিচ্ছে। কেউ কেউ মোবাইল নিয়ে কথা বলছে। দেখে যা মনে হল তা স্বাভাবিক কথা না, প্রেম করছে মুঠোফোনে। এসব দেখে মনটা বেশ অন্য রকম ফুরফুরাই হয়ে গেল। কি আজব পরিবেশ! শীত পড়তেছে তার প্রতি কোন খেয়ালি নেই। পাশে দেখি ফ্লাক্স নিয়ে চা ওয়ালা চাঁ চাঁ করছে। কিছু দূর দেখি বাদাম ওয়ালা চেরাকের আগুন দিয়ে বুট বাদাম বিক্রি করছে। ওকে বললাম, চল বুট বাদাম খাই। ও আবার অনীহা প্রকাশ করল। জোর করে বললাম চল খাই। বুট বাদাম কিনে সাথে আরও বেশি আড্ডা জমালাম। আড্ডা দিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু চোখ আমার সবখানে। কে কি করতেছে না করতেছে লক্ষ্য করতেছি। দেখি একটা দম্পতি তার মেয়েকে নিয়ে ডিসি হিল-এ মঞ্চে থাকা জায়গায় বসে তারা তারা কথা বলছে। আবার একটা ছেলে একটা মেয়ের হাত ধরে হাঁটাহাঁটি করছে। হঠাৎ দেখি একটা মেয়ে গেইট দিয়ে ঢুকে একলা একলা কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করতেছে। ওর সাথে পাশে কেউ নেই। আমাদের পাশে থাকা বসার জায়গায় কিছু দূরে বসে আছে। মেয়েটার সাথে দেখি আসলেই কেউ নেই। কিন্তু রাত তো হয়েই এল। শীত পড়তেছে, একলা একলা বসে থাকা মানেটা কি? গায়ে কোন শীতের কাপড়ও নেই। সালোয়ারকামিজ পড়া মেয়েটি। চেহারাটা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে না। আবছা আবছা আলোতে কিছুটা দেখছি। আচ্ছা যাক... নিজের কাজে মন দিলাম। আমার বন্ধু আমার সাথে বকবক করে কথা বলেই যাচ্ছে আমি কোন ওর কথা শুনছি না শুধু দেখছি এদিক-ওদিক। কেউ কেউ দেখছি মুক্ত উদাস মনে সিগারেট টানছে আবার কেউ কেউ দেখছি চলেই যাচ্ছে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে। প্রায় খালি হয়েই এল জায়গাটা। কিন্তু মেয়েটি বসেই আছে। জায়গাটা আর নিরাপদ না ভেবে বের হয়ে এলাম। কারণ রাত তখন সাড়ে ৯টা। আমার বন্ধুর সাথে রাস্তায় গল্প করে করে এসে ওকে বিদায় দিয়ে আবার আন্দরকিল্লায় আসলাম। আমার বাসা কাপ্তাই রাস্তার মাথা পরে কাজীর হাট ভিতরের গলিতে। ১নং কালুরঘাট বাস ধরতে হবে, কিন্তু এত দূরে বাস পাওয়া মুশকিল। আন্দরকিল্লা জায়গাও দেখি থমথমে। মনে একটা সংশয় হলো অন্য দিন তো এভাবে থাকে না। কিন্তু আজ কেন? এসব কথা চিন্তা করতে করতে চিন্তা বাদ দিয়ে বাস আসার প্রতি মনোযোগ দিলাম। কোনোটা বাস যাচ্ছে না। যাও যাচ্ছে বহদ্দারহাট পর্যন্ত। ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাওয়া অনেক কষ্টকর। তাই আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকলাম। কিছুক্ষণ দেখি একটা নতুন বাস কালুরঘাট কালুরঘাট বলে চিৎকার করছে। আবারও মনে সংশয় হলো এত বড় বাস এত রাতে এত সহজে যায়না। বাসটা বেশ নতুন। বাসে উঠে পিছনে সিটে গিয়ে বসতেই দেখি ঐ সেই মেয়েটি যাকে আমি একলা একলা ঘুরাঘুরি করতে দেখেছি ডিসি হিল-এ। কিন্তু ঐ মেয়েটি এই বাসে আসল কিভাবে? এই বাস তো নিউ মার্কেট থেকে আসছে। তাহলে? মনে আমার অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রশ্নেরা আমার কাছে আসছে আর যাচ্ছে। আজব চিন্তারা আমার পাশে এসে বসে আছে। কিন্তু না ভেবে উপায় কি! চিন্তার তো বিষয়! যাই হোক আমি আমার সামনের দিকে ফিরে তাকালাম। বাস ছেড়ে দিয়েছে। আমি বাসের জানালার দিকে তাকিয়ে রইলাম। বাস ড্রাইভার পিছনের দিকে লাইট জ্বালিয়ে দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছি। বাহ! বেশ সুন্দর মেয়েটি। তখন অন্ধকারে ভালভাবে দেখা যায়নি। বয়স আর কত হবে আনুমানিক ২০/২১ হবে হয়ত। ওর দিকে না চেয়েও পারছি না। বেশ অপরূপ দেখতে। কিন্তু এভাবে থাকিয়ে থাকলে নিশ্চয় অন্য কিছু মনে এনে সন্দেহ করবে। কেমন জানি দেখতে মেয়েটি। একবার থাকিয়ে থাকলে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে আবার আরেকবার থাকিয়ে থাকলে মনে হয় অদ্ভুত ধরণের, বিকৃতি চেহারার। ঠিক তাকাতে যেন ভয় হয়। খেয়াল করে দেখি ওর চোখমুখ জ্বল জ্বল করছে। হাতগুলা দেখতেইবা কি রকম। পুরা অদ্ভুত ধরণের। বাস পূর্ণ গতিতে চলছে। আমার তো ঠান্ডায় যায় যায় অবস্থা। গায়ে জ্যাকেট পরেও নিস্তার পাচ্ছি না। কিন্তু মেয়েটি ঠান্ডা সহ্য করছে কিভাবে? মেয়েটির কপালে তাকালে মনে হয় ঘামের বৃষ্টি ঝরছে। এভাবে করতে করতে সব যাত্রী কোন সময় নেমে গিয়ে কমে গেছে টের পাইনি। এত বড় বাসের মধ্যে আমরা চারজন। বাস ড্রাইভার আর কন্ডাকটার। এদিকে আমি আর সেই মেয়েটি। বাইরে থাকিয়ে দেখতেই দেখি কাপ্তাই রাস্তার মাথা চলে এসছি। বাস আর কালুরঘাট যাবে না কারণ কালুরঘাট যাওয়ার মত যাত্রী নেই। বাস থেকে নামতেই দেখি রাস্তার চারিদিকে সব শূণ্য। কেউ কোথাও নেই। কন্ডাকটারকে টাকা দিয়ে আমি মেয়েটির আগে হাঁটা দিলাম। প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল বের করতেই ঘড়িতে দেখি রাত ১১:৫৮। এত রাত হয়ে গেছে নিজেও বিশ্বাস করতে পারছি না। সামনে দিকে ফিরে থাকাতেই দেখি মেয়েটি কোন সময় আমার আগে ক্রস করে হাঁটা শুরু করে আমার আগে আছে ভাবতেই পারছি না। এত তারাতারি ক্রস করলো কিভাবে! আমি তো মেয়েটির আগেই ছিলাম। অবাক চোখে পিছন দিকে ফিরে তাকাতেই দেখি পিছনে সেই বাসটিও নেই। এত অল্প সময়ে মধ্যে চলে গেল কিভাবে? অন্তত বাসটির ইঞ্জিনের শব্দও তো শুনা যেত। অথচ শুনতেই পেলাম না। আমি আবার সামনের দিকে ফিরে থাকাতেই দেখি মেয়েটির হাঁটা চলা অন্য রকম। ঠিক স্বাভাবিক মেয়েদের মত না। আমি মেয়েটি থেকে ২০ হাত দূরে। ভাল করে খেয়াল করতেই দেখি মেয়েটি থেকে কি যেন আস্তে আস্তে গলে গলে যাচ্ছে। আমি তো বিষণ ভয়ে ভয়ে আছি। কারণ রাস্তার আশে পাশে কোন জনমানব নেই। নিস্তব্ধ জায়গায় শুধু আমি আর মেয়েটি হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে দেখি মেয়েটি কেমন জানি রূপ পরিবর্তন হচ্ছে। আমি ভূত পেত্নী এসব বিশ্বাস করিনা। কিন্তু আমার চোখের সামনে কি এসব ঘটে যাচ্ছে নিজেই তা বিশ্বাস করতে পারছিনা। আমার মাথা তখন ঝিম-ঝিম করছে। শীতের মধ্যেও আমার শরীরে ঘাম ঝরছে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিনা কারণ আমার আর এক হাতে বইয়ের বোঝা। হঠাৎ চোখের পলকে দেখি মেয়েটি নেই। উধাও হয়ে গেল মেয়েটি। আমি আর হাঁটতে না পেরে চোখমুখে অন্ধকার দেখছি। রাস্তায় পড়ে যাওয়ার মত অবস্থা। আলোকিত রাস্তার স্ট্রেট লাইটও আমাকে আলোকিত করতে পারছে না। সব কিছু যেন স্থির হয়ে আসছে। মনের দম ফুরিয়ে যাবার উপক্রম। আকাশের দিকে তাকাতেই দেখি আকাশে একটা তারাও নেই। সব শূণ্য। আমি নিশ্চুপভাবে ভয়ে ভয়ে আমার বাসার দিকে এগোতে থাকলাম। বাসায় পৌঁছাতে শুকনা জায়গায় একটা পিচ্ছিল আচারও খেলাম। তবে ভাগ্য ভাল পরে যাইনি। বাসায় গিয়ে অন্যকিছু না ভেবে সোজা ঠান্ডা পানি খেতে লাগলাম। ভাবতে লাগলাম আজকে কি হল! যা আমার জীবনে ঘটেনি। কিন্তু মনে আমার এখনো প্রশ্ন। মেয়েটি গেল কোথায়?

