ভুতের গল্প ২৬ মাথাহীন লাশ শ্যামপুরের ভুত
রাত হলেই শ্যামপুর গ্রামে সুনসান
নিরবতা নেমে আসে- এই
নীরবতার মাঝে থাকে শুধুই পাতার
মর্মর আওয়াজ আর
ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। একটানা সেই
ডাকে মোহনীয়
হয়ে থাকে যেন কুসুমপুর গ্রাম।সুনসান
নিরবতার এই
গ্রামে আজ ও রাত নেমে এসেছে।
কিন্তু প্রতিদিনের মত
চুপচাপ নেই কেউ।
খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ত যে কৃষক সে ও
এসে ভিড়
করেছে কালনীর
শাখা নদী সুলিনার তীরে। ব্যাপার
কিছুই না-
সেখানে ভেসে উঠেছে এক মহিলার
লাশ।
সবাই যে যার মত বলাবলি করছে,
চিনতে চেষ্টা করছে লাশটাকে-
কিন্তু কেউ চিনতে পারছেনা।
কারন কেউ এই মহিলাকে খুন
করে মাথাটা কেটে ফেলেছে।
এখন চারদিকে লোক
পাঠানো হয়েছে মাথার খোঁজে।
মাথা খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত এই
লাশ দাফন করার জন্য কেউ
এগোচ্ছেনা । এর মাঝেই কোন কোন
উতসুক
জনতা গিয়ে দূর
থেকে কাঠি দিয়ে লাশের হাত
পা দেখার
চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু কোন
ফলাফল নেই।
হাতে পায়ে কোন চিহ্ন নেই-
যে লাশটাকে চেনা যায়। রাত
যত বাড়তে থাকে –তত ভীর
বাড়তে থাকে। মাঝে ভীরের চাপ
কমে গিয়েছিল। কিন্তু হটাত
করে শোনা যায় শেখের বাড়ির
সুলেখা কে পাওয়া যাচ্ছেনা।
ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করে ঘর
থেকে রেগে মেগে বের
হয়ে গিয়েছিল সুলেখা। তারপর
থেকে ওর
পাত্তা নাই। সৎ মা ও সুলেখার
কোন খোঁজ করেনাই। এখন
ও সুলেখার মায়ের কোন দেখা নাই।
শুধু ওর বড় ভাই জমির
শেখ এর
কান্না কাটি চলছে লাশটার
পাশে। অনেকেই
ওকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে-
কিন্তু পারছেনা। বার বার
আছাড়
খেয়ে খেয়ে মরা কান্না জুড়ে দিয়েছে জামাল
শেখ।
ছোট বোন টাকে অনেক ভালবাসত
সে। সকালে ঝগড়া হবার
সময় বলেছিল-
“যা- দূরে যাইয়া মর গা” এখন সেই
কথা শুনিয়ে বলতে বলতে চিৎকার
করে কেঁদে উঠল ও। কিন্তু
লাশের পরিচয় পাওয়া গেলনা। এর
মাঝেই গ্রামের তিন জন
মুরুব্বি এসে নিজেদের
মাঝে বাহাস করতে লাগল। কেউ এই
লাশ দাফন করতে চায়- কেউ
নিয়ে ফেলতে চায় সেই পানিতে-
যেখান থেকে ভেসে এসেছে লাশ।
কেউ কেউ জানাজা পড়ার
জন্যই বসে থাকল। কিন্তু লাশের
পরিচয় পাওয়া গেলনা।
এর মাঝেই একটা চিৎকার শুনে সবাই
দৌড়ে গেল সেই
চিৎকারের উৎসের দিকে।
সেখানে এক ১২-১৩ বছরের
ছেলে মাটিতে হোঁচট
খেয়ে ঊল্টে পড়ে আছে। কিন্তু
চিৎকার
করেছে ভয়ে। কারন সে যে জিনিস
টার সাথে হোঁচট
খেয়েছে সেটা আর কিছু না – সেই
বেওয়ারিশ লাশের মাথা।
মাটিতে সামান্য গর্ত করে কেউ
ঢুকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু
মাটি আলগা হওয়াতে তাতে হোঁচট
খেয়েছে ছেলেটা।
এরপর পরই ওঠে কান্না কাটির রোল।
সুলেখার নাকের ফুল
দেখেই সবাই
চিনে ফেলে এটা সুলেখার লাশ।
সাথে সাথেই দুই
তিন জন মিলে সেই লাশের
মাথা নিয়ে এসে লাশের
পাশে রাখে। মরা কান্না জুড়ে দেয়
জামাল শেখ আর তার
আত্মীয় স্বজন রা।
গ্রামের মাতব্বর দের মাঝে দুই-
তিনজন এই লাশের
জানাজা করে দাফন করতে চায়না।
চার পাঁচ জন তাদের
সাথে কোরান-হাদিস
নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। ওই
গ্রামের
মসজিদের মওলানার সাথে তর্ক
লেগে যায় করিম মওলা আর
তার ছেলে রহমান মওলার ।
শেষে কোন
মিমাংসা করতে না পেরে সেই
লাশ দুই তিন জন মিলে কোন
রকম জানাজা পড়ে দাফন করে। এর
মাঝে গ্রামের হেডমাষ্টার
সবুজ মিয়া ও ছিল। সবুজ
মিয়া নিজের দায় থেকে এই
কাজে উৎসাহ দেবার জন্য
দোষি সাব্যস্থ হয় পরদিন এক
সালিশে। দিন সাতেক সবার
মুখে মুখে এই ঘটনা একের পর এক
ডানা মেলতে থাকে। কেউ কেউ
বলা শুরু করে সবুজ মিয়া এই
সুলেখার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আর
এর রেশ ধরে কয়েকদিন
পর আবার সালিস ডাকা হয়। যেই
তিন জন লাশ দাফন ও
জানাজা করতে চায়নি তাদের
রায়ে সবুজ মিয়া কে এক
ঘরে করে রাখে সবাই। আসলে ওই
তিন জন খুব
ক্ষমতা শালী বলে কেউ ওদের
মুখে মুখে তর্ক করতে চায়নি।
তাদের মাঝে রহমান মওলা পরের
মাসে চেয়ারম্যান
পদে ভোটে দাড়াচ্ছে। তাই তার
সাথে কেউ
কথা কাটাকাটি করতে চায়নি।
ফলাফল নিরিহ সবুজ
মিয়াকে এড়িয়ে চলতে শুরু
করে সবাই। কিন্তু সুলেখার ভাই
জামাল শেখের বন্ধুত্ব ছিল।তাই
সবুজ মিয়াকে নিজের
ঘরে খাওয়াতে শুরু করে সে। এর
মাঝে সবাই সুলেখার
কথা প্রায় ভুলে যায়।
দুই সপ্তাহ পর একদিন গ্রামের
মসজিদের ইমাম ইসমাইল
মিয়া ফজরের নামাজের আজান
দিয়ে গিয়ে এক বীভৎস দৃশ্য
দেখে ভয়ে চিৎকার করে অজ্ঞান
হয়ে পড়ে। সকালে সবাই
তাঁকে অজ্ঞান অবস্থায়
মসজিদে খুঁজে পায়। কেউ
বলতে পারছেনা কেন সে অজ্ঞান
হয়েছে। অনেক ক্ষন পর তার
জ্ঞান
ফিরলে সে সবাইকে নিয়ে যায়
সুলেখার লাশ
যেখানে দাফন করা হয়েছিল
সেখানে। সুলেখার লাশের
