অপরিচিত সুগন্ধ: এক রাতের অভিজ্ঞতা

আমাদের বাসায় আমি, আব্বু, আম্মু আর আমার ছোট ভাই থাকি। তবে আজকের রাতটা একটু অন্যরকম। আব্বু অফিসের কাজে রাতের শিফটে, আর আম্মু ও ছোট ভাই মেজো খালার বাসায় গেছে। বাসায় আমি একদম একা।

রাত ৩:১৩ বাজে। কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত লাগছিল। ঘুমও আসছিল না। ভাবলাম, তাহাজ্জুদ নামাজটা পড়ে নেই, হয়তো মনে প্রশান্তি আসবে। অজু করে রুমে ফিরে এলাম, জায়নামাজ বিছালাম, রুমের লাইট বন্ধ করে দিলাম। রান্নাঘর থেকে সামান্য আলো এসে রুমটাকে অন্ধকারের মাঝে হালকা আলোকিত করে রেখেছে।

"আল্লাহু আকবর" বলে হাত বাঁধতেই আচমকা রুমের দরজা বিকট শব্দে ধাক্কা খেয়ে বন্ধ হয়ে গেল! একই সময়ে আমার পিছন দিক থেকে পরিষ্কার শুনতে পেলাম, ঠিক আমার কণ্ঠের সাথেই মিলিয়ে আরেকজন বলল—"আল্লাহু আকবর!"

আমার শরীরের প্রতিটি পশম দাঁড়িয়ে গেল! আতঙ্কে পুরো শরীর কেঁপে উঠলো, কিন্তু নামাজের মাঝে আছি, মাঝপথে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। ভয় পেলেও মন শক্ত করে নামাজ চালিয়ে গেলাম।

নামাজ শেষে দরজা খোলার জন্য হাত বাড়াতেই হঠাৎ অনুভব করলাম, তুলার মতো কিছু একটা আমার হাত স্পর্শ করল! চমকে উঠে দ্রুত দরজা খুলে দিলাম, সাথে সাথে রুমের লাইটও জ্বালিয়ে দিলাম। আতঙ্কে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম, কেউ নেই।


রাত অনেক হয়ে গেছে, কাউকে ডাকার সাহস পেলাম না। আম্মুকে কল দিতে ইচ্ছা করছিল, কিন্তু এত রাতে চিন্তা করবে বলে জানালাম না। নিজেকে শান্ত করার জন্য ফোনে কুরআনের সুরাহ ছেড়ে দিলাম। দুই হাত মুখে দিয়ে ভাবছিলাম, আসলে কী হয়েছিল আমার সাথে?

ঠিক তখনই, আশ্চর্যজনকভাবে আমার হাতে এক অদ্ভুত সুগন্ধ টের পেলাম। এমন সুগন্ধ আগে কখনও পাইনি! মিষ্টি, মনোমুগ্ধকর, কিন্তু সম্পূর্ণ অপরিচিত!


একটা ব্যাপার বলা হয়নি—আমার রুমের পিছনের জানালা দিয়ে সোজা কবরস্থান দেখা যায়। আমাদের বাসার ঠিক পাশেই সেই কবরস্থান...

অপরিচিত সুগন্ধ: এক রাতের অভিজ্ঞতা

শেষ কথা

আমি জানি না, সেই রাতে আমার সাথে যা ঘটল তা বাস্তব ছিল নাকি কল্পনা। কিন্তু সেই অচেনা কণ্ঠস্বর, দরজার ধাক্কা, তুলার মতো ছোঁয়া আর সেই অপার্থিব সুগন্ধ—সবকিছুই সত্যিই ঘটেছিল! কেউ কি সত্যিই আমার সাথে ছিল সেদিন? নাকি আমি একাই ছিলাম?

ডাল খেকো জ্বিনদের ঘটনা

ঘটনাটি ১৯৭০-৮০ এর মধ্যে। আমাদের পুরাতন বাড়ি যমুনা নদীর একটা শাখা নদীর তীরে অবস্থিত। সেই বাড়ির পাশে একটা পরিত্যক্ত কালীমন্দির ছিল। মন্দিরের সাথে বিশাল একটা বড়ই গাছ ছিল। আমার বাপ চাচারা ৫ ভাই ৫ বোন। ৩ নাম্বার বোন মানে আমার সেজো ফুফু দুপুরবেলা সেই বরই গাছে উঠছে বড়ই পারার জন্য। তখন সেখানে ডাল রান্নার ঘ্রাণ আসছিল। ডালে বাঘার দিলে যেমন ঘ্রাণ আসে তেমন। আমার ফুফু গাছ থেকে নামতে নিয়ে সেই মন্দিরের ভেতর পরে যায়। পরে গেলেও খুব একটা ব্যাথ্যা পায়নি। সেখান থেকে বাড়ি আসার পর ফুফুর সেইরকম পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। সেই পেট ব্যাথ্যা সারে না। ননস্টপ ব্যাথ্যা। আমার দাদীর একজন আত্নীয় বুজূর্গ ব্যক্তি ছিলেন। 

তিন এসে ঝাড়ফুঁক করে পানি পড়া দেন। সেটা খেয়ে আল্লাহর রহমতে ব্যাথ্যা সেরে যায়। পরে জ্বিন হাজির করে জানা যায় সেখানে ডালখোর জিনেরা থাকে। ফুফু গাছ থেকে পরে গিয়ে নাকি জ্বিনেদের ডালের পাতিল ফেলে দিয়েছিল। সেইজন্য রেগে গিয়ে তারা পেটে যন্ত্রণা দিয়েছিল। ঘটনা এই পর্যন্ত। আমার আব্বা বলে, প্রায় দিনই দুপুর বেলা সেই মন্দিরের ওখানে ডালের ঘ্রাণ পাওয়া যেতো। সেইসময় আশেপাশের বাড়িগুলোতে খোঁজ নিতো কেউ ডাল রান্না করছে কিনা? কেউই ডাল রান্না করেনি তখন। সেই জায়গা এখনও আছে। কিন্তু মন্দিরটা নেই। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছিল। এখন আবার সেই জায়গা  জনবসতিতে ভরে গেছে।

ডাল খেকো জ্বিনদের ঘটনা

ঘটনাটি এখানেই শেষ নয়। ফুফুর পেটব্যথা সেরে যাওয়ার পর থেকে আমাদের পরিবার সেই জায়গার প্রতি একটু ভয় এবং অনেকটা কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে থাকতো। মন্দিরটা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেলেও, জায়গাটি কোনোভাবে অন্যরকম অনুভূতি জাগাতো।

এরপরের ঘটনা ১৯৮৫ সালের দিকে। আমার বড় চাচা, যিনি খুব সাহসী স্বভাবের ছিলেন, একদিন সন্ধ্যার সময় সেই জায়গার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দেখলেন, দূর থেকে কার যেন ছায়া মন্দিরের পুরোনো জায়গাটায় বসে আছে। সন্ধ্যার আলো-আঁধারে চাচা ভাবলেন, হয়তো কোনো প্রতিবেশী। কিন্তু কাছাকাছি যেতেই দেখেন, সেই ছায়াটি ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। অদ্ভুত এক গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, যেন পুড়ে যাওয়া ডালের মতো।

চাচা ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। পরদিন তিনি বিষয়টি বাড়িতে জানান। দাদী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আবার সেই বুজুর্গ আত্মীয়কে ডাকেন। বুজুর্গ ব্যক্তি আসার পর জানালেন, জায়গাটি শুধু জ্বিনেদের বাসস্থান নয়, বরং সেখানে একদল ক্ষুধার্ত ডালখোর জ্বিনদের নেতা ছিল, যে এখনও রাগে ফুঁসছে।

বুজুর্গ লোকটি জায়গাটি শুদ্ধ করতে এক বিশেষ রীতির আয়োজন করেন। তিনি সবাইকে বলেন, একটি পাতিলে ডাল রান্না করতে হবে এবং তা ওই জায়গায় রেখে দিতে হবে। রাতভর সেটি ওখানে থাকবে। সকালে গিয়ে দেখা গেল, পুরো পাতিল খালি, শুধু কিছু পোড়া চিহ্ন পড়ে আছে।

সবাই ভাবল, হয়তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু এখানেই মজা। এরপর থেকে পরিবারের কেউই আর ডাল খাওয়ার সময় ঠিকঠাক স্বাদ পেত না। যতই মসলা বা স্বাদ অনুযায়ী রান্না করুক, ডাল সবসময় পানসে লাগতো। যেন সেই ডালখোর জ্বিনেরা শুধু জায়গা নয়, তাদের ডাল খাওয়ার আনন্দও চিরতরে নিয়ে গেছে।

লুবনার নিজের চোখে দেখা ভুত

আমার নাম লুবনা, আমি একটা ঘটনা বলছি নিজের চোখে দেখা, আমি তখন ছোট ছিলাম ক্লাস 3 ,4 এ পড়ি এমন, আমার ফুফু বাসায় বেড়াতে গেছিলাম। তাদের বাড়ি ছিল সাতক্ষীরার নগরঘাটা গ্রামে। তাদের গ্রামের পরিবেশেটাই একটু অন্যরকম, কোনো কোনো জায়গা জুড়ে শুধুই বাঁশ বাগান, আবার কোনো জায়গায় শুধু আম, কাঁঠাল,লিচু বাগান এমন। আর ঐ বাগানের মধ্যে দিয়েই ছিল যাওয়া আসার পথ। 

লুবনার নিজের চোখে দেখা ভুত

তো এবার আসি মূল কথায়, আমরা যেদিন বেড়াতে গেছিলাম ঐ দিন আমার একটা কাকুকে নিয়ে আমার ফুপা বাজারে গেছিল আমাদের জন্য বাজার করতে, ফুপা ঐ দিন আমাদের জন্য মাছ, মুরগি, দই, পিঁয়াজু এসব কিনে কাকুকে সাইকেল  দিয়ে  পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তখন প্রায় সন্ধ্যা, কাকু সাইকেল নিয়ে আসছে ঐ বাগানের মধ্যে দিয়ে, উনি যখন বাড়ির কাছে আসলো তখন আমার ফুপুর জা দেখলো কাকু সাইকেল নিয়ে পড়ে গেছে, আমরা সবাই যেয়ে দেখি কাকু কেমন ব্যবহার করছে, একবার হাসছে আবার কাঁদছে, আর শুধু বলছে সাইকেলে কে বসে আছে,সব খেয়ে ফেললো। আমার আম্মু তখন কাকুর গায়ে দোয়া পড়ে ফুঁ দিতে লাগল। তারপরও কাকু বলতে লাগলো সাইকেল বসে আছে। আমরা সত্যিই যেয়ে দেখলাম যে মাছ কিনে দিছিল তার মাথা নেই, পিঁয়াজু গুলো সব ব্যাগের ভেতর ছড়িয়ে আছে। পরদিন সকালে হুজুর ডেকে কাকুকে ভালো ভাবে ফুঁ দিয়ে নেওয়া হয়। 

তারপর তার মুখ থেকে শুনলাম সে যখন আসছিল বাড়ির দিকে তার সাইকেলের পিছনে কে যেন বসছিল অনেক ভারী। আর সে নাকি বাজারের ব্যাগ এর ভিতর হাত দিয়ে খাচ্ছিল, কাকু নাকি বলছে কে কে ? কিন্তু কোন কথা বলিনি। এসব কাকুকে বাড়ির সামনে এসে নাকি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।

দ্বিতীয় ঘটনা বলছি,

আমার আম্মু,নানু,নানী, দাদু দাদীদের মুখ থেকে শোনা কথা।  আমি তখন অনেক ছোট, আমার আম্মু আমাকে নিয়ে তখন দাদু বাড়ি থাকতো, আমার দাদু বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলাতে। আর আমার নানু বাড়ি পাইকগাছায়, তো আমার নানু বাড়ি থেকে দাদু বাড়ি আসতে গেলে তখন দুইটা নদী পাড় হয়ে আসা লাগত, একটা বড়দল নদী, একটা মানিকখালী নদী। তো এবারে আসি আসল কথায়, আমার ছোট খালামণি একদিন আমার দাদু বাড়ি আসছিল তাল নিয়ে, মানিকখালী নদী পাড় হওয়ার সময় মাগরিব এর আযান দিয়েছিল। আর ঐ জায়গাটা তেমন ভালো ছিল না, আমার আন্টির  সে বাড়ি এসেই কেমন করতে লাগলো , আমাদের বাড়ির সামনে ছিল খেজুর গাছ সে নিমিষেই খেজুর গাছে উঠে গেল, কাঁচা পাতা একটান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলল, আমার দাদুকে গলা টিপে ধরছিল ঘুমের মধ্যে, তারপর হুজুর ডেকে আনা হয়, পরে জানা যায় যে আন্টির ঘাড়ে তিনটা জীন ছিল, পরে ভালো করে দোয়া কালাম পড়ছ ঝার ফুঁ করা হয়, এবং জীনদের তাড়ানো হয় , মজার ব্যাপার হলো তারা যে গেছে তার প্রমাণ হিসাবে তারা যাওয়ার সময় কলস মুখে নিয়ে গেছিল।

আশা করছি আপনার পড়বেন আমার এই লেখা গুলো।

ভয়ংকর পুকুর এর সত্যিকারের ঘটনা

আজ থেকে প্রায় ১০-১২ বছর আগের কথা। আমাদের গ্রাম তখন বেশ নিরিবিলি ছিল। শহরের কোলাহল থেকে অনেক দূরে, সবুজে ঘেরা একটি জায়গা। আমাদের বাড়ির বিপরীতে একটি বড় পুকুর ছিল। পুকুরটি এলাকার মানুষের কাছে একটি আকর্ষণীয় জায়গা ছিল। এটি শুধু গোসল করার জন্য নয়, মৎস্যচাষ এবং স্থানীয় ছোটখাটো উৎসবের জন্যও ব্যবহৃত হতো।

ভয়ংকর পুকুর এর সত্যিকারের ঘটনা

সেদিন ছিল এক শুক্রবার। শুক্রবার এলেই আশপাশের মানুষজন এবং দূরবর্তী এলাকার লোকেরা দল বেঁধে পুকুরে আসতো গোসল করতে। শুক্রবারের সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পুকুরের আশপাশে যেনো একটি মেলা বসতো। সেদিনও তেমনই ছিল।

একদল ছেলে এসেছিল পুকুরে গোসল করতে। তারা এসেছিল প্রায় ৪০ মিনিট দূরের একটি এলাকা থেকে। তাদের মধ্যে একটি ছেলে ছিল, যার নাম আর জানা যায়নি, কিন্তু তার ঘটনা সেদিন সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল।

ছেলেটি ছিল একজন দক্ষ সাঁতারু। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, সাঁতার কাটার সময় সে হঠাৎ পানিতে তলিয়ে যায়। পুকুরের আশেপাশে তখন প্রচুর মানুষ ছিল। চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। অনেকেই ছুটে আসে তাকে বাঁচানোর জন্য, কিন্তু কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

ছেলেটির সঙ্গের ছেলেরা বলেছিল, সে হঠাৎ ডুবে যায়। কিন্তু কিছু মানুষ বলেছিল, এটি একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত কিছু। কেউ কেউ বলেছিল, ছেলেটির বন্ধুরা দুষ্টামি করতে গিয়ে তাকে পানিতে চেপে ধরেছিল, যা তার মৃত্যুর কারণ হয়েছিল।

তবে আরও ভয়ংকর একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার প্রবীণরা বলতেন, পুকুরের গভীরে কিছু অদ্ভুত জিনিস ছিল, যা লোককে গভীরে টেনে নিয়ে যেত। কেউ বলতো, এটি বুড়িগঙ্গা নদীর কোনো রহস্যময় স্রোতের অংশ, যা পুকুরটির গভীরে যুক্ত। আবার কেউ বলতো, পুকুরটির মাঝে একটি বিশেষ গভীর পয়েন্ট ছিল, যা মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছিল।

ছেলেটি ছিল তার মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা মারা গিয়েছিল অনেক আগেই। তার মা ছেলেটিকেই নিয়ে বেঁচে ছিল। সেদিন তার মা যখন পুকুরপাড়ে ছুটে এলো, তখন তার কান্না সবার হৃদয় বিদীর্ণ করে দিয়েছিল। সেই হাহাকারের শব্দ যেন পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল। আশেপাশের চার-পাঁচটি এলাকা থেকেও মানুষ ছুটে এসেছিল।

পুকুরটি নিয়ে আরও নানা কথা শোনা যেত। একসময় এটি ছিল একটি চাষের জমি, যা পরে খনন করে পুকুরে পরিণত করা হয়। স্থানীয় মানুষজন বলতো, পুকুরটির তলায় কোনো প্রাকৃতিক গভীরতা বা স্রোতের মতো কিছু ছিল, যা অদ্ভুতভাবে লোকজনকে গভীরে টেনে নিত।

সেই ঘটনার পর পুকুরটি নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কেউ আর সাহস করে সেখানে সাঁতার কাটতে যেত না। কয়েক বছর পর, পুকুরটিকে মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়। তবে সেই শুক্রবারের ঘটনাটি আজও এলাকাবাসীর মনে এক দুঃখের স্মৃতি হয়ে বেঁচে আছে।


এটা কোনো সাধারণ কুকুর ছিল না

পাশের গ্রামে ইসলামিক মাহফিলে গিয়েছিলাম। তখন রাত প্রায় ১১টা। গ্রামটা আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে। মাহফিল শেষে বাড়ি ফিরতে গিয়ে কোনো গাড়ি বা রিকশা পেলাম না, তাই বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে আসতে হলো। আমরা তিনজন ছিলাম একসঙ্গে। আশেপাশে অন্ধকার, রাস্তার দুইপাশে গাছপালা, বাতাসে যেন একটা অদ্ভুত গা ছমছমে অনুভূতি। হাতে কোনো খাবার ছিল না, শুধুই ব্যাগ আর মাহফিলের তসবিহ।

এটা কোনো সাধারণ কুকুর ছিল না

রাস্তার মাঝখানে এসে দেখি, কিছু কুকুর রাস্তার পাশে বসে আছে। কুকুরের সংখ্যা ছয়-সাতটা হবে। আমাদের দেখে তারা একবার চেয়ে আবার নিজের কাজে মন দেয়। হঠাৎ দেখি, তাদের মধ্যে একটি কুকুর আমাদের দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো। মনে হচ্ছিল, কুকুরটা খুবই শান্ত। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো একটু এগিয়ে থেমে যাবে, কিন্তু না, কুকুরটা আমাদের সঙ্গী হয়ে গেল।

আমরা হাঁটছি, কুকুরটা আমাদের পিছু পিছু আসছে। আমরা যেখানে থামি, সেও সেখানে থামে। তাড়িয়ে দিলেও কিছুক্ষণ পর আবার আমাদের পেছনে এসে দাঁড়ায়। অদ্ভুত বিষয় হলো, কুকুরটা কোনো শব্দ করছিল না। তার চোখের দিকে তাকালে মনে হচ্ছিল, গভীর কিছু লুকিয়ে আছে। হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় একটা ফাঁকা জায়গায় পৌঁছালাম। চারপাশে গাছের ছায়া এমন যে মনে হচ্ছিল আমরা একটা অন্য জগতে ঢুকে গেছি। বাতাসে একটা হালকা গন্ধ—মাটি আর ভেজা পাতার মিশ্রণ, কিন্তু তাতে যেন একটা অচেনা গন্ধও ছিল।

আমার দুই বন্ধু যখন তাদের বাসায় চলে গেল, আমি তখন একা। কুকুরটা তখনো আমার পেছনে আসছে। আমি ছোটবেলা থেকেই কুকুরে ভয় পাই, তাই মনটা অস্থির হয়ে উঠল। মনে হচ্ছিল, কুকুরটার চোখের মধ্যে কিছু অদ্ভুত একটা আছে। একসময় মনে হলো, এটা কি সত্যিই কুকুর নাকি কিছু অন্য কিছু?

