কেশবপুর গ্রামের ভূত

আজ থেকে ২০ বছর পূর্বে কেশবপুর নামক এক গ্রামে প্রতিদিন রাতে ২, ৩ টা অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। সবাই একটা আতংকের মাঝে থাকতো। প্রয়োজন ছাড়া বিনা প্রয়োজনে সন্ধ্যার পরে কেউ ঘর থেকে বের হতোনা। কারণ, কারো জীবন নিরাপদ ছিলোনা।
জীবন নিয়ে সবাই সংশয়ে ছিলো।
এভাবে প্রতিদিন চেনা-অচেনা লোকের মৃত্যু ঘটে চলছেই। কারো ঘাড় মটকানো,
কোন লাশের বুক গর্ত করা, আবার
কোন লাশের চোখ উপড়ানো বা চোখ নেই ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক
ঘটনা হলো লাশগুলো প্রায় একই জায়গা বা কাছাকাছি স্থানে পাওয়া যেতো। এইসব ঘটনার ফলে গ্রামের কয়েকজন যুবক মিলে যে স্থানে লাশ পড়তো ঠিক সেই জায়গায় একটি বড় শিমুল গাছে উঠে রাতের বেলায় থাকার সিদ্ধান্ত নিলো। উদ্দেশ্য কে বা কারা এই হত্যাকান্ড ঘটায়
তা সচক্ষে দেখা। বেশ কঠিন অভিযান,
ওরা সংখ্যায় ৫ জন। মুরুব্বী ও অভিভাবকদের অজান্তে তারা ৫ জন এই সিদ্ধান্ত নিলো। কারণ, কোনো মুরুব্বী এই অভিযানে ছেলেদের যেতে দিবে না। এক চাঁদনী রাতে ওরা ৫ জন শিমুল গাছের মগডালে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে, কখন তারা খুনের সেই লোমহর্ষক ঘটনা দেখবে। গভীর রাত পেরিয়ে অনেকক্ষন হয়ে এলো। এবার দেখলো কালো আকৃতির ১ টা জন্তু যার মুখ হায়েনার মত এবং দেহ মানুষের আকৃতির, জন্তুটার পুরো দেহ বড়,বড় লোমে ঢাকা। আর তার উচ্চতা প্রায় ১০-১২ ফুট এর মত। আর জন্তুটার হাতে ১টা সদ্যমৃত লাশ
জন্তুটা শিমুল তলায় এসে হাত থেকে লাশটাকে মাটিতে রাখলো। এবার
দেখা গেলো দানোটি তার ঘাড়ে বড় বড় দাঁত ঢুকিয়ে রক্ত
চুষে খাচ্ছে। এই ঘটনা দেখে ঐ পাঁচ যুবকের একজন ভয়ে চিৎকার করে উঠলো। আর তখনি হায়েনার মত জন্তুটি চোখের পলকে উধাও হয়ে গেলো। এরপর এই ঘটনা ৫ যুবক মিলে গ্রামে বলা শুরু করলো। এই ঘটনার সপ্তাহ খানিক পরে একে একে ঐ পাঁচ যুবক বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও কালাজ্বরে মারা গেলো। এরপর একজন হুজুর ঐ গ্রামের চার কোণায় ৮টা তাবিজ আর শিমুল গাছের গোড়ায় একটি কবচ পুতে দিলেন। সেই থেকে এই গ্রামে আর কোন অ্যাকসিডেন্ট হয়নি।