পাশে একটা জারুল গাছ আছে –
সেখানে একটা ডালে পাওয়া যায়
করিম মওলার ছিন্ন ভিন্ন
লাশ। প্রথমে কেউ চিনতে পারেনি।
কিন্তু গাছের গোড়ায়
কে যেন লাশের
মাথাটা সযত্নে কেটে সুন্দর
করে সাজিয়ে রেখেছে।
দৃশ্যটা দেখে অনেকেই সহ্য
করতে পারেনি। শেষে পুলিশ
দেকে পাঠানো হয়। পুলিশ
এসে লাশ নিয়ে যায় ময়না তদন্তের
জন্য। এর মাঝে রহমান
মওলা ক্ষেপে যায় নিজের পিতার
এই
অবস্থা দেখে। বিকেল
যেতে না যেতেই সবুজ মিয়ার
বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেয় সে।
সবাইকে বলে বেড়াতে থাকে যে সবুজ
মিয়ে গুন্ডা লাগিয়ে তার
বাবাকে হত্যা করিয়েছে। এই সময়
তার সাঙ্গ
পাংগরা মিলে সবুজ
মিয়াকে গাছের
সাথে বেধে ইচ্ছা মত
মারতে থাকে। শেষে মার
খেয়ে সবুজ মিয়ে অজ্ঞান
হয়ে গেলে ওকে নিয়ে স্কুল ঘরের
একটা রুমে বেধে রাখে। সবাই
গোপনে সুলেখার ভুতের
কথা বললেও রহমান মওলার
সামনে কেউ তর্ক করেনি মার
খাবার ভয়ে। এর পর
থেকে দুইদিন ধরে বন্দি থাকে সবুজ
মিয়ে সেই স্কুল ঘরে।
সকাল বেলা এসে রহমান মিয়ার
লোক খাবার দিয়ে যায়। সবুজ
মিয়ের খাওইয়া শেষ হলেই মার শুরু
হয়। শেষে অজ্ঞান
হয়ে পড়লে তাকে দড়ি বেধে রেখে যায়
রহমান মওলার
লোকজন।
এর তিন দিন পরেই আবার শ্যামপুর
গ্রামে শোর গোল ঊঠে।
এবার ভোর সকালে পাওয়া যায়
রহমান মওলার
মাথা কাটা লাশ।
মাথা কাটা লাশ গ্রাম
বাসি দুইটা দেখেছে।
কিন্তু এই রহমান মওলার লাশের
পায়ের দিকটা ছিলনা।
পাশেই পড়েছিল হাড় গোড়। যেন
কেউ
এসে খেয়ে গেছে লাশটাকে। এবার
পুলিশ
এসে সবাইকে জেরা করতে শুরু করে।
এবং গ্রামের বেশ
কয়েকজন লোকজন পালিয়ে যায়
ভয়ে। কিন্তু পুলিশকে রহমান
এর ভাই রহিম
মওলা টাকা খাইয়ে বিদায়
করে দেয়। গ্রাম
বাসি স্বস্তি পেলেও
ভয়ে বাড়ি থেকে দিনের বেলা ও
লোকজন
বের হওয়া বন্ধ করে দেয়। সবুজ
মিয়াকে নির্যাতন বন্ধ
করা হয়- কিন্তু তাকে বন্দি করেই
রাখা হয় সেই স্কুল ঘরে।
এর সাত দিন পরেই পর পর দুই জন
লোকের লাশ পাওয়া যায়
মাথা কাটা অবস্থায়। এই দুই জন হল
গ্রামের সেই দুই
মুরুব্বি যারা সুলেখার লাশ
দাফনে বাঁধা দিয়েছিল।
যারা সুলেখার
জানাজা পড়তে চায়নি।গ্রাম
বাসি এরপর প্রায়
চুপচাপ হয়ে যায়। যারা সেই
রাতে মুরুব্বি দের
সাথে গলা মিলিয়েছিল
তারা দুরের গ্রামে পালিয়ে যায়।
এর
মাঝে পুলিশ এসে দুইবার
সবাইকে জিজ্ঞাসা বাদ করে।
কিন্তু
খুনি ধরা পড়েনা।
এর ঠিক দুই দিন
পরে অমাবস্যা রাতে রহিম