বাসায় পৌঁছানোর সময় খেয়াল করলাম, কুকুরটা একদম গেটের সামনে এসে বসে পড়ল। আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করলাম। ভেতর থেকে তাকিয়ে দেখি, কুকুরটা নড়ছে না। তার চোখের দৃষ্টি আমার দিকে স্থির হয়ে আছে। আমি যতই চেষ্টা করি, কুকুরটার সেই অদ্ভুত দৃষ্টিটা ভুলতে পারি না। মনে হচ্ছিল, যেন সেটা আমাকে কিছু বলতে চায় বা আমার ভেতরে কিছু দেখতে পাচ্ছে।

রাতে শোয়ার পরেও মনে হচ্ছিল, কেউ যেন জানালার পাশে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে। একসময় ঘুমিয়ে পড়ি, কিন্তু এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখি—কুকুরটা আমার সামনে এসে কথা বলছে। তার কণ্ঠটা মানুষের মতো, আর সে আমাকে বলছে, "তুমি কেন ভয় পাচ্ছো? তুমি জানো না, আমিই তোমার সঙ্গী!" আমি ঘুম থেকে উঠে কাঁপতে শুরু করলাম। বাইরে তাকালাম, কুকুরটা তখনো গেটের সামনে বসে আছে।

সকালে উঠে দেখলাম, কুকুরটা আর নেই। কিন্তু মাটিতে তার পায়ের ছাপগুলো এখনো ভেজা ছিল, যেন কয়েক সেকেন্ড আগেই সে হেঁটে গেছে। গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। আমার মনে হলো, হয়তো এটা কোনো সাধারণ কুকুর ছিল না।

ও ভুত না, আমার বন্ধু

বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার যাচ্ছিলাম। আমরা সোহাগে ছিলাম ।  আমি জানালার পাশে বসে পর্দার ফাঁক দিয়ে বাইরে দেখছিলাম। এক বন্ধুর কথা মনে পড়ে। সে চীনে পড়তে গিয়ে পাহাড় থেকে নিচে পরে যায়। সে দেশে থাকতে সবাই মিলে কক্সবাজার যেতে চেয়েছিল।  আমরা গেলাম তবে সে ছিল না। একটু আফসোস হল ওর জন্য। বেচারা বেঁচে থাকলে এক সাথে থাকতাম। 

ও ভুত না, আমার বন্ধু

বাস যখন চলা শুরু করে উপরের স্লিপার অংশে আমাদের দুজন সিট নেয়। আমরা নিচে বসি। বাস যখন ঢাকা সায়েদাবাদ ক্রস করে একটা ব্রিজে উঠে (নামটা মনে নাই) তখন উপর থেকে ফাহাদ বলে ডাক শুনি। যে বন্ধুটা চীনে গেছিল ওর ভয়েজ। আমরা দুজন মুখ চাওয়া-চাওয়ি করি। দুজনই ভয়েজ শুনেছি।

ঘন্টা দুয়েক যাওয়ার পর কুমিল্লার আশেপাশে বাস থামে।  ব্রেক দেয়। আমরা বাইরে কফি খাচ্ছিলাম। একটা ফ্রেন্ড টয়লেটে যায়। তার ভাষায়, " আমি দ্রুত টয়লেটে ঢুকে পড়ি। সব খালি ছিল।  আমি বের হয়ে আয়নায় দাঁড়িয়ে চোখ মুখে পানি দিচ্ছিলাম। দ্বিতীয় ঝাপটা চোখে দিতেই মনে হলো, পাশে কেউ দাঁড়িয়ে ছিল। আমি বামদিকে তাকাতেই দেখি কেউ চলে গেলো দরজার কাছ দিয়ে।  একটা ছায়া দেখলাম। " 

আমরা কফি খাচ্ছিলাম আর রাজুর কন্ঠ শুনেছি বলে আলাপ করছিলাম।  রবিন তখন টয়লেট থেকে চোখ বড় করে বের হয়ে আসে। পানি খায়। তারপর হোটেলের পাশের সিড়িতে বসে বলে, "দোস্ত রাজুর মত কাউকে দেখেছি" - একদম পাশে ছিল। আমরা তখন বললাম বাসের ভেতরেও স্পষ্ট ওর ডাক শুনেছি।  

আমরা কলাতলীর পাশে সাইমনে ছিলাম এক রাত এবং মারমেইডে এক রাত।  মারমেইডে যখন যাই। রাতে গান হচ্ছিল তখন কিচেনের পাশে কাঠের টেবিলে বসা ছিলাম সবাই। দূরে বালির মাঠের এক পাশ থেকে আরেক পাশে দৌঁড়ে একজন চলে গেলো। আমাদের একজন মাঠে দাঁড়িয়ে আমাদের ছবি তুলছিলো। তখন রাজুর গায়ে যে ধরণের ঘ্রাণ, তেমনটা খুব গাঢ় করে ছড়িয়ে পরে। আমরা দ্রুত নিজেদের রুমে চলে যাই। আমরা পরেরদিন ইনানীর প্ল্যান বাতিল করে ঢাকা ফিরে আসি।

আমাদের কারো সমস্যা হয়নি তবে একজন গত হওয়া লোকের অদ্ভুত উপস্থিতি আমাদের ভয় দেখিয়েছিল। ও ভুত না, আমার বন্ধু। 

মহিলা ও বাচ্চা ভূত প্রেতের কাহিনী সত্য ঘটনা

সত্যি ঘটনা অবলম্বনে, ঘটনাটি আমার এক মামার কাছ থেকে শোনা এবং লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে মামাসহ আরো একজনের সাথে । তো মামা(আমার দুঃসম্পর্কের) মামার বন্ধু নওগা হয়ে আসছিল গাড়ি চালিয়ে । গাড়ি চালাচ্ছিল মামার বন্ধু ।তারা যখন নওগা নহাটাতে পৌছল তখন ঘটনাটি ঘটে ।তখন রাত প্রায় তিনটা । তারা মাইক্রোবাসে করে যখন আসছিল সেই মুহূর্তে তারা একটা মেয়েকে দেখতে পায় রাস্তার ধারে দাড়ানো অবস্থায় । 

মামার বন্ধু বলে এত রাতে এখানে একটা মেয়ে, বোধহয় বিপদে পড়েছে,চল মেয়েটিকে সাহায্য করি । মামা তখন বলে তুই কি ঠিক আছিস,দেখ চারিদিকে বিল,আশেপাশে কোন বাড়িঘর নাই । তাছাড়া রাত বাজে ৩টা এত রাতে এমন নির্জন জায়গায় একটা মেয়ে!! মামার বন্ধুটি ভূ ত প্রে ত কিছুতেই বিশ্বাস করেনা । তো সে মামাকে বলল তুই না গেলে না যাস আমি যাব । 

মহিলা ও বাচ্চা ভূত প্রেতের কাহিনী সত্য ঘটনা

মামার বন্ধুটি গাড়ি ঘুরিয়ে সেই মেয়েটি যে জায়গায় ছিল সেই জায়গায় যেয়ে দেখে মেয়েটি হাটু গেড়ে বসে আছে । তারা নেমে দেখে সেটি ছিল এক মহিলা । বয়স আনুমানিক ৪০-৪৫। তারা মহিলাকে বলে এত রাতে আপনি এখানে কোন বিপদ হয়েছে নাকি । মহিলাটি কোন কথা না বলে ফুপিয়ে কাদতে থাকে । মহিলার কান্নার কারন জানতে চাইলেও মহিলাটি কিছুই বলেনা ।হঠাত্ মহিলাটি বিলের মধ্য দিয়ে হেটে যেতে থাকে । মামা বন্ধুকে বলে মহিলার সাথে যাবার দরকার নাই,বিপদ হতে পারে । কিন্তু বন্ধুটি মামার কথা না শুনে মহিলার পেছন পেছন যেতে থাকে । নিরুপায় হয়ে মামাও যায় তার সাথে । কিছুদূর যাবার পর মহিলাটি পোটলার মত কিছু একটা দেখিয়ে হু হু করে কেদে উঠল । মামা এবং বন্ধু যেয়ে দেখে পোটলার ভেতর একটা কাপড়ে ঢাকা ছোট বাচ্চার লাশ । মামা এই লাশ সম্পর্কে জানতে চাইলে মহিলাটি চুপ করে কাদতে থাকে । মামারা ভাবে মহিলাটি হয়তো বোবা ।হুট করে মামার বন্ধুটি বলে উঠে যে চল মহিলাটি আমরা সাথে করে নিয়ে যাই,এই নির্জন এলাকায় এত রাতে ফেলে রেখে যাওয়া উচিত হবে না । মামা অনিচ্ছা সত্বেও রাজি হলো । 

মহিলাটিকে গাড়ির পেছন সিটে বসিয়ে গাড়ি চলতে থাকল । সময় তখন রাত ৩.৫০ কিছুদূর যাবার পর গাড়ির ইন্জিন হঠাত্ বন্ধ হয়ে গেল । গাড়ি সারতে সারতে প্রায় ৪.১৫ বেজে গেল । গাড়ি আবার চলছে এমন সময় মামা লুকিং গ্লাসের দিকে তাকিয়ে দেখে মহিলাটার মাথাহীন দেহ ।সাথে সাথে পেছন ফিরে দেখে মহিলাটি ঠিকই আছে । কিন্তু আবার যখন লুকিং গ্লাসের দিকে তাকাল তখন একই দৃশ্য দেখল । মামা তখন তার বন্ধুকে দেখতে বলল । বন্ধুটিও একই দৃশ্য দেখে ভ য়ে কাপতে লাগল এবং তারা দুজনই প্রচন্ড ঘামতে শুরু করল । মামা ভয়ে কাপড় দিয়ে লুকিং গ্লাস ঢেকে দিল এবং মহিলার দিকে তাকিয়ে বলল আপনি কি কিছু খাবেন । সাথে সাথে খেয়াল করে মহিলাটির চোখ অনেকখানি লাল এবং মৃ**** ত শিশুটি তার কোলেই রয়েছে । মামারা আল্লাহ আল্লাহ করতে থাকল । 

কিছুদূর যেতে না যেতে তারা সেই মহিলাটিকে রাস্তার পাশে দাড়ানো অবস্থায় দেখে কিন্তু মহিলাটি তো তাদের গাড়িতে বসা ছিল । তারা গাড়িটা থামিয়ে দিল এবং একসাথে দেখল যে পেছনে মহিলাটি নাই এবং সবচেয়ে ভয়ং***কর ব্যাপারটা হচ্ছে মৃ**** ত বাচ্চাটি সিটের উপর দাড়িয়ে তাদের দিকে মুচকি হাসছে এবং বাচ্চাটির চোখের মনি নেই ।এই দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে বন্ধুটি সেন্সলেস হয়ে যায় । মামা মনে সাহস আনার চেষ্টা করল এই ভেবে যদি আমার কিছু হয় তাহলে আমাদের আজ রাতে এখানে পড়ে থাকতে হবে,কিছুতেই জ্ঞান হারানো যাবে না ।

মামা এবার নিজে ড্রাইভ করতে লাগল এবং ভয়ে পেছনে তাকাচ্ছে না । মামা যত সূরা জানে সবগুলো পড়তে লাগল । হঠাত্ মামা পেছন থেকে খঠমট আওয়াজ শুনতে পেল । মামা ভয়ে ভয়ে লুকিং গ্লাসের কাপড় সরিয়ে দিয়ে দেখে বাচ্চাটি একটা র***ক্তা***ক্ত পা চিবিয়ে খাচ্ছে । এইটা দেখে মামা গাড়ির গতি আরো বাড়িয়ে দিল এবং মামা নাকি আরো ২বার মহিলাটি দাড়ানো অবস্থায় দেখেছে । 

ইতিমধ্যে সকাল হয়ছে তো মামা দেখে রাস্তাঘাটে মানুষ এবং যানবাহন চলছে । ঘড়িতে তখন সকাল ৭.২৫ । মামা গাড়ি থামিয়ে পেছনে দেখে কেউ নাই শুধুমাত্র সেই কাপড়টা ছাড়া যে কাপড়ে বাচ্চাটি ঢাকা ছিল । মামা যেয়ে দেখে কাপড়ের মধ্যে কয়েকটা র**ক্তা***ক্ত হা ড় পড়ে আছে । মামা রাস্তার কয়েকজন লোককে ডেকে আনল ব্যাপারটা দেখানোর জন্য । কিন্তু এসে দেখে গাড়ির পেছনের সিটে কাপড়সহ র**ক্তা**ক্ত হা** ড় গুলো নেই।

✍️Sanvi Ahmed 


মেয়ে পুতুলের মধ্যে ভূত

তখনো এ্যাপার্টমেন্টস এর ছাদে তালা ঝুলিয়ে রাখার চল শুরু হয়নি। টাকা দিয়ে মালিকানা কেনা সবাই ছাদে অবাধে যেতে পারতেন। তবে মুশকিল হলো সন্ধ্যার পর থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ছাদে যাওয়া নিয়ে। সাধারণত তখন বিকালে ছাদে ওঠা ছিলো অবধারিত। বিকাল থেকে সন্ধ্যা ছাদে সবাই কমবেশি উঠতোই

সেই হিসেবে ছাদ খোলা রাখা হতো। এরপরে রাতে কারেন্ট যাওয়ার একটা ব্যপার ছিলো। যেটা এখনকার জেনারেশন জানেই না জেনারেটর কেনা হয়নি বিধায় এটলিস্ট দশটা পর্যন্ত ছাদ খোলাই রাখা হতো। কিন্তু দুষ্ট লোকেরা এটা ফায়দা নিলো।


ছাদে উঠে এই সময়টা আজেবাজে কাজ করা শুরু হলো, এদিকে মালিক নিরুপায়। ছাদ পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী খোলা রাখতেই হবে। বাজে কাজ করা লোকেরা আবার ক্ষমতাসালী। বেশ মুশকিলের মধ্যে মালিক বেচারার অবস্থা যায় যায়।

ছাদে ওঠা বন্ধ না রেখেই উনি আলাদা এমন বুদ্ধি বের করলেন যেটায় আজেবাজে লোক ছাদে ওঠাই বন্ধ করে দেয়। আমেরিকায় বড় মেয়ের কাছে চিঠি লিখে একটি ভুতুড়ে ডল কেনার আবদার করলেন।মেয়ে কোন এক হ্যালোউইন উৎসবে বাবাকে ছবি পাঠিয়ে দিয়েছিলো একটি ভয়ংকর ডলের। তাকে প্রথম দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয়বার দেখলে আসলই মনে হবে।

সেই ডল এক মাস পড়েই দেশে এসে পড়লো। ভদ্রলোক সময় মতনই ছাদের একটি জায়গায় সেই ডল স্থাপন করে দিলেন।

মেয়ে ভূতের গল্প

সত্যিই আজেবাজে লোকেরা ছাদে উঠেই খিচুনি ওঠা ভয় পেয়ে বাবাগো মাগো বলে নেমে গেল। আগেই প্ল্যান করে রাখার ফলে সেই লোকেরা নামার পরপরই ডলটা সরিয়ে দেয়া হলো।  পরে লোকজন সহ মালিক গিয়ে হম্বিতম্বি করলেন। ডল কোথাও নাই চোখের ভুল মনের ভুল ইত্যাদি বলে সেদিন কেটে গেল। পরেরদিন আর রাখা হয়নি। আজেবাজে মতলবে যাওয়া লোকজন যখন ভুলে গেল তখনই আবার ডলটা উপস্থিত।

এভাবে তিনবার রাখা পরে ওরা যথেষ্ট ঘাবড়ে গেল। বাড়িওয়ালা একজন হুজুরের সাথে পরামর্শ করে বললেন ছাদে আজেবাজে কাজের জন্যই ওই প্রেতাত্মার আগমন তাই ওসব বন্ধ করতে হবে।

তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারলো বাজে কাজ বাদ দিলো। ছাদে আর কখনোই বাজে কাজ হয়নি আর ডলটা রাখার প্রয়োজন হয়নি। সেটা জায়গা মতন তুলে রেখে দেয়া হলো।

প্রায় দু মাস পরে

একদিন স্বয়ং বাড়িওয়ালা ছাদে গিয়েছেন কি একটা কাজে। ছাদে লাগানো দোলনায় সেই ডল দেখে ঘাবড়ে গেলেন। একি সর্বনাশ?

লুকিয়ে রাখা ডলটা কে এনে রাখলো? উনি এদিক ওদিকে তাকিয়ে আস্তে-ধীরে ডলটা নিয়ে নেমে গেলেন। সেদিন পুরো এ্যাপার্টমেন্ট এ বলতে গেলে তার পরিবারই আছে। ঈদের ছুটিতে সবাই গ্রামের বাড়িতে ছিলো। মানুষ সমান পুতুলটা নিয়ে আগের জায়গায় রাখতে গিয়েই র-ক্ত-হিম হয়ে গেল।

একি পুতুলটা আগের জায়গায়ই আছে। তখনই তার হাতে ধরা ডলটা নড়ে উঠলো। মাটিতে ফেলে দিতেই সেটা উঠে দাড়ালো। উঠে দাড়ানোর পরেই সেই পুতুলটা হুট করে ফেলে রাখা পুতুলের ভিতরে যেন মিলিয়ে গেল....

এ পুতুলটার ভিতরেই কি তাহলে কোন সত্যি আত্মা (জ্বীন) এসে বসবাস করছে?

চাচাতো বোন কে কাফির জীন এ বস করেছে

সত্য ঘটনা অবলম্বনে, দয়া করে কেউ ফান হিসেবে নিয়েন না, সিরিয়াস ব্যাপার। আমরা পুরো পরিবার মিলে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম, চাচার বাড়িতে। প্রথম দিনটা ছিল আনন্দ আর আড্ডায় ভরা। তবে দ্বিতীয় দিন বিকেলেই ঘটল এক আশ্চর্য ঘটনা, যা আমাদের সবাইকে হতবাক করে দিল।


সেদিন বিকেলে আমরা বাইরে যাওয়ার জন্য সবাই সাজগোজ করছিলাম। কিন্তু মাগরিবের আজান পড়ায় সিদ্ধান্ত হলো আমরা আর বাইরে যাব না। তবে আমার এক চাচাতো বোন জেদ ধরল, ও যাবেই। ভাবির কাছে অনেক অনুরোধ করার পর আমরা বের হলাম। ওর সেদিনের সাজগোজ ছিল অসাধারণ—সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েছিল। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে গল্প করছিলাম। গ্রামের কিছু মুরুব্বি মহিলা বলছিলেন, “এই বেলায় বের হলে জ্বীন ধরবে।” জবাবে ও মজা করে বলল, “আমি তো এটাই চাই! জ্বীন ধরলে সবাইকে জ্বালাবো।”


আমরা ধানের ক্ষেতের দিকে হাঁটলাম। ক্ষেতের পাশেই ছিল একটি মরা নদীর শাখা। সেখানে ও ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে ছবি তুলতে শুরু করল। আমি রাগ করে বললাম, “এবার চলো বাসায়, না হলে আমি চলে যাচ্ছি!” এরপর সবাই মিলে বাসায় ফিরলাম।


বাসায় ফিরে আমরা আড্ডা দিতে বসেছিলাম। রান্নাবান্না চলছিল, আর নাস্তা তৈরি হচ্ছিল। তখন হঠাৎ ওর অদ্ভুত আচরণ শুরু হলো। মাতলামির মতো কথা বলছিল, অস্বাভাবিক ইংরেজি বলছিল, আর হাসছিল। আমরা প্রথমে ভাবলাম, মজা করছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ও বলল, ওর শরীর ভারী হয়ে গেছে।


আমরা টক পানি খাওয়ালাম, মাথায় পানি ঢাললাম। কিছুটা শান্ত হলেও ওর চোখ লাল হয়ে আগুনের মতো জ্বলছিল। ও কান্না করে বলছিল, “আমি মরতে চাই না, আম্মা। আমাকে মাফ করে দিও।” এরপর হঠাৎ নিজের গলা দুই হাতে টিপে ধরল। আমরা ৫ জন মিলে অনেক কষ্টে ওর হাত সরালাম। এভাবে প্রায় ২০-৩০ বার ওর দাঁতের সঙ্গে দাঁত লেগে যাচ্ছিল।


ও বারবার বলছিল, “আমি এখানে থাকতে পারছি না। এই রুমে সাদা কাপড় পরা লম্বা পুরুষ মানুষ দেখছি।” আমরা ভয়ে অন্য রুমে নিয়ে গেলাম। কিন্তু একই ঘটনা সেখানে ঘটল। ওর হাত-পা বেঁকে যাচ্ছিল, শরীর শক্ত হয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, ওর শরীরে ১০ জন পুরুষের শক্তি জমা হয়েছে।


অবশেষে রাত ১১টার দিকে তাকে এক আলেমের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো। যাওয়ার সময় কয়েকজন পুরুষ মিলে ওকে ধরে নিয়ে যেতে হয়েছিল, কারণ ওর ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। আলেম দেখে বললেন, ওর শরীরে এক কাফির জ্বীন ভর করেছে। জ্বীনটি বলল, “আমি ওকে ছাড়ব না। ওকে পছন্দ করি।” অনেক দোয়া এবং পড়া-লেখার পর জ্বীনটি শর্ত রাখল—একটি লাল মোরগ মসজিদে দিতে হব


___


পরদিন সকালে মোরগ দিয়ে শরীর মুছে মসজিদে দান করা হলো। কিন্তু জ্বীনটি মিথ্যা বলেছিল। রাতে আবার ওর শরীরের উপর ভর করল। ওর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়, কথাও বলতে পারছিল না। চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল, আর হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছিল। আলেম আবার জানালেন, এই জ্বীনটি ওর শরীরে স্থায়ী হতে চাইছে এবং ওকে পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে। প্রতিদিন নতুন নতুন উপায়ে জ্বীনটি তাকে কষ্ট দিচ্ছে।


 কীভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। কেউ যদি এর সমাধান জানেন বা কোনো উপদেশ দিতে পারেন, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন।


চিকিৎসা:

কানের কাছে ৭ বার আযান ছাড়ুন মোবাইল থেকে,, আর সুরা ছফফাত এর অডিও প্লে করে দিন যতক্ষন স্বাভাবিক না হয়। স্বাভাবিক হলে কোনো স্পেশালিস্ট রাকি দ্বারা চিকিৎসা করান।

#Approved_or_feedback

ভুতনি বউয়ের গল্প

বউটা আমার বড্ড কিপটে। সঞ্চয়ের কথা বলে সারা জীবন ডাঁটাচচ্চড়ি খাইয়েই কাটিয়ে দিল।🙄

তা মৃত্যুটাও আমার একটু আলাদা ভাবেই হলো। একপিস পাউরুটিতে ইঁদুর মারার বিষ মিশিয়ে খাটের নীচে নামিয়ে রেখেছিলাম। বউ সে ব্যাপারে জানতো না। সঞ্চয়ী বউ আমায় পরেরদিন ব্রেকফাস্টে সেই রুটিই খেতে দেয়। 😣

আহা কী সুন্দর কলেরা শুরু হয়ে গেলো। শরীরের জল শুকিয়ে গিয়ে  আলুর চিপস হয়ে মরে গিয়ে ভূত জন্ম লাভ করলাম সবে দুই দিন হলো।😐

যজ্ঞডুমুরের একটা সরু ডালে বসে পা দোলাছি। আর উঁকি ঝুঁকি মেরে খেদি পেত্নীকে দেখছিলাম। খেঁদি ছিলো আমাদের সক্কলের ক্রাশ পাড়াতুতো বউদি। ভাবলাম একটা ছবি তুলে নিই মোবাইলে এই বেলা । 

হঠাৎ ডাল ভেঙে ভূপতিত। একি ব্যাপার আমার মতো এক শুঁটকের বসে থাকায় তো এ ডাল ভাঙবে না ! উফফ কোমরটা এক্কেরে ভেঙে গেলো মনে হয়। পাশ থেকে নাকি সুরে একজন বললো 

- হঁতচ্ছাঁড়া মিঁনসে ঘঁরে বঁউ রেঁখে এখাঁনে অঁন্য মেঁয়ের দিঁকে নঁজর ! 🤪

তাকিয়ে দেখি আমার কেলেন্দি সুন্দরী গিন্নি। কপালে এক খান লাল সিঁদুরের টিপ পড়ে সাক্ষাৎ মা কালি লাগছে।😲

- তাঁ গিঁন্নি তুঁমি এখাঁনে কীঁ কঁরে এঁলে?🤔

- তুঁমি মঁরে যাঁওয়ার পঁর ভেঁবে দেখলুঁম আমাঁর জঁন্য আঁবার আলাঁদা কঁরে ছঁরাদ্দ কঁরলে অঁনেক খঁরচা হঁবে খোঁকার। তাঁই আঁমিও কঁলকে ফুঁলের বীঁজ খেঁয়ে এঁই জঁনম লাঁভ করলুঁম।😑

মনে একরাশ দু:খ নিয়ে মনে মনে বললুম.....ধন্যি গিন্নি,ধন্যি সঞ্চয়কারী তুমি। আমার জীবন -মরন সব এক করে দিলে !😫

bhoot

যদি দেখার ইচ্ছে হয়🫠 তোমার নিঠুর মনে লয় 🥴 তেঁতুল গাছের নিচে আইসো রাত ১২টার সময় 🙃

রুমমেট আপু : মেয়েদের ভূতের গল্প

আসসালামু আলাইকুম, মেসে আছি। বাসা থেকে হলে আপেল কুল (বরই)এনে রুমমেট আপুকে দিয়েছি । দুজনে দুটো আম নিয়েছি। রুমমেট বিছানা থেকে দৌড়ে এসে হাত থেকে বরইটা ফেলে দিয়ে বললো এই বরই এ পোকা আছে। উনি কিন্তু এর আগে বরইটা দেখেন নাই। বরইটা কাটার পর দেখি সত্যি বড় একটা পোকা। উনি কিভাবে জানলেন? 

