ভুতের গল্প ৪১ জাউরা ভুত
আত্মা কিংবা অতৃপ্ত আত্মা আছে কি নেই সে তর্কে না গিয়ে লৌকিক পৃথিবীতে অলৌকিক কিছু সত্যি ঘটনা ঘটেছে। এ রকম কিছু অলৌকিক সত্যি ঘটনা নিয়ে লিখেছেন সুরাইয়া নাজনীন কবর থেকে কথা বলা! চার্লস ডিকেন্স যখন মারা যান, সে সময় তার বয়স ছিল ৫৮ বছর। মারা যাওয়ার আগে তিনি The Mystery of Edwin Drood নামে একটি রহস্যোপন্যাস লেখা শুরু করেছিলেন, যেটা রয়ে গিয়েছিল অসমাপ্ত। তার মৃত্যুর পর তার ছেলেসহ অনেকেই চেষ্টা করেন উপন্যাসটি শেষ করার, কিন্তু ব্যর্থ হন। ১৮৭৩ সালে এ উপন্যাসের সবচেয়ে বীভৎস সংস্করণ বের হয়। থমাস জেমস নামের একজন লেখক জানান, খোদ চার্লস ডিকেন্সের আত্মা কবর থেকে উঠে এসে তার দেহে ভর করে ও উপন্যাসটি শেষ করে! এর প্রমাণ হিসেবে জেমস নিজের হাতে লেখা গল্পের পাণ্ডুলিপ দেখান। সেখানে যে হাতের লেখা ছিল তার সঙ্গে জেমস কিংবা ডিকেন্স কারোর হাতের লেখারই মিল ছিল না। বইটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে সাড়া পড়ে যায়। অনেকে জেমসকে ধাপ্পাবাজ বললেও অনেক বিখ্যাত লেখক যেমন শার্লক হোমস সিরিজ রচয়িতা স্যার আর্থার কণ্যান দয়েল জেমসকে সমর্থন জানান। অত্যন্ত অদ্ভুতভাবে এ বইটির পর জেমস আর কোনো বই লিখতে সক্ষম হননি। কোটেই ভবনের বিদেহী আত্মারা! মার্কিন প্রেসিডেন্টদের ভবন হোয়াইট হাউস নিয়ে অনেক অনেক অদ্ভুতুড়ে ঘটনা শোনা যায়। কিন্তু জাপানের প্রধানমন্ত্রী ভবন ‘কোটেই’ও সম্ভবত অশরীরী আত্মাতে গিজগিজ করছে! ১৯২৯ সালে এ ভবনটি নির্মিত হয়। তখন থেকে এখানে বসবাসকারী জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও ফার্স্টলেডিরা এ বাড়িতে অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটার অভিযোগ করে আসছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে এ বাড়িতে থাকতে আপত্তি জানান। যদিও তিনি বলেছেন যে, এত বড় বাড়ি তার প্রয়োজন নেই, কিন্তু জাপানের প্রভাবশালী পত্রিকা ‘আশাহি শিম্বুন’ জানায়, শিনজো আরেকজনকে বলেছিলেন যে, কোটেইতে ভূত আছে, তাই তিনি সেখানে থাকতে চান না। এ বাড়িটির দীর্ঘ ইতিহাস হচ্ছে রক্তাক্ত। ১৯৩২ সালের ১৫ মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইনুকাই তয়ুশি নৌবাহিনী অফিসারদের হাতে খুন হন। এ ঘটনার চার বছর পর ২৮০ জন সেনা অফিসার এ ভবনের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তুমুল গোলাগুলিতে চারজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। দুর্ভাগ্যক্রমে চেহারায় মিল থাকায় নতুন প্রধানমন্ত্রী কেইসুকি ওকাডার দুলাভাই নিহত হন, কিন্তু ওকাডা পালিয়ে যান। সে ঘটনাগুলোর এত বছর পরও এ ভবনের ক্ষত-বিক্ষত দেয়াল সে বীভৎস ঘটনার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এখনো এ ভবনে অশরীরী সেনাদের দেখা পাওয়া যায় বলে দাবি করেছেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিরো মরি। খাঁচাবন্দি পিশাচ! আমেরিকার পেনসিলভানিয়ার ক্যাটাউইসার পুরনো মাউন্ট জায়ান্ট সমাধি ক্ষেত্রে গেলে একটি বিচিত্র দৃশ্য দেখা যাবে। এক জোড়া কবরকে ঘিরে দেয়া হয়েছে খাঁচা দিয়ে। দুটি কবর ছিল দু’জন মহিলার, যারা ১৮৫২ সালে মারা গিয়েছিলেন। এখানে তৃতীয় আরেকজন মহিলার কবর ছিল, যার নাম ছিল রেবেকা ক্লেটন। রেবেকার কবর মেরামতের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ায় ১৯৩০ সালে সেটাকে সরিয়ে নেয়া হয়। তিনজন মহিলাই ছিলেন নিকটাত্মীয়। বিয়ের অল্প কিছুদিন পর তিনজনই মারা যান। কেন তাদের কবরকে খাঁচায় আবদ্ধ করা হয়েছিল? অনেকে বলেন, সে সময় এরা কলেরায় ভুগে মারা গিয়েছিলেন। পানিবাহিত এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে যায় বলে এদের আলাদাভাবে কবর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে খাঁচা কেন দিতে হবে, কবর দেয়াই কি যথেষ্ট নয়? বিকল্প বক্তব্য হচ্ছে, এ তিনজন মহিলাই ছিলেন ভ্যাম্পায়ার, যারা রাতের বেলায় কবর থেকে উঠে এসে জীবিত মানুষের রক্তপান করতেন!
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment