ভুতের গল্প ২৮ এক হাজার ভুত
রূপকথার এক গ্রামের নদীর
ধারে একটি ঘর ছিল যার নাম ছিল "এক
হাজার আয়নার ঘর"।
সেই গ্রামে সুন্দর হাসি মাখা মুখের
একটি ছোট্ট মেয়ে ছিল।
মেয়েটি একদিন তার বাবা মা'র
মুখে শুনতে পায়, তাদের গ্রামের
"আয়না ঘর" এর কথা। এর
আগে মেয়েটি কোন দিন ঘর
থেকে বের হয় নি।
সে প্রকৃতি দেখেনি,দেখেনি কোনও
বাস্তবতা।তো সে একদিন
চিন্তা করলো যে সে ঐ আয়নার ঘর
দেখতে যাবে।কিন্তূ
একা একা যেতে সাহস না হওয়াই
সে তার
সমবয়সী আরেকটি মেয়েকে সাথে নিয়ে গেলো।
আয়নার ঘরের সামনে হাজির
হয়ে প্রথম
মেয়েটি ভাবলো যে আগে সে ঐ
ঘরে ঢুকবে আর সব কিছু
দেখে এসে বাইরে এলে তবেই ঐ
দ্বিতীয় মেয়েটি ঢুকবে।
...
কথামতো প্রথম মেয়েটি ঐ ঘরের
ভেতর ঢুকলো।ঘরে ঢোকার
সাথে সাথে আশ্চর্য সব রঙ্গিন
কারুকাজ দেখে মেয়েটির মুখ
আনন্দে ভরে উঠলো।
সে আস্তে আস্তে এগোতে এগোতে সেই
একহাজার আয়নার ঘরে প্রবেশ করলো।
ঘরে ঢুকেই তার চোখ ছানাবড়া।
মেয়েটি দেখলো সেখানে ঠিক তারই
মতো দেখতে আরও একহাজার
মেয়ে হাস্যোজ্জল মুখে তার
দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
সে যা করছে বাকিরাও ঠিক তাই তাই
করছে।
মেয়েটি এবারে সব কিছু দেখে অনেক
মজা পেয়ে বাইরে চলে এল এবং তার
সাথীকে সব ব্যাপারে খুলে বলল
এবং বলল যে "এমন সুন্দর
জায়গা আমি আগে কখনো দেখেনি।
সুযোগ পেলেই এবার থেকে আমি এই
জায়গায় চলে আসবো।"
সব কথা শুনে এবারে দ্বিতীয়
মেয়েটি কিছুটা ভয় ভয় মন নিয়ে ঘরের
ভেতর ঢুকলো। ঘুরতে ঘুরতে আতংকিত
মনে সেও এবারে সেই "এক হাজার
আয়নার" ঘরে প্রবেশ করলো।
ঘরে ঢোকার সাথে সাথে মেয়েটি ভয়
পেয়ে উঠলো। ভয়ে মুখ
ফ্যাকাশে হয়ে গেলো, আতঙ্কিত
হয়ে উঠলো চোখ। সে খেয়াল
করলো ঠিক তারই মতো দেখতে আরও
এক হাজার মেয়ে আতঙ্কিত আর ভয়ার্ত
চোখ তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
মেয়েটি যেই ভয়েতে দুই হাত
তুলে বলছে -তোমারা কারা-
সাথে সাথে বাকী এক হাজার
মেয়েও দুই হাত তুলে ওর দিকে নজর
দিচ্ছে। এবারে মেয়েটি প্রচণ্ড ভয়
পেয়ে ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এল
এবং প্রথম মেয়েটিকে বলল,"শীগগিরই
বাড়ি চল,এটা খুব বাজে জায়গা।
আমি আর কোনওদিন এই জায়গায় আসব
না"
শিক্ষাঃ জীবনটাও
একটা আয়না স্বরূপ।
আপনি যেভাবে জীবনকে দেখবেন,
সেও ঠিক সে ভাবেই আপনার
কাছে ধরা দিবে। যারা সাহসিকতা,
ভালোবাসা, উৎসাহ, জয় করার অদম্য
ইচ্ছা নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়, জীবন
তাদের কাছে অনেক সহজ ও আনন্দ ময়
হয়ে ধরা দেয়। কিন্তু যারা, হতাশা,
ভয়, মানসিক অবসাদ
নিয়ে সামনে এগুতে চায়, তাদের
চোখে সাফল্য যেন মরীচিকা । জীবন
হয়ে উঠে ক্লান্তিকর, বিষণ্ণময়।
বাস্তবতাকে আপনি যেভাবে দেখবেন,
আপনার সামনে তা সেভাবেই
ধরা দিবে।