মওলা শুয়ে আছে ওর ঘরের খাটে।
এই কয়দিনের মাঝেই
সে নিজের
প্রতিপত্তি প্রকাশে এলাকাতে টহল
দিতে শুরু
করেছে। মোটর সাইকেল
নিয়ে এলাকার
চ্যাংড়া ছেলে পেলেদের
সাথে ঘুরে ঘুরে নিজেকে বাপ
ভাইয়ের যোগ্য উত্তর
সুরি হিসেবে জানান দিয়েছে।
সারাদিন ঘোরাঘুরি করে অনেক
বেশি ক্লান্ত ছিল রহিম মওলা।
পাশের মকবুল বুড়ার
একটা খাসি জবাই
করে খেয়ে দেয়ে শান্তির একটা ঘুম
দিয়েছে সে। প্রতিদিনের চেয়ে এই
অমাবস্যার রাত ছিল
বেশি সুনসান। রহিম মওলা গভীর
ঘুমে। এমন সময় দরজায়
টোকা পড়ে।
গুনে গুনে তিনটা টোকার শব্দ হয়।
আর তাতেই
রহিম মওলা জেগে উঠে।কিন্তু
দরজা খুলে হতভম্ভ
হয়ে পড়ে সে।দেখে তার
সামনে দাড়িয়ে ছিল একটা লাশ।
দেখেই ভয়ে হতভম্ভ হয়ে যায় রহিম।
কিছু বুজে ঊঠার আগেই
সেই লাশের ডান হাত তার মাথার
ঊপর উঠে আসে।
এবং জ্ঞান হারায় রহিম মওলা।
জ্ঞান ফিরেই একটা কুয়াশাচ্ছন্ন
এলাকার আবিষ্কার
করে রহিম মওলা নিজেকে।
চারদিকে ঘন কুয়াশার
মাঝে কয়েকবার নিজের বন্ধুদের
নাম ধরে ডাক দেয়। কিন্তু
কেউ সাড়া দেয়না। মনে করেছিল
ওর সাঙ্গ পাংগ দের কেউ ওর
সাথে ফাজলামি করছে। চিৎকার
করে বিশ্রী গালাগাল ও দিল
কিছু। কিন্তু এরপর ই চার
দিকে চারটা কাফনে জড়ানো লাশের
অস্তিত্ব অনুভব
করে সে। এবং একটু পড়েই চার দিক
থেকে বেতের বাড়ি শুরু
হয়ে যায়। প্রচন্ড সেই মার
খেয়ে অজ্ঞান প্রায় রহিম মওলা-
এমন সময় মার থেমে যায়।
আসতে আসতে ঊঠে বসে সে।
সামনে তাকিয়ে তার
দৃষ্টি থেমে যায়।অবাক
হয়ে তাকিয়ে থাকে রহিম-কারন
তার সামনে বসে আছে সুলেখা।
দেখেই ভয়ে চিৎকার
করতে ভুলে যায় সে। এমন সময়
সুলেখা বলে উঠে-
“কি রে আমারে চিনতে পারসোস?
আমি সুলেখা-এই যে দেখ
আমার মাথা এহন ও কাডা”- বলেই
নিজের মাথাটা দুই হাত
দিয়ে একটানে খুলে রহিম মওলার
সামনে ধরল। দেখেই
বমি করে দিল রহিম মওলা। দুই হাত
দিয়ে পেট
চেপে একপ্রস্ত বমি করে রহিম
মওলা বলল-
“আমারে ছাড়ি দেও- আমাক মাফ
করি দেও সুলি আফা-আমাক
মাফ করি দেও” বলেই হাউমাউ
করে কেঁদে ফেলল রহিম।
“কি? ছাড়ি দিমু? সেদিন কি আমাক
ছাড়িছিলি রে তোরা দুই
ভাই? আমি কতক করি কয়েছি আমাক
ছাড়ি দে-
তোরা আমার ছোট ভাই লাগস-
নিজের বইন
মনে করি ছাড়ি দে- কই সেদিন
তো ছাড়িস নাই। আমাক দুই
জন মিলি নষ্ট করলি। তারপর আমাক
যাতে কেউ
চিনতে না পারে – তুই –তুই মওলার
বাচ্চা আমার
মাথা কাটি ফালালি। আমার সবুজ
মিয়ারে কতক