ভুতের গল্প ৫৫ পদ্মা নদীর লাশ

পদ্মার পাড়ে স্থায়ী জেলেদের গা ছমছমে অভিজ্ঞতার কথা
পদ্মার পাড়ে স্থায়ী জেলেদের
মুখে শোনা যায় অনেক
গা ছমছমে অভিজ্ঞতার কথা। বিশেষ
করে গভীর রাতে যারা মাছ মারতে যায়
তাদের কথা শুনে পিলেচমকে যায়।
কয়েকজনের
সাথে মুখোমুখি সাক্ষাতে কথা বলে জানতে পারি যে,
ভোর হবার খানিক
আগে নাকি নদী মোহনায় প্রচুর মাছ
পাওয়া যায়। এই লোভে স্থানীয় অনেক
জেলেই ঐ সময়টা বেছে নেয় মাছ ধরার
জন্য। যারা ঐ
সময়ে মাছ ধরতে গিয়েছে তাদের
প্রত্যেকেরই
জীবনে কখনো না কখনো একটা অদ্ভুত
ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। ঘটনা খুবই
সাধারণ। সবারপ্রথমে যার
সাথে কথা হলো তার নাম তৈয়ব মাঝি।
নিজের
ভাইপো হাসানকে সাথে নিয়ে তিনি এক
রাতে মাছ ধরতে বের হোন। রাত ৩ টার
দিকে হটাত করে নদীতে বাতাস
একেবারে থেমে পরে।
উল্লেখ্য,নদীতে বাতাস
পরেযাওয়া মানে ঝড়ের পূর্বাভাস।
তিনি হাসানকে বলেন হাল
ঘুরিয়ে ফিরতি পথ ধরতে। উনারা মাছ
ধরতে ধরতে অনেকটা ভেতরে চলে গিয়েছিলেন।
হটাততারা উভয়ই লক্ষ্য করেন তাদের
থেকে প্রায় মাইল খানেক
সামনে দিয়ে একটি যাত্রী নৌকা যাচ্ছে।
নৌকাটাহয়তো চোখে পড়তো না, কিন্তু
অবাক লাগলো কারণ নৌকার উপরের
ছাউনিতে একটা অদ্ভুত রঙের
বাতি দেখা যায়।
অনেকটা নীলচে আভা বের হচ্ছে সেই
বাতি থেকে।
মানুষগুলো হয়তো বিপদে পড়তে পারে ভেবে তৈয়ব
দ্রুত
বৈঠা বেয়ে হাসানের সাহায্যে ঐ নৌকার
পাশে চলে যান। নৌকার ভেতর
উঁকি দিয়ে চমকে উঠেন তৈয়ব। নৌকার
কোনো মাঝি নেই।তার চেয়ে ভয়ঙ্কর
হলো নৌকার
পাটাতনে পরে আছে একগাদা লাশ।
পুরনো লাশ। পচে গলে আছে। ছাউনির
ভিতর একটা মরচে পড়া হারিকেনে আগুন
জ্বলছে। তৈয়ব আলীর মুখ দিয়ে চিৎকার
বেরিয়ে যায়। চাচাকে চিৎকার
করতে দেখেবৈঠা ফেলে দ্রুত চাচার
পাশে চলে আসে হাসান। দেখে তার
চাচা মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছে।
দৌড়ে গিয়ে কোনোমতে চাচার পতন
ঠেকায় সে। সাথে সাথে মাথা উঁচু
করে সামনে তাকিয়ে দেখে সেখানে কোনো নৌকা দূরের
কথা,আসে পাশে ঘন অন্ধকার ছাড়া কিছুই
দেখা যাচ্ছে না।অথচ
সে নিজে ঐ যাত্রী নৌকায়
নৌকা ঠেকিয়েছিল। নৌকায় নৌকায়
ধাক্কা খাবার আওয়াজ পর্যন্ত শুনেছে।
ঠিক খানি বাদেই
প্রচণ্ড
বাতাসে তাদের নৌকা ডুবু ডুবু হয়ে পড়ে।
হাসান দক্ষ ছেলে।
ছোটবেলা থেকে নৌকা বেয়ে ওস্তাদ।
কোনো মতে চাচাকে পাটাতনে শুইয়ে দিয়ে নৌকা টেনে ঘাঁটে লাগায়।
তৈয়ব আলী টানা ১ সপ্তাহ
কথা বলতে পারে নি এরপরে।
এমনকি রাতে মাছ ধরাই ছেড়ে দিয়েছে।
ঘটনা এখানে শেষ হলে ভালো হতো।
কিন্তু শুধু তৈয়ব আলীই
নয়,আরো অনেক জেলের
সাথেই হুবুহু একই জিনিস ঘটেছে। পদ্মার
চরে মাঝে মাঝেই জেলেরা মাছ
ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়।
প্রায়ই নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে।