১২ টায় লাইট অফ করে ঘুমিয়ে যায়। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখি উনি অন্ধকারে বিছানা থেকে উঠে জানালার পাশে বসে হাত নাড়াচাড়া করছেন । আমি জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন আমার এ্যাজমা আছে তো সেজন্য শুয়ে থাকলে মাঝে মাঝে দম বন্ধ হয়ে আসে সেজন্য বসে থাকি। কিন্তু উনি বাইরে কাকে ইশারা করছিলেন?

রাত তিনটায় ঘুম থেকে উঠে দেখি উনি নিজের টেবিল রেখে আমার টেবিল-চেয়ারে বসে অন্ধকারে  মোবাইল নিয়ে বসে আছেন। আমি তাকালে সেও বড় বড় চোখ করে তাকায় । আমি ভয়ে চোখ বন্ধ  করে অন্যদিকে ফিরে নাম ধরে ডাকি উত্তর দেয় না। টেবিলের দিকে তাকালে দেখি উনি নাই।

রুমের লাইট অফ। গভীর রাতে ঘুম থেকে রুমমেটের বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি নাই । তার মানে সে বাথরুমে গিয়েছেন। আবার দেখি দরজার সিটকানি ভিতর থেকে লক করা।  মানে উনি বাইরে যায়নি এগুলো দেখে আমি চিৎকার দিয়েছি। উনি হুট করে কোত্থেকে যেন আসলো । মনে হলো ওয়াশরুম থেকে কিন্তু অন্ধকারে/সুইচ অফ থাকা অবস্থায় উনি বাথরুমে কি করছিলো? কিভাবে এত তাড়াতাড়ি আসলেন?

কিছুদিন আগে এক দুপুরে ঘুমিয়ে আছি। একটা শক্ত হাতের press এ  আমার বুকে একটু ব্যথা অনুভব করায় চোখ খুলে দেখি আপু ডাকছেন। কিন্তু বুকে আঘাত করে ডাকতে হবে কেন?বললো গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি তুমি থাকো। কিন্তু এই আচরণ কাম্য নয় । 

জগ ভর্তি পানি এনে মাত্র রেখেছি । আপু বাইরে থেকে এসে এক জগ পানি খেয়ে নিলেন। কিভাবে সম্ভব?  আমার চেয়েও হ্যাংলা পাতলা হওয়া সত্ত্বেও রুমের আসবাবপত্র সরাতে গিয়ে উনি উঁচু করে তুলতে পারেন , আমি পারি না। এত শক্তি উনি পায় কোথায়?  উনি মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও গরুর মাংস খায় না। বলেন তার, "অ্যাজমা আছে" মেনে নিলাম। কিন্তু অনেক দিন পর পর সব কাপড় খুলে দাড়িয়ে থাকে । আমি আপুকে ডাক দিয়ে ঠিক করতে বললে উনি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে । আমি কাছে গিয়ে কাপড় পরিয়ে দিয়ে শুইয়ে দিই। কিছুক্ষণ পর সে আমাকে জিজ্ঞেস করে তার কাপড় খুললে কেন?আমি বলি আপনিই তো খুলেছেন।তখন বলে কই না তো , আমার তো কিছুই মনে নাই।

এগুলো আসলে কিসের লক্ষণ? আমার কি করা উচিত?

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৭

ওই মমিটার পেটটা আস্তে আস্তে ফুলে যেতে শুরু করলো। এ দৃশ্য আমি নিজ চোখে দেখছি এটা আমার বিশ্বাস ই হচ্ছে না। ওই ছায়া গুলো তাদের শক্তির সাহায্যে ওই মমিটার পেটে বাচ্চাটাকে এনেছে। এবার মমিটার সারা শরীর একদম আলোয় আলোকিত হয়ে গেলো। আর সেই আলো  মমিটার ভিতর থেকে এসে নীলার দেহে প্রবেশ করলো। নমানি ওঝা বললো জুনায়েত  আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এই দেখো মমিটার ভিতর থেকে বাচ্চাটা বের হয়ে নীলার পেটে এসেছে। এই বাচ্চাটাই চন্দ্রা আর তার মেয়েকে ধংস্ব করে তোমাদের বাঁচাবে। 

আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম বাচ্চাটা নীলার পেটে আসলো ঠিক আছে কিন্তু এই বাচ্চাটা বড় হবে কী করে এবং শক্তিশালী হয়ে জন্মই বা নিবে কী করে? নমানি ওঝা বললো কাল আবার ওই শুভ আত্মা গুলো আসবে এবং  এই বাচ্চাটাকে নীলার পেট থেকে  তাদের সাথে নিয়ে যাবে এবং বড় করে পূর্ণ শক্তি শালী করে ফিরিয়ে দিয়ে যাবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম আর আমার স্ত্রী নীলার কী হবে? ওঝা বললো কাল যখন ওই শুভ আত্মা গুলো এই বাচ্চা টাকে নিয়ে যাবে ঠিক তার পর ই তোমার স্ত্রীর জ্ঞান ফিরে আসবে। আজ তুমি এখানেই থেকে যাও। পরের দিন রাতের বেলা নমানি ওঝা সেই শুভ শক্তিদের আবার ডাকার ব্যাবস্হা করলো। 

নমানি ওঝা একটা গোল বৃত্ত টেনে তার ভিতরে নীলাকে রাখলো। তার পর শুভ শক্তি গুলোকে ডাকতে শুরু করলো। কোথায় তোমরা? আসো আসো। এসে এই বাচ্চাটাকে নিয়ে যাও। আর তাকে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শক্তি শালী করে দাও। এসো এসো। আমি আবার ও টের পেলাম চার পাশটা কেমন জানি কাঁপছে। আর আমি দেখলাম  ঝড়ের মতো কিছু সাদা আলো নীলাকে ঘেরাও করে ফেললো। আমি চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ দেখলাম ওই ঝড়ের মতো আলোটা মিশে গেলো। আর নীলার পেটের বাচ্চা টা উধাও। কারন পেটটা স্বভাবিক ছিলো। নমানি ওঝা বললো আর কোন চিন্তা নেই। ওরা আমাদের কথা শুনেছে। ওরা বাচ্চাটিকে নিয়ে গেছে। আর কোন সমস্যা নেই। 

আমি জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু ও ফিরে আসবে কখন। নমানি ওঝা বললো তোমাদের কোন বিপদ হলেই ও ফিরে আসবে আর তোমাদের রক্ষা করবে। একটু পর নীলার জ্ঞান ফিরে এলো। নীলার জ্ঞান ফিরতেই জিজ্ঞেস করলো তার পেট থেকে যে বাচ্চাটা হয়েছে সে কোথায়? সে তাকে দেখবে। আমি আর নমানি ওঝা নীলাকে বললাম তাকে শুভ শক্তির আত্মারা নিয়ে গেছে পূর্ণ শক্তিতে রুপান্তরিত করতে। নীলা কেঁদে কেঁদে  বললো না আমি ওকে একবার দেখতে চায়। ওঝা বললো নীলা তুমি শান্ত হও। ও আবার আসবে আর তোমাকে মা বলে ডাকবে। ওঝা আমাদের উদ্দেশ্য করে বললো এবার তোমরা  বাড়ি ফিরে যাও। আর সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করো। আমি নীলাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম। সব কিছুই স্বাভাবিক ছিলো। আজ ওঝার দেওয়া তিন দিন শেষ হবে। 

কিন্ত এখনো পর্যন্ত চন্দ্রার মেয়ে বা চন্দ্রা কেউ ই আমাদের কোন ক্ষতি করেনি। আজ রাত বারোটার কথা আমি আর নীলা রুমে শুয়ে ছিলাম।  আর তখন ই ড্রয়িং রুম থেকে বাবা আর মায়ের চিৎকার শুনতে পেলাম।  আমি আর নীলা দৌড়ে ওখানে এলাম। এসেই দেখি চন্দ্রার মেয়ে আমার বাবার গলায় ধরে শূন্যে তুলে বার বার জিজ্ঞেস করছে বল তোর ছেলে কোথায়?  কোথায় রুদ্রের বংশ ধর? আমি ওখানে গিয়েই চেঁচিয়ে বললাম এই যে আমি রুদ্রের বংশধর।  দেখো যা করার আমাকে করো আমার মা বাবা কে ছেড়ে দাও। পাশে দাঁড়িয়ে চন্দ্রা সব ই দেখছে। হয়তো ও ই আজ ওর মেয়েকে প্রতিশোধের জন্যে এখানে নিয়ে এসেছে। পরক্ষণেই চন্দ্রার মেয়ে ইরাবতী বাবার গলাটা ছেড়ে দিলো। বাবা ধপাস করে মেঝেতে পরে গেলো। এবার ইরাবতী আমার গলাটা ধরে আমাকে শুন্যে তুলে  ছুড়ে কাঁচের টেবিলের উপরে ফেললো। আমি কাঁচের টেবিলের উপরে পরে ক্ষত বিক্ষত হলাম। 

আমার সারা শরীর দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিলো। নীলা বার বার বলছে প্লিজ ওকে মেরো না। ওরতো কোন দোষ নেই। কিন্তু ইরাবতী শুনছিলো না। সে চিৎকার দিয়ে বললো আজ আমি এই রুদ্রের বংশধরদের হত্যা করে আমার আর আমার মায়ের প্রতিশোধ নেবো।  ঠিক তখনি সেখানে আরো একজন চলে এলো। আর সে হলো নীলার মেয়ে। সে সেখানে এসেই বলে উঠলো আমি থাকতে তুই এদের কিছুই করতে পারবি না।৷ পিছনে তাকিয়ে চন্দ্রা আর ইরাবতী খুবই অবাক হয়ে গেলো। কারন নীলার পেটে জন্ম নেওয়া মেয়েটি চন্দ্রার মেয়ে ইরাবতীর মতোই দেখতে ছিলো। চন্দ্রা এবার বিপদে পরে গেলো এটা ভেবে যে এই মেয়েটা কে? আর কেন ই বা সে দেখতে তার মেয়ে ইরাবতীর মতো? 

ঠিক তখনি নীলার মেয়ে আর চন্দ্রার মেয়ে ইরাবতীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো। যুদ্ধে দুজনই খুবই আঘাত পাচ্ছিলো যা চন্দ্রার বুকে এসে লাগছিলো।  ঠিক সেই সময় সেখানে নমানি ওঝা চলে এলো। আর চন্দ্রাকে উদ্দেশ্য করে বললো কী চন্দ্রা খুব অবাক হচ্ছো? কী ভাবছো এই দুজনের চেহেরা প্রায় এক কেনো? কারন এই দুজই ই হলো তোমার মেয়ে। চন্দ্রা খুবই অবাক হলো আর নমানি ওঝার গলা চেপে ধরে বললো কী বসছিস এসব? নমানি ওঝা চন্দ্রাকে বললো তোমার মেয়ে ইরাবতী কে থামতে বলো নয়তো এই মেয়ের হাতে ওর মৃত্যু হবে।  কারন শুভ আর অশুভ শক্তির লড়াই এ জয় সব সময় শুভ শক্তির ই হয়। এবার চন্দ্রা ওর মেয়ে ইরাবতী কে থামতে বললো। তার পর নমানি ওঝা চন্দ্রাকে বললো তোমার চুল আর মমি থেকেই এই নীলার বাচ্চার জন্ম। তাইতো দুজন এক দেখতে। যার উদ্দেশ্য তোমাদের আটকানো। একে তোমার মেয়ে বললেও ভুল হবে না। 

এখন তুমি ঠিক করো তুমি কী নিজের দুই মেয়ের লড়াই করিয়ে তাদের মৃত্যু দেখতে চাও? এবার চন্দ্রা একদম চুপ হয়ে গেলো। এবার নমানি ওঝা নীলার মেয়েকে বললো এই চন্দ্রার চুল থেকে তোমাকে বানানো হয়েছে। নীলা যেমন তোমার মা এই চন্দ্রা ও তোমার মা। এবার নীলা মাথাটা একটু নিচু করে ফেললো। নীলার পেটে জন্ম নেওয়া মেয়েটি চন্দ্রার দিকে এগিয়ে গেলো আর তার হাতে ধরে বললো মা তুমি ইরাবতীকে দিয়ে যেটা করাচ্ছো এটা ঠিক না। সেই একশো বছর আগে রুদ্র তোমার সর্বনাশ করেছিলো বলে আজ তুমি এই নিরীহ মানুষের উপর এ ভাবে প্রতিশোধ নিতে পারো না। এবার চন্দ্রা তার মাথাটা নিচু করে ফেললো। আর চোখের পানি ফেলে কেঁদে কেঁদে বললো আমি আত্মা হত্যা করার সময় আমার পেটে যদি সন্তান না থাকতো  তাহলে হয়তো আজ আমার অতৃপ্ত আত্মা পৃথিবীতে থাকতো না। আমার সন্তান পৃথিবীতে আসতে পারেনি বলেই আমার আত্মা শান্তি পায়নি।

নমানি ওঝা বললো চন্দ্রা তোমার আত্মাকে মুক্তি দেওয়ার একটা রাস্তা আছে। তুমি তোমার এই দুই মেয়েকে নিয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাও। আর তাদের দুজন কে পুনরায় নীলার গর্ভে সাধারণ  মানুষ হিসাবে পাঠাও। এতে তোমার আত্মাটাও শান্তি পাবে আর তোমার বাচ্চা  ও পৃথিবীর মুখ দেখতে পেলো। এই কথা শুনে চন্দ্রা খুবই খুশি হলো। আর এতে নীলা ও রাজি ছিলো। কথা গুলো শুনেই চন্দ্রার চোখ দিয়ে পানি পরছিলো। আর আমরা দেখতে পেলাম চন্দ্রার ছায়াটা ঘোলাটে হতে শুরু করলো আর তার দুই মেয়ের ও। নমানি ওঝা বললো চন্দ্রার আত্মা শান্তি পেয়েছে তাই তার অতৃপ্ত আত্মা মুক্তি পাচ্ছে। 

চন্দ্রা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে নীলা আর জুনায়েত এর কাছে ক্ষমা চাইলো।  আর জুনায়েত এর বাবা মায়ের মাথা থেকে সব ভুলিয়ে দিলো যা তারা দেখেছিলো। একদম মিশে যাওয়ার আগে চন্দ্রা বললো আমার মেয়েদের দেখে রেখো। এই বলেই চন্দ্রা ও তার দুই মেয়ের আত্মা একদম হাওয়ায় মিশে গেলো। তারা চলে গেছে এই পৃথিবী ছেড়ে। এবার জুনায়েত খুরিয়ে খুরিয়ে নমানি ওঝার কাছে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে বললো ওঝা সাহেব আজ আপনি না থাকলে আমরা বাঁচতে পারতাম না। আপনি অনেক মহান একজন মানুষ। চন্দ্রা তার কথা রেখেছিলো। নীলার গর্ভে সে তার সন্তান দের পাঠিয়েছে কারন  বছর খানিক পর নীলা মা হয়। আর নীলার জমজ দুটো মেয়ে হয়। ঠিক মেয়ে দুটো চন্দ্রার সেই মেয়ে দুটোর মতই দেখতে হয়েছিলো। জুনায়েত একজন এর নাম রাখে ইরাবতী আর নীলা অন্যজন এর নাম রাখে রুহি। কারন তার রুহ্ থেকেই অন্যজন এর জন্ম হয়েছিলো।

                  ........  সমাপ্ত.................

গল্পটি লিখেছেনঃ জুনায়েত হাসান 
এরকম আরও গল্প পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৬

নীলার পেটে আসবে এমন একজন শক্তি শালী বাচ্চা যে তোমাকে আর তোমার পরিবারের সবাইকে বাঁচাবে। নমানি ওঝার মুখে এমন কথা শুনে নীলা আর আমি খুব অবাক হলাম। আমি হেসে বললাম ওঝা সাহেব আপনি কী খেপেছেন? নাকি পাগল হয়েছেন? নীলা একটা সাধারণ মানুষ। তার পেটে এতো শক্তিশালী বাচ্চা আসবে কী করে? আর আমাদের হাতে সময় আছে মাত্র তিন দিন। এই তিন দিনের মধ্যে বড় হবেই বা কী করে বাচ্চা টা? ওঝা বললো তুমি পুরো কথাটা না শুনেই কথা বলছো কেনো? আগে আমার কথাটা তো শুনো। 

আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে বলুন কী বলবেন আপনি। নমানি ওঝা আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো শুনো আমি জানি তিন দিনের মধ্যো একটা বাচ্চা জন্ম নেওয়া এবং প্রতিশোধ নেওয়া সম্ভব নয়। কারন এটা কোন সাধারণ মানুষ করতে পারবে না। তাতে প্রকৃতি বিরোধী কাজ হবে। কিন্তু এই একই বিষয় যদি তুমি আত্মাদের  বেলায় দেখো তাহলে এটা সম্ভব। যেটা চন্দ্রা করে দেখিয়েছে। চন্দ্রা তার সন্তান কে মাত্র তিন দিনের মধ্যেই পৃথিবীতে এনে পরেছে।  আমি বললাম সবই তো বুঝলাম কিন্তু নীলার পেটে ওই শক্তি শালী বাচ্চাটা আসবে কী করে? নমানি ওঝা বললো এর জন্য  আগে আমাদের চন্দ্রার মমি টাকে চুরি করতে হবে এবং চন্দ্রার মমির ভিতরে নীলার আত্বাকে প্রতিস্হাপন করতে হবে। 

তার পর শুভ আত্মাদের ঢেকে তাদের শুভ শক্তি দিয়ে এই অল্প সময়ে নীলার পেটে ওই বাচ্চাটাকে আনতে হবে এবং তাকে শক্তি শালী করে গড়ে তুলতে হবে। আমি নমানি ওঝাকে বললাম আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না ওঝা সাহেব। ওঝা বললো আমরা চন্দ্রার মমিটাকে দেহো হিসাবে ব্যাবহার করে তার ভিতরে তোমার স্ত্রী  নীলার আত্মাকে ঢুকিয়ে সেই শক্তি শালী বাচ্চাকে এই পৃথিবীতে আনবো। এবার আমি সব বুঝতে পারলাম। নমানি ওঝা আমাকে বললো আর একটা জিনিস এর দরকার হবে এই অসম্ভব কাজটা করতে। আমি বললাম কী জিনিস?  নমানি ওঝা বললো চন্দ্রার মাথার একটা চুল। আমি বললাম চন্দ্রার মাথার একটা চুল কেনো? নমানি ওঝা বললো ওই মমিটার মাথায় ওই চুলটা রেখেই সব কিছু করতে হবে। নয়তো চন্দ্রা ও তার মেয়ে ইরাবতী সব জেনে ফেলবে। আমি খুব চিন্তায় পরে গেলাম। এখন চুল কোথায় পাবো চন্দ্রার। পরক্ষনেই আমার মনে পরে গেলো চন্দ্রা তো আমার সাথে আমার রুমে ছিলো দুই দিন। হয়তো  ওখানে খুজলে নিশ্চয়ই ওর একটা চুল পাওয়া যাবে। আমি নীলা আর ওঝাকে বললাম আমি বাড়ি থেকে ঘুরে আসছি। আপনারা এখানেই থাকুন। নিশ্চয়ই ওখানে  চন্দ্রার একটা চুল ঠিকই পাওয়া যাবে। আমি বাড়ির উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরলাম। আর বাড়িতে আসতেই আমি তন্ন তন্ন করে চুল খুজতে  থাকলাম। মা আমার রুমে এসে জিজ্ঞেস করলো কীরে জুনায়েত সারা দিন কোথায় থাকিস? আর নীলাই বা কোথায়? এতো তন্ন তন্ন করে কী খুজতেছিস? আমি বললাম  চন্দ্রার চুল। 

মা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো চন্দ্রার চুল মানে? আমি বললাম ইয়ে মানে কিছু না মা। তুমি এতো কিছু বুঝবে না। আমি খুজতে খুজতে কয়েকটা চুল আয়নার সামনে দেখতে পেলাম। আর বললাম এইতো পেয়ে গেছি। আমি এখানে চন্দ্রাকে চুল আঁচড়াতে দেখেছি। আমি চুল গুলো নিয়ে নমানি ওঝার আস্তানায় চলে আসলাম। আর এসেই নমানি ওঝার হাতে দিয়ে বললাম এই দেখুন চন্দ্রার চুল পেয়ে গেছি। নমানি ওঝা বললো চলো চন্দ্রার আস্তানায় যেতে হবে ওর মমিটাকে চুরি করে আনতে হবে। আমি বললাম ঠিক আছে চলুন তাহলে। আমরা নীলাকে ওখানে রেখে বেরিয়ে পরলাম মমিটা আনতে। আমি আর নমানি ওঝা চন্দ্রার আস্তানায় ঢুকে পরলাম। আমি খুবই ভয়ে ছিলাম। নমানি ওঝা বললো ভয়ের কিছু নেই জুনায়েত। চন্দ্রা এখন এখানে আসবে না। সে তার মেয়েকে পূর্ণ শক্তিতে পরিনত করতে ব্যাস্ত। এই সুযোগ এ মমিটাকে চুরি করতে হবে। আমি আর নমানি ওঝা মমিটার কাছে এগিয়ে গেলাম। 

