ভুতের গল্প ৩৫ ভোলা জেলার ভুত
আমার বাড়ি ভোলা জেলার
*** গ্রামে। আমাদের গ্রাম
নিয়ে অনেক ভৌতিক ঘটনা আছে। আজ
আপনাদের সাথে যে ঘটনাটা শেয়ার
করবো তা ঘটেছিলো প্রায় ৪০ বছর
আগে।
আমাদের
গ্রামে তখনো বিজলী বাতি গিয়ে পৌঁছায়নি।
ওহ, প্রথমেই বলে নেই, এই
ঘটনাটি আমি আমার আব্বু এবং দাদির
মুখে শুনেছি।
ঘটনাটি ঘটেছিলো আমার
দাদির সাথে।
আমার দাদা ছিলেন একজন
ওঝা টাইপের
লোক। তিনি জিন তারাতে পারতেন।
তিনি যখনই জিন তারাতে বাড়ির
বাইরে যেতেন তখন বাড়ি শক্ত
করে বন্ধক
দিয়ে যেতেন এবং সেদিন
বাড়ি থেকে বের হওয়া সকলের
মানা থাকতো। দাদা একদিন খুব
তাড়াহুড়ার সহিত জিন
তারাতে রওনা হলেন। সেদিন
তিনি বাড়ি বন্ধক দিতে ভুলে যান।
তিনি যেই বাসায় জিন
তারাতে গিয়েছিলেন সেই বাসায়
পৌঁছতে পৌঁছতে তার রাত ৮টার
মতো বেজে যায়। তিনি অনেক
সাধনা করে একসময়
জিনটাকে পরাজিত
করেন এবং জিনটা যাকে ভর
করেছিলো তার দেহ
থেকে জিনটাকে ছাড়িয়ে দেন।
জিনটাকে ছাড়িয়ে দিতেই
সেটা হুংকার দিয়ে বলে,
“আমি গেলাম তোর বাড়িতে!”
তো দাদা উত্তর দিলেন, “যা, তুই
যা পারিস কর!” কিন্তু সাথে সাথেই
দাদার খেয়াল হল যে তিনি আজ
তাড়াহুড়ায় বাড়ি বন্ধক দিয়ে বের
হতে ভুলে গেছেন। এরই
মধ্যে জিনটা দাদার
বাড়িতে এসে দাদার রূপ ও কণ্ঠ
নিয়ে ঘরের
বাইরে দাঁড়িয়ে দাদিকে ডাক
দিলেন, “জমিনা, বদনাটা নিয়া একটু
আসো তো!” দাদি ভাবলেন
দাদা হয়তো টয়লেটে যাবেন আর
গ্রামের টয়লেটগুলো বাড়ি থেকে একটু
দূরে হয়। দাদি পানি নিয়ে বের
হয়ে খেয়াল করলেন
যে দাদা টয়লেটের
দিকে না গিয়ে বাগানের
দিকে চলে যাচ্ছেন।
দাদি সাথে সাথে বুঝতে পারলেন
যে এটা দাদা নয়। তাই তিনি দ্রুত
ঘরের
দিকে চলে আসতে লাগলেন। হটাত
একটা দমকা বাতাসে দাদির হাতের
কুপিটা নিভে গেলো। তিনি দৌড়
দিলেন ঘরের দিকে। কিন্তু
জিনটা একটানে দাদিকে উঠানের
পাশ থেকে তুলে নিয়ে বাড়ির পাশের
পুকুরে ফেলে দিলো এবং চুবাতে শুরু
করলো। তখন বাড়িতে আমার ফুফু
এবং ফুফা ছিলেন। দাদি বিপদের
মুহূর্তে মত্র একবার বড় ফুফুর নাম
ধরে ডাক
দিতে পেরেছিলেন।
তিনি “আকলিমা” বলে ডাক দেন
এবং সৌভাগ্যবশত সেই ডাক আমার
ফুফুর
কানে পৌঁছায়। আমার ফুফু
এবং ফুফা দৌড়ে এসে দেখেন
দাদি পুকুরের মাঝে অজ্ঞান অবস্থায়
ভাসছেন। এরপর তারা দাদিকে দ্রুত
উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে যান
এবং সেবা চিকিৎসা করে দাদিকে সুস্থ
করে তোলা হয়।
ঘটনা এখানে শেষ হলে ভালো হতো।
কিন্তু এরপর থেকে দাদি প্রায়ই কিছু
ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখতে লাগলেন।
দাদা তাই
আমাদের পুরো বাড়ি শিক দিয়ে দেন
এবং সন্ধ্যার পর কারো বাড়ির
বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়।
এরপর দাদা জীবিত থাকাকালীন
সময়ে আর কিছু ঘটেনি।
দাদা মারা যাওয়ার পর
থেকে প্রতিবেশীরা কেউ রাত ২/৩টার
দিকে বাড়ির বাইরে বের
হলে দেখতে পান যে, সেই পুকুরের
পাড়ে আমার দাদার প্রতিরুপি কেউ
একজন বসে আছে। হয়তো ঐটাই সেই
জিনটা যার প্রতিশোধ
নেয়া এখনো শেষ হয় নি।
অথবা হয়তো এটা দাদার
আত্মা যা আমাদের রক্ষা করার জন্য
এখনো আসে।
[বিঃদ্রঃ আমি আমার গ্রামের নাম
প্রকাশ করতে চাইনা, তাই গ্রামের
নামের জায়গায় ******** ব্যাবহার
করা হয়েছে!]