মারলি তোরা- কই সেদিন
মনে আছিল না? মনে আছিল
না আমার কথা?” বলেই নিজের
মাথাটা আবার নিজের
ধরে জোড়া লাগাল সুলেখা।
এবার কেদেই ফেলল রহিম-
বলল-“আফা ভুল হইয়ে গেছে আফা-
তুমি আমারে এবারের মত মাফ
করি দেও আফা।
আমি কইতাসি আমি এর পেরাচিত্ত
করি ছাড়ুম”।
এবার খিল খিল করে হেসে ঊঠল
সুলেখা –সেই
হাসি শুনে কাঁপতে শুরু করে দিল
রহিম মওলা।
আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে আসছে সুলেখা।
সামনে ভয়ার্ত
রহিম মওলা। তারপর রহিমের
ধরে একটানে ছিড়ে ফেলল তার
মাথাটা- গলগল করে রক্ত পড়ছিল
সেই কাটা মাথা থেকে।
মাথাটা হাতে নিয়ে গা হিম
করা একটা চিতকার
দিয়ে কেঁদে উঠল সুলেখা।
এই ঘটনার কিছুক্ষন পর নিজের
চোখে মুখে জলের
ঝাপটা খেয়ে জেগে ঊঠল
জেগে উঠল সবুজ মিয়ে। সপ্তাহ
খানেক ধরে এভাবেই তার ঘুম
ভাঙ্গে। মওলা দের কেউ একজন
চোখে মুখে পানি ঢেলে দেয়।
তারপর খাওয়া দেয়। তার কিছু
খায়- কিছু খায়না। তারপর শুরু হয়
মার। আজকে তাই জেগে ও
চোখ বন্ধ করে রেখেছিল সে। কিন্তু
মাথায় একটা কোমল
স্পর্শ পেয়ে চোখ মেলে দেখে তার
সামনে দাঁড়িয়ে আছে সুলেখা।
আসতে আসতে ঊঠে বসল সবুজ।
শরীরে এতদিন না খাওয়ার
ফলে শক্তি নাই। কিন্তু কেন যেন
নিজের চোখকে খুব বিশ্বাস
করতে ইচ্ছা করছে তার।
সে বলল- “ সুলেখা তুই?”
“হ আমি –মইরা গেছিলাম।
আজকা আমার মুক্তি হইতাসে-
তাই শেষ বার
তোমারে দেখতে আইলাম” বলেই
কেঁদে ফেলল
সুলেখা।
“আমার বিশ্বাস হইতেসে না রে- তুই
কেমনে মরলি রে?”
চোখ বড় বড় করে বলল সবুজ মিয়া।
“এত শুইনে কোন লাভ নাই মাষ্টার।
তুমি আসতে আসতে ঊঠ। নাও
আমি তোমারে শেষ বারের মত
খাওয়াই দিতাসি দুইটা ভাত’ –
বলে পাশে রাখা থালা থেকে ভাত
খাইয়ে দিল সুলেখা সবুজ
কে। সবুজ নিজের চোখকে বিশ্বাস
করতে পারেনা। কোন
কিছুর সাথে কোন কিছু
মেলাতে মেলাতে ক্লান্ত
হয়ে শেষে ভাত খেতে শুরু করল
মন্ত্রমুগ্ধের মত।
খাওয়া শেষে সুলেখা বলল-
“আমি যাই মাষ্টার- তুমি কয়দিন পর
সুন্দর
দেইখে একটা নিকা কইরো।
আমাকে ভুলি যাইও মাষ্টার” –
বলেই পা বাড়াল সুলেখা।
এতক্ষন ঘোরের মাঝে থাক্লেও এখন
জ্ঞান ফিরে আসে সবুজ
মিয়ার। দৌড় দেয় দরজার দিকে।
দরজা খোলাই ছিল।
খুলে দেখে ভোর হয়ে গেছে। সূর্য
প্রায় ঊঠে গেছে।আর সেই
সূর্যের
দিকে আসতে আসতে এগিয়ে চলেছে সুলেখা।
কিন্তু
সবুজ আর দৌড়ায়নি সুলেখার পেছন
পেছন- কারন
সুলেখা এগিয়ে চলেছিল তার শেষ
ঠিকানা সেই কবরের দিকে।