ভাঙ্গা বিল্ডিং এর ভয়ংকর ভুত
আমার বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটা বাড়ি ছিল। আমি বোঝার পর থেকেই দেখেছি বাড়িটি পরিত্যক্ত তবে কিছু বছর আগে সেখানে একটি অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির কাজ শুরু হয়। অনেকবার বাবার কাছে জানতে চেয়েছিলাম বাড়িটির ইতিহাস সম্পর্কে বাবা ও ঠিকভাবে বলতে পারেননি।আমরা এখানে বাড়ি করেছি প্রায় 35 বছর হবে, আমাদের এখানে বাড়ি করার আরো অনেক আগে থেকেই নাকি বাড়িতে পরিত্যক্ত। পরিত্যক্ত বাড়ি হতেই পারে কিন্তু এই বাড়িটা জুড়ে ছিল বিভিন্ন কাহিনী ।
সবাই আমরা জানি যে কোন বাড়ি বা কোন জায়গা বেশি দিন পরিত্যক্ত থাকলে সেখানে শয়তানের বা জিনের আস্তানা গড়ে ওঠে। হয়তো বাড়িটির ক্ষেত্রেও তা হয়েছিল। ১২ কাঠার উপরে বিশাল জায়গা জুড়ে অস্তিত্ব ছিল বাড়িটির।আমি যতটুকু দেখেছি সেই অনুযায়ী বর্ণনা দিলাম বাড়িটির আমি জন্মের পর থেকেই কয়েকটা দেয়াল ছাড়া আর কিছুই দেখিনি । বাবার থেকে জানতে পেরেছিলাম যে এই বাড়িটা নাকি একতলার টিন সেট বাড়ি ছিল চারপাশে দেয়াল উঠানোর উপরে টিন ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এটা ভঙ্গুর দশা পরিণত হয়েছে। রাতের কথা তো বাদই দিলাম দিনের বেলায়ও আশেপাশে কেউ যেত না ।
অনেক ঘটনায় ঘটেছে বাড়িটা জুড়ে, কিন্তু নিজের চোখে দেখা বলতে যখন ২০১৫ সালে এই বাড়ির অ্যাপার্টমেন্টের কাজ শুরু হয় তখন থেকেই একটার পর একটা ঝামেলা চলছিল। চারতলা পর্যন্ত বাড়িতে উঠানোর পরে যখন আশেপাশে বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে পাশে আস্তর করার কাজ করা হবে ঠিক সেই সময় রশির গিটের মধ্যে আগুন ধরে যায় নিজের চোখে দেখা এটা। এলাকার সব মানুষরা হত বিহ্বল হয়ে এই দৃশ্য দেখেছিল কারো জানা নেই এর পেছনের কারণটা আসলে কি। এর থেকেও সবচেয়ে রহস্যের বিষয় হচ্ছেন এই বাড়ির লিফট এরিয়া নিয়ে। লিফটের ঘর তৈরির কাজটা কোনভাবেই করা সম্ভব হতো না বলতে গেলে কোন ভাবেই না। এমনও হয়েছে রাতে ঘর তৈরি করে গেছে সকালে এসে দেখেছে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত পর্যন্ত। সেখানে লিফটের কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি তারা ।
২০২৫ সাল চলছে বাড়িটি এখন ছয়তলা । ২০১৫ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই লিফটার কাজ এখন পর্যন্ত স্থগিত। মাঝখানে ২০১৮ সালের মাঝে তিন তলা থেকে একটি ল*শ উদ্ধার করা হয়। ছেলেটির পো*মাটাম পর্যন্ত করা হয় কিন্তু আজ পর্যন্ত ধরা যায়নি যে সে কিভাবে মারা গেছে। শুধু একজন না আরো অনেক ল*শ উদ্ধার হয়েছে বাসা থেকে যেহেতু আমাদের এলাকাটা আগে থেকেই গুন্ডা মা*স্তানে ভরপুর তাই মানুষের ধারণা এর পেছনে বড় গুন্ডা বা মা*স্তানতের হাত রয়েছে কিন্তু আসলে কি সেটা আল্লাহই হয়তো ভালো জানেন।
বাড়িতে নির্মাণ কালে বাড়িটির বিভিন্ন মিস্ত্রীরা আশেপাশে মানুষদের জানান যে তারা প্রায়ই গভীর রাতে একটা মহিলার কান্নার আওয়াজ পেতেন। বাড়িতে নির্মাণের অর্ধেক সময় মিস্ত্রি আর কন্ট্রাকটার রা এই বাড়ি ছেড়ে চলে যায় বলতে গেলে পালিয়ে যায় । এমনকি অনেকবার কন্ট্রাকটার পর্যন্ত বদল করা হয়েছে। তাই হয়তো বাড়িতে নির্মাণের জন্য এত সময় লেগেছে। এখনও বাড়িটি প্রবেশে করলে দেখা যায় লিফটের কাছে জায়গাটায় এখনো নিস্তব্ধতা বিরাজ করে সেখানে কোন মানুষ এমনকি বাড়ির দারোয়ান পর্যন্ত যাওয়ার সাহস পায় না দুজন দারোয়ান একসাথে বাইরে পাহারা দেয় তারাও প্রায় বিভিন্ন রকমের আওয়াজ চিৎকার কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। ৩ তালার যে ফ্লাটটা থেকে ছেলেটার ল*শটা উদ্ধার করা হয় সেই ফ্ল্যাট টা এখনো খালি সেই অ্যাপার্টমেন্টটা কিনেছিল এক হিন্দু লোক। অ্যাপার্টমেন্টে ওঠার তিন মাসের মধ্যেই লোকটি বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। কিন্তু এর কারণটা অবশ্য সবারই অজানা।
ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেয়ার কথা বলা হয়েছে কিন্তু কোন ভাড়াটিয়াই এক মাসে বেশি এই বাড়িতে আসতে টিকতে পারে না তারা প্রায়ই বলে রাতের বেলা হলে খটখট আওয়াজ আসে । এমনকি ছোট বাচ্চারা প্রায় অসুখে ভুগে কোনমতে তাদের অসুখ কাটেনা। অনেকে তো বলে রাতের বেলায় ছা*য়াও দেখেছে একটা অবয়ব রাতের বেলায় আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। তাই হয়তো অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই তিন তালার ফ্লাট টি আর ভাড়া হয় না।
একদিন জুম্মার নামাজের সময় মসজিদের ইমামকে ওই বাড়ির দারোয়ান বলেছিলেন তিনি নাকি রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ বাড়ির আশেপাশে যখন ঘোরাফেরা করছিলেন বাড়িরটি পাহারা দেয়ার জন্য তখন তিনি খেয়াল করলেন তিনতলায় একটা ছোট ছেলে দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। বারান্দায় থেকে উঁকিঝুঁকি মারছে আশেপাশে। প্রথমে দারোয়ানটি দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে তারপর অপর দারোয়ান থেকে ডেকে নিয়ে আসে বললেন। দুইজনেই দেখলো ছোট বাচ্চাটিকে,পরনে সাদা জামা চেহারার স্পষ্ট ছিল না। তারা বিষয়টি অতো গুরুত্ব দেয়নি কিন্তু যখন তারা বুঝতে পারে এটা সেই ফ্ল্যাট , অর্থাৎ এটা ছিল খালি ফ্ল্যাট এখানে মানুষ কোথা থেকে আসবে তাও আবার ছোট ছেলে এটা অবিশ্বাস্য তারা দুজনেই প্রচুর রকমের ভয় পায় ।