সাদা একটা কাপড়ে মমিটা মুড়ানো ছিলো। চারপাশটা কাঁচের দেয়াল করা। আমরা দুজন কাঁচের দেয়ালটা ভেঙে ফেললাম। আর নমানি ওঝা বললো তুমি পায়ে ধরো আমি হাতে ধরে মমিটাকে নিয়ে চলো। আমরা যেই মমিটাকে ওখান থেকে তুললাম ঠিক তখনি চারপাশ টা কেমন জানি করতে শুরু করলো। বাতাস বয়তে শুরু করলো জোরে আর বিদ্যুৎ ও চমকাচ্ছিলো। নমানি ওঝা বললো ভয় পেও না প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করতে যাচ্ছি তাই প্রকৃতি একটু ক্ষেপেছে। আমরা দুজন চন্দ্রার মমি টাকে নিয়ে নমানি ওঝার আস্তানায় চলে আসলাম। আর এসে দেখলাম নীলা আমাদের অপেক্ষায় বসে আছে। নমানি ওঝা বললো  এই মমিটাকে মেঝের মাঝখান বরাবর রাখো। আমরা মমিটাকে মেঝের মাঝখান বরাবর রাখলাম। নমানি ওঝা বললো নীলা তুমি মমিটার পাশে শুয়ে পরো। নীলা চন্দ্রার মমিটার পাশে শুয়ে পরলো। নমানি ওঝা আমার দেওয়া চুল গুলো ওই মমিটার মাথার উপরে রাখলো। আর তারপর নমানি ওঝা  কী যেন মন্ত্র পাঠ করতে থাকলো মনে মনে। 

তার পর সে নীলার মাথায় হাত রাখলো। আর হাত টা রাখতেই নীলা যেন ঘুমিয়ে পরলো। এবার নমানি ওঝা জোরে জোরে মন্ত্র গুলো উচ্চারন করতে থাকলো। আর হঠাৎ আমি দেখতে পেলাম নীলার শরীর থেকে ছায়ার মতো কিছু একটা বেরিয়ে এলো আর ওই মমিটার ভিতরে ঢুকে পরলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম ওঝা সাহেব কী হলো এটা? ওঝা বললো নীলার আত্মা মমিটার ভিতরে ঢুকে পরেছে। এবার শুভ আত্মাদের ডাকার পালা। তিনি লাইট অফ করে দিলো। আমি নমানি ওঝাকে জিজ্ঞেস করলাম ওঝা সাহেব আমার স্ত্রী নীলার কোন ক্ষতি হবে না তো? ওঝা বললো না কোন ক্ষতি হবার কথা না। আর ক্ষতি হলেও তো কিন্তু করার নেই। কারন আমাদের হাতে এটা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। ভয়ের চুটে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে একদম কাপতে থাকলো। 

এবার নামানি ওঝা চিৎকার দিয়ে ডাকতে থাকলো আসো শুভ শক্তিরা আসো। এই অশুভ শক্তির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করো। এসো এসো। এই মেয়েটার মাঝে একটা শুভ শক্তির জন্ম দাও তোমাদের শক্তি দিয়ে। একটু পর চার পাশটা কেমন জানি কাঁপতে থাকলো। আর আমি খেয়াল করলাম নীলার আর ওই মমিটার চার পাশে অনেক গুলো ছায়া গোল করে দাঁড়িয়ে আছে। আমি বেশ বুঝতে পারলাম ওঝা যে সমস্ত শুভ আত্মাকে এতক্ষণ ডাকছিলো এরাই ওরা। ওই ছায়া গুলো এবার তাদের হাত একে একে ওই মমিটার কপালে রাখতে শুরু করলো। আর আমি দেখলাম মমিটার সারা দেহ আলোকিত হয়ে গেছে। বোধ হয় তারা তাদের শক্তি ওই মমিটার ভিতরে দিচ্ছে। আবার এ দিকে নীলার দেহটাও ছটফট করতে শুরু করেছে। আমি নীলার পাশে এসে বসলাম। 

এবার নমানি ওঝা আমাকে ডেকে বললো জুনায়েত এই দেখো নীলার বাচ্চা আসছে। আমি দৌড়ে গিয়ে দেখতে পেলাম চন্দ্রার সেই মমিটার পেটটা আস্তে আস্তে ফুলতে শুরু করলো। তার মানে সত্যি আরো একটা বাচ্চা এই পৃথিবীতে আসতে চলেছে।

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৭

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৫

আমি চন্দ্রার মেয়ে ইরাবতী। মেয়েটার মুখে এমন কথা শুনে নীলা আর নমানি ওঝার চোখ কপালে উঠে গেলো। নমানি ওঝা শুধু চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে কিছু বলছে না। তবে নীলার একটা বিষয় মাথাতে কোন ভাবেই ঢুকছে না। এই পিচ্চি মেয়েটা কী করে এতো ভয়ানক হবে আর কী করেই বা প্রতিশোধ নেবে?  ঠিক সেই সময় নীলা আর নমানি ওঝা সেখানে চন্দ্রার উপস্থিতি টের পেলো। চন্দ্রা সেই মমিটার পিছন থেকে খুরিয়ে খুরিয়ে হেঁটে হেঁটে আসতেছে। আর চন্দ্রা আমাদের মাঝে এসেই একটা অট্টহাসি দিয়ে বলে উঠলো আমার লক্ষ পূরন হয়েছে। এই দেখো আমার মেয়ে পৃথিবীতে এসে গেছে। 

এখন আমাকে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে কে আটকায়? এখন শুধু একটু সময়ের ব্যাপার। কাউকে বাঁচতে দেবো না আমি। আমার মেয়ে তোদের সবাইকে মেরে ফেলবে হা হা। তার পর চন্দ্রা তার মেয়েকে ডাকলো আর বললো চলে আয় ইরাবতী। সময় হউক ওদের মৃত্যুর প্রহরের। এই কথা বলেই চন্দ্রা গুহার ভিতরের দিকে যেতে থাকলো আর তার পিছন পিছন তার মেয়ে ইরাবতী ও। নীলা তো খুব অবাক হলো এতো কিছু হয়ে গেলো নমানি ওঝা কিছু বলছে না শুধু চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। চন্দ্রা আর তার মেয়ে অন্ধকারে নিমিষেই হারিয়ে গেলো। ওঝা নীলাকে বললো জুনায়েত কে নিয়ে আমার আস্তানায় চলো। এখানে থাকাটা আমাদের জন্য নিরাপদ না। 

নীলা আর নমানি ওঝা মিলে আমাকে নমানি ওঝার আস্তানায় নিয়ে চলে এলো। আমার যখন জ্ঞান ফিরলো আমি তখন দেখতে পেলাম নমানি ওঝা আর নীলা মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে আমার পাশে বসে আছে। আমার জ্ঞান ফিরতেই আমি জিজ্ঞেস করলাম আমি কোথায়? নমানি ওঝা বললো ভয় এর কিছু নেই তুমি নিরাপদ আছো। তুমি আমার আস্তানায় আছো। আমি নমানি ওঝাকে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে আপনারা দুজন এ ভাবে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন কেনো? নমানি ওঝা কাঁপতে কাপঁতে বললো সর্বনাশ হয়ে গেছে জুনায়েত।  আমি জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে বলবেন তো? চন্দ্রার মমি তুমি নষ্ট করতে ব্যার্থ হওয়ার ফলে চন্দ্রার মেয়ে এই পৃথিবীতে এসে পরেছে। কথাটা শুনে আমার হার্টবিট বেড়ে গেলো। গলাটাও কেমন জানি শুকিয়ে আসতে শুরু করলো। 

আমি নীলাকে বললাম আমাকে এক গ্লাস পানি খাওয়াও। নীলা আমাকে এক গ্লাস পানি এনে দিলো। আমি পানি খেতে খেতে নমানি ওঝাকে বললাম এখন কী হবে ওঝা সাহেব? বাঁচার কী আর কোন রাস্তা নেই? ওঝা সাহেব বললো আমি আর কিছুই বলতে পারছি না। এখন একমাত্র একটাই রাস্তা খুলা আছে। কে চন্দ্রাকে জাগালো তাকে খুজে বের করতে হবে। কারন একমাত্র সে ই জানে চন্দ্রাকে ও তার মেয়ে ইরাবতী কে কী ভাবে ধংস্ব করতে হবে। এর ই মধ্যে নীলা বললো ওঝা সাহেব আমার একটা বিষয় জানার আছে। ওঝা বললো হুম বলো। আচ্ছা আজ গুহার মধ্যে আমাদের তিন জন কে চন্দ্রা ও তার মেয়ে একা পেয়ে ছেড়ে দিলো কেনো?  ও তো ওখানেই আমাদের মেরে ফেলতে পারতো। ওঝা বললো চন্দ্রার মেয়ে আজ সবেমাত্র পৃথিবীতে এসেছে। আর তাকে পূর্ণ শক্তিশালী করতে একটু সময় লাগবে চন্দ্রার। চন্দ্রার মেয়েকে চন্দ্রা তার থেকে ১০ গুন বেশি শক্তি শালী করে গড়ে তুলবে। আর তার পর ই সে তার প্রতিশোধ নেবে। এই ধরো আজকের দিন সহ মোট তিন দিন লাগবে। নীলা বললো তার মানে আর তিনদিন সময় রয়েছে আমাদের হাতে? নমানি ওঝা বললো হুম একদম ঠিক বলেছো। 

এবার আমি নমানি ওঝাকে বললাম কিন্তু চন্দ্রাকে কে জাগালো সেটা কী করে জানবো? ওঝা বললো সেটা চন্দ্রা নিজে বলবে। মানে তাকে দিয়ে বলাতে হবে। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম এটা কী করে সম্ভব? চন্দ্রা তো আমাদের মেরে ফেলার জন্য উঠে পরে লেগেছে সে কেনো বলবে?  নমানি ওঝা বললো আজ রাতে চন্দ্রাকে আমি আমার তপস্যার মাধ্যমে ডাকবো। তাকে আসতেই হবে। সে আসবে আমি জানি। আমি নমানি ওঝাকে বললাম যা করার তারা তারি করুন হাতে  বেশি সময় নেই। রাতের বেলা সব আয়োজন করলো নমানি ওঝা। তিনি ইয়া বড় গোল চাকার মতো কিছু একটা মেঝেতে রাখলো গাড়ির চাকার মতো। আর তার ভিতরে অনেক মন্ত্র লিখা ছিলো। তিনি সেই বস্তুর ভিতরে মোমবাতি রাখলো। আর তার আস্তানার সমস্ত লাইট অফ করে দিলো। আর তিনি মন্ত্র পড়তে শুরু করে দিলো। তিনি বার বার বলছে চন্দ্রা আয়। চন্দ্রা আয়। তোকে আসতেই হবে।  একটু পর আস্তানাটা কাঁপতে শুরু করলো। আমি বুঝতে পারলাম চন্দ্রা আসছে। হঠাৎ মোমবাতিটা নিভে গেলো। 

আর চন্দ্রা ভয়ংকর ভাবে চিৎকার দিয়ে বললো আমাকে ডেকে ভুল করছিস। আমার মেয়ে তোদের বাঁচতে দেবে না। ওঝা বললো বাঁচা মরা সব উপর ওয়ালার হাতে তুই কিছুই করতে পারবি না। আগে বল তোর ঘুম কে ভাঙ্গিয়েছে। চন্দ্রা বললো আমি বলবো না। ঠিক তখন ওঝা আর জোরে জোরে কী যেনো পড়তে শুরু করলো। আর চন্দ্রা তখন ছটফট করা শুরু করলো আর বাধ্য হয়ে বললো আমার ঘুম ভাঙ্গিয়েছে বিশু। এবার নমানি ওঝা চন্দ্রাকে ছেড়ে দিলো। আর ঘরের লাইট গুলো জ্বালিয়ে দিলো। আর বললো বিশু কেনো এই চন্দ্রার ঘুম ভাঙ্গালো? আর বিশু কী করেই বা চন্দ্রার কথা জানতে পারলো। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম এই বিশু আবার কে? নমানি ওঝা বললো বিশু হলো একজন বিখ্যাত হিন্দু তান্ত্রিক। নমানি ওঝা আমাকে আশ্বাস দিয়ে বললো তোমরা ভয় পেও না। আমি বিশুর আস্তানায় চিনি। তোমরা আমার সাথে চলো। একমাত্র বিশুই বলতে পারবে কী করে এই চন্দ্রা আর তার মেয়ের হাত থেকে বাঁচা যাবে কী করে তাদের ধংস্ব করতে হবে। 

আমরা সবাই বিশুর আস্তানায় চলে গেলাম। আস্তানায় গিয়ে আমরা আরো বেশি অবাক হলাম। আস্তানায় গিয়ে বিশুর এক শিষ্যের কাছ থেকে জানতে পারলাম এক সপ্তাহ আগে কেউ একজন বিশুকে খুব ভয়ংকর ভাবে মেরে ফেলেছে। ওঝা বললো চন্দ্রার ঘুম ভাঙ্গানেোর পর পর ই চন্দ্রা ওকে মেরে ফেলেছে আমি নিশ্চিত। এবার আমি মাটিতে বসে পরলাম আর বললাম  আর কোন রাস্তা তাহলে নেই। ওঝা বললো ভেঙ্গে পরো না। এখানে খুজে দেখো চন্দ্রা আর তার মেয়েকে ধংস্বের উপায় ঠিকই আছে। আমরা খুজতে শুরু করলাম। আর হঠাৎ  আমার চোখের সামনে একটা বই পরলো আর বই এর নাম ইরাবতী। আমি নমানি ওঝাকে বললাম এই দেখুন এটা কীসের বই? 

নমানি ওঝা বইটা দেখে বললো এই তো পেয়ে গেছি। এই বইটাই তো খুজ ছিলাম। এটার কথা শুনেছি কিন্তু এটা যে সত্যি আছে তা আজ বিশ্বাস হলো। তার মানে ওই বড় তান্ত্রিক ভবিষ্যতের কথাও বলে গিয়েছে।  এই বইয়েই চন্দ্রার মেয়েকে ধংস্ব করার সব উপায় ই পেয়ে যাবো। তার পর আমরা সবাই নমানি ওঝার আস্তানায় চলে আসলাম।  আর আসতেই নমানি ওঝা বইটা পড়তে শুরু করলো। আর অনেক ক্ষন পরার পর ওঝা বললো পেয়ে গেছি চন্দ্রা আর তার মেয়েকে ধংস্ব করার উপায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম বলুন কী সেই উপায়? ওঝা বললো তোমার স্ত্রী নীলার পেটে আসবে এমন একজন মেয়ে যে হবে চন্দ্রার মেয়ে ইরাবতীর থেকেও শক্তি শালী। যে চন্দ্রা আর তার মেয়ে ইরাবতীর হাত থেকে তোমাকে আর তোমার পরিবারের সবাই কে বাঁচাবে।

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৬

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৪

চন্দ্রা হুট করে আমাদের সামনে আসার ফলে আমরা দুজনেই খুব  ভয় পেয়ে গেলাম। ভয়ের চুটে আমার গলা শুকিয়ে যেতে থাকলো। অন্ধকারে ঠিক ভাবে চন্দ্রার মুখটা দেখতে পাচ্ছিলাম না। খুব ভয় পেয়ে আছি। তবুও মনের ভিতরটা চন্দ্রাকে দেখার জন্য কেমন জানি করছে। মনে মনে ভাবলাম যে মেয়েটার সাথে এতো কিছু হয়েছে তাকে একবার দেখি। আমি চন্দ্রাকে দেখার জন্য  তার মুখে মোবাইল এর চর্টটা মারলাম।  টর্চ মারতেই আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম।  কী মায়াবী মুখ। তবে চন্দ্রার চোখ দুটো পুরো লাল টুকটুকে ছিলো। আর তার গলায় লম্বা একটা দড়ি পেঁচানো। 

আমি বেশ বুঝতে পারলাম এই দড়িটার সাহায্যেই চন্দ্রা আত্মাহত্যা করেছিলো। নমানি ওঝা বললো কী করছো? শিগ্রই টর্চ অফ করো নয়তো ও রেগে যাবে। চন্দ্রা ওর আসল মুখ কাউকে দেখায় না। ঠিক একটু পর ই চন্দ্রা ভয়ংকর ভাবে চিৎকার করতে থাকলো। আর আস্তে আস্তে সে নিস্তেজ হতে শুরু করলো। আমি বুঝতে পারছিলাম না কী এমন হলো হঠাৎ যে চন্দ্রা এমন করছে? নমানি ওঝা আমার কাঁধে হাত রেখে বললো এ যাত্রায় বোধ হয় বেঁচে  গেলাম।  নিশ্চয়ই বাইরে পূর্ণ সূর্য গ্রহন শুরু হয়েছে। যার জন্য আজকের দিনের জন্য চন্দ্রা তার শক্তি হারাচ্ছে।  নমানি ওঝা আমাকে বললো জুনায়েত তোমার স্ত্রী নীলাকে কাঁধে তুলে নাও। আর তারা তারি পালাতে হবে এখান থেকে  চন্দ্রা তার শক্তি ফিরে পাওয়ার আগেই। আমি নীলাকে আমার কাঁধে তুলে নিলাম।  আর গুহা থেকে আমরা বেরিয়ে এলাম। গুহা থেকে বেরিয়ে আসার আগে আমরা একটা মমি দেখতে পেলাম।  

নমানি ওঝা বললো এটা হলো চন্দ্রার দেহো। যে টাকে মমি করে রাখা হয়েছে প্রায় একশত বছর ধরে।  আমরা তারা তারি বাইরে বেরিয়ে এলাম। আর এসে দেখি সত্যি পূর্ণ সূর্য  গ্রহন চলছে। আস্ত সূর্য টাকে কেউ গ্রাস করছে। ওঝা সাহেব আমাকে বললো তোমরা আমার সাথে আমার আস্তানায় চলো। সেখানে গিয়ে আগে তোমার স্ত্রী নীলার ঘুম ভাঙ্গাতে হবে। আমি ওঝার পিছন পিছন তার আস্তানায় চলে আসলাম। আস্তানায় এসেই ওঝা বললো তোমার স্ত্রী কে মাটিতে শুয়িয়ে দাও। আমি আমার স্ত্রী নীলাকে মাটিতে শুয়িয়ে দিলাম। তার পর ওঝা কী যেন মন্ত্র পাঠ করছে। তার পর একটা মন্ত্রপূত লোহার চাকতি আমার স্ত্রীর কপালে চেপে ধরলো। আমি দেখতে পেলাম ওই লোহার চাকতি আমার স্ত্রীর শরীর থেকে কিছু ধোঁয়ার মতো শোষণ করছে। আমি নমানি ওঝাকে জিজ্ঞেস করলাম কী করছেন এসব? ওঝা বললো তোমার স্ত্রীকে ঘুম পারিয়ে রেখেছিলো চন্দ্রা। তার ভিতরের সমস্ত ঘুম বের করে নিতে হবে। একটু পর আমি খেয়াল করলাম আমার স্ত্রী নীলা একটু একটু করে চোখ খুলছে। তার মানে তার সমস্ত ঘুম কেটে গেছে। 

নীলা জেগেই জিজ্ঞেস করলো এ আমি কোথায়? আমি নীলাকে বললাম আপনি একটু শান্ত হউন। নীলাকে আমি সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম।  আর আমাদের সাথে কী কী ঘটেছে তার সব কিছু  ও বললাম তাকে। নীলা সব কিছুই বুঝতে পারলো আর বিশ্বাস ও করলো। নমানি ওঝা আমাকে বললো জুনায়েত আমাদের কপাল খুব ভালো যে আমরা চন্দ্রার আস্তানা থেকে বেঁচে ফিরেছি। কারন আমি বই এ পড়েছি মানুষ চন্দ্রার আস্তানায় ঢুকে নিজের ইচ্ছায় কিন্তু বের হয় চন্দ্রার ইচ্ছাতে। আমি নমানি ওঝাকে জিজ্ঞেস করলাম চন্দ্রা আমাদের পিছনে পরলো কেনো? নমানি ওঝা বললো আমার এতোদিনের সাধনা বলছে তুমি নিশ্চয়ই ওই রুদ্রের বংশধর। চন্দ্রাকে বন্দী করার পর  সে তার প্রতিশোধ নিতে পারেনি। আর এতোদিনে রুদ্র মারা গেছে। তাই চন্দ্রার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য রুদ্রের আগত বংশ ধরের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। আমি ওঝাকে বললাম যদি আমাদের থেকে চন্দ্রা প্রতিশোধ নিতেই চায় তাহলে আমাকে বাসর ঘরেই তো মেরে ফেলতে পারতো কিন্তু তা করলো না কেন? নমানি ওঝা বললো আমি নথিতে দেখেছি চন্দ্রা তার সন্তান কে এই পৃথিবীতে আনবে। আর তার সন্তান ই সব প্রতিশোধ নেবে। তাই তার সন্তান পৃথিবীতে ভূমিষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত তোমাকে বা তোমার পরিবারের  কাউকে কিছুই করবে না। তুমি দেখোনি চন্দ্রা তোমার পরিবারের কাউকে না মেরে বাইরের দুজন মানুষ কে মেরে তাদের রক্ত গ্রহন করেছে। 

নমানি ওঝা বললো একটা বিষয় আমার মাথায় ঢুকছে না। চন্দ্রার ঘুমটা ভাঙ্গালো কে? এবার আমার খুব ভয় হতে লাগলো। আমি নমানি ওঝাকে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা চন্দ্রার সন্তান যদি সত্যি পৃথিবীতে চলে আসে তাহলে কী হবে। ওঝা সাহেব বললো সেটা হবে  খুব ভয়ানক একটা বেপার। আমি আমার গুরুর থেকে জেনেছি চন্দ্রার সন্তান হবে চন্দ্রার থেকে আর দশ গুন ভয়ানক এবং শক্তিশালী। এবার আমি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললাম কোন উপায় কী নেই এই চন্দ্রা আর তার সন্তান এর হাত থেকে বাঁচার? ওঝা বললো হ্যা আছে। চন্দ্রার সন্তান কে এই পৃথিবীতে আসা থেকে আটকাতে হবে। তাকে নষ্ট করতে হবে। আমি বললাম কী ভাবে নষ্ট করবো বলুন?  আর আমরা কী ভাবেই বুঝবো চন্দ্রার সন্তান পৃথিবীতে কবে আসবে? নমানি ওঝা বললো প্রকৃতি আমাদের জানিয়ে দেবে। কারন সত্যি যদি চন্দ্রার সন্তান পৃথিবীতে আসে তাহলে সেটা হবে প্রকৃতি বিরোধী কাজ। 