ভুতের গল্প ৫৪ চিটাগং হাটহাজারীর ভুত

এখন যে ঘটনাটি শেয়ার করবো সেই ঘটনাটি
ঘটে আমার নানা শশুড়ের সঙ্গে বলেছেন
আমার হুজুর সাহেব।
নানাকে আমি দেখতে পারিনি আমি তাদের
পরিবারে পা রাখার আগেই তিনি ভূবণ
ছেড়ে যান।
চিট্টাগংগ হাটহাজারি নানা বাড়ি তো
নানা কখনো বাড়িতে থাকতেন না সব সময়
পাহারে পাহারে থাকতেন।
তার নাকি পাহাড়ই বেশ প্রিয়ো লোকালয়
ছেড়ে।
নানা যখন নতুন বিয়ে করেন তখন এক
সপ্তাহের মত বাড়িতে থেকে আবার চলে
যান সেই বিশাল বড়বড় পাহরের এলাকায়।
তবে খুব ভাল মানুষ ছিলেন।পাহরের কাট
কেটে কেটে পাজা করে দিয়ে আসতো
বাসায়।
তো একদিন যখন কাট কাটছিলেন তখন দূর
হতে আওয়াজ তার কানে ভেসে আসল কারা
যেন
পবিত্র আল্লাহ পাকের পবিত্র নাম তুলে
জিকির করছে।
ঐ দিন সে নাকি কাট কাটা বন্ধ করে
তাদের জিকিরে তাল মেলান।
২ দিন এমন চলে ৩দিনের দিন যা ঘটলো
তিনি দেখতে পেলেন একটা বিশাল বড়
একটা ঝুড়িতে কাঠালের অকৃতির অনেক বড়
বড় আম,আপেল,নানান রকমের ফল তবে
অবাক করা বিষয় হলো সব কটা ফল অর্ধেক
অর্ধেক খাওয়া মনে হলো কেউ এইমাত্র
রেখে গেলো।
তবে আসে পাশে কাওকে দেখতে
পেলেননা।
খেতে মন চাইলে ও খেলেননা বা ধরলেননা
নিজের লোভকে সামাল দিলেন।এভাবে
চললো,
৩ দিনের দিন আবার যা ঘটলো আর পারলেন
না নিজের লোভ কে আটকে রাখতে যেই না
হাত দিতে গেলো আর সব ফল গুলো এক এক
করে বিশাল সাপ আকারে রুপ ধারণ করে।
এর কিছুক্ষণ পড়ে ইয়া লম্বা পাঞ্জাবী
পরিহীত ১০/১৫ জন অদ্ভুদ চেহারার মানুষ।
নানা ভিষণ ভয় পেয়ে গেলেন। তারা
নানাকে কোন এক বিষয় অভিশপ্ত করে
কারন বিনা অনুমতিতে অন্যের জিনিসে
হাত দেওয়ার সাজা পেতেই হবে তারা
নানাকে এও বলেন তুই যদি চাইতি তোকে
পাহাড় সমান করে ফলমূল দিতাম।
তারপর নানা অনেক কাঁদেন তারা আবার
বলেন আমাদের কাছে নয় আল্লাহর কাছে
কাঁদ।সে যদি মাফ করেন তবে আমরা
কিছুইনা।
এরপর হতে
অনেক মাস বাড়িতে না গিয়ে সারাদিন
পাহারে অল্প পাগল হয়ে না খেয়ে ঘুরে
বেড়াত আর আল্লাহর কাছে কাঁদতো।
আবার একদিন তারা আসেন এসে বলে যান
যা তোর ক্ষমা হয়ে গেছে এটা নে নিয়ে
বিড়যা
এটা মতলব একটা মানুষের হাড় নানা ভাল
হয়ে যান পরে কাপা কাপা হাতে হাড়টি
নিয়া নেয়।
তারা এও বলে যে যখন সময় হবে তখন
আমরাই বলবো এটা ব্যাবহার করতে
খবরদার ! আর ভুল করিসনা।এটা একটা সময়
তোর অনেক উপকারে আসবে।
তারপর নানাজী বাড়িতে ফিরে এসে সব
নানীকে বলেন।
সব শুনে নানী নানাকে গোসল করে আসতে
বলেন এসে খাবার খাবে। তো নানা
নানীকে হাড়টা দিয়ে চলে যান ওয়াশ রুমে।
নানী দোয়া কালাম জানতেন কারো কিছু
হলে তার কাছে আসতেন।এমন সময়
এক মহিলা তার বাচ্চাকে নিয়ে আসে পেট
ব্যাথা ফুক নিত।
তো নানী কী করল নানাকে না জানিয়ে
ভাবলো হয়তো এটা দিয়ে কোন কাজ হবে
হাড়টি নিয়ে এক গ্লাস পানির ভেতর
চুবিয়ে সেই পানে খেতে দিলো
বাচ্চাটাকে পানি খেয়ে আরো পেট
ব্যাথা বাড়ে এক সময় বাপ মার সামনে
বাচ্চাটা ছটফট করে মারা যায়।
নানী কষ্টের চোটে হাড়টি ছুরে ফেলে
দেয়।
তখনি নানা বেড় হয়ে এসব শুনে নানীকে
অনেক বকে ঘর থেকে বের হয়ে যাবে এমন
সময় সেই তারা আবার এসে বলে যায় আর
কোন লাভ হবেনা
তুই এখনি পাগল হয়ে যাবি।একথা বলতে না
বলতে নিজের কাপড় নিজে খুলতে শুরু
করে।
এক সময় পাগল হয়ে দৌড়ে চলে যায়।কেউ
আটকেও রাখতে পারলেননা।
আনেক বছর পাগল হয়ে একদিন তার ইতি
টানে দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়।
ঘটনাটি কেমন লাগলো বলতে ভুলবেন না
কেমন।

