ভুত ও প্রেতাত্মা
কোন বাড়ি দোষী হওয়ার পিছনে কিছু
কারণের কথা প্রচলিত আছে।
সাধারণত
প্রাচীন বাড়িগুলো দোষী হয়।
যেগুলোর অনেক বয়স। অনেক মানুষ
সেখানে বসবাস করেন।
অনেকে সময়ের
আবর্তনে মরে যান। মরে ভূত হয়ে যান।
এবং কেউ কেউ বাড়ির
মায়া কাটাতে না পেরে বাড়িতেই
থেকে যান। এই
আত্মা বা প্রেতাত্মাই
বাড়িতে বিভিন্ন ভৌতিক কর্মকান্ড
ঘটায়।
শুধু আমাদের দেশে না, আমেরিকার
প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট
হাউজ
নিয়েও কিছু ভৌতিক
ঘটনা শোনা যায়।
হোয়াইট হাউসে প্রথম প্রেসিডেন্ট
ছিলেন জন এডামস। তার
স্ত্রী এবাগেইল। এই ভদ্রমহিলা ভূত
হয়ে রয়ে গেছেন হোয়াইট হাউসে।
হোয়াইট হাউসে বিভিন্ন
সময়ে থাকতে আসা লিংকন থেকে শুরু
করে আরো অনেকেই ভৌতিক ঘটনার
মুখে পড়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট
আব্রাহাম লিংকনের ভূত
এখনো হোয়াইট
হাউসে থাকে তা অনেকেই বিশ্বাস
করেন। আব্রাহাম লিংকনের
ব্যাপারে ভৌতিক অনেক কিছুই আছে।
যেমন তার বন্ধু এবং জীবনিকার
অয়ার্ড
হিল
ল্যামন বলেছেন ১৮৬৫ সালের
এপ্রিলে মানে যে মাসে তিনি মারা
যান সেই মাসে লিংকন এক
রাতে স্বপ্নে দেখেন
তিনি ঘুমোচ্ছেন।
হঠাৎ চারদিকে কান্নার শব্দ
শোনা গেল। প্রেসিডেন্ট স্বপ্নের
মধ্যে দেখলেন তিনি ঘুম
থেকে উঠেছেন।
কোথা থেকে কান্নার
শব্দ আসছে খোজতে লাগলেন।
শেষে একসময় পেলেন লোকজন
কাদছে।
তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন ,
কি হয়েছে? তারা জানাল,
আততায়ীর
হাতে নিহত
হয়েছেন প্রেসিডেন্ট লিংকন।
ভয়ে লিংকনের ঘুম ভেঙে যায়।
প্রেসিডেন্ট চার্চিল, থিয়োডর
রুজভেল্ট
সহ আরো অনেকেই হোয়াইট
হাউসে থাকার সময় জানিয়েছিলেন
তারা লিংকনের ভূত দেখেছেন।
প্রেসিডেন্ট উইন্সটন চার্চিল
একরাতে এত ভয় পেয়েছিলেন
যে রাতে না ঘুমিয়ে কাটান এমন
বর্ননা ও আছে।
আরেকটি ব্যাপার, বলা হয় সব
প্রেসিডেন্ট
ই হোয়াইট হাউজ ছাড়ার
সময় তাদের মাথার চুল দেখা যায়
হয়ে গেছে। এতে ভৌতিক কোন
ব্যাপার
আছে ধারনা করা হয়।
অতৃপ্ত আত্মা অনেকসময়
বাড়িতে থেকে যায়। এরকম সাধারণত
হয়
অন্যায়ভাবে কাউকে বাড়িতে হত্যা করা হলে বা কষ্ট
দেয়া হলে। এরকম
প্রেতাত্বা নিয়ে অনেক গল্প হয়েছে।
যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন
ক্ষুধিত পাষাণ। টাওয়ার অব
লন্ডনে এরকম
প্রেতাত্বার
উপদ্রব এর কথা শোনা যায়।
এখানে ইংল্যান্ডের অনেক
নামী দামী ব্যাক্তি সহ আসামী দের
মাথা কেটে শাস্তি দেয়া হত এক
কালে।
অষ্টম কিং হেনরির
স্ত্রী এনি বোলেন
পুত্র সন্তান জন্ম দিতে পারছিলেন
না।