তাই প্রকৃতি আমাদের জানিয়ে দেবে। আমি বললাম সব ই তো ঠিক আছে কিন্তু চন্দ্রার সন্তান কে কী করে পৃথিবীতে আসা থেকে আটকাবো। নমানি ওঝা বললো গুহার ভিতরে যে মমিটাকে তোমাকে দেখিয়ে ছিলাম সামনের আমাবস্যাতে সেটাকে ধংস্ব করতে হবে।  কারন ওই মমিকে জীবন্ত করেই চন্দ্রা তার সন্তান কে পৃথিবীতে আনবে।  আমি বললাম ঠিক আছে তাহলে তাই হবে। এই বলে আমি আর নীলা বাড়ি ফিরে এলাম। নীলাকে দেখে বাড়ির সবাই তো খুব খুশি। কারন নীলার পেট টা আর আগের মতো ফুলা নেই। কিন্তু আসল ঘটনা তো আমি আর নীলা ছাড়া কেউ ই জানে না। আমি বাবাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা বাবা আমরা কী কোন রাজ বংশের লোক। বাবা বললো হ্যা। আমি যতদূর শুনেছি আমাদের বংশের শেষ রাজা ছিলো নাকি রুদ্র নামের একজন লোক। তার দুই দিন পরের কথা। আজকে হলো আমাবস্যা।  আমি আর নীলা চলে গেলাম নমানি ওঝার আস্তানায়। গিয়েই দেখলাম ওঝা সব কিছু  গুছিয়ে রেখেছে। আমাকে বললো তুমি এখনি বেরিয়ে পরো নয়তো দেরি হয়ে যাবে। আমি নীলাকে বললাম চলো আমার সাথে।  ওঝা বললো নীলা না তোমাকে একাই যেতে হবে। নীলা এখনেই থাকুক।  আমি গুহার উদ্দেশ্য বেরুনোর আগে ওঝা আমাকে একটা তাবিজ দিয়ে বললো এটা সাথে রেখো তাহলে চন্দ্রার তোমার থেকে দুরে থাকবে। আমি গুহার জন্য বেরিয়ে পরলাম। 

সন্ধ্যার দিকে গুহার সামনে পৌঁছে গেলাম।  আমি সাহস করে গুহার ভিতরে ঢুকে পরলাম।  ঢুকেই ওই মমিটার কাছে চলে গেলাম সেটা নষ্ট করার জন্য। ঠিক তখনি সেখানে চন্দ্রা চলে আসলো। আর আমাকে ওখান থেকে ছুড়ে ফেলে দিলো। আমি পাথরের সাথে গিয়ে ধাক্কা খেলাম আর জ্ঞান হারালাম। অনেক টা সময় পার হয়ে গেলো।  আমি ফিরলাম না তাই কবিরাজ আর নীলা সিদ্ধান্ত নিলো আমাকে খুজার জন্য তারা গুহার উদ্দেশ্যে যাবে। যাওয়ার আগে নমানি ওঝা নীলাকেও একটা তাবিজ দিয়ে বললো এটা সাথে রাখো। নীলা আর ওঝা গুহায় আসার জন্য বেরিয়ে পরলো। তারা যখন জঙ্গলের ভিতরে আসলো তখন প্রকৃতি খারাপ হতে শুরু করলো। আকাশ অন্ধকারে ঢেকে গেলো। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাতে শুরু করলো। ওঝা নীলাকে বললো নীলা সর্বনাশ হয়ে গেছে। আমার মনে হয় জুনায়েত চন্দ্রার মমি নষ্ট করতে পারেনি। চন্দ্রার সন্তান বোধ হয় পৃথিবীতে এসে পরেছে। নীলা জিজ্ঞেস করলো আপনি কী করে বুঝলেন? ওঝা বললো প্রকৃতি আমাকে বলে দিচ্ছে। তারা তারি চলো নয়তো জুনায়েত এর বিপদ হতে পারে।  নীলা আর ওঝা গুহার কাছে এসে পরলো আর তারা ভিতরে ঢুকে ও পরলো। ভিতরে ঢুকেই তারা দেখলো  আমি জুনায়েত  মাটিতে পরে আছি। আর মমিটার পাশে একটা বাচ্চা মেয়ে বসে আছে। ওঝা খুব ভয় পেয়ে গেলো এই ভয়নক জায়গায় বাচ্চা এলো কোথা থেকে।  সে জিজ্ঞেস করলো এই মেয়ে কে তুমি? এখানে কী করছো? মেয়েটা এবার তাদের দিকে লাল চোখে তাকালো আর বড় বড় দাঁত বের করে চেচিয়ে বললো আমি চন্দ্রার মেয়ে ইরাবতী। 

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৫

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৩

চন্দ্রা আসছে।  যদি বাঁচতে চাও তাহলে তারা তারি এখান থেকে পালাও। এই বলেই নমানি ওঝা ওখান থেকে দৌড়ে পালাতে থাকলো। আমি কী করবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তার পর আর কিছু না ভেবেই আমি ও নমানি ওঝার পিছন পিছন দৌড়াতে লাগলাম। কিছুক্ষণ দৌড়ানোর পর নমানি ওঝা বড় রাস্তার ধারে এসে একটু থামলো। আমি তার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলাম কী হলো ওঝা সাহেব আপনি এই ভাবে দৌড়িয়ে ওখান থেকে পালিয়ে এলেন কেনো? ওঝা সাহেব তার চোখ গুলো বড় বড় করে বললো ওখানে থাকলে এতক্ষণে আমাদের মরতে হতো। 

আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম মরতে হতো মানে? ওঝা বললো ওখানে চন্দ্রা চলে এসেছে। আমি এবার রেগে জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু এই চন্দ্রা টা কে? কী ওর পরিচয়? আর আমার নীলার সাথে এই চন্দ্রার সম্পর্ক ই বা কী? নমানি ওঝা বললো এই প্রশ্নের উওর আছে আমার কাছে। তুমি আমার সাথে আমার আস্তানায় চলো। এই সব কিছুর ব্যাখা আমি তোমাকে দেবো। আমি নমানি ওঝার সাথে তার আস্তানায় চলে গেলাম। ওখানে যেতেই নমানি ওঝা আমাকে একটা পাটিতে বসতে দিলো। আর বললো তুমি একটু বসো আমি ভিতর থেকে আসতেছি। ওঝা সাহেব ভিতরে গেলো আর আসার সময় হাতে করে একটা পুরনো বই নিয়ে এলো। বইটা পুরনো হলেও তার উপরের কভার পেইজটা একদম চক চক করছে। ওঝা সাহেব বইটা আমার সামনে রাখলো আর তিনি ও পাটিতে বসে পরলো। 

আমি বেশ করে খেয়াল করলাম বইটার উপরে রক্ত দিয়ে ইয়া মোটা অক্ষরে লিখা চন্দ্রা। এই দৃশ্য দেখে আমার গা শিউরে উঠলো। এবার নামানি ওঝা কী যেন মন্ত্র পাঠ করতে শুরু করলো। তার পর আস্তে করে বইটা খুললো। আর আমাকে বললো  মন দিয়ে শুনো তাহলে চন্দ্রা কে? কী তার পরিচয়? প্রায় একশত বছর আগের কথা  ছোট্ট একটি রাজ্যে বাস করতো চন্দ্রা নামের একটি মেয়ে। তার সৎ মা জোর করে চন্দ্রার বিয়ে দেন একজন মাতালের সাথে। চন্দ্রার স্বামী মাতাল হয়ে চন্দ্রার উপর অনেক অত্যাচার করতো। তাই বাধ্য হয়ে চন্দ্রা তার স্বামীর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। কিন্তু নিজ বাড়িতে  জায়গা হয়নি চন্দ্রার। সৎ মা তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। তাই চন্দ্রা বাধ্য হয়ে গ্রামের একদম শেষের দিকে ছোট একটা কুটিরে বাস করা শুরু করলো । চন্দ্রা বুঝতে পারলো সে মা হতে চলেছে। চন্দ্রা ভেবেছিলো এই সন্তান জন্ম নেবার পর তাকে নিয়েই বাকি জীবন টুকু কাটিয়ে দেবে চন্দ্রা। আর তখন সেই রাজ্যের রাজা ছিলো রুদ্র নামের একজন লোক। সেই রুদ্র ছিলো একজন নির্যাতিত রাজা। যে প্রজাদের উপর অনেক অত্যাতার করতো। আর রাজ্যের সুন্দরী নারীদের তার রাজবাড়ীতে তুলে নিয়ে তাদের তার ভোগের বস্তু বানাতো। এক সময় রুদ্রের নজর পরলো সেই চন্দ্রার উপর। আর লোক পাঠিয়ে চন্দ্রাকে রুদ্র তার রাজপ্রাসাদে তুলে নিয়ে গেলো। চন্দ্রা রুদ্রের হাতে পায়ে ধরে বলেছিলো আমার এতো বড় সর্বনাশ করবেন না প্রভু। আমার পেট এ একটা বাচ্চা আছে। 

কিন্তু সেই পাষাণ রাজার হৃদয় বিন্দু মাত্র গলাতে পারে নি চন্দ্রা। হিংস্র পশুর মতো ঝাপিয়ে পরে চন্দ্রার উপর। কেড়ে নেয় চন্দ্রার সতিত্ব। দুঃখে কষ্টে ও নিজের প্রতি তিব্র ঘৃনায় চন্দ্রা আত্মাহত্যার পথ বেছে নেয়। গ্রামের জঙ্গলের সেই বড় গাছটাতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মাহত্যা করে চন্দ্রা। চন্দ্রার সাথে সাথে চন্দ্রার পেটে থাকা বাচ্চা টাও মারা যায় সে দিন। সেদিন এর পর থেকে চন্দ্রার অতৃপ্ত আত্যা সেই রাজ্যে ঘুরা ঘুরি শুরু করে। প্রথমে তার স্বামী আর পরে তার সৎ মাকে মেরে ফেলে চন্দ্রা। চন্দ্রা রুদ্র কে মারা চেষ্টা কয়েক বার চালিয়ে ছিলো। কিন্তু রুদ্র বেঁচে যায়। আর বুঝে যায় চন্দ্রা আত্মা হয়ে তাকে মেরে ফেলতে চাইছে। তাইতো রুদ্র বড় তান্ত্রিক এর সাহায্যে বিশেষ কৌশলে চন্দ্রাকে বন্দি করে ফেলে।  আর জঙ্গলের সেই পুরনো গুহায় চন্দ্রাকে বন্দি করে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়। আর এই সমস্ত ঘটনা বই এ লিপিবদ্ধ করে সেই তান্ত্রিক যে চন্দ্রাকে বন্দি করে ছিলো। তিনি  বইয়ের শেষ  পৃষ্ঠায় লিখে গেছেন চন্দ্রা একদিন ফিরবেই। কেউ একজন তো তার ঘুম ভাঙ্গাবেই। আর সেদিন চন্দ্রা কাউকে বাঁচতে দেবে না। সবাই কে মেরে সে তার প্রতিশোধ নেবে। ঘটনাটা শুনে আমার শরীরে কাটা দিয়ে উঠছে। যেমন ভয় করছে ঠিক তেমন ই চন্দ্রা মেয়েটির জন্য অনেক খারাপ ও লাগছে। 

আমি নমানি ওঝাকে জিজ্ঞেস করলাম যদি এই নীলা চন্দ্রা হয়  তাহলে আমার আসল স্ত্রী নীলা কোথায়? নমানি ওঝা বললো নিশ্চয়ই ওর সেই গুহার আস্তানায় তাকে আটকে রেখেছে। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়ে বললো তুমি কোন চিন্তা করো না কাল পূর্ন সূর্য গ্রহন। কাল সারা দিন সমস্ত আত্বরা তাদের শক্তি হারাবে এক দিনের জন্য। এই সুযোগ টা কাজে লাগিয়ে আমরা তোমার স্ত্রী নীলাকে ওখান থেকে উদ্ধার করবো। এখন তুমি বাড়ি যাও। আমি নমানি ওঝার কথা মতো বাড়ি চলে গেলাম।  বাড়ি গিয়ে দেখি সবাই আমার অপেক্ষায় বাইরে বসে আছে। আমাকে দেখেই মা জিজ্ঞেস করলো কোথায় ছিলি সারা দিন তুই? বউমা বাড়ি ফিরেছে। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম নীলা? মা বললো হ্যা নীলা বাড়ি ফিরেছে। সে নাকি ডাক্তার এর কাছে গিয়েছিলো কাউকে কিছু না বলে। যা তুই তোর রুমে যা। আমি রুমে এসে দেখি নীলা  মানে চন্দ্রা ঘুমিয়ে পরেছে।  আমি খেয়াল করলাম নীলা মানে চন্দ্রার পেট আগের থেকে আরো বেশি ফুলে গেছে  দেখে মনে হচ্ছে এখনি না জানি পেটটা ফেটে যায়। আমার মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আজ আবার পেট এতো বড় হলো কেনো? কাকে হত্যা করলে নতুন করে? যাক পরের দিন সকাল বেলা ঠিক একি ঘটনা ঘটলো। আমি ঘুম থেকে উঠেই দেখি নীলা রুমে নেই। আমি বুঝতে পারলাম সে  নীলা মানে চন্দ্রা আজকেও বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। আমি ঘুম থেকে উঠেই সরাসরি নমামি ওঝার কাছে এসে পরলাম। আর আসতেই তিনি আমাকে বললো কবিরাজ আর বেঁচে নেই যে তোমাকে আমার কাছে এনেছিলো। চন্দ্রা ওকে মেরে ফেলেছে।  আমার আর বুঝার বাকি রইলো না রাতে তার পেটটা এতো ফুলে ছিলো কেনো। নমানি ওঝা বললো তারা তারি চলো তোমার স্ত্রী কে উদ্ধার করতে হবে। 

আমরা দুজন জঙ্গলের সেই গুহার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম।  ঘন্টা দুই এক পর সেখানে পৌছে গেলাম। কী ভয়নক গুহার মুখ টা। পুরো মাকড়সার জাল দিয়ে ঘেড়া ছিলো। আমরা ভিতরে ঢুকলাম।  গুহার বাইরের অংশ টা আলোকিত থাকলেও ভিতরটা একটু অন্ধকার ছিলো। আমি মোবাইল এর চর্ট জ্বালিয়ে নিলাম।  আমরা একটু ভিতরে যেতেই দেখতে পেলাম একজন মেয়েকে পাথরের উপর শুয়িয়ে রাখা হয়েছে। আমি দৌড়ে কাছে গিয়ে দেখলাম এটা আসল নীলা। আমি ওঝাকে বললাম এই দেখুন এটাই হলো আমার আসল নীলা। ওঝা বললো ওকে নিয়ে তারা তারি এখান থেকে পালাতে হবে চলো। ঠিক তখনি আমরা গুহায় অন্য কারো উপস্থিতি টের পেলাম।  ওঝা বললো ভয় পেও না আমাদের পেছনে কেউ একজন আছে। আমরা পিছনে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কে ওখানে? ঠিক তখনি একটা অট্টহাসি দিয়ে কেউ বললো জানিস না কে আমি?  দেখবি আমি কে? হুট করে আত্মাটা আমাদের সামনে এসে পরলো আর চিচিয়ে বললো আমি চন্দ্রা আআআআ।

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৪

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ২

নীলার পেটের সেই লোমে আবৃত বাচ্চা টাকে দেখে আমার গলা শুকিয়ে একদম কাঠ হয়ে গেছে। আমি নড়াচড়া করতে পারছিলাম না।  আমি খেয়াল করলাম আমার মাথাটা ঘুরছে। আর মাথা থেকে ঘাম বিছানায় টপ টপ করে পরছে। তারপর আমি আর কিছু বলতে পারবো না। সকালে যখন চোখ খুললাম তখন আমি দেখতে পেলাম আমার চারপাশে সবাই ঘেরাও করে দাড়িয়ে আছে। মা আমাকে জিজ্ঞেস করলো কীরে তুই বিছানায় অজ্ঞান হয়ে পরে আছিস। বউ মা কোথায়? আমি ঘরের চারদিক টা একটু ভালো করে দেখলাম।  আর বললাম নীলা তো আমার সাথে রুমেই ছিলো। কিন্তু এখন কোথায় গেলো? 

আমি মাকে বললাম মা তোমরা সবাই বাড়িতে ভালো করে খুজে দেখো নীলা কোথায় গেলো? আমি একটু বাইরে থেকে আসছি। মা আমাকে বললো এই অসুস্থ শরীরে তুই আবার কোথায় যাবি? উত্তরে মাকে বললাম খুব দরকারী একটা কাজ আছে মা। এখনি আমাকে যেতে হবে। আমি তারা হুরো করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরলাম। আর বেরিয়েই ওই কবিরাজ এর বাড়ির দিকে যেতে লাগলাম। যে আমাকে বলেছিলো আমার স্ত্রী কোন সাধারণ মানুষ নয় সে হলো একটা ভয়ানক আত্মা। আমি কবিরাজ এর বাড়ি পৌঁছে গেলাম।  আমাকে দেখেই কবিরাজ বললো এতো সকাল বেলা তুমি? কোন বিপদ হলো নাতো?

 আমি বললাম কবিরাজ সাহেব খুব বড় বিপদ। আপনি যেমনটা বলেছেন ঠিক তেমন টাই হয়েছে। সত্যি আমার স্ত্রী মানুষ নয় সে হলো একটা আত্মা। তার একটা পা উল্টো ছিলো। কিন্তু কবিরাজ সাহেব আরো একটা ভয়ের কথা আপনাকে বলা হয়নি। কবিরাজ বললো কী কথা বলো? 

আমি বললাম আমি কাল রাতে নীলার পেটে একটা বাচ্চা কে দেখেছি যার পুরো শরীর লোমে আবৃত। অনেক টা শিম্পাঞ্জির মতো দেখতে। আমার এ কথা শুনে কবিরাজ মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো আর বললো এ কী ঘোর বিপদ আসতে চলেছে এই পৃথিবীতে। কবিরাজ এর কথা শুনে আমি খুব ঘাবড়ে গেলাম।  আর বললাম এখন আমি কী করবো আপনি বলে দিন। কবিরাজ বললো আমি কিছু করতে বা বলতে পারবো না। কিছু করতে পারলে একমাত্র আমার গুরু নমানি ওঝাই করতে পারবে। আমি বললাম তাহলে আর দেরি কেনো এখনি তার কাছে আমাকে নিয়ে চলুন। কবিরাজ আমাকে তার কাছে নিয়ে গেলো। আমাকে দেখেই তিনি জিজ্ঞেস করলো কী সমস্যা তোমার বৎস। আমি এবং কবিরাজ সাহেব নমানি ওঝাকে সব খুলে বললাম। আমাদের কথা শুনে তিনি খুব অবাক হলো। ওঝাকে আমি জিজ্ঞেস করলাম আমি একজন সাধারণ মানুষ হয়ে নীলার পেটের ওই ভয়নক বাচ্চাকে কী ভাবে দেখলাম? 