ভুতের গল্প ৫৩ চিটাগং হালীশহরের ভুত

ঘটনাটি ২০০৮ এর
ডিসেম্বরের। তখন
আমি Inter final year এ
পড়ি। আমরা
বাসা চেঞ্জ করে
হালি শহর এলাকায়
একটা পাঁচ তলা
এপার্টমেন্টের 2nd
floor এ উঠলাম। ওখানে
যাওয়ার প্রায়
কয়েকদিনের মধ্যেই
আমার বাড়ির ছাদে
উঠার অভ্যাসহয়ে
গেল। ছাদে অন্য
ফ্ল্যাটের লোকজনরা
ও উঠত। একদিন
বিকেলে হঠাৎ
করেই একটামেয়ের
সাথে পরিচয় হল।
মেয়েটির নাম বলল
ইনছা। মেয়েটি
আমাকে জানাল
ইনছা নামের অর্থ
হচ্ছে সৃষ্টি।
মেয়েটি দেখতে
মায়াবী চেহারার
আর মাঝারি গড়নের।
আরওর ফ্যামিলি
নাকি তিন বছর ধরে
এই ফ্ল্যাটের পাঁচ
তলায় ভাড়া থাকে।
তার মানে এই
বাড়ির প্রথম থেকেই
ওরা ভাড়াটিয়া
হিসেবে থাকছে।
মেয়েটা আমার নাম
বলে দিল শাওন। আমি
অবাক হয়ে জিজ্ঞেস
করলাম তুমি আমার
নাম কিভাবে
জানলে? আমরাতো
এখানে নতুন এসেছি।
সে আমাকে বলল,
আমাকে সে প্রথম
দিনই দেখেছে, আর
আমার ছয় বছরের
ছোট ভাইটার কাছ
থেকে আমার নাম
জেনেছে। এই বলে
সে হাসতে শুরু করল।
ঐদিন বিকেল থেকে
সন্ধ্যা পর্যন্ত তার
সাথে আমার কথা হল।
এইভাবে প্রতিদিন
ছাদের একটা
যায়গায় আমরা কথা
বলতাম।একদিন
মেয়েটি আমার কাছ
থেকে আমার ফোন
নাম্বার নিল আর
আমাকে একটা গিফট
দিল। গিফটা অসম্ভব
সুন্দর ছিল আর সেটা
ছিল মাটির
কারুকাজ। দেখতে
অনেকটা কলার
মোচার মত। এত সুন্দর
একটা শো পিছ
পেয়ে আমার খুবই খুশি
লাগলো। ইনছা
আমাকে বলল এটা খুব
যত্ন করে রেখে
দিতে আর বাসার
কাউকেই না
জানাতে। আমি
কাউকে না
জানিয়ে
সেটাকে আমার
রোমের ওয়ারড্রফে
রেখে দিলাম।
কিন্তু এরপর থেকেই
সব ঝামেলার শুরু হল।
একসময় আমি
মেয়েটির সাথে
খুবই ঘনিষ্ঠ হতে
থাকলাম। এবং আমি
প্রায় সারা রাতই
মেয়েটির সাথে
ফোনেকথা বলতে
থাকি। এমন একটা
সময় আসল যখন আমি
মেয়েটির সাথে এক
মুহূর্তও কথা না বলে
থাকতে পারতাম
না। মাঝে মাঝে
আমরা রাত ২টা ৩টা
পর্যন্ত কথা বলতাম আর
কথা বলতে বলতে
একসময় আমরা ছাদে
চলে যেতাম দেখা
করার জন্য। কিন্তু
আমি কখনও ভাবতাম
না যে ও কিভাবে
ছাদে আসত। এভাবে
প্রায় এক মাস চলে
গেল। হঠাৎ একদিন
আমার ছোটভাই
কাঁদতে কাঁদতে
আমার কাছে আসল। আর
কি জানি বলতে
চাইল। আমি জিজ্ঞেস
করলাম, কিন্তু ও কিছুই
বলতে পারল না। আমি
আমার রোমে গিয়ে
দেখলাম কেমন যেন
একটা আশ্চর্য গন্ধ
ছড়িয়ে আছে। গন্ধটা
আমার খুব পরিচিত
মনে হল, কিন্তু মনে
করতে পারছিলাম
না। গন্ধটা খুব
হালকা কিন্তু অনেক
দূর চলে যাওয়ার মত
একটা গন্ধ। এরপর
ঘরের কোনায়
তাকিয়ে আমি
দেখলাম যে, সুন্দর
যে শো পিছ তা
ছিল সেটা ভেঙ্গে
পরে আছে।আর আমি
একটা ভয়ংকর বিষয়
লক্ষ করলাম, মাটির
সেই শো পিছটার
ভেতরে গায়ে খুব শুক্ষ
ভাবে ছোট করে
কিছু লেখা আর কিছু
প্রতীক খোদাই করা
ছিল। আমি আমার
মাকে গিফটের
লেখা ও প্রতীক গুলির
কথা খুলে বললামআর
কে দিয়েছে সেটা
ও বললাম। মা অবাক
হলেন আর রাগ করলেন
আমার উপর। তিনি
সেগুলো
দেখতেচাইলেন আর
দেখে সব কিছু বুঝতে
পারলেন। ঐদিকে
ইনছা ও আজকে ফোন
ধরছিল না। আমি
ছাদে উঠে ইনছাকে
ফোন দিলাম। কিন্তু
খুব আশ্চর্য জনকভাবে
এই প্রথম ওর
নাম্বারটা বন্ধ
পেলাম। পরদিন মা
একজন হুজুরকে ডেকে
নিয়ে আসলেন আর হুজুর
এসে সব রহসের জট
খুলে দিলেন। তিনি
লেখা আর প্রতীকগুলি
দেখে সবকিছু বুঝতে
পারলেন। তিনি
বললেন, আমার সাথে
এক মহিলা জিন
অর্থাৎ পরির সম্পর্ক
ছিল। তিনি আমার
উপর পুরোপুরি
নিয়ন্ত্রণ করেছিল ওই
ছোট্ট উপহারটির
মাধ্যমে। আমার
ছোট ভাই খেলতে
গিয়ে ওটা ভেঙ্গে
ফেলায় সে আমার উপর
প্রচণ্ড খেপে আছে।
আর আমার মা আমাকে
যেটা বলল সেটা
শুনে আমি
একেবারেই স্তব্ধ
হয়ে গেলাম। মা
বলল, এই বিল্ডিং
হওয়ার পর থেকে এই
ফ্ল্যাটের পাঁচ
তলায়কোন
ভাড়াটিয়াই
টিকতে পারেনি।
তাই ওটা এখন খালিই
পরে থাকে। আমি
বিশ্বাস করতে
পারিনি, আমি দৌড়
দিয়ে পাঁচ তলায়
উঠে যাই। আর
সেখানে গিয়ে
দেখি এই প্রথম
বারের মত গেটে
তালা ঝুলছে।
তাহলে কি আমি
এতদিন ওটা দেখতে
পাইনি? আমি এতদিন
কিসের ঘোরের
মধ্যেছিলাম আমি
জানিনা। আমার
ভাই এই যাত্রায়
বেঁচে গেল।
তারপরআমি আর
কোনদিন ঐ নাম্বার
খোলা পাইনি।
পরে আমি কাস্টমার
কেয়ারে যাই এবং
অনেক কষ্ট করে
জানতে পারি যে,এই
নাম্বারে আসলে
কোন user নেই।
সমাপ্ত

