ভুতের গল্প ৪২ দোহার ভুত
আমার নাম হাসান মাহমুদ। আমার বাড়ি ঢাকা জেলার দোহার থানার জয়পাড়া গ্রামে। আমি এখন যে ঘটনাটি শেয়ার করছি এটা তেমন ভয়ংকর ঘটনা না হলেও এটা একটা সত্যি ঘটনা। ঘটনাটি পড়ে কার কেমন লাগবে আমি জানিনা, তবে ঘটনাটি পড়ার পর কারো কাছে ভাল না লাগলে দয়া করে কেউ কোন বাজে কমেন্ট করবেন না। ঘটনাটি আমার দাদার। আমার দাদারা ছিলেন ৫ ভাই। ভাইদের মধ্যে আমার দাদা ছিলেন সবচেয়ে বড়। আমার দাদার প্রায় অনেকগুলো মহিষ ছিল, আর সেগুলো দেখাশোনা করত ২ জন লোক। দাদার ৩ নাম্বার ভাইয়ের নাম এয়াকুব আর তিনি ছিলেন বেশ শক্তিশালী। দাদাদের একটা বলি মহিষ ছিল, যা একমাত্র এয়াকুব দাদা ছাড়া আর অন্য কেউই বাঁধতে পারতনা। ঘটনাটি যেদিন ঘটেছিল সেদিন ছিল বুধবার আর তখন রাত প্রায় সাতটা কি সাড়ে সাতটার মতন হবে। বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। হঠাৎ এয়াকুব দাদা শুনতে পায় তার বড়ভাই (আমার দাদা) বাইরে থেকে এয়াকুব! এয়াকুব! বলে মহিষের ঘরের দিক থেকে ডাকছে আর বলছে, এয়াকুব! তাড়াতাড়ি আয়! মহিষ ছুটে গেছে! বাঁধতে হবে! দাদার ডাক শুনে এয়াকুব দাদা বাইরে গিয়ে দেখে মহিষটা একটা জঙ্গলের দিকে ছুটছে। এটা দেখে এয়াকুব দাদা মহিষের পিছু পিছু ছুটে যায়। কিন্তু কিছুদুর গিয়ে দেখে যে, সেখানে কোন মহিষ নেই। সে বুঝতে পারল হয়তো মহিষটা জঙ্গলের ভেতর ঢুকে পরছে। কিন্তু তখন সেখানে প্রচণ্ড অন্ধকার। তাই সে ভাবল যে বাসায় গিয়ে একটা মশাল নিয়ে এসে ওটাকে খুজবে। কিন্তু সে যখন পেছনে ঘুরবে, হঠাৎ করেই সে তার কাঁধের উপর ঠাণ্ডা কিছু একটা অনুভব করল। সে বুঝতে পারল তার কাধের উপর একটা ঠাণ্ডা হাত। সে পেছনে ঘুরে দেখে তার বড় ভাই অর্থাৎ আমার দাদা। সে দাদাকে বলল, যে মহিষটা জঙ্গলের ভেতরে ঢুকে পরছে। বাসায় থেকে একটা মশাল আনতে হবে। কিন্তু আমার তার বড় ভাই (আমার দাদা) তাকে বলে যে, কোন মশাল আনতে হবে না। তুই আমার সাথে আয়। এই বলে সে এয়াকুব দাদার হাত ধরে টানতে শুরু করে। এয়াকুব দাদা তাকে যতই বোঝানোর চেষ্টা করল তাতে কোন কাজ হল না। সে তাকে হাত ধরে টানছে তো টানছেই। টানতে টানতে একসময় সে এয়াকুব দাদাকে নদীর দিকে টেনে নিয়ে যায়। এয়াকুব দাদা বুঝতে পারে যে এটা আসলে তার ভাই নয় অন্য কিছু। সেও তখন তাকে উল্টো দিকে টানতে শুরু করে। এইভাবে প্রায় অনেক্ষন ধস্তাধস্তি চলতে থাকে। দাদা বাড়িতে দাদিকে জিজ্ঞেস করে এয়াকুব কোথায়? দাদি বলল, তুমি না তাকে ডেকে নিয়ে গেলে। দাদা ভীষণ অবাক হয়ে গেল। সে দাদিকে বলল, আমিতো এই মাত্র বাজার থেকে ফিরলাম। আমি আবার কখন ওকে ডেকে নিয়ে গেলাম? দাদা সবকিছু বুঝতে পারে আর মশাল সহ ৫/৬ জন লোক নিয়ে জঙ্গলের দিকে হাঁটতে শুরু করল। একসময় খুজতে খুজতে তারা নদীর পারে চলে যায় আর দেখে সেখানে এয়াকুব দাদা কোমর পর্যন্ত পানিতে গাড়া অবস্থায়। পরে সবাইমিলে তাকে ধরে সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে। সেদিন আর এয়াকুব দাদার কোন হুশ জ্ঞান ছিল না, সে প্রচণ্ড ভাবে কাপছিল আর তার মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছিল না। পরদিন এয়াকুব দাদা সবাইকে সবকিছু খুলে বলে আর বিকেলের দিকে সে মারা যায়।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment