ও ভুত না, আমার বন্ধু
বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার যাচ্ছিলাম। আমরা সোহাগে ছিলাম । আমি জানালার পাশে বসে পর্দার ফাঁক দিয়ে বাইরে দেখছিলাম। এক বন্ধুর কথা মনে পড়ে। সে চীনে পড়তে গিয়ে পাহাড় থেকে নিচে পরে যায়। সে দেশে থাকতে সবাই মিলে কক্সবাজার যেতে চেয়েছিল। আমরা গেলাম তবে সে ছিল না। একটু আফসোস হল ওর জন্য। বেচারা বেঁচে থাকলে এক সাথে থাকতাম।
বাস যখন চলা শুরু করে উপরের স্লিপার অংশে আমাদের দুজন সিট নেয়। আমরা নিচে বসি। বাস যখন ঢাকা সায়েদাবাদ ক্রস করে একটা ব্রিজে উঠে (নামটা মনে নাই) তখন উপর থেকে ফাহাদ বলে ডাক শুনি। যে বন্ধুটা চীনে গেছিল ওর ভয়েজ। আমরা দুজন মুখ চাওয়া-চাওয়ি করি। দুজনই ভয়েজ শুনেছি।
ঘন্টা দুয়েক যাওয়ার পর কুমিল্লার আশেপাশে বাস থামে। ব্রেক দেয়। আমরা বাইরে কফি খাচ্ছিলাম। একটা ফ্রেন্ড টয়লেটে যায়। তার ভাষায়, " আমি দ্রুত টয়লেটে ঢুকে পড়ি। সব খালি ছিল। আমি বের হয়ে আয়নায় দাঁড়িয়ে চোখ মুখে পানি দিচ্ছিলাম। দ্বিতীয় ঝাপটা চোখে দিতেই মনে হলো, পাশে কেউ দাঁড়িয়ে ছিল। আমি বামদিকে তাকাতেই দেখি কেউ চলে গেলো দরজার কাছ দিয়ে। একটা ছায়া দেখলাম। "
আমরা কফি খাচ্ছিলাম আর রাজুর কন্ঠ শুনেছি বলে আলাপ করছিলাম। রবিন তখন টয়লেট থেকে চোখ বড় করে বের হয়ে আসে। পানি খায়। তারপর হোটেলের পাশের সিড়িতে বসে বলে, "দোস্ত রাজুর মত কাউকে দেখেছি" - একদম পাশে ছিল। আমরা তখন বললাম বাসের ভেতরেও স্পষ্ট ওর ডাক শুনেছি।
আমরা কলাতলীর পাশে সাইমনে ছিলাম এক রাত এবং মারমেইডে এক রাত। মারমেইডে যখন যাই। রাতে গান হচ্ছিল তখন কিচেনের পাশে কাঠের টেবিলে বসা ছিলাম সবাই। দূরে বালির মাঠের এক পাশ থেকে আরেক পাশে দৌঁড়ে একজন চলে গেলো। আমাদের একজন মাঠে দাঁড়িয়ে আমাদের ছবি তুলছিলো। তখন রাজুর গায়ে যে ধরণের ঘ্রাণ, তেমনটা খুব গাঢ় করে ছড়িয়ে পরে। আমরা দ্রুত নিজেদের রুমে চলে যাই। আমরা পরেরদিন ইনানীর প্ল্যান বাতিল করে ঢাকা ফিরে আসি।
আমাদের কারো সমস্যা হয়নি তবে একজন গত হওয়া লোকের অদ্ভুত উপস্থিতি আমাদের ভয় দেখিয়েছিল। ও ভুত না, আমার বন্ধু।
No comments :
Post a Comment