ভুতের গল্প ৫২ শীতের রাতের ভুত

আজকে আমি আমার দেখা একটি সত্য ভূতের কাহিনী বলব।
ঘটনাটি গত বছরের এক অন্ধকার শীতের রাতের। অবশ্য ভূতের ঘটনা গুলো সাধারণত অন্ধকার রাতেরই হয়ে থাকে! যইহোক সেই রাতের দুই দিন আগে আমি গিয়েছি দাদুবাড়ীতে। আগেই বলে রাখি আমার দাদুর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। যরা সেখানে গিয়েছেন তারা জানেন সেখানটায় অনেক জঙ্গল। চারদিকে গজারী বন আর বাশেঁর ঝাড়। আমাদের গ্রামে বাইরের মানুষ গেলে রীতিমত ভয় পান। তার উপর সেখানে নেই ইকট্রিসিটি ফলে গ্রামটিকে দিনের বেলা যত সুন্দর লাগে রাতের বেলা হয়ে উঠে ততই ভয়ানক আর ভুতুরে! তো সেখানে গেলে আমি আর আমার এক চাচাত ভাই সারাদিন একসাথে ঘুড়ে বেড়াই। আর আমাদের সাথী হয় ওর সাইকেল আর একটা চার্জার লাইট যা অনেকটা দুরের বাজার থেকে চার্জ করে আনতে হয়। সেইদিন আমরা দুপুরের দিকে বের হয়েছি। গন্তব্য প্রায় ৪ কি:মি:
দুরে একটা কনসার্ট। কনসার্ট শেষ হতে অনকটা রাত হয়ে গিয়েছিল। আমরা দুইভাই বাড়ি ফিরছি। তারাতাড়ি পৌছার জন্য একটা শর্টকাট রাস্তা ধরলাম। ও সাইকেল চালাচ্ছে আর আমি পিছনে বসে লাইট ধরে আছি। কিছুক্ষণ পর হটৎ লাইটের বাল্বটা ফিউজ হয়ে গেল। আকাশে চাঁদ ছিলনা। তাই মুহূর্তের মধ্যেই চারদিক অন্ধকার হয়ে এল। যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম সেখানটা দিয়ে মানুষ সাধারণত রাতের বেলা চলাচল করত না। কারন আর একটু সামনেই রয়েছে একটা বাঁশ ঝাড়। সেই বাশঁঝাড়ের ভিতরে রাস্তার পাশে রয়েছে একটা কবর। সেই কবর আর বাশঝাড় নিয়ে গ্রামে নানা ভৌতিক কাহিনী প্রচলিত। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার তার উপর নির্জন রাস্তা...আমরা ভয় পেয়ে গেলাম। কিন্তু কিছুই করার নেই। অনেক রাত হয়ে গেছে, তাই এই অবস্থাতেই সেই রাস্তা ধরে যাওয়ার সিদ্ধন্ত নিলাম। রাস্তাটি আমাদের ভালভাবেই চেনা ছিল।
তাই অন্ধকারের মধ্যে সে আমাকে নিয়ে সাইকেল চালাতে শুরু করল। সেই জায়গাটার কাছাকাছি এসে হটাৎ সাইকেল সহ আমরা পরে গেলাম। সাথে সথেই সমনের কবরের দিক থেকে ভয়ানক জোরে খচখচ শব্দ হতে লাগল। আমরা ভয়ে সাইকেল ফেলে উল্টা দিকে দিলাম দৌড়। একটুপর বাজার থেকে লাইট ঠিক করে আমরা দুই সাহসী (!)
ছেলে আর একজনকে (!?) নিয়ে সেই দিকদিয়ে এলাম। দেখি সাইকেলটা ওই খানেই পড়ে আছে আর সামনে থেকে কয়েকজন লোক আসছে। কাছে আসতেই তারা আমাদের জিজ্ঞাসা করল আমরা এখানে কোন কিছুর শব্দ কিংবা কোনকিছু দেখেছি কিনা। কারন যা বলল তার সারমর্ম এরকমঃ তাদের মধ্যের একজন কিছুক্ষণ আগে এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন।
হটাৎ কবরের স্থানটা থেকে ভয়ানক আওয়াজ আসতে লাগল। সেটি শুনে তিনি দৌড় দিয়েছিলেন! আমাদের আর বুঝতে বাকী রইলনা য়ে ঘটনটা আসলে কী। জবাবে আমি কিছু বলার আগেই আমার ভাই বলে ফেলল '' হ আমরাও শুনছি...সব