 ওঝা বললো তুমি নিশ্চয়ই চাঁদের আলোতে দেখেছো? আমি অবাক হয়ে বললাম আপনি কী করে জানলেন? ওঝা বললো চাঁদের আলো এই আত্মা রা তাদের শরীরে প্রবেশ করায় আর এই চাঁদের আলোয় তাদের মানুষ রূপে থাকতে সাহায্য করে। আলো গ্রহনের সময় এদের স্পষ্ট ভাবে দেখা যায়। তাই তুমি বাচ্চা টাকে দেখতে পেয়েছো। আমি বললাম সবই ঠিক আছে কিন্তু একদিনের মধ্যে একটা বাচ্চা এতো বড় হয় কী ভাবে? নমানি ওঝা বললো আমি এই সম্পর্কে বইয়ে পড়েছি। এই ধরনের আত্মারা সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য মানুষ এর সাহায্য নেয়। এ ক্ষেত্রে সে তোমাকে পুরুষ হিসাবে ব্যাবহার করেছে। আর শারীরিক সম্পর্কের কিছু সময়ের পরেই এরা মা হওয়ার ক্ষমতা লাভ করে। কিন্তু তাদের গর্ভের সেই সন্তান বড় করার জন্য তাদের চাই রক্ত। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম রক্ত মানে? নমানি ওঝা বললো সে যত বেশি মানুষ হত্যা করে তাদের রক্ত গ্রহন করবে ঠিক তত তারা তারি তার গর্ভের সন্তান  বড় হবে এবং পৃথিবীতে ভূমিষ্ট হবে।

 আমি বললাম কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউ তো মারা যায়নি আমার পরিবারে। তাহলে তার পেটের সন্তান এতো বড় হলো কী করে। ওঝা বললো হয়তো তোমাদের আড়ালে কিছু একটা হয়েছে যা তোমরা জানো না। আমি বললাম ওঝা সাহেব আমি এখন কী করবো? দয়া করে আপনি আমাকে সাহায্য করুন। ওঝা বললো আগে এই আত্মার আস্তানা অর্থাৎ ও কোথায় থাকে সেই জায়গা খুঁজে বের করতে হবে। চলো প্রথমে তোমার সাথে তোমার বাড়ি যাবো তার পর জঙ্গলের সেই বড় গাছটার নিচে যাবো যেখানে তোমাদের বিয়ের গাড়িটা নষ্ট হয়েছিলো। ওঝা সাহেব কে নিয়ে আমি বাড়ির দিকে রওনা দিলাম৷ আসার আগে ওঝা সাহেব  ছোট একটা বই সাথে করে নিয়ে এলো। বাড়িতে আসতেই সবার চিৎকার        

চেঁচামেচি শুনতে পেলাম।  আমি আর ওঝা সাহেব উঠনের মাঝখান বরাবর যেতে দেখতে পেলাম উঠনে আমাদের বাড়ির কাজের ছেলেটাকে শুয়িয়ে রাখা হয়েছে। মা বললো ও নাকি মারা গেছে। আমি খেয়াল করলাম কাজের ছেলেটার সম্পুর্ন শরীর সাদা হয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কেউ ওর শরীর থেকে পুরো রক্ত শুষে নিয়েছে। এবার নমানি ওঝা আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসেঁ বললো বলেছিলাম না তোমাকে?  ওঝা সাহেব আমাকে ডেকে বললো আর দেরি করা ঠিক হবে না। তারা তারি ওই জঙ্গলের বড় গাছটার কাছে আমাকে নিয়ে চলো। আমি বললাম ঠিক আছে চলুন আমার সাথে। নমানি ওঝাকে সাথে নিয়ে সেই জঙ্গলের ভিতরের গাছটার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম। আমরা ঘন্টাখানিক পর সেখানে পৌঁছে গেলাম। গাছটার কাছে পৌঁছাতেই নমানি ওঝা সরাসরি গাছের কাছে চলে গেলো। আর গাছের গায়ে কী যেন লেখা ছিলো সে গুলো পড়তে শুরু করলো? আর তার পর তার হাতে থাকা বই এর সাথে সে গুলো মেলাতে শুরু করলো। আর একটু পর সে হা করে  বললো চন্দ্রা আআআআ। 

আমি জিজ্ঞেস করলাম চন্দ্রা মানে?  সে চোখ বড় বড় করে বললো তুমি  যে নীলার কথা বলছো সে নীলা নয় সে হলো চন্দ্রা। যার কথা একশো বছর আগে এই বইয়ে উল্লেখ আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম কে এই চন্দ্রা? চন্দ্রা হলো.. যেই এই কথা নমানি ওঝা বলতে যাবে ঠিক তখনি চার পাশটা অন্ধকার হয়ে এলো আর জুড়ে বাতাস শুরু হলো। আর তখনি ওঝা চিৎকার দিয়ে বলতে থাকলো চন্দ্রা আসছে। যদি বাঁচতে চাও দৌড়ে পালাও এখান থেকে। 

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ৩

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ১

বিয়ের পরের দিন আমার স্ত্রীর পেট অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে গেলে চিকিৎসার জন্য একজন কবিরাজ ডাকা হলো। কবিরাজ আমাকে একটু আড়ালে ডেকে বললো তুমি একটা জ্বীনের সাথে বাসর করেছো। তোমার সাথে বাসর ঘরে যে ছিলো সে কোন মানুষ নয়। সে একটা আত্মা। এলাকার কবিরাজ  এর মুখে এমন কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম। জবাবে আমি বললাম কী বলছেন এসব আপনি? আপনার কী মাথা খারাপ হয়েছে? কবিরাজ বললো আমি যা বলছি তা একদম সত্যি। মূল ঘটনায়  আসা যাক।

কালকেই আমি বিয়ে করেছি। আমি যে মেয়েটাকে বিয়ে করেছি তার নাম নীলা। সমস্যাটা হলো বিয়ের পরের দিন আমার স্ত্রী এর পেট অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে যায়। দেখে মনে হচ্ছে সে মা হতে চলেছে। কিন্তু এটা কী করে সম্ভব? বিয়ের এক দিন পর একটা মেয়ে মা হয় কী করে?  মা বললো এলাকার কবিরাজ  কে ডেকে জার ফুক দিলে পেট ফুলা কমে যাবে। তাই আমি এলাকার একজন কবি-রাজ কে ডেকে আনলাম। কবিরাজ  এসে আমার স্ত্রী এর পায়ের দিকে তাকিয়েই আমাকে একটু আড়ালে ডাকে। 

আর তার পর কী বললো সেটা তো আপনারা নিজেরাই শুনলেন। আমি কবিরাজ কে বললাম  আপনি যা বলছেন তার প্রমান দিতে পারবেন তো? কবিরাজ  আমাকে বললো প্রমান আমাকে দিতে হবে না প্রমান তুমি নিজেই পেয়ে যাবে। আমি বললাম কী করে? সে বললো তুমি তোমার স্ত্রীর কাছে তার পা দেখতে চাইবে। যদি সে সাধারণ কোন মানুষ হয় তাহলে সহজেই সে তার পা তোমাকে দেখাবে। আর যদি না দেখায় তাহলে বুঝবে সে কোন সাধারণ মানুষ নয় সে হলো একটা ভয়ানক আত্মা।

কারন আত্মাদের পা উল্টো থাকে। আমি কবিরাজ  কে জিজ্ঞেস করলাম তার পেট ফুলে যাওয়ার কারন কী? উত্তরে সে বললো সে সত্যি মা হতে চলেছে। আমি অবাক হয়ে বললাম কিন্তু এটা কী করে সম্ভব? বিয়ের এক দিনের মধ্যে মা কী ভাবে হওয়া যায়? সে  বললো এটার ব্যাখা আমার জানা নেই। আমি কবিরাজ কে আরো জিজ্ঞেস করলাম  আচ্ছা আমি কী বিয়ে করেছি একটা আত্মা কে? কবিরাজ  বললো না তুমি বিয়ে করেছো একটা মানুষ কেই। কিন্তু ওই আত্মা টা তোমার বিবাহিত স্ত্রী কে সরিয়ে তার জায়গাটা দখল করে আছে। কবিরাজ  আমাকে জিজ্ঞেস করলো বিয়ের দিন রাস্তায় কোথাও বিয়ের  গাড়ি থামিয়ে ছিলাম কী না? আমি তাকে বললাম  জঙ্গলের ভিতরে বড় গাছটার নিচে এসে গাড়িটা নষ্ট হয়ে যায়।

তাই গাড়িটা সেখানে থামানো হয়েছিলো। আর আমি ও ড্রাইভার কে গাড়ি ঠিক করতে সাহায্য করেছিলাম। কবিরাজ আমাকে জানালো সেখানেই এই আত্বাটা তোমার স্ত্রী কে সরিয়ে তার জায়গা টা দখল করেছে। নিশ্চয়ই ওর কোন সুপ্ত কামনা বা বাসনা আছে। কবিরাজ এর কথা গুলো আমি কোন ভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তাই ভাবলাম নিজেই পরিক্ষা করবো আজ। আমি নীলার জন্য যে নুপুর জোড়া কিনে ছিলাম সে গুলো হাতে নিয়ে রাতে রুমে প্রবেশ করলাম। নীলা আমাকে দেখে একটু অবাক হলো। 

আমি বললাম আপনার  পা দুটো বের করেন তো?  আমার কথা শুনে নীলা যেন আকাশ থেকে পরলো আর বললো পা কেনো? আমি বললাম আপনার জন্য নুপুর এনেছি আপনাকে নিজ হাতে পরিয়ে দেবো। নীলা আমতা আমতা করে বললো না না এখন পরাতে হবে না। আপনি টেবিলের উপর রেখে দিন আমি সকালে পরে নেবো। নীলার কথা শুনে এবার আমার সন্দেহ আরো গভির হলো। আমি মনে মনে বললাম এখন পা না দেখালেও  রাতে যখন তুমি ঘুমিয়ে পরবে তখন আমি লুকিয়ে হলেও তোমার পা দেখবোই। আমাকে দেখতেই হবে ওই কবিরাজ যা বললো তা সত্যি কী না? আমি আর নীলা ঘরের লাইট অফ করে শুয়ে পরলাম। ঠিক মধ্যরাতে আমি খেয়াল করলাম নীলা ঘুমিয়ে পরেছে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এবার নীলার পা টা দেখবো কবিরাজ যা বলেছে তা সত্যি কী না? কিন্তু সম্পুর্ন ঘর অন্ধকার ছিলো। যদি লাইট জ্বলাই তাহলে নীলার ঘুম ভেঙে যাবে। বাইরে স্পষ্ট চাঁদের আলো ছিলো। 

আমি জানালাটা হালকা খুলে দিলাম। জানালা খুলার সাথে সাথেই এক টুকরো  আলো এসে নীলার শরীরে পরলো। আর নীলার সম্পূর্ণ শরীর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এবার আমি নীলার পায়ের দিকে তাকাতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেলো। সত্যি নীলার একটা পা উল্টো ছিলো। এমন অবস্থা দেখে আমার গলা শুকিয়ে যেতে থাকলো। পা দেখার পর পর ই আমার চোখ পরলো নীলার পেটের দিকে। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি নীলার পেটের ভিতরে একটা বাচ্চা। কিন্তু এ বাচ্চা সাধারণ কোন বাচ্চা নয়। এই বাচ্চার শরীর পুরো লোমে আবৃত। অনেকটা শিম্পাঞ্জির মতো দেখতে...

লোম হর্ষক ভূতের গল্প চন্দ্রা পর্ব ২

ভূতুড়ে আম গাছ

ঘটনাটি ঘটে আমার এক মামাতো বোনের সাথে । ঘটনাটি ২০০৭ সালের। আমার মামাতো বোনের নাম জাহানারা। বয়স ১৪ বছর। তখন ছিল গ্রীষ্মকাল। ঘটনা টি গ্রীষ্মকালের অন্যতম ফল আম কুড়ানোকে কেন্দ্র করে। আমাদের এখানে অনেক আম বাগান আছে। অনেক ছেলেমেয়ে প্রতিদিন দল বেঁধে খুব ভোরে আম কুড়াতো।তার ও আম কুড়ানোর প্রবল নেশা ছিল। 


তো সেইদিন রাত্রে জাহানারা তার ছোট বোনকে বললো আজ আমরা দুইজন সবার আগে খুব ভোরে আম কুড়াতে যাব। আমি যদি টের না পাই,তুই টের পেলে আমাকে ডাক দিস। তো রাত ৪ টার দিক তার ছোট বোন তাকে ডেকে বললো রাত তো প্রায় শেষের দিকে আম কুড়াতে যাবে না? তারা আর দেরি না করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। আম বাগানটি ছিল বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে ও বাগানটী ছিল অনেক বড় ও পুরনো। বাগানের একটা গাছ ছিল অনেক পুড়নো আর সেই গাছের আম গুলো অনেক ছোটছোট ছিল। কিন্তু সেই গাছের আম ই সবচেয়ে বেশি পড়তো। আম কুড়াতে কুড়াতে সেই বড় গাছের নিচে গিয়ে জাহানারা খুবই অবাক হয়ে গেল কেননা গাছের নিচে কেবল একটা আম ই পড়ে আছে তবে আমটি এ গাছের আমের তুলনায় অনেক বড়। তবুও সেটাকে পাত্তা না দিয়ে আমটি ধরতে গেল কিন্তু এরপর সে যা দেখলো তা অন্য কেউ দেখতে চাইবে না। 

সে যখন আমটি ধরতে গেল অমনি আমটি কিছুটা দুরে সরে গেল। এটা দেখে সে ভয় পেল কিন্তু ভাবলো হয়তোবা সে ভুল দেখেছে। আবার সে আমটি ধরতে গেল কিন্তূ এবারও ঐ একই ঘটনা। এবার ভয় তার মনে জেঁকে বসলো..কি হচ্ছে এসব। আবার যখন সে আমটি ধরতে গেল তখনি আমটি এমন একটা ভয়ঙ্কর আকরিতি ধারণ করলো যা দেখা মাত্র সে বেঁহুশ হয়ে গেল। ঘটনাটি এখানে শেষ হলেই ভাল হতো কিন্তু এরপর যা ঘটলো যা এক কথায় অবিশ্বাস্য। যখন আযানের সুর শুনে তার হুঁশ ফিরলো তখন সে গাছটির নিচে পড়ে আছে। আশেপাশে কেউ নেই এমনকি তার ছোট বোনকে খুঁজে না পেয়ে আরো ভীত হয়ে পড়লো এবং খুব দ্রুত পরিমরি করে বাড়ি ফিরে এসে দেখে তার বোন এখনো ঘুমুচ্ছে। সে তার বোনকে ডেকে তুললো আর বললো, কেন তাকে একা ফেলে চলে এসেছে সে? 

কিন্তু তার বোন কিছুই বুঝলো না। উপরন্তু জাহানারার হাতে আমের ব্যাগ দেখে সে বললো,আপু,তুমি একাই আম কুড়াতে গেলে,আমাকে ডাকও দিলে না। একথা শুনার পর আবারো সে বেঁশুস হয়ে পরে। সকাল থেকেই প্রচন্ড জ্বর আসে। এর কিছুদিন পরই সে মারা যায় কোনো কারণ ছাড়াই। ঘটনাটি আমি নিজে জাহানারার কাছ থেকে শুনেছি। 

কাতার প্রবাসী ভুত

আমি বর্তমানে কাতারে থাকি,  আমি কয়েক দিন যাবত ছাঁদে রাত দুইটা, তিনটা পর্যন্ত বসে মোবাইলে ভিডিও বা নিউসফিড দেখতাম, হঠাৎ একদিন আমি ছাঁদে থাকা অবস্থায় একটা আগুনের দলা দেখতে পাই,তার কিছু সময় পর আমি গোলাপ ফুলের ঘ্রান পাই, আসে পাসে তাকিয়ে দেখি কোথাও কোন গোলাপ বা অন্য কোন গাছ নাই,ঘ্রানটা ছিলো খুব তিব্র, ঘ্রানটা পাওয়ার কিছু সময় পর আমি অনুভব করতে পারলাম আমার শরীর টা আগুনের মতো গরম হয়ে যাচ্ছে, প্রচুর পরিমান ঘামতে ছিলাম বিষয় টা আমি ততোটা গুরুত্ব দি নাই! ভেবেছিলাম হয়তো গরম বেশি তাই  এমন হচ্ছে, পরে আসতে আসতে আমার মাথায় প্রচুর পরিমাণ যন্ত্রণা শুরু হলো চোখে ঝাপসা দেখা শুরু করলাম। 


তারপর অনেক কষ্ট করে রুমে এসে সুয়ে পরলাম,ঘুমানোর কিছু সময় পর আমি একটা বয়স্ক লোকের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম, ভেবে ছিলাম হয়তো ক্যাম্পর কারো সমস্যা হইছে তাই কান্না করতেছে, পরে মনে হলো একটু দেখি কার কি সমস্যা হইছে, দেখার জন্য মোবাইল হাতে নিয়ে রুম থেকে বের হলাম কিন্তু কাউকে দেখতে পেলাম না,কান্নার শব্দ ও কোমে গেলো, রুমে চলে আসলাম, রুমের আসার পর যখন ঘুমাতে গেলাম তখন আমার কানার শব্দ শুনতে পেলাম, সাহস করে আবার বের হলাম তখন মনে হচ্ছিলো ছাঁদে যাওয়ার শিরি থেকে কান্নার শব্দ আসতেছে, তারপর আমি শিরি দিয়ে ছাঁদ পর্যন্ত গেলাম কিন্তু কেউকে দেখতে পেলাম না, ভেবেছিলাম হয়তো মনের ভুল, চলে আসলাম রুমে, তারপর থেকে দুই-তিন দিন পরপর আমি কান্নার শব্দ শুনতে পেতাম, ভেবে ছিলাম ক্যাম্পে কোন সমস্যা আছে, আমি ক্যাম্প চেঞ্জ করে অন্য ক্যাম্পে চলে আসি, কিন্তু এখানে ও আমি কান্নার শব্দ শুনতে পাই।

রাতে ঘুমাতে পারি না, যদিও কোন ভাবে ঘুমিয়ে পরি তখন আমি সপ্নে দেখতে পাই আমি কোন কবরস্থান, গহীন কোন বাগানে, মর্গে বা শ্মশানে একা-একা আছি হয়তো হাঁটতেছি অথবা বসে আছি, কেউ আমারে পিছন থেকে ধরার জন্য আমার দিকে দৌড়ে আসছে.

আমি ঘুমাতে পারতেছি না এক যায়গা বেশি সময় থাকতে পারি না সব সময় অস্থির লাগে আমার,  আমি কোন ভাবে স্বাভাবিক হতে পারতেছি না.

সবসময়ই মাথার ভিতর এটা ঘুরতেছে..…

এমন অবস্থায় আমি কি করতে পারি? কি করলে এ সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারি?

আমার গাড়িটা চলছে লাশবাহী গাড়ির ঠিকানায় বাস্তব ভুতের গল্প

২০১৯ সালের জুলাই মাসের একটি মাঝ রাত। হঠাৎ আমার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল। ঘুম ঘুম চোখে কলটা রিসিভ করে ঘড়িতে দেখলাম রাত দেড়টা বাজে। ইউজ্যুয়ালি আমি ঘুমানোর আগে আমার মোবাইল ফোনটা বন্ধ রাখি। কিন্তু এই সপ্তাহের পুরোটাই ফোনটা অন রাখতে হয়েছে। কেননা হাসিন গস গেছেন দুবাইতে আমাদের মসজিদের ইয়ুথ সেন্টারের ফান্ডরেইজ করার জন্য। যাবার কালে তিনি আমাকে রিকুয়েস্ট করেছেন আমি যেনো ফোনটি রাতে বন্ধ না রাখি। 

আমরা যেহেতু এক সাথে কমিউনিটি ওয়ার্ক করি সেহেতু তাঁর অনুপস্থিতিতে হয়তো আমাকে কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে। সময়ের পার্থক্যের কারণে তিনি যখন আমাকে কল করেছেন তখন অস্ট্রেলিয়াতে মধ্য রাত। 

এখনই আমাকে একটি ডেডবডি কালেক্ট করতে যেতে হবে। সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না, কেননা এই মৃতদেহটি যেখান থেকে কালেক্ট করতে হবে সেটি একটি এইজড কেয়ার সেন্টার। ওদের ওখানে মৃতদেহ রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। সকাল হলে অন্য একটি ফিউনারেল সার্ভিস কোম্পানী মৃতদেহটি নিয়ে যাবে। আর যদি ওরা মৃতদেহটি নিয়ে যায় তাহলে তাঁরা মৃতদেহটি ক্রিমেইট করবে, অর্থাৎ পুড়িয়ে ফেলবে। 

পশ্চিমা দেশগুলোতে কতটা ভয়ানক ঘটনা ঘটতে পারে তেমনই একটি অভিজ্ঞতার গল্প আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

কীভাবে কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। এর আগে এমন কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার কখনোই হয়নি। তারউপর এতো রাতে আমাকে একা এই কাজটি করতে হবে। ভীষণ নার্ভাস লাগছে, কিন্তু কাজটি আমাকে করতেই হবে। দ্বিতীয় কোনো অপশন নেই। 

হাসিন গস আমাকে মোটিভেইট করার চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত। তিনিও জানেন আমার একার পক্ষে এই কাজটি করা মোটেই সহজ নয়। তাই বারবার আমাকে কল করে মোটিভেইট করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন আমি যেনো কাজটি যথাযথভাবে করতে পারি। 

শীতের রাত। বাড়ি থেকে বের হলাম। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়েছে বেশ দিন। বাইরে বেরোতেই মনে হলো ঠাণ্ডাতে জমে যাচ্ছি। গাড়ির হিটারটা আমার ঠাণ্ডা দমাতে পারছে না। হাত পা থরথর করে কাপছে। এমনিতে আমি খুব সাহসী একজন মানুষ। তবে আজ রাতে ভীষণ নার্ভাসে হয়তো ঠাণ্ডা একটু বেশি লাগছে। 

লাশ আনতে হলে লাশের গাড়ি নিতে হবে। আমার গাড়িটা চলছে লাশবাহী গাড়ির ঠিকানায়। শীতের রাতে চারিদিকে সুনশান নিরবতা। ধীরে ধীরে গিয়ে লাশবাহী গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি থেকে কর্পূর জাতীয় পদার্থের তীব্র গন্ধ নাকে লাগছে। 

গাড়ি স্টার্ট দিচ্ছি, কিন্তু গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না। কনকনে ঠাণ্ডায় হয়তো বেটারি ফ্ল্যাট হয়ে আছে। কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। এতো রাতে হেল্প করার মতো আশেপাশে কেউ নেই। গাড়ির টুলবক্সে জাম্পার ক্যাবল খুঁজে পেলাম। আমার গাড়ির সাথে জাম্পার ক্যাবল কানেক্ট করে কয়েকবার চেষ্টার পর গাড়িটি স্টার্ট নিলো। 

একেবারে শূন্য রাস্তা। আমি আর লাইট পোস্ট ছাড়া তেমন কাউকে চোখে পড়ছে না। লাইট পোস্টগুলোর নিচে কুয়াশার চাদর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। চলছে আমার গাড়ি। নিদৃষ্ট ঠিকানায় পৌঁছুতে ত্রিশ চল্লিশ মিনিটের মতো সময় লাগলো। ঠিকানাতে পৌঁছে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ না করে গেইটের দিকে এগিয়ে গেলাম। ডোর বেল প্রেস করতেই একজন ভদ্রলোক এগিয়ে এসে ডোরটি খুললেন, এবং জিজ্ঞেস করলেন আমি ডেডবডিটি নিতে এসেছি কিনা। নিজেকে মৃতব্যক্তির ছেলে পরিচয় দিয়ে আমাকে ভিতরে যেতে বললেন। 

আমি স্ট্রেচারটি গাড়ি থেকে না নামিয়েই ভিতরে প্রবেশ করলাম। যে রুমে ডেডবডিটি রয়েছে সেই রুমের সামনে যেতেই দুজন মহিলার একজন সামনে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি ডেডবডিটি নিতে এসেছেন? আমি বললাম, হ্যা। তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা আমাকে ডেথ সার্টিফিকেট আর ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটি বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, এগুলো রাখুন, আপনার জন্য তৈরি করে রাখা হয়েছে। 

আমি গাড়ি থেকে স্ট্রেচার নামিয়ে নিয়ে আসলাম। রুমে ঢুকতেই ভদ্রলোক পিতার মৃতদেহটি স্ট্রেচারে উঠাতে সাহায্য করলেন। ডেডবডিটি একটি বিশেষ প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়ানো। মনে হলো ডেডবডি বহন করার জন্যই এই ব্যাগগুলো তৈরি করা হয়েছে।  

তিন চারজন মিলে ব্যাগের ভিতর মোড়ানো ডেডবডিটি স্ট্রেচারে উঠালাম। স্ট্রেচারের বেল্টগুলো ধীরে ধীরে লাগাচ্ছি। বেল্টগুলো লাগাতে গিয়ে অদ্ভুত এক অনুভূতি হলো আমার। মনে হলো আমি নিজেই যেনো নিজের ডেডবডিটি স্ট্রেচারে স্ট্রেপ করছি। মনে হলো অনেক দিনের অভিজ্ঞ একজন মানুষ আমি। অতি সাবধানে এমনভাবে বেল্টগুলো লাগালাম যেনো ডেডবডিতে সামান্যতম ব্যথা না লাগে। 

