ভুতের গল্প ৩৯ গ্রামের ভুত
আমি জুবায়েদ। থাকি আমেরিকায়। এটি আমার কাজিন আপনাদের কাছে পাঠিয়েছে। আসা করি এটি ছাপাবেন। ২০০৬ সাল। ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি। আমি তখন বাংলাদেশে। সবে মাত্র এম.এ শেষ করেছি। আমেরিকা থেকে বাবার ইমেইল। “ কেমন আছিস? আমি এখানে তোর মার সাথে একা একা থাকছি। কেন তুই আসছিস না? জানিস তোর জন্য এখানে একটি বিশাল বাড়ি কিনেছি। তাড়াতাড়ি চলে আয় বাবা।” ইমেইলটি পড়ে আমার কেমন জানি লাগলো। কারণ বাবার পছন্দ সেই পুরোনো আমলের বাড়ি। যেমনটা ভাবছিলাম ঠিক তাই। ইমেইল এ একটি পোড়া বাড়ি টাইপের বাড়ির ছবি দেওয়া হয়েছে। যাই হোক ওই বাড়িতেই থাকতে হবে। এক মাস পর আমেরিকায় রওনা দিলাম। গ্রামের নামটা বলছি না। মাইন্ড করবেন না। তো এখন আমি ওই বাড়িটার সামনে। আমি আর আমার ছোট বোন এখানে থাকবো। বাড়িতে ঢুকলাম। বিশাল বাড়ি। এখানে কমপক্ষে ৩০ জনের পরিবার থাকতে পারবে। বাবাও না অপচয় করেন! বাড়িতে প্রথমে ঢুকেই কেমন একটা শীতল বাতাস আমার উপর দিয়ে বয়ে গেল। বাড়িটা বেশি সুবিধার হবে বলে মনে হয় না। আমার রুমে প্রচুর ময়লা। সারাদিন লেগে গেল এগুলা পরিস্কার করতে। রাতে আমরা খাবার খেয়ে হোম থিয়েটারে ছবি দেখতে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আগে থেকেই একটি ক্যাসেট লাগানো আছে। ক্যাসেটটি খুলে লেবেল এ যা পড়লাম তা একরকম অবিশ্বাস্য। লেবেল এ লেখা ছিল “ এ বাড়ির ইতিহাস, ১৯৫৬ সাল”। তার মানে এটি অনেক আগের বাড়ি। ক্যাসেটটি দেখার ইচ্ছা হল অনেক। কিন্তু ছোট বোন ভয় পাবে বলে এটি আমার কাছে রেখে একটি মুভি চালিয়ে দেখতে লাগলাম। রাত ২টা। আমার খুব ঘুম লেগেছিল। তাই বোন কে বলে রুমে চলে আসলাম। উল্লেখ্য আমার রুমে আমার পারসোনাল বাথরুম আছে। যেই না লাইট নিভিয়েছি ঠিক তখনই মনে হল সাদা একটা জিনিস দৌড়ে বাথরুমে গেল। একদম নিঃশব্দে। আমি কিছু না দেখার ভান করে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। ভুলের বশে ওই পুরানা ক্যাসেট ওইখানেই ফেলে এসেছিলাম আমি। পরে জেনেছি ওইদিন নাকি আমার বোনটি ওই ক্যাসেট একা একা দেখেছিল। পরদিন সকাল বেলা বোনের ভাষ্যমতে, “কাল তুমি ঘুমোতে যাওয়ার পর আমার কৌতুহল হল ওই ক্যাসেটটার উপর, পরে আমি ওটা দেখলাম। ওটায় হঠাঁৎ একটি বুড়ি দেখা যায়। তারপর একটি সাদা আবরণ আমাকে গিয়ে ফেলে। আমার শরীরের ভিতর আসতে চায়। আমি দৌড়ে আমার রুমে এসে দরজা আটকিয়ে দিয়ে শুয়ে পরি। পরে আমি সপ্নে দেখি যে ওই বুড়ি টা আমাকে একটি জঙ্গলের ভিতর ধাওয়া করছে। আমি কোন মতে জঙ্গলটা পার হয়ে রাস্তায় এসে পড়ি। এসে দেখি ১৯৫০সালের মত চারদিকের অবস্থা। হঠাঁৎ বুড়িটা আমার পায়ে খামচে ধরলো। পায়ে এখনো অনেক ব্যাথা। পড়ে আর মনে নেই।” আমি তার পায়ে তাকিয়ে দেখি রক্ত জমাট হয়ে একটি মোটা হাতের আঙ্গুলের ছাপ।
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment