ভুতের গল্প ৬১ উত্তর কোরিয়ার ভুত

উত্তর কোরিয়াতে অবস্থিত একটি বাড়িকে ঘিরে একটি রহস্য দানা বেঁধে আছে। অনেকেই তাকে বলে পোড়া ভূতের বাড়ি।। অনেকেই বলে অভিশপ্ত।। এর পিছনের ঘটনা তুলে ধরছি।। এই বাড়িতে ভাড়া থাকতো একজন সরকারি কর্মজীবী।। লোকটা, তার স্ত্রী, এবং এক মেয়েকে নিয়েই তাদের পরিবার ছিল।। একদিন খুব রাতে পার্টি করে বাসায় আসার পর লোকটা এবং তার পরিবারের সবাই ঘুমাতে চলে যায়।। তাদের অসতর্কতায় চুলা থেকে প্রথমে লিভিং রুমে আগুন লাগে।। এবং পড়ে দ্রুত সেই আগুন বেডরুমে ঢুকে পড়ে।। রাতে ঘটার কারণে কেউ তাদের সাহায্য
করতে পারে নি।। ফায়ার বিগ্রেড আগুন নেভানোর পর পুড়ে কঙ্কাল হয়ে যাওয়া তিনটি লাশ উদ্ধার করে।। ঘটনা ঘটা শুরু করে এরপর থেকে।। সেই বাড়িতে প্রায় ১ বছর পর নতুন ভাড়াটে আসে।। কয়েকদিন পর থেকে তারা অভিযোগ
করতে থাকেন যে বাড়িতে নাকি সন্ধ্যার পর থেকেই ছাই উড়তে দেখা যায়।। পোড়া ছাই।। যদিও তারা ছাই তৈরি হবার মতো কোন কাজ করেন না তবুও তারা প্রায়ই এই জিনিস দেখতে পায়।। মাঝে মাঝে স্বচ্ছ সাদা জিনিসপত্র
(যেমন তোয়ালে, সাদা শার্ট, প্যান্ট) এর মধ্যে কালো কালো ছোপ পাওয়া যায়।। ছোপগুলো অনেকটা হাতের আকৃতির।। এবং তার আশে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ছাইয়ের গুঁড়া।। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দানা বাঁধতে লাগলো।। তবে কি ফিরে এলো সেই লোকটা এবং তার পরিবার?? এবার কি তবে অতৃপ্ত আত্মা হয়ে ফিরে এলো নিজেদের ঘরে??

ঘটনা মারাত্মক রূপ নেয় যখন সেই ফ্ল্যাটের এক লোক কিছু একটা প্রত্যক্ষ করে।। ব্যপারটা অনেকটা এরকমঃ রাতে টয়লেট চাপায় সেই ব্যক্তি ঘর থেকে বের হয়ে টয়লেটে যাচ্ছিলেন।। কাজ শেষে নিজ ঘরে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি রান্নাঘরে খসখস শব্দ পান।। ঘরের লাইট নিভানো ছিল।। কারেন্টের অপচয় রোধ করার জন্যই হয়তো।। তিনি ভাবলেন বেড়াল হতে পারে।। রান্না করা কিছু খাবার তখনো বাইরে ছিল।। উনি তাই বিড়ালটাকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য রান্নাঘরে উঁকি দিলেন।। উঁকি দিয়েই ভয়ে জমে গেলেন তিনি।। রান্নাঘরে ঠিক তাকের পাশে তিনটি ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে।। দাঁড়িয়ে না ঠিক, মাটির উপর ভেসে আছে।। অথবা খুব লম্বা।। কারণ উনার চেয়ে সেগুলোর
উচ্চতা অনেক বেশি ছিল।। দেখার সাথে সাথে তিনি চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান।। বাড়ির লোকজনের সেবায়
উনার জ্ঞান ফিরলে উনি সব কথা খুলে বলেন।। সাথে সাথে সবাই মিলে রান্নাঘরে যান এবং দেখতে পান তাকের উপর একসাথে অনেকগুলো ছাই স্তুপ হয়ে পড়ে আছে।।। চিন্তা করেন, একটা পরিষ্কার পরিচ্ছন রান্নাঘর, তার একটি তাকে স্তুপ করা ছাই।। কেমন ব্যপার?? সেই থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো পুরো এলাকায়।। অনেকেই বাড়িটিকে ভূতুড়ে বাড়ি আখ্যায়িত করলেন।। বাড়ির মালিকও ভয় পেয়ে বাড়ি বিক্রির চেষ্টা করতে লাগলেন।।

এর মাঝে একদিন বাড়িতে নাইট ভিসন ক্যামেরা লাগান এলাকার একজন কৌতূহলী ব্যক্তি।। সেই নাইট ভিশন ক্যামেরায় কিছু একটা ধরা পড়ে।। ছবি তোলার কিছুদিনের মধ্যে ঐ ব্যক্তি নিজ ঘরে বিষপান করে মারা যান।। এর মাঝে কোন যোগসাজশ আছে কি?? এই ঘটনা নিয়ে অচিরেই একটি ছবি বানানো হবে কোরিয়াতে।। বাড়িটিকে ব্যবহার করতে চাইছে তারা।। শুটিং সব হবে দিনের বেলা।। কি জানি, সেখান থেকে হয়তো আবার নতুন কোন ঘটনা বেরিয়ে আসবে।।
( সমাপ্ত )