কিছুদিন পর মসজিদের ইমাম সাহেবকে জানানো হয় এ বিষয়ে। ইমাম সাহেবকে জানানোর বিষয়টা নতুন নয় বাড়ির যখন নির্মাণ কাজ চলছিল তখন বারে বারে লিফটের ঘরটা নির্মাণ করা যাচ্ছিল না তখন বাধ্য হয়ে বাড়ির মালিকেরা আমাদের এলাকার বড় ইমাম সাহেবকে ডেকে নিয়ে যান । বাড়িটিতে একরাত থাকার জন্য এবং বাড়িটিকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য। ইমাম সাহেবও কোরআন শরীফ আর জায়নামাজ নিয়ে বাড়িতে উদ্দেশ্যে রওনা করলেন পথিমধ্যে নাকি তার শরীর ভার হতে লাগলো কিন্তু তিনি দোয়া দরুদ পড়ে নিজের শরীরকে বন দিলেন। তারপর লিফটের পাশে জায়নামাজ বিছিয়ে ওইখানে কোরআন শরীফ তেলাওয়াত শুরু করলেন। রাত্রে তিনটা পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলে কিন্তু রাতের সাড়ে তিনটার পর থেকে পাওয়া গেল অস্পষ্ট আর্তনাদ। বাড়ির সামনে দুজন দারোয়ান পাহারা রত ছিল। আর ভিতরে ইমাম সাহেব একাই ছিলেন। তিনি আর্তনাদ শুনেও কোরআন শরীফের পড়ার গতি আরো বাড়িয়ে দেন কিন্তু তিনি হঠাৎ করে লক্ষ্য করতে পারলেন সিঁড়ি বেয়ে নামছে কিছু একটা। শুধু ইমাম সাহেব লক্ষ করলেন অবয়ব মতো কিছু একটা অর্থাৎ এর শরীর বা স্পষ্ট চেহারা বলতে কিছুই নেই ওই আশেপাশে ঘুরছে আর আর্তনাদ করছে।
ইমাম সাহেব ওইখানেই জ্ঞান হারান পরে যখন সকালে ফজরের আজান দিল তখন ইমাম সাহেবের মাদ্রাসাতে থাকে কিছু ছেলেরা এলেন তার খোঁজ করার উদ্দেশ্যে তখন তারা ভিতরে দেখতে পেলেন ইমাম সাহেব অজ্ঞানরত অবস্থায় পড়ে আছেন নিচে। এরপর আর কি হলো তা জানা যায়নি পুরো বিষয়টাকে থামা চাপা দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কিছু বছর পরে মসজিদে জুম্মার নামাজের পরে যখন দারোয়ান ওই বাড়িটির বিষয়ে কথাটি তুললেন তখন ইমাম সাহেব তাদের পুরো ঘটনা খুলে বললেন যে ওখানে নিশ্চয়ই কোন খারাপ কিছু অস্তিত্ব রয়েছে যেটা ভীষণ খারাপ আমার সামর্থ্য ছিল না সেটাকে তাড়ানোর। আমার থেকে খুব শক্তিশালী ছিল সেটা। এবং দারোয়ানকে সাবধান করে দেন সে বাড়ি থেকে। দারোয়ান রা কিছুদিন পরে চাকরি ছেড়ে চলে যায়। আরো অনেক ঘটনা আছে এই বাড়িকে ঘিরে। আপনাদের মাঝে আমি সত্যিটা তুলে ধরলাম যতটুকু আমি জানি।
(অনেকেই কমেন্ট করবে বাড়িটা কই বাড়িটির এড্রেস টা দেন। সত্যি বলতে বাড়ির এড্রেস টা বললে ঝামেলায় পরতে পারি। কারণ এটা তো কোনো সরকারি সম্পত্তি না এটা হচ্ছে একজনের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। তাই অনুগ্রহ করে কেউ বাড়ির এড্রেস চাইবেন না।বাড়িটির ছবি আর এড্রেস আমার কাছে থাকলেও দেওয়া সম্ভব না)