ভুতের গল্প ৫১ নীলাভ নুপুরের ভুত

"২০১৩ সাল, অক্টোবর মাস। গভীর রাত, জানালার পাশে বসে আছি। জানালার গ্লাস আর পর্দা ভেদ করে চাদের আলো আমার পড়ার টেবিলে এসে পড়ছে। ব্যাপারটা আরো উপভোগ করার জন্য জানালাটা খুলে দিলাম। চাদের আলো আর সাথে হালকা শীতল বাতাস। কবিতা লেখার ভুত চেপে বসল মাথার উপর। তবে চাদের আলোতে ভাল করে দেখতে পাচ্ছিলাম না। আর আলো জালিয়ে পরিবেশ টা নষ্ট করতে ইচ্ছা হলোনা। তাই বসে বসে গুন গুন করে গান গাইতে লাগলাম।

"বেশ কিছু সময় পর আচমকা রুম ঝুম নুপুরের শব্দ। আমি চমকে পিছনে তাকালাম। নাহ। কিছুই নাহ। আবার নীরবতা। ভাবলাম বাতাসে অন্য কিছুর শব্দ ভেসে আসছে। ২ মিনিট পর...আবার সেই রুম ঝুম শব্দ। এবার আমি পিছনে না তাকিয়ে চুপচাপ শুনতে লাগলাম। খেয়াল করলাম শব্দটা আমার পিছন দিয়ে এসে আমার টেবিলের ডান পাশে গিয়ে থামল। তবে শব্দটা ছিল একটা নুপুরের। মানে যদি এক পায়ে নুপুর পরে কেউ হাটে তাহলে যেমন শব্দ হবে, শব্দটা ঠিক তেমন। কিন্তু মজার ব্যাপার হল কাউকেই দেখা যাচ্ছে না সেখানে। এবার চুড়ির শব্দ। মনে হল কেউ হাতে চুড়ি পরে হাত টা টেবিলের উপর রাখল। আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম। কিছুই বুঝতে পারলাম না। কি হচ্ছে এগুলো? আমি যেন চেয়ারের উপর জমে যাচ্ছি।

মিনিট কয়েক বাদে আবার রুম ঝুম... ... ... এবার শব্দটা যে পথে এসেছিল, সে পথেই চলে যেতে যেতে এক সময় মিলিয়ে গেল। আমি চেয়ার থেকে উঠে বেডে গিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়লাম।

"***আকাশে মেঘ ও নেই আবার সুর্য ও নেই। বেশ ঠান্ডা একটা পরিবেশ। তবে বাতাসের ও উপস্থিতি নেই। কোন একটা মাঝারি আকারের ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আমি। ...রুম ঝুম... সেই নুপুরের শব্দ। পিছনে তাকিয়ে দেখি সাদা শাড়ী পরা এক তরুনী হেটে হেটে আমার দিকেই আসছে। খেয়াল করলাম তার এক পায়ে নুপুর নেই। অন্য পায়ে নীলাভ একটা নুপুর। চোখে মুখে একাকীত্তের ছাপ। আমার ৫ গজ দূরে থমকে দাঁড়িয়ে গেল। ডান হাতটা তুলে ধরল, নীলাভ একটা নুপুর সে হাতে। আলতো করে ছুড়ে দিল আমার দিকে। আমি ধরলাম সেটা......... ।।
"ঘুম ভেঙ্গে গেল আমার। নিজেকে আবিস্কার করলাম বিছানায়। বুঝতে পারলাম না এটা সপ্ন নাকি সত্যি? "কারন? সেই নীলাভ নুপুরটা ... ...। যেটা এখন আমার হাতে।।