তাই তার মাথাও টাওয়ার অব
লন্ডনে কেটে ফেলা হয়। মাথা বিহীন
হেনরির স্ত্রীর অতৃপ্ত আত্মাও তাই
তখন
থেকে টাওয়ারে রয়ে যায়।
১৮৬৪ সালে একজন সৈনিক এই
প্রেতাত্বার
সাথে যুদ্ধ পর্যন্ত করেছিল
এমন ও উল্লেখ আছে।
সুতরাং, ভুত
বা প্রেতাত্বা দিয়ে দূষিত
বাড়ির ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার মত কিছু
না। সোহরাব হোসেনের বাড়ি ছিল
এমন
দোষী বাড়ি। তার বাড়ির পিছনের
একটা গল্প
আমি খুজে পেয়েছি।
02…………………
সোহরাব হোসেনের এই বাড়ির
জায়গা তার দাদা কিনেছিলেন।
অনেক
আগের কথা। তখন ব্রিটিশ শাসন।
এলাকার অবস্থাপন্ন লোক ছিলেন
সোহরাব
হোসেনের দাদারা।
তিনি থাকতেন অন্য পাশে। এই
পাশে মানে বর্তমানে যেখানে সোহরাব
সাহেবের বিশাল
বাড়ি দাঁড়িয়ে আছে সেখানে থাকত
গরীব
লোকেরা। অনেকটা বস্তির মত। এরকমই
এক গরীব লোকের ঘর হঠাৎ
একদিন ফেটে গেল। বিশাল ফাটল।
সেই
ফাটা অংশ দিয়ে তল পর্যন্ত
দেখা যায়।
ভয় পেয়ে গরীব লোক গেল
সোহরাব
সাহেবের দাদার কাছে।
তিনি এসে দেখেন এ যে গুপ্তধনের
চিহ্ন! গরীব লোকটাও বুঝে গেল।
স্টিলের বড়
লাটি দিয়ে মাটির ফাঁক
দিয়ে খোঁচা দিলে ধাতব শব্দ হয়।
সোহরাব হোসেনের দাদা লোকটার
কাছে বাড়ি কিনে নিতে চাইলেন।
লোকটা রাজি হল না। তাই
তিনি সরে এলেন।
পরদিন সকালে মাটির ফাঁকের
মধ্যে লোকটির মৃতদেহ পাওয়া গেল।
ভুতের ভয়ে আশপাশের
বাড়ি ছেড়ে গরীব
লোকেরা অন্যত্র চলে যাওয়ার পর
সোহরাব হোসেনের দাদা এই
জায়গা কিনে এখানে বাড়ি করেন।
পুলিশের ভয়ে আয়োজন
করে খোঁড়াখোঁড়ি করেন নি।
তবে শোনা যায় রোজ
রাতে যেখানে মাটির
ফাটল ছিল সেই কক্ষ তিনি খোঁড়তেন।
স্বর্নমুদ্রা পেয়েছিলেন কি না কেউ
জানে না।
সোহরাব হোসেনের
দাদা কীভাবে মারা যান
তা জানতে পারি নি।।
তার ছেলে মানে সোহরাব
হোসেনের
বাবার মৃত্যু হয় অস্বাভাবিক ভাবে।
সেই
গুপ্তধনের কক্ষে।
এই ধারায় তৃতীয় মৃত্যু হল সোহরাব
হোসেন সাহেবের। একই বাড়িতে।
নিয়ম মতে এবার সোহরাব সাহেবের
ছেলের পালা। সোহরাব সাহেবের
ছেলে এখন বিপর্যস্ত। বাপের
অস্বাভাবিক
মৃত্যু এবং পূর্বপুরুষদের
মৃত্যুর
কাহিনী তাকে অনেকটা বিচলিত
করেছে।
প্রাথমিক ভাবে এলাকার মানুষের
ধারনাটাই উপস্থাপন করছি।
এলাকার মানুষ মনে করে সোহরাব
সাহেবের দাদা গরীব লোকটিকে এই
বাড়িতেই হত্যা করেছিলেন।
এখন সে ভুত হয়ে হত্যার প্রতিশোধ
নিচ্ছে।
মানুষ এই বাড়িকে ভয় পায়।
কুকুর ও নাকী এই বাড়িতে প্রবেশ
করে না। যেমন, শোনা যায় টাওয়ার
অব
লন্ডনের সল্ট টাওয়ার নামক এলাকায়
কুকুর ও ভয়ে ঢোকে না। পশুপাখি ভুত
প্রেত বা প্রেতাত্বার উপস্থিতি টের
পায়।