আমার সাথে সাথে ভদ্রলোক গাড়ি পর্যন্ত এলেন, বললেন, হাসিন গসের সাথে আমি বিস্তারিত কথা বলেছি। সকাল ১০টার দিকে যাবতীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর দিতে আসবো। আমি ডেডবডিটি গাড়িতে উঠালাম। নিশ্চিত হলাম স্ট্রেচারটি সঠিকভাবে লক করা হয়েছি কিনা। সবকিছু ঠিকঠাক। 

ফিরে আসছি আমি। এবার গাড়িটি চলছে মসজিদের দিকে। নিজের কাছে মনে হচ্ছে আমি নিজেই নিজের লাশটি বহন করে চলেছি। অজানা এক অন্যরকম অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে আমার মনে। কিছুটা ভয়, কিছু অজানা ভাবনায় চালাচ্ছি লাশের গাড়ি। ভাবতে ভাবতে কখন যে মসজিদের সামনে এসে গেছি বুঝতেই পারিনি। সকাল, তখন চারটা বাজে।

ডেডবডিটি মসজিদের ওয়াশ রুমে অপেক্ষা করছে। ফজর সালাত এখনো দুই ঘন্টা বাকি। আমি বাড়ি এসে ফ্রেশ হলাম। ফজরের পর এসে দেখলাম দুজন ভলান্টিয়ার এসেছেন ডেডবডি ওয়াশ করার জন্য। তাঁরা জানেন ওয়াশের পর কোথায় লাশ রাখতে হবে। আমি বাড়ি এসে একটু ঘুমিয়ে নিলাম। 

সকাল ১০টার দিকে কল পেলাম। ভদ্রলোক অপেক্ষা করছেন। আমি তৈরি হয়ে দশ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সকল পেপার ওয়ার্কস করার জন্য। 

অফিসের দরজায় বেশ কয়েকজনের ভিড়। সামনের দিকে এগুতেই ভদ্রলোক পরিচয় করিয়ে দিলেন তাঁর দুই বোনের সাথে। আমি আশ্চার্য হলাম। মুসলিম নারীরা কীভাবে প্রাশ্চাত্যের নারীদের ন্যায় এভাবে পর্দাহীন চলতে পারে। আমি সালাম দিলাম, কিন্তু তাঁরা কেউ উত্তর দিলেন বলে মনে হলো না। মনের ভিতর একটু খটকা লাগলো। 

অফিসে গিয়ে বসতেই সবাই আসলেন। ছেলেই প্রথম বললেন যে তাঁদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়ে গেছে। একান্তে আমার সাথে আলোচনা করতে চান। আমি সবাইকে অফিস কক্ষে বসিয়ে দরজা লক করে দিলাম। 

সবার কথা শুনে বুঝলাম, বিশাল এক পারিবারিক ডিসপিউট। মেয়েরা ধর্ম মানেন না। তাঁরা তাঁদের জন্মদাতাকে ক্রিমেইট করতে চান, অর্থাৎ পুড়িয়ে ফেলতে চান। আর ছেলে চান তাঁর বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে। ছেলে নিজেও ধর্ম মানেন না, তবে বাবার শেষ দিনগুলোতে কাছে ছিলেন বলে বাবার ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানাতে চান। কিন্তু মেয়েরা চান মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলতে, খরচ যতই হোক, এটাই নাকি সবচেয়ে সহজ উপায়। 

বুঝলাম, আমার পক্ষে এই কেইস হ্যান্ডল করা সম্ভব নয়। আমি দুই পক্ষকেই বললাম নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাঁদের বাবার ইচ্ছাটি পূরণ করতে। তাঁরা ঐক্যমতে পৌঁছুতে পারলেন না। দুই বোনের মধ্যে একজন রাজি হলেও অন্যজন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না যে তাঁর বাবা একজন মুসলিম ছিলেন, এবং মুসলিম রীতিতে লাশের ব্যবস্থা হবে। 

তাঁরা চলে গেলেন। আমি বিষয়টি মুসলিম কমিউনিটির সদস্যদেরকে জানালাম। তাঁরাও বিস্মিত হলেন, এবং যার যার অবস্থান থেকে আপ্রান চেষ্টা করতে লাগলেন। 

দুইদিন পর হাসিন গস ফিরে এলেন। তিনি সবই জানেন। নতুন করে আমার বলার কিছু ছিল না। তিনি সহ কমিউনিটির সিনিয়ররা পরিবারের সাথে কথা চালিয়ে যেতে লাগলেন। কিন্তু কোনোভাবেই সমাধান হচ্ছে না। এদিকে বাবার লাশ মসজিদের হীমঘরে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। 

প্রতিনিয়ত আলোচনা শেষে প্রায় দশ দিন পর সমাধান হলো। পরিবারের সবাই একমত হলেন। তাঁদের বাবাকে ক্রিমেইট করা হবে না। ইসলামিকভাবে জানাজা দিয়ে কবরস্ত করা হলো।

আমরা যারা প্রাশ্চাত্যে বসবাস করি তাঁদের জন্য এটি একটি কঠিন বার্তা। 

আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে, নিজে ইসলাম পালন করুন, এবং নিজের সন্তানদের সঠিকভাবে ইসলাম শিক্ষা দিন। তাঁদেরকে দ্বীন পালনে উৎসাহীত করুন। এই পৃথিবীতে আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি তা তাঁদেরকে শিক্ষা দিন। তা না হলে তাঁরাও একদিন ঐ সমস্ত হাজারো পরিবারের মতো প্রাশ্চাত্যের হাওয়ায় হারিয়ে যাবে। আর যদি তাঁরা হারিয়ে যায় তাহলে আমাদেরকে তাঁদের এই পরিনতির ভাগিদার হতে হবে।

শাহীন ফিরে এসেছে

আত্মহত্যা করে মারা যাওয়া শাহীন কে কবর দিয়ে আসার এক ঘন্টা পরেই মসজিদের মোয়াজ্জেম সাহেব দেখেন মসজিদের পাশে একটু ধুরে বড় কড়ই গাছের একটি ডালে সাদা কাফন পরিহিত একটি অবয়ব বসে আছে।মোয়াজ্জেম সাহেব ছিলেন খুবই সাহসী লোক।তিনি বিষয়টি ক্লিয়ার করার জন্য আর একটু কাছে যেয়ে দেখেন এটা সেই শাহীন যাকে সে কিছুক্ষণ আগেই দাফন করে এসেছে। 

মোয়াজ্জেম সাহেব এই দৃশ্য দেখে তিনি বুঝে গেলেন এটা শাহীন নয়।শাহীন এর রুপ ধরে এসে দুষ্ট জ্বিন।তিনি তখন সেই শাহীন রুপী জ্বিন কে বললেন শাহীন তোর জায়গা তো এখানে নয়?

তুই এখানে কি করিস?তোর  জায়গা যেখানে তুই সেখানে যা।শাহীন করুন কণ্ঠে উত্তর দিলো আমার সেখানে খুব কষ্ট হচ্ছে মোয়াজ্জেম সাহেব।আমি ওখানে যাবো না।আমি এখানেই থাকবো।তখন মোয়াজ্জেম সাহেব রাগী কন্ঠে বললেন তুই কি এখান থেকে যাবি নাকি আমি ব্যাবস্থা নিবো?

হুজুরর মুখে এই কথা শুনে শাহীন রুপী সেই দুষ্ট জ্বিন পাখিরা যেভাবে উড়াল দেয় ঠিক সেই ভাবে উড়াল দিয়ে গ্রামের দিকে চলে যায়।হুজুর তো ভয় পেয়ে যান।হুজুর বুঝতে পারেন এই দুষ্ট জ্বিনের অত্বাচার শুরু হবে এখন এই গ্রামে। 

ঘটনার শুরুতে যাওয়া যাক। শাহিন নামে যে ছেলেটির কথা বললাম সে ছিল সেই গ্রামের সবচেয়ে সুন্দর  একটি যুবক। বয়স বেশি নয় ১৮ কিংবা ১৯ হবে। হঠাৎ করেই হঠাৎ করেই সে তার বাবা-মার কাছে বায়না ধরে সে বিয়ে করবে। তার বাবা মা এ কথা শুনে অবাক এত অল্প বয়সে ছেলে বিয়ে করার জন্য পাগল হলো কেন?

 শাহীন একেবারে পুরো বাড়ি মাঁথায় তুলে নিয়েছে তাকে বিয়ে দিতেই হবে। শাহীনের বাবা-মা তো কোন ভাবেই রাজি হচ্ছে না। কারণ এত অল্প বয়সে কোনো বাবা মাই তার ছেলেকে বিয়ে দিতে চাইবে না। শাহীনের বাবা মা যখন রাজী হচ্ছিলো না তখন শাহীন তার বড় বোনের বাসায় যেয়ে তার দুলাভাই এবং বোন কে রাজী করালো।

যাইহোক তার দুলাভাই এবং বোন তাদের বাড়িতে আসলো।এসে শাহীনের বাবা মা কে বুঝানোর ফলে তারা শাহীন কে বিয়ে দিতে রাজী হয়।সেদিনই তারা পাশের গ্রামের একটি মেয়ে দেখতে যায় শাহীনের জন্য।শাহীন সেই মেয়েকে দেখে খুবই পছন্দ করে ফেলে। এবং সে বায়না ধরে তাকে আজকের ভিতরেই বিয়ে দিতে হবে।

 তার বাবা মতো কোনোভাবেই এটা মেনে নিতে পারছে না। তখন শাহীন কি করল বাড়িতে এসে অনেক চিল্লাফাল্লা কান্নাকাটি শুরু করলো। একপর্যায়ে শাহীন তার ঘরে থাকা ইদুর মারার ঔষধ নিয়ে তোর বাড়ির বাহিরে চলে যায়। তখন তার বাড়ির লোকেরা ভেবেছিলো হয়তো এমনি কোনো কাজে যাচ্ছে।কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর গ্রামের এক মহিলা আবার শাহীন কে দেখে ফেলে।তখন সেই মহিলা শাহীন কে বলে কিরে শাহীন তুই এখানে কি করিস?

শাহীন কোনো উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।তখন সেই মহিলার খানিকটা শাহিনের উপর সন্দেহ হয়। শাহীন যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলে সেই মহিলা ঠিক সেই বরাবর যায়।আর সেখানে যেয়ে তিনি ইদুর মারার বিষের গন্ধ পান। তার আর বুঝতে বাকি রইল না শাহীন বিষ খেয়েছে। 

তাই সে দৌড়ে শাহীনদের বাড়িতে ছুটে গেল। ঘটনাটি শাহিনের বাবা-মা সবার কাছে বল্লো।সবাই এই ঘটনা শুনে শাহীনকে খোঁজার জন্য ছুটে যায়। অবশেষে তারা শাহীন কে খুঁজে পায়।তখন শাহীনের পুরো শরীর থেকে বিষের গন্ধ আসছিলো।সবাই তাকে জিজ্ঞেস করে তুই কি বিষ খেয়েছিস নাকি গায়ে মেখেছিস আমাদের ভয় লাগানোর জন্য। কিন্তু শাহীন কোনো উত্তর দিচ্ছে না।

তখন শাহীনের এক সমবয়সী চাচার একটা বাইক ছিলো।সেই চাচা  বাইক নিয়ে শাহীন কে মাঝে বসিয়ে পিছে শাহীনের দুলাভাইকে বসিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মাঝপথে যেতে যেতে তারা শাহীন কে বলে এখনো সময় আছে বল তুই কি বিষয় খেয়েছিস কিনা?

কিন্তু শাহীন কোনো উত্তর দিচ্ছে না।একপর্যায়ে শাহীনের দুলাভাই শাহীন কে দুইতিন বার পিছন দিয়ে ঝাকি দেয়ার পর শাহীন একটি ভয়ানক তথ্যা দেয়। শহীন বলে দুলাভাই আমি বিষ খেতে চাইনি।

আমি চেয়েছিলাম সবাইকে ভয় লাগাবো।আমি চেয়েছিলাম কিছু বিষ আমার গায়ে মাখিয়ে হালকা করে একটু খেয়ে নিবো যাতে আমার কোনো বড় ধরনের ক্ষতি না হয়।কিন্তু আমি যখন হালকা বিষ খাওয়ার জন্য আমার মুখের কাছে বোতল নেই। তখন আমার মনে হলো আমাকে কেউ জোর করে ধরে পুরো বিষ টা খাইয়ে দিয়েছে। 

এই কথা শুনে তো শাহীনের দুলাভাই আর চাচা অবাক।এটাও কি সম্ভব। অবশ্য এটাই ছিলো শাহীনের বলা শেষ কথা।আমি মৃত্যুর আগে অবশ্যই কোনো লোক মিথ্যা কথা বলবে না। এরপর যখন শাহীন কে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় তখন ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

Vuter Golpo

amr ghotonati 2010 er and ata amr shathei ghotch... amr dadu and dada amader basai betate ashche gram theke... pray 1month thakar por chole jai .... unara thakte ami unader shathe ghumatam... protidin thik 2 tai amr ghum vangto tader karone...dada khub sick chilo.. take dadui shamlate hoto... to tara chole jaoar por ami shedin aka ghumacchilam... hotath 2 tai amr ghum venge gelo amon akta shobte jate mone hocchilo kew jeno amr lekhar khata page gulu niea ultacche... ghumta vengei amr chokh porlo porar table e .... mone holo kono akta meye amr moto boshe ache.. pasher ghorer dim light chilo a ghore temn beshi alo porchilona... ami khub voi peye khatha muri diea thaklam kichukhon.. maa k just akbar dakte parlam.r akbaro dakar shahosh pelamna .... kichukn por odike takatei jei meyeta dekhechilam o r chilona okhane... pore onk koste ghumieachi...shokale ammu k bolate ammu bollo r a kichuna bole tmn kheyal korlona... pore hotath onk jor ashlo ... ak dadur kache pani pora keye thik holam .. ar por theke r aka ghumaini..

নিশীথ তৃষ্ণা

সেপ্টেম্বরের বিশ্রী এক সন্ধা।ঝিরঝির বৃষ্টি ঝরছে থামার কোন নাম নেই।একা বাসায় বসে থাকতে ভাল লাগছিল না।তাই বেরিয়ে পড়লাম।হাটতে হাটতে চলে এলাম হারবার রোডে কিছুটা এগোবার পরই চোখে পড়লো লারমা এনটিকস।দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলাম আধো আলো আধো অন্ধকারে গাদা করা বাকস মূর্তি চোখে পড়লো। শুভ সন্ধ্যা সিনর কিছু কিনবেন ছবি আংটি ফুলদানী? আমি বেটে মোটা লোকটার দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে বললাম না কিছু কিনতে আসিনি একটু ঘুরে দেখব। লোকটার মুখে কোন অভিব্যক্তি ফুটল না এমন জবাব শুনতে সে অবভসত।সে একটি শেলফের দিকে এগিয়ে গিয়ে একটি সুদৃশ্য পানপাত্র বের করে দেখিয়ে বলল এটা ষোড়শ শতাব্দীর মাল সিনর কেনার মত জিনিস বটে। বললাম কোন এনটিকস নয় বই থাকলে দেখাও। বলল যে আমার কাছে বইপত্র আছে এমন কিছু বইপত্র যা আর অন্য কারো কাছে পাবেন না। লারলা আমাকে তার দোকান ঘরের পিছন দিকে নিয়ে যেতেই একটা বই বোঝাই শেলফ আমার নজর কেড়ে নিল। প্রথম বইটি শেলফ থেকে নিয়ে নজর বেলাতেই বুঝলাম এটা একটা পিশাচ কাহিনী। যদি ঘুণাক্ষরে টের পেতাম বইটা আমার জন্য অচিরেই নিয়ে আসছে দুঃস্বপ্নের চেয়েও ভয়ংকর অভিজ্ঞতা ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলছি সঙ্গে সঙ্গে ওটাকে বর্জন করতাম আমি।কিন্তু হরর গল্পের প্রতি তীব্র আকর্ষণ আর বইটির কালো মখমলে মোড়া প্রচ্ছদ ও আমাকে আকৃষ্ট করল দারুণ ভাবে।

ভয় পাইবেন কিন্তু

লিখা: অজয় রহমান রাজশাহী। .....................। ঘটনাটি ঘটে আমার এক মামাতো বোনের সাথে এবং ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্যি। ঘটনাটি ২০০৭ সালের। আমার মামাতো বোনের নাম জাহানারা।বয়স ১৪ বছর। তখন ছিল গ্রীষ্মকাল।ঘটনা টি গ্রীষ্মকালের অন্যতম ফল আম কুড়ানোকে কেন্দ্র করে। আমাদের এখানে অনেক আম বাগান আছে।অনেক ছেলেমেয়ে প্রতিদিন দল বেঁধে খুব ভোরে আম কুড়াতো।তার ও আম কুড়ানোর প্রবল নেশা ছিল। তো সেইদিন রাত্রে জাহানারা তার ছোট বোনকে বললো আজ আমরা দুইজন সবার আগে খুব ভোরে আম কুড়াতে যাব। আমি যদি টের না পাই,তুই টের পেলে আমাকে ডাক দিস। তো রাত ৪ টার দিক তার ছোট বোন তাকে ডেকে বললো রাত তো প্রায় শেষের দিকে আম কুড়াতে যাবে না? তারা আর দেরি না করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। আম বাগানটি ছিল বাড়ি থেকে কিছুটা দুরে ও বাগানটী ছিল অনেক বড় ও পুরনো। বাগানের একটা গাছ ছিল অনেক পুড়নো আর সেই গাছের আম গুলো অনেক ছোটছোট ছিল।কিন্তু সেই গাছের আম ই সবচেয়ে বেশি পড়তো।আম কুড়াতে কুড়াতে সেই বড় গাছের নিচে গিয়ে জাহানারা খুবই অবাক হয়ে গেল কেননা গাছের নিচে কেবল একটা আম ই পড়ে আছে তবে আমটি এ গাছের আমের তুলনায় অনেক বড়। তবুও সেটাকে পাত্তা না দিয়ে আমটি ধরতে গেল কিন্তু এরপর সে যা দেখলো তা অন্য কেউ দেখতে চাইবে না। সে যখন আমটি ধরতে গেল অমনি আমটি কিছুটা দুরে সরে গেল।এটা দেখে সে ভয় পেল কিন্তু ভাবলো হয়তোবা সে ভুল দেখেছে।আবার সে আমটি ধরতে গেল কিন্তূ এবারও ঐ একই ঘটনা।এবার ভয় তার মনে জেঁকে বসলো..কি হচ্ছে এসব।আবার যখন সে আমটি ধরতে গেল তখনি আমটি এমন একটা ভয়ঙ্কর আকরিতি ধারণ করলো যা দেখা মাত্র সে বেঁহুশ হয়ে গেল। ঘটনাটি এখানে শেষ হলেই ভাল হতো কিন্তু এরপর যা ঘটলো যা এক কথায় অবিশ্বাস্য। যখন আযানের সুর শুনে তার হুঁশ ফিরলো তখন সে গাছটির নিচে পড়ে আছে।আশেপাশে কেউ নেই এমনকি তার ছোট বোনকে খুঁজে না পেয়ে আরো ভীত হয়ে পড়লো এবং খুব দ্রুত পরিমরি করে বাড়ি ফিরে এসে দেখে তার বোন এখনো ঘুমুচ্ছে। সে তার বোনকে ডেকে তুললো আর বললো, কেন তাকে একা ফেলে চলে এসেছে সে? কিন্তু তার বোন কিছুই বুঝলো না।উপরন্তু জাহানারার হাতে আমের ব্যাগ দেখে সে বললো,আপু,তুমি একাই আম কুড়াতে গেলে,আমাকে ডাকও দিলে না। একথা শুনার পর আবারো সে বেঁশুস হয়ে পরে। সকাল থেকেই প্রচন্ড জ্বর আসে। এর কিছুদিন পরই সে মারা যায় কোনো কারণ ছাড়াই। ঘটনাটি আমি নিজে জাহানারার কাছ থেকে শুনেছি।

টুকরো টুকরো কিছু সত্যি ঘটনা

টুকরো টুকরো কিছু সত্যি ঘটনা যা ছোটবেলা থেকে আমার জীবনে ঘটে গিয়েছে আজ সেইগুলোয় আমি আপনাদের সাথে শেয়ায় করবো! আমার দাদুরা তিন ভাই! বড় দাদুর ছোট ছেলে যখন বিষ খেয়ে মারা যাই তখন আমি ক্লাস ফোরে পড়ি! দিনটা ছিল দূর্গাষ্টমীর দিন! বড় মামীর সাথে মতানৈক্যর ফলেই ছোট মামা বিষ খান! মামা মারা যাওয়ার পর ছোটমামি কর্মসূত্রে কোলকাতা চলে আসেন! তার পর থেকেই ছোট মামার বাড়িটি ফাকাই পড়ে থাকে! আমি ছোটথেকেই দাদুর বাড়ি থেকেই মানুষ! পড়াশুনা ওখানকার স্কুলেই করি! রোজ সন্ধ্যা বেলাই বাড়ি ফিরতে গেলে ছোট মামার বাড়ির সামনে দিয়েই আসতে হতো! আসার সময় শরীরটা কেমন ভারী ভারী লাগতো যাই হোক বাড়ির দিকে তাকাতাম না ! এর মধ্যে কেটে গেছে আরও পাঁচটা বছর তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি আমার তখন হিন্দী সেকেন্ড পেপার এর পরীক্ষা আগামী দিন! তাই প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে ! পড়তে পড়তে রাত্রি প্রায় তিনট বেজে গেছে এমন সময় বই থেকে মুখ তুলে জানালার দিকে তাকাতেই দেখি ছোটমামা জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে আছে! আমার তখন এমন অবস্থা যে আমি হাত পা নড়নোর ক্ষমতা টুকুও হরিয়ে ফেলেছি! দুই মিনিট এই ভাবে কাটার পর আম চোখ নিচে নামিয়ে নিই! পাশের রুমে দিদা শুয়ে রয়েছেন তবুও ডাকতে পারছিনা ! গলা দিয়ে আওয়াজ বেরুচ্ছেনা! কোনমতে গায়ত্রী জপ করতে করতে জানালাটা বন্ধ করে শুয়ে পড়ি চাদর মুড়ি দিয়ে রাম নাম জপতে জপতে শোবার খানিকটা পরে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ি ! খানিক ক্ষণ পরে কারোর পায়ের আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় চাদর টা একটু ফাক করে দেখি ছোটমামা একটা ফাঁসির দড়ি আমার মুখের সামনে ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ! জীবনে যত মন্ত্র জানতাম সব একে একে জপতে শুরু করি! ভয়ে সংগা হারিয়ে ফেলি! সকাল বেলায় চেতনা ফিরলে দিদা দাদুকে সব খুলে বলি ! দাদু আমাদের কুল গুরুকে ব্যাপার টা জানালে তিনি গয়ায় পিন্ড দানের কথা বলেন! ,,,,, আমাকে মন্ত্র দিয়ে শুদ্ধিকরন করেদেন.... এর পর মামাকে আমি আর দেখিনি! এটা আমার প্রথম লেখা এই গ্রুপে ,,,, কোন বাজে কমেন্টস্ করবেন না ভালোলাগলে জানাবেন ! তাহলে অন্য ঘটনা গুলো শেয়ার করবো!

