মেয়ে পুতুলের মধ্যে ভূত

তখনো এ্যাপার্টমেন্টস এর ছাদে তালা ঝুলিয়ে রাখার চল শুরু হয়নি। টাকা দিয়ে মালিকানা কেনা সবাই ছাদে অবাধে যেতে পারতেন। তবে মুশকিল হলো সন্ধ্যার পর থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ছাদে যাওয়া নিয়ে। সাধারণত তখন বিকালে ছাদে ওঠা ছিলো অবধারিত। বিকাল থেকে সন্ধ্যা ছাদে সবাই কমবেশি উঠতোই

সেই হিসেবে ছাদ খোলা রাখা হতো। এরপরে রাতে কারেন্ট যাওয়ার একটা ব্যপার ছিলো। যেটা এখনকার জেনারেশন জানেই না জেনারেটর কেনা হয়নি বিধায় এটলিস্ট দশটা পর্যন্ত ছাদ খোলাই রাখা হতো। কিন্তু দুষ্ট লোকেরা এটা ফায়দা নিলো।


ছাদে উঠে এই সময়টা আজেবাজে কাজ করা শুরু হলো, এদিকে মালিক নিরুপায়। ছাদ পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী খোলা রাখতেই হবে। বাজে কাজ করা লোকেরা আবার ক্ষমতাসালী। বেশ মুশকিলের মধ্যে মালিক বেচারার অবস্থা যায় যায়।

ছাদে ওঠা বন্ধ না রেখেই উনি আলাদা এমন বুদ্ধি বের করলেন যেটায় আজেবাজে লোক ছাদে ওঠাই বন্ধ করে দেয়। আমেরিকায় বড় মেয়ের কাছে চিঠি লিখে একটি ভুতুড়ে ডল কেনার আবদার করলেন।মেয়ে কোন এক হ্যালোউইন উৎসবে বাবাকে ছবি পাঠিয়ে দিয়েছিলো একটি ভয়ংকর ডলের। তাকে প্রথম দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয়বার দেখলে আসলই মনে হবে।

সেই ডল এক মাস পড়েই দেশে এসে পড়লো। ভদ্রলোক সময় মতনই ছাদের একটি জায়গায় সেই ডল স্থাপন করে দিলেন।

মেয়ে ভূতের গল্প

সত্যিই আজেবাজে লোকেরা ছাদে উঠেই খিচুনি ওঠা ভয় পেয়ে বাবাগো মাগো বলে নেমে গেল। আগেই প্ল্যান করে রাখার ফলে সেই লোকেরা নামার পরপরই ডলটা সরিয়ে দেয়া হলো।  পরে লোকজন সহ মালিক গিয়ে হম্বিতম্বি করলেন। ডল কোথাও নাই চোখের ভুল মনের ভুল ইত্যাদি বলে সেদিন কেটে গেল। পরেরদিন আর রাখা হয়নি। আজেবাজে মতলবে যাওয়া লোকজন যখন ভুলে গেল তখনই আবার ডলটা উপস্থিত।

এভাবে তিনবার রাখা পরে ওরা যথেষ্ট ঘাবড়ে গেল। বাড়িওয়ালা একজন হুজুরের সাথে পরামর্শ করে বললেন ছাদে আজেবাজে কাজের জন্যই ওই প্রেতাত্মার আগমন তাই ওসব বন্ধ করতে হবে।

তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারলো বাজে কাজ বাদ দিলো। ছাদে আর কখনোই বাজে কাজ হয়নি আর ডলটা রাখার প্রয়োজন হয়নি। সেটা জায়গা মতন তুলে রেখে দেয়া হলো।

প্রায় দু মাস পরে

একদিন স্বয়ং বাড়িওয়ালা ছাদে গিয়েছেন কি একটা কাজে। ছাদে লাগানো দোলনায় সেই ডল দেখে ঘাবড়ে গেলেন। একি সর্বনাশ?

লুকিয়ে রাখা ডলটা কে এনে রাখলো? উনি এদিক ওদিকে তাকিয়ে আস্তে-ধীরে ডলটা নিয়ে নেমে গেলেন। সেদিন পুরো এ্যাপার্টমেন্ট এ বলতে গেলে তার পরিবারই আছে। ঈদের ছুটিতে সবাই গ্রামের বাড়িতে ছিলো। মানুষ সমান পুতুলটা নিয়ে আগের জায়গায় রাখতে গিয়েই র-ক্ত-হিম হয়ে গেল।

একি পুতুলটা আগের জায়গায়ই আছে। তখনই তার হাতে ধরা ডলটা নড়ে উঠলো। মাটিতে ফেলে দিতেই সেটা উঠে দাড়ালো। উঠে দাড়ানোর পরেই সেই পুতুলটা হুট করে ফেলে রাখা পুতুলের ভিতরে যেন মিলিয়ে গেল....

এ পুতুলটার ভিতরেই কি তাহলে কোন সত্যি আত্মা (জ্বীন) এসে বসবাস করছে?

অনলাইন থেকে ইনকাম
No comments :

No comments :

Post a Comment