ভুতের গল্প ৫০ দিনাজপুরের ভুত

ঘটনাটি আমাদের গ্রামের
আমি রফিকুল ইসলাম। আমার বাড়ি দিনাজপুরে। সঙ্গত কারণে আমি গ্রামের নাম বলবনা। আমার গ্রামে একটি পালং গাছ আছে। দেখতে বট গাছের মতোই, কিন্তু জোর থাকেনা। সেই পালং গাছের নিচে এক বৃদ্ধ লোককে স্বর্নের হুক্কা খেতে দেখা যেত। গ্রামের অনেক মানুষই দেখেছে তাকে। কিন্তু সবাই জানে জায়গাটা হনটেড। ওখানে রাতের বেলা তো দুরের কথা, দিনেরবেলা সেখানে যেতে সবাই ভয় পায়। ওই পালং গাছের সাথে এক লোকের জমি ছিল। বিকেল বা সন্ধার দিকে ওই জায়গায় সে প্রায়ই যেত। তো একদিন তিনটা জীন তাকে তিনটা টাকার হাড়ি দেখায়। বলে তুমি যদি আমাদের দলেচলে আস তাহলে তোমাকেএই টাকা গুলো দেব। তো যথা রীতি সেই বেক্তি টাকার লোভে হোক আর এমনি হোক রাজি হয়ে যায়।
তো রাজি হওয়ার পরে তাকে আর জীন গুলো টাকা দেয় না। বিভিন্ন ভাবে আজ না কাল বলে ঘুরাতে থাকে। প্রায় এক মাস লোক টাকে ঘুরায় তারা।
তো লোকটা অবশেষে বিরক্ত হয়ে গ্রামের এক জনের কাছে শেয়ার করে যে কিভাবে আমি এই টাকা ঘুলো আনব ? এবং একটা জিনিস বলে রাখি লোকটা যখন জোর করে টাকার হাড়ি আনতেযেত তখন হাড়ি গুলো মাটির নিচে তলিয়ে যেত। সে কোন অবস্থাতেই টাকাগুলোআনতে পারতনা ।
গ্রামের লোকটা এডভাইজ দিলো যে, তুমি একটা কাজ কর, তুমি তিনটা গরুর হাড়সাথে নিয়ে যাবে। যদিতোমাকে টাকা দিতে নাচায় তাহলে তুমি হাড়িতিনটির উপরে গরুর হাড় ( হাড্ডি ) রেখে দিবে।
তো সেদিন সে টাকার হারি আনতে গেল। দুটিজীন রাজি হচ্ছিল, কিন্তু একটা জীন কিছুতেই রাজি হচ্ছিলনা। সে লোকটা কাপর থেকে হাড় তিনটিবের করে যথা রীতি হারি গুলুর উপরে রেখে দিল।
এইবার আগের বারের মতহারি গুলো নিচে তলিয়ে গেলনা। শুধু কাপতে থাকলো এবং জীনতিনটা গায়েব হয়ে গেল।
তো সে যথা রীতি আরাম করে হাড়ি তিনটি উঠিয়ে নিয়ে আসে এবং একটি ঝুপের ভিতর লুকিয়ে রাখে এবং বাড়ী চলে যায়। এরপর রাতে তিনি সেখানে আসে এবং হারি তিনটি নিয়ে নিজের ঘরের খাটের নিচে পুতে রাখে এবং তার স্ত্রীকে বলে জায়গাটা সুন্দর করে ভরাট করেদাও যেন কেও বুঝতে না পারে।
এরপরেরদিন একটি ঘটনা ঘটে। সেই লোকটাকোনো কারণে পাগল হয়েযায়। তখন গ্রাম বাসীতাকে সুস্থ্য করার জন্য একজন হজুর নিয়েআসে। তো সেই হজুরের একটা বিশেষ্য ছিল যেতার দুটি স্ত্রী ছিল। একটি স্ত্রী ছিল মানুষ। আর একটি ছিল জীনদের মেয়ে।
যথা রীতি সেই হজুর চলে আসে এসে একটি বালতি ( পনি রাখার পাত্র ) নেয়। সেই বালটিতে কিছু পানি নেয় এবং গ্রাম থেকে একজন লোক নেয়। সে লোকের ভালো করে চোখ বেধে বলে সেই পানিতেতাকাও। লোকটি চোখ বাধা অবস্থায় পানিতে তাকায়, আর তিনি সব দেখতে থাকে এবং সব বলে দেয় যে কিঘটেছিল।
তার পরে সেই হজুর বলে আপনারা কি কেও টাকা এনেছেন জীনের কাছ থেকে ? তখন তার স্ত্রী বলে যে আমরা টাকা আনিনি, অর্থাৎ সে অসীকার করে।
তখন গ্রামবাসী মনে করে হয়ত হজুরটা মিথ্যা বলছে। তো যাইহোক তখন সেই হজুরবলে আপনারা যদি আমাকে বিশ্বাস না করেন তাহলে আপনারা দশ জন আসেন।
আপনারা যদি এই বালতিটা উচা করতে পারেন তাহলে বুঝবেন আমি মিথ্যা বলছি। তোযথা রীতি দশ জন আসে বালটির ভিতরে বাশ ঢুকিয়ে দশ জনে উঠানোর চেষ্টা করে, কিন্তু উঠাতে পারেনা।
তখন হজুর বলে আমি সেই জীন গুলো ধরতে চেষ্টা করতেছি। হয়ত আমি জীনদের ধরতে পারবনা। তখন দেখা গেল ঘরের ভিতরে অনেককিছু ছিল, যেমন ধান আরো কিছু জিনিস পত্রউড়ে উড়ে বাহিরে পড়তেছে একটি নির্দিষ্ট জায়গার ভিতরে।
অবশেসে ঘরটা শান্ত হয়ে গেল। তখন হজুর বললো, আমি ঘরটা শান্ত করে দিয়েছি। কিন্তু টাকা ফিরত দেয়া না পর্যন্ত ওরাছাড়বেনা। যদি টাকা নিয়ে থাকেন ফিরত দেন। এরপর হজুর কে বিদেয় দেয়া হলো
হজুরকে বিদায় দেয়ার পরে ওই লোকটা সম্পূর্ণ রূপে পাগল। লোকটির স্ত্রী কিছু কিছু টাকা নিয়ে গ্রামে জমি কিনতে থাকে।
তখন গ্রামে মানুষ তাকে বলে তোমরা হত দরিদ্র, তোমরা জমি কেনার টাকা পাও কোথায়? তখন লোকটির স্ত্রী বলে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে, আরো আত্মীয় সজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে জমি কিনলাম।
তারা রাতা রাতি অনেকবড়লোক হয়ে যায়।
সেই পাগল থাকা লোকটিবাড়ির বাহিরে দড়ি দিয়ে বাধা ছিল। উত্তর অঞ্চলে যারা ছিলেন তারা হয়ত জানেন সেই খানে বৃষ্টির সময় উপর থেকে গোল্ডেন কালারে সাপ পরে। গাছথেকেই হোক বা যেখান থেকেই হোক সাপ গুলো বিষাক্ত, কিন্তু কাওকে সে ছুবল দেয়না।
সেই লোকটা যখন বাধা ছিল তখন একটা সাপ উপর থেকে পরতেছিল। সেই লোকটা তখন বাধন ছিড়ে গিয়ে দৌড় দিয়ে একটা সাপ মাথা ছিড়ে পুরোটা খেয়ে ফেলে।
এর একসপ্তাহ পরে লোকটি মারা যায়।
অনেকের ধারনা যে লোকটিকে সেই গাছ তলাতে হুকা খেতে দেখা যায় সে আর কেউ নয়, সে ওই পাগল লোকটিই।