কাল্পনিক ভুতের গল্প

এক লোক রাতের অন্ধকারে একা জঙ্গলের পথধরে বাড়ি ফিরছিল। হাতে টিমটিম করে জ্বলা হারিকেন। চলতে চলতে হঠাৎ সে লক্ষ্য করলো - হারিকেনের আলো পড়ে রাস্তার পাশে কি যেন ঝিলিক দিয়ে উঠলো। কৌতুহলী হয়ে লোকটা এগিয়ে গেল সেই দিকে। গিয়ে দেখল এক তরুনী মেয়ের লাশ পড়ে আছে। সে ভয় পেলেও ঠিকই দেখলো মেয়েটির ডান হাতের মধ্যম আঙুলে একটি হীরার আংটি জ্বল জ্বল করছে। একটু ইতস্তত করে সে হারিকেনটা পাশে নামিয়ে রেখে লাশেরআঙুল থেকে আংটিটা খোলার চেষ্টা করলো। কিন্তু আঙুল ফুলে ওঠায় কিছুতেই ওটা খুললো না। লোকটা তখন তার পকেট থেকে একটি ছুরি বের করলো। তারপর সেই ছুরি দিয়ে পুচিয়ে পুচিয়ে লাশের আঙুলটা কেটে ফেলল। ঠিক তখনই রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে কাছাকছি কোথাও একটা শেয়াল ডেকে উঠলো। লোকটা প্রচন্ড ভয় পেয়ে ঐ আঙুল সহ আংটি পকেটে পুরে ছোটা শুরু করলো। এক ছুটে বাড়িতে এসে কাউকে কিছুনা বলে সে ঐ রাতেই চুপে চুপে আঙুল থেকে আংটি ছাড়ালো। তারপর আংটিটা লুকিয়ে রেখে আঙুলটা পুঁতে ফেলল মাটিতে। এরপর অনেক দিন প্রায় দশ ববছর কেটে গেছে। ঐ আংটিটা বেচে ব্যাবসা করে লোকটা এখন অনেক টাকার মালিক। লোকটা সেই মেয়েটির কথা প্রায় ভুলে গেছে। এক অমাবস্যা রাতে সে তখন বাড়িতে একা। চারিদিকে শুনশান নিরবতা। হঠাত্ বাইরে দরজার কড়া নড়ে উঠলো - খট্ খট্ খট্ খট্। সে একটু বিরক্তি নিয়ে গিয়ে দরজা খুললো। দেখলো দরজার সামনে শাদা শাড়ি পড়ে এক তরুনী দাঁড়িয়ে আছে। মাথায় ঘোমটা দেয়া থাকলেও তাতে তার রূপ ঢাকা পড়ছে না এতটুকু। লোকটা গদ গদ হয়ে প্রশ্ন করলো - কি ব্যাপার ? কাকে চান? তরুনী কেমন খসখসে গলায় বলল - ভাই আমি অনেক দূর থেকে এসেছি। যাবো আপনাদের পাশের গ্রামে। কিন্তু এতরাতে অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলেছি। এদিকে প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে। আমাকে যদি আজরাতে একটু আশ্রয় দিতেন, একটু খাবার দিতেন! লোকটা যেন এমন সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল। বাড়িতে সে একা তায় আবার এমন সুন্দরী মেয়ে। সে বলল - আসুন আসুন, কোন চিন্তা নেই। সব ব্যবস্থা হবে। সে মেয়েটিকে বসতে দিয়ে খাবার নিয়ে এল। মেয়েটি খাবারের থালা টেনে নিয়ে খাবার মাখাতে লাগলো। লোকটা তখন লোভাতুর চোখে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ সে চমকে উঠলো। দেখলো মেয়েটি যে হাত দিয়ে খাবার মাখাচ্ছে সে হাতে চারটি আঙুল। মধ্যমা আঙুলটা যেখানে থাকার কথা সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। লোকটির আত্মা কেঁপে উঠলো। সে ভয় পাওয়া গলায় জানতে চাইলো - আ..আপনার হাতের আঙুলের কি হয়েছে!? তখনই মেয়েটা সরাসরি লোকটার দিকে তাকিয়ে একটা বিকট হাসি দিল। যা দেখে লোকটা প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল। এবং ভয়ের একটা অদ্ভুত শিরশিরানি তার মেরুদন্ড বেয়ে নেমে গেল। মনে হল মেয়েটাকে সে কোথাও দেখেছে। তখনই মেয়েটা কথা বলে উঠলো, আপনিই তো জানেন আমার আঙুলের খবর। লোকটা ভয়ে ভয়ে বলল মানে? মেয়েটা ভয়ংকর একটা হাসি দিয়ে বলল মনে পড়ে আজ থেকে দশ বছর আগে রাস্তার পাশে একটা মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছিলেন? আপনি লাশের মূল্যবান অলংকার গুলো নিয়ে সরে পড়েছেন সাথে লাশটার মধ্যমা আংটির জন্য আঙুলটাও। মনে পড়ে আপনার? আপনি যদি লোকজনকে লাশটার কথা অন্তত বলতেন তাহলে অন্তত শিয়াল কুকুর একটা মুসলিম, অসহায় এবং পরিস্থিতির শিকার মেয়ের লাশ চিড়ে চিড়ে খেতোনা। আপনিইতো আংটির লোভে লাশটার একটা আঙুল পর্যন্ত কেটে ফেলেছেন। এখন আমায় ঐ আঙুলটা দিন। মধ্যমার আঙুল না থাকলে কত যে অশুবিধা সেটা বলে বোঝানো যাবেনা। তখনই লোকটার দশ বছর আগে দেখা লাশের চেহারাটার কথা মনে পড়ে গেল। এই মেয়েটার লাশ থেকেইতো সে ঐ আংটিটা পেয়েছে। তাহলে এ এখানে এলো কোথ্যেকে? আর কিছু ভাবতেই পারলোনা তার আগেই জ্ঞান হারালো। সকালে বাড়ির লোকজন ফিরে এসে অনেক ডাকাডাকি করেও দেখলো যখন কেউ দরজা খুলছেনা তখন দরজা ভেঙে বাসায় ডুকে দেখে লোকটার নিস্তেজ দেহ। যেনো প্রবল আতঙ্কে হা হয়ে আছে। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে বলে অতিরিক্ত মানষিক চাপের ফলে স্ট্রোক করে মারা গেছে। আর লোকটা যেখানে ঐ আঙুলটি পুঁতে রেখেছিলো সেখানে কেউ যেনো মাটি খুড়ে রেখে গেছে। আসল ঘটনাটা কেউ বুঝতেই পারলোনা এটা যে লোকটার পাপের শাস্তি। সম্পাদিত কেমন লাগলো গল্পটা অবশ্যই জানাবেন। সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

আদমখোর

ঘটনাটি এক বন্ধুর কাছ থেকে শোনা।একদিন তাদের এলাকার এক জেলে শেকেরচর নামক স্থানে এক কবরস্থানের পাশের খালে মাছ ধরতে যায়।সেদিন তার স্ত্রীর সাথে একটু ঝগড়া হয় তাই ছোটা ছেলেটাকে সাথে নিয়ে যায়।সেদিন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো চারপাশে পৈচাশিক নিরবতা।এক সময় তারা দেখলো খালের ঐ পাশে দুজন আলেম টাইপের লোক তাদের ডাকছে খাল পাড় করে দিতে।তো জেলে তাদের জিঞ্জাসা করে তারা কোথায় যাবে।তারা বলে কবরস্থানে তাদের কাজ আছে এবং কবরস্থানের পাশে মাছ ধরতে নিষেধ করে।কিন্তু জেলে তাদের কথা উপেক্ষা করেই মাছ ধরছিলো।এক পর্যায়ে তাদের চোখ যায় কবরস্থানে এবং তারে দেখে ঐ দুজন লোক কবরের এক লাশ ভিবত্‍স ভাবে খাচ্ছে আর লাশের পচা গন্ধে চারপাশ ভরে আছে।তাদের দেখে ঐ দুজন একটি মরা মানুষের অঙ্গ তদের নৌকায় ছুড়ে মারে এবং তাদের খেতে বলে।এ দৃশ্য দেখে ছোট ছেলেটি ঞ্জান হারায়।জেলেও অনেক ভয় পায় এবং বাড়িতে ফিরে আসে।তো রাতে আর কারো সাথে তারা এ ঘটনা শেয়ার করেনি।সকালে তাদেরকে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

[[বারান্দায় কিছু একটা হাটছে (দ্বিতীয় পর্ব )]]

অরুনের লাশ কবর দিয়ে আসছিলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে । অরুন আমার অনেক কাল আগের বন্ধু । সে আর আমি কত জায়গায় ঘুরেছি তার আমার বহু স্মৃতি মনে পরে কষ্ট হতে লাগল । রাত দশটায় আমি বাড়ী ফিরে সিড়ি বেয়ে উঠার সময় খেয়াল করলাম পাশের বাড়ীর একটি বিড়াল আমার পিছন পিছন উঠতে লাগল । আমার ফ্ল্যাট তিনতলায় । ফ্ল্যাট এর দরজা খুলে ভেতরে তাকাতেই এক তীব্র ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল। আমার রুম পুরো অন্ধকারে ডুবে আছে । পাশের বাড়ী থেকে কিছু আলো এসে পরেছে আমার রুমে
আর এই অস্পস্ট অদ্ভুদ আলোতে স্পস্ট দেখলাম আমার শোয়ার ঘরের সিলিং ফ্যানটায় ঝুলে আছে অরুনের লাশ । আচমকা ভয়ে কাপতে কাপতে ভয়ে দৌড়ে নিচে নেমে ,গেটের কাছে এসে হাপাতে লাগলাম দাড়োয়ান দৌড়ে এসে বলল
-আরে ভাইজান কি হইছে
-লাশ!
-লাশ?কোথায়?
-আমার রুমে ।
দাড়োয়ান পানি দিয়ে বললো
-লন পানি খান । আর কি হইছে খুইলা কন।
-রুমের দরজা খুলে দেখি ,সামনের রুমে যে ফ্যানটা তাতে রশি পেচিয়ে কেউ একজন ঝুলে আছে।
-কন কি ?চলেন তো আমার সাথে । ফ্ল্যাটে এসে দেখি কিছুই নেই। দাড়োয়ান হাসি দিয়ে বলল বেহুদায় ভয় পাইছেন । দাড়োয়ান চলে গেলেও আমি ভেতরে ঢেকতে সাহস পেলাম না। আধ ঘন্টা পর যখন ঢুকলাম তখন আগের ঘটনাটা নিজের কাছে হাস্যকর মনে হল। রাতে আরেকবার গোসল করে না খেয়েই ঘুমিয়ে পরলাম ।
গভীর রাতে ঘুম ভেংগে গেল । আমার ঘুম এত সহজে ভাংগে না। তার মানে কিছু একটা হয়েছে । ভাল করে কান পেতে কিছু একটা শুনতে চেষ্টা করলাম । হঠাত মনে হল কিছু একটা নিশব্দে হাটছে আমার বিছানের চারপাশ দিয়ে । মশারির জন্য ভালো করে কিছুই দেখতে পারছি না । তবুও মনে হল ঘন অন্ধকারে কিছু একটা নড়াচড়া করছে । তীব্র ভয় আমাকে গ্রাস করলো। এত তীব্র ভয় আগে কখনো পাইনি । ঘরে বাতাস নেই ,ফ্যান বন্ধ তবুও আমি স্পস্ট দেখলাম আমার মশারি নড়ে উঠল । হঠাত পায়ের কাছে মশারির দিকে আমার নজর গেল আর আতংক নিয়ে দেখলাম সেখানে মানুষের মুখ দেখা যাচ্ছে । অনেক খানি জিভ বের হয়ে আছে। পুরো মুখে কালো রক্ত । জ্ঞান হারানোর পুর্বে টের পেলাম মানুষ পচা দূর্গন্ধ আমার রুম জুড়ে ছড়িয়ে আছে।
গভীর রাতে এখনো ঘুম ভেংগে যায় । তাকিয়ে থাকি অন্ধকারে কিছুই দেখিনা তবুও মনে হয় আমার দিকে । ভয়ানক কিছু হওয়ার দিন গুনছি । বারান্দায় কিছু একটা হাটছে । বার বার পদশব্দ শোনা যাচ্ছে ,আর কিছু ফিসফিস শব্দ । এভাবে দিন দিন চলতে থাকে আমার। মাস খানেক পর যা ঘটে মনে হয় পাঠক বিশ্বাস করবেন না । যে ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না ।সে ঘটনায় অরুনের মৃত্যুর রহস্য বেড়িয়ে আসে। তবে এখন আর লিখব না। যা আপনাদের কমেন্ট এর উপর নির্ভর করে তৃতীয় পর্বে লিখব । সবাই ভালো থাকবেন।।

(বারান্দায় কিছু একটা হাটছে (প্রথম পর্ব)

সেদিন বিকেলের ট্রেনেই আমরা ঢাকা রওনা দিলাম । অরুন সকাল থেকেই মন গম্ভীর করে রেখেছে আমার সাথে কোন কথা বলছে না। অরুন এমনিতে হাসি খুশি থাকে। এমন গম্ভীর মুখ তাকে কখনো দেখিনি। আমি অনেক বার তাকে জিজ্ঞাস করেছি সে একবারো উত্তর দেইনি।
রাত তখন আট্টা কি নয়টা । আমি আর অরুন ট্রেনের করিডোরের সামনে বসেছি। ট্রেনের কামড়াটা অপেক্ষাকৃত নির্জন। ট্রেনের সকল বাতি আগে থেকেই নিভানো । পাশের জানালা খোলা । জানালা দিয়ে শীথল হাওয়া ঢুকছে। চাদের আলো খানিক টা এসে পরেছে অরুনের মুখে। আর এতেই আমি তাকে আবছা ভাবে দেখছি । এ অদ্ভুদ পরিবেশে অরুন আমার দিকে ফিরে আচমকা বলল । আচ্ছা শহিদ তুই আত্মায় বিশ্বাস করিস । আলো ছায়াময় সেই নির্জন ট্রেনের কামরায় এমন প্রশ্ন শুনে শিউরে উঠে বলি । না আমি বিশ্বাস করি না । হঠাত এ প্রশ্ন করলি যে । অরুন কিছুক্ষন চুপ করে থেকে কি যেন ভাবতে লাগল ।
তাহলে শোন ,
তোকে একটা ঘটনা বলি । অনেক দিন আগে মধুপুর গ্রামে দুজন মানুষ মারা যায় । একজন কে মসজিদের পাশে আমগাছে ফাসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় । এর মাস খানিক পরে একি গাছে ফাসি দিয়ে আত্মহত্যা করে । গ্রামঞ্চলে এ নিয়ে খুব তোলপাড় হয় । তখন থেকে গ্রামের মানুষ এই গাছ টি এড়িয়ে চলে। পারতপক্ষে কেউ রাতে ভুলেও আমগাছটির তলা দিয়ে যাইনা । আমি গতকাল রাতে নামাজ পড়ে গাছটির নিচ দিয়ে যাচ্ছিলাম । তখনো অন্ধকার কাটেনি । চাদের আলো হয়ত ছিল কিন্তু আমি যখন যাচ্ছি তখন ঘোর অন্ধকার । এমনিতে আমি খুব সাহসী কিন্তু আমগাছের তলা দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম ,তখন খেয়াল করলাম আমি আসলে ভয় পাচ্ছি । সম্পূর্ন বিনা কারনে ভয় । নির্জন একটা রাস্তা দিয়ে গেলে যে কেও ভয় পেতে পারে। কিন্তু আমার ভয় টা সম্পূর্ন অন্যরকম । আমার মনে হল আমগাছ টির গোড়ায় কিছু একটা দাড়িয়ে আছে । আমি কিছুই দেখিনি । তবুও মনে হল কিছু একটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে । তার অস্তিত্ব নেই শরীর নেই ,কিছুই নেই তবুও মনে হল কিছু একটা আমার পাশে আছে। ঠিক তখনি অন্ধকারে দেখলাম ঠিক মানুষ বলা যায় না । তবুও অনেক টা মানুষের অবয়ব আম গাছে গোড়ায় দাড়িয়ে আছে। তখন এক জান্তব ভয় আমাকে গ্রাস করল। এমন তীব্রভয় আমি আগে কখনো পাইনি। আমি খেয়াল করলাম আমার পা কাপছে। আমি এক চিতকার দিয়ে মসজিদের বারান্দায় এসে অজ্ঞান হয়ে যায় । তারপর কি হয় জানিনা । জ্ঞান ফিরলে দেখি মসজিদের বারান্দায় শুয়ে আছি আর অনেক মানুষ ভিড় হয়ে আছে ।
এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে অরুন হাপাতে লাগলো । আমি প্রচন্ড ভয়ে হারিয়ে ফেলেছি । সেদিন ট্রেনে অরুনের সাথে আর কথা হয়নি । অরুন সাড়া পথেই কি ভাবছিল।
রাত তিনটায় যখন ট্রেন ঢাকাই পৌছায় তখন ট্রেন থেকে নেমে শুধু বলল যাই। পরে দেখা হবে অরুন থাকে মগবাজারে ,তার বাবা মাকে নিয়ে । আর আমি থাকি মালিবাগে । একা একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে । বাসায় ফিরে সেদিন আর ঘুমোতে পারিনি। বই পড়ে ,আলো জ্বালিয়ে কোন রকম রাত পার করলাম ।
কিছুদিন পর প্রচন্ড কাজের চাপে অরুনের গল্প ভুলেই গিয়েছিলাম । মধুপুর যাওয়ার এক সপ্তাহ পরে হঠাত অরুন আমাকে ফোন করে উদভ্রান্তের মত বলে দোস্ত তুই আমাকে বাচা
কেন কি হয়েছে ?
-আমি বোধ হয় পাগল হয়ে যাচ্ছি ।
-কি হয়েছে খুলে বল । সেদিন গভীর রাতে মধুপুর থেকে ফিরে ,ট্রেন স্টেশন থেকে একটা রিক্সা নিয়ে বাসায় ফিরছিলাম রিক্সাটা চলতে চলতে যখন অন্ধকার গলিতে ঢুকলো ,ঠিক তখনি আমার মনে হল কিছু একটা আমার পাশের খালি জায়গায় বসে আছে। অনুভূতি টি এতই তীব্র যে আমার পাশে একঝলক তাকিয়ে দেখলাম । সেখানে কিছুই নেই । আমি বুঝতে পারলাম এটা আমার মনের ভুল । আম্র মনে এক অদ্ভুদ চিন্তা আসল ,মধুপুরের ভয়ানক কোনকিছু আমার সাথে করে নিয়ে আসেনি তো । মন থেকে যত ই চিন্তাটা ফেলে দিতে চাইলাম ততই তা ঝাকিয়ে বসলো । রিক্সা ভাড়া মিটিয়ে যখনি আমাদের বাড়ির গলিতে ঢুকলাম তখনি ওই টাকে দেখলাম সামনেই অন্ধকারে দাড়িয়ে আছে । তার চোখ মুখ হাত পা কিছুই নেই। মনে হল আমার দিকে চেয়ে আছে। তার মুখে ত্রুটির হাসি । আমি দৌড়ে বাড়ির গেটে যেয়ে দাড়োয়ান কে ডাকতে থাকি । দাড়োয়ান আমাকে ধরে নিয়ে রুমে দিয়ে আসে। এতকথা অরুন একনাগাড়ে বলে হাপাতে লাগল।
আমি বললাম এসব তোর কল্পনা । চিকিতসা নিলে মনে হয় ঠিক হয়ে যাবে ।
-প্রথমে আমিও তাই ভেবেছিলাম । তিনজন সাইক্লোজিস্টের সাথে দেখা করে ছিলাম সব বলেছি কিন্তু তারা কিছুই করতে পারেনি । এখন আমি তাকে আমার রুমে দেখি .কিছু একটা হাটছে আমার রুমে । ঘর অন্ধকার হলেই প্রায় দেখি মশারির ওপাশে কিছু একটা দাড়িয়ে আছে । তাই এখন বাতি জ্বালিয়ে ঘুমাই।
আমি বললাম -ঠিক আছে তোকে আর কিছু সাইকিয়াট্রিস্টে
র ঠিকানা দিচ্ছি তুই গিয়ে দেখা করে আয়।
ঠিকানা নিয়ে অরুন ফোন রেখে দেয়।
আমার দেয়া ঠিকানাতে গিয়েছিল কিনা ঠিক জানি না। কিন্তু মাসখানেক পর অরুন যখন তার রুমের ফ্যানে ফাস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে তখন খুবই অবাক হলাম । বহু কাজের মধ্যেও তার জানাযায় গেলাম । সেদিন তার বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাদলেন অনেকক্ষন । কেন অরুন আত্মহত্যা করেছে তা কেও বলতে পারেনি। তবে শেষের দিকে অরুন গভীর রাতে কে কে বলে চেচিয়ে উঠত আর একা একা কথা বলত । (ঘটনাটি এখানে শেষ হতে পারতো কিন্তু আমিও নিজেও এ ঘটনায় জড়িয়ে গেলাম । আপনাদের দ্বিতীয় পর্বে বলব । কারা শুনতে চান দয়া করে জানাবেন । কেন না এই ঘটানা আসলেই সত্যি আপনারা পড়লেই লিখা